নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লোকমান বিন ইউসুপ,চিটাগাং

লোকমান বিন ইউসুপ

আমি দলান্ধ নই আমি একজন আদম সন্তান। আমি আমার মাথাটা বিক্রি করিনি নিয়ন্ত্রিত অন্ধ আবেগের নিকট। আমি বিক্রি হয়েছি সত্যের নিকট আমি সত্যের দাস সত্য আমার প্রভূ। যা সত্যের বিপরীত সে তো শয়তান কেহ জীবন্ত শয়তান কেহ বিশ্বাসগত শয়তান। সব শয়তানের বিরুদ্ধে সংগ্রাম বৈধ আমি বৈধ সংগ্রামের নেতা কর্মী হতে চাই। একজন স্বতন্ত্র দর্শন সম্পন্ন মানুষ পৃথিবীর জন্যে আর্শীবাদ বা ভয়ংকর উভয় হতে পারে...। স্বতন্ত্র দর্শনটি ভাল হলে পৃথিবীর জন্যে আর্শীবাদ স্বতন্ত্র দর্শনটিতে সমস্যা থাকলে পৃথিবীর জন্যে ভযংকর। স্বতন্ত্র সত্য দর্শনের বক্তা অপ্রিয় হয়ে উঠে চারপাশ থেকে কারন মানুষ কিছু না কিছু ভূল করে। প্রতিবাদী সৎ বক্তা আপোষহীন সংগ্রামী হয়...। সত্যভাষী বক্তাকে অপূর্ন সৎ বক্তা হতে হবে জনপ্রিয়তা ধরে রাখার জন্যে। হে জনপ্রিয়তা তুমি আমাকে সত্য বলতে দাও....

লোকমান বিন ইউসুপ › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রিয় ইসলামিস্ট ভাইয়েরা "আমি নারী সমাজ" বলছি...

২৮ শে জুন, ২০১২ বিকাল ৪:২৮

প্রিয় ইসলামিস্ট ভাইয়েরা

আসসালামু আলাইকুম



আমি বাংলাদেশের নারী সমাজের এক ক্ষুদ্র প্রতিনিধি "অব্যক্ত কথামালা" বলছি।গ্রামের মধ্যবিত্ত রক্ষনশীল পরিবারে আমার বেড়ে উঠা। ৬ষ্ঠ শ্রেনী থেকেই আমি বোরকা ও নেকাব পড়া শুরু করেছিলাম। পড়ালেখায় ভালই ছিলাম বলা যায় । এসএসসিও পাশ করলাম জিপিএ ৫ পেয়ে।





এসএসসি পরবর্তী :



এসএসসি পাশ করার পর ফ্যামিলি থেকে তোরজোর শুরু হল আমাকে বিয়ে দেয়ার জন্য । আমি ভেঙ্গে পড়লাম, মুষড়ে পড়লাম কেননা আমি বিয়ে করতে চাই না এখন । ছাত্রী সংগঠনের প্রোগ্রামে একজন ইসলামী নারী নেত্রীর বক্তব্যে শুনেছি "প্রত্যেক নরনারীর উপর জ্ঞান অর্জন করা ফরজ"।তাই আমিও পড়তে চাই । কিন্তু বাধ সাধল আমার রক্ষনশীল ইসলামী পরিবার। কান্নাকাটি জুড়ে দিলাম বিয়ে করবনা বলে। আব্বুর সাথে মহল্লার মসজিদের ঈমামের সাথে ভাল সম্পর্ক ।তিনি গেলেন মহল্লার মসজিদের ঈমামের কাছে পরামর্শ করতে । শ্রদ্ধেয় হুজুর পরামর্শ দিলেন বিয়ে দিয়ে দিতে। কারন আমি বালেগা । তাড়াতাড়ি বিয়ে হয়ে গেলে ঈমান আমল ইজ্জত আব্রু ঠিক থাকে। মরার উপর খাড়ার গা। বিশ্বাস করুন প্রিয় ইসলামিষ্ট ভাইয়েরা সেই সময়ে আমি মোটেও বিয়ে পরবর্তী দায়িত্ব পালনের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম না। আমার প্রচন্ড কান্নাকাটি ও ভয়ানক ভাবে শরীর ও মন ভেঙ্গে পড়ার কারনে আমি সে যাত্রায় বিয়ে করা থেকে বেচে যাই।



এসএসসি এর পরে একটি ভাল কলেজে ভর্তি হওয়া অনেকদিনের স্বপ্ন ছিল আমার। কিন্তু এই যাত্রায় ও ঘটল বড় বিপত্তি। শুধু মেয়ে হওয়ার কারনে সবাই সাজেস্ট করতে লাগল গ্রামের কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য । মেয়ে মানুষ শহরে কোথায় থাকবে? গ্রাম থেকেও ভাল করে পড়ে রেজাল্ট ভাল করা যায় টাইপের অনেক উপদেশ শুনতে লাগলাম। আমার ছোট মনের আবেগকে কেউ আমলে নিচ্ছেনা। আমিও কিছু বলার সাহস পাচ্ছিনা। কারন বিয়ে করা থেকে তো আপাতত বেচে গেলাম। কিন্তু মনকে মানাতে পারি না। একটি ভাল কলেজে ভর্তি হতে চাই ই চাই। অগত্যা আল্লাহকে স্মরন করতে থাকলাম্ ।রাতদিন আল্লাহকে বলছি হে আল্লাহ আমাকে একটি ভাল কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ করে দাও তুমি তো সর্বশক্তিমান। তুমি পারনা এমন কিছু নেই।



প্রিয় ইসলামিষ্ট ভাইয়েরা , আমার গ্রামের এক মুরব্বী প্রশাসনের উচ্চপদে আছেন। তিনি আমার ভাল রেজাল্টের কথা শুনে আব্বুর কাছে পড়ালেখার খোজ খবর নিলেন । কোথায় ভর্তি করাবেন জানতে চাইলেন । আব্বু শহরে আমার থাকা , নিরাপত্তা সহ যাবতীয় আনুষঙ্গিক সমস্যার কথা উনাকে জানালেন । উনি আমার পড়ালেখার ভার নিলেন এবং উনার বাসায় রেখে আমাকে ভাল কলেজে পড়ার সুযোগ করে দিলেন। আমি তো মহা খুশি । আল্লাহর অভূতপূর্ব সহযোগিতা পেয়ে আমি ২ রাকাত শুকরিয়ার নামাজ আদায় করলাম এবং একটি ইসলামী ছাত্রী সংগঠনে পড়া লেখার পাশাপাশি সময় দেয়া শুরু করলাম।





এসএসসি পরবর্তী সময়ে আমার জীবনে যে ঘটনাটা ঘটল বিয়ে ও ভাল কলেজে ভর্তি নিয়ে তা একটি ছেলের জীবনে খুব কম ঘটে। আমি মেয়ে বলে আমার জীবনে এমন একট ঘটনা ঘটল।





কলেজ জীবন:



চাচাজি আমাকে প্রাইভেট পড়ানোর জন্য টিচার খুজছিলেন । একটি ইসলামী ছাত্রসংগঠনের অনেককেই বললেন আমার জন্য একজন টিচার খুজে দিতে। কিন্তু অনেকেই বললেন মেয়ে টিচার খুজে নিতে । মেয়ে টিচার খুজে পাওয়া গেলনা। মেধাবী বড় আপুরা নিজের লেখাপড়া করার বাইরে এক্সট্রা পরিশ্রম করতে চাননা। তাই আমাকে পড়ানোর জন্য সিনিয়র আপুদের পাওয়া যাচ্ছিলনা। আবার অনেকেই আসা যাওয়ার নিরাপত্তার জন্য বাসায় এসে পড়াতে চাচ্ছেন না। আবার আমার গিয়ে পড়লে টাইম অপচয় হয়। বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী হওয়াতে সময় বাচানো খুবই গুরুত্বপূর্ন। সময়ের কথা চিন্তা না করে গিয়ে পড়ার মনমানসিকতা থাকলেও সিনিয়র আপুটি পড়ানোর জন্য জায়গা পাচ্ছেননা। হলের রুমে ছাত্রী পড়ানো যায় না । অগত্যা পুরুষ টিচাররেদর ব্যাচে পড়া শুরু করলাম। ছেলেরা আমাকে বোরখাওয়ালী , মহিরা হুজুর , তালেবান সহ নানান কটুক্তি করত। আমি কষ্ট করে সহ্য করতাম। বাসায় নালিশ দিলে পড়া বন্ধ হওয়ার অবস্থা। অনেকদিন পর নিরুপায় হয়ে চাচাকে বললাম চাচা আমার তো খুব সময় অপচয় হচ্ছে আসা যাওয়াতে । তাই আমাকে পড়ানোর জন্য কোন সিনিয়র আপু না পেলে একজন ইসলামিক মাইন্ডের বড় ভাই দেখেন । চাচা উত্তরে বললেন ইসলামিক মাইন্ডের ভাইয়েরা ৬ষ্ট শ্রেনীর উপরে ছাত্রী পড়াননা। শেষে বাধ্য হয়েই একজন বড় ভাইকে টিচার হিসাবে রাখলেন আমাকে পড়ানোর জন্য । এভাবে আনপ্র্যাকটিসিং মুসলিম একজন নরমাল ছাত্রের খপ্পরে পড়ে গেলাম শত অপছন্দ থাকার পরও।



এভাবে আমার পড়া লেখা এগুতে থাকে । কলেজ প্রাইভেট আর চাচার ছোট ছেলে মেয়েদের পড়ানো। ইন্টার ২য় বর্ষের মাঝামাঝি সময়। গ্রাম থেকে শহরে আমার এক জেঠাতো ভাই আমাকে দেখতে আসল কলেজে ক্যাম্পাসে। কিছু ইসলামিক ভাই তাকে ডেকে নিয়ে থ্রেড করল । বলল এই ক্যাম্পাসে ছেলে মেয়েদের এভাবে কথা বলা নিষেধ। আমার জেঠাতো ভাইটি মনে মনে খুবই কষ্ট পেল। তবে বিষয়টি মেনে নিল এই কারনে যে এটা ভাল এবং ইসলামিক। মেয়েদের নিরাপত্তা সহ কলেজ ক্যাম্পাসের শৃংখলার জন্য এটি দরকার । পরে যখন আবার দেখা হয়েছিল আমার জেঠাতো ভাইটি ওরা আমার শিক্ষক কিনা জিজ্ঞাসা করেছিল। আমি বললাম কলেজের বড় ভাই। আমার জেঠাতো ভাইকে খুবই উদাস দেখাচ্ছিল এবং প্রশ্ন করল এদের কি কলেজ কর্তৃপক্ষ নিয়োগ দিয়েছে শৃংখলার জন্য। আমি বললাম ..না। সে বলল ওও তা হলে স্বেচ্ছাসেবক।





আমার অনেক কলেজ বান্ধবী ইসলামিস্ট ভাইদের অস্বাভাবিক মুড , দেখে না দেখার ভান করা, কথা না বলা , কোন উপকারে না আসা সহ আরও অনেক কারনে এদের পছন্দ করেনা। বান্ধবীদের মুখ থেকে শুনেছি যে ছেলে গুলো আমার বান্ধবীদের সাথে কথা বলে তাদের নাকি কলেজের বড় ভাইয়েরা থ্রেড করেছে। আমি অবশ্যই কোন ছেলেদের সাথে কথা বলিনা। আমার বান্ধবীরা ক্লাসমেট ছেলেদেরকে দিয়ে স্যারের নোট ফটোকপি করে আনায় । দুপুরে খাওয়ার জন্য সিংগারা ছমুছা আনায় । আর কোন ছেলে পথে ডিস্টার্ব করলে ক্লাসমেট ছেলেদেরকে তাদের পিছনে লেলিয়ে দেয়। আসলেই একটা মেয়ের জন্য কলেজ ক্যাম্পাস থেকে দুরে গিয়ে নোট ফটোকপি করা , নাস্তা করে আসা খুবই দুরুহ। আর ইভটিজিং থেকে বাচানোর জন্য ক্লাসমেট ছেলেরা অনেক কার্যকরী। অবশ্যই আমার ক্লাসমেট এই ছেলে পেলেরা হয়তো ভয়ে আমার সাথে কখনো কথা বলতে আসেনি। আমার ক্লাসমেট ছেলেরা মশকরা করে আমার বান্ধবীদের বলত তোদের বিয়ে হয়ে গেলে আমাদের কাছে কিন্তু তোদের ননদ বিয়ে দিতে হবে কয়ে রাখলাম....





বিশ্ববিদ্যালয় জীবন:



সকল বাধা অতিক্রম করে এইচএসসি পার হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম।



শাটল ট্রেনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার আসা যাওয়া । বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সকল উচ্ছাসে আমার মন ভেসে গেলেও গা ভাসানো সম্ভব হয়নি। আমার কয়েকজন বান্ধবীর সাখে ক্লাসমেট ছেলেদের সম্পর্ক ভাল ছিল। তারা তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশনগুলো জানাতো। এই ধরেন কাল কোন ক্লাশ হবেনা। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন গন্ডগোল হল কিনা। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ কিনা।আবার আমি আমার বান্ধবীদের থেকে ঐ ইনফরমেশন কালেক্ট করতাম।





একবার বিশ্ববিদ্যালয় গন্ডগোলের কারনে বন্ধ ঘোষনা হল। হাতে অনেক সময়।ভাল করে ওড়না জড়িয়ে একদিন বিকাল বেলা সাহস করে বিল্ডিং এর ছাদে গেলাম । বাসায় মন ঠিকতেছেনা কি করব! এমন কেউ নেই যে কোথাও বেড়াতে নিয়ে যাবে। পাশের বিল্ডিং এর ছাদ থেকে ইভটিজিং এর শিকার হলাম। অথচ আমার বন্ধু বান্ধব গুলো পার্কে আড্ডা দিয়ে টাইম পাস করছে। ড: জাকের নায়েকের মত কোন লেকচার হল থাকলে সেখানে গিয়ে ইসলামিক লেকচার শুনতাম। নারীদের মসজিদে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা থাকলে সেখানে আসা যাওয়াতে সময় যেত। অনেক মেয়ের সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠত। আমার জন্য বেড়ানোর নিরাপদ কোন জায়গা রইলনা।





শেষ পর্যন্ত আমার টিভি দেখে সময় ব্যয় ছাড়া কোন উপায় থাকলনা। ভাববেনা আমি কুরআন হাদীস পড়িনা। ছাত্রী সংগঠনের মিটিংয়ে ও যায় । মিটিং সব সময় তো থাকেনা। তাই বিশ্ববিদ্যালয় গন্ডগোলের সময় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় আমার টাইমটুকু খুব কষ্টে কাটল।





বিশ্ববিদ্যালয় খুলল। গিয়ে শুনলাম আমার ২ বান্ধবীর বিয়ে হয়ে গেছে। আমার কোন মোবাইল না থাকাতে খবর পাই নি। খুব কান্না পেল । টিউশনীর টাকা দিয়ে নিলাম মোবাইল ফোন।





বিশ্ববিদ্যালয় এর পড়াশুনা , চাচার ছেলেমেয়ে পড়ানো , ১ টা টিউশনী , টিভি দেখা , ছাদে যাওয়া , ইসলামী অধ্যয়ন ও সংগঠন আর মোবাইল ফোন এই ছিল আমার জীবন। মোবাইল হাতে আসার পর কিভাবে জানি আমার মোবাইর নাম্বার চারদিক ছড়িয়ে পড়ল । সময়ে অসময়ে অপরিচিত জায়গাগুলো থেকে কল আসতে লাগল। প্রথমে খুব বিরক্ত লাগত । এক সময় স্বাভাবিক মনে হতে থাকল । ছেলেদের অনেক রুপের সাথে পরিচিত হয়ে গেলাম। মোবাইল সমস্যা সমাধানের জন্য ছাত্রী সংগঠন উপযুক্ত জায়গা না। ইসলামী ছাত্রসংগঠনের কারো সাথে ও পরিচয় নেই। অগত্যা ছেলেদের হরেক রুপের সাথে পরিচিত হতে হতে বেড়ে উঠে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের ৩য় বর্ষের শেষের দিকে চলে আসলাম।



বলেছিলাম যে আমি নেকাব পড়তাম । আমার সমবয়সী গ্রামের মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে। ভয়ে গ্রাম থেকে আমার জন্য কেউ বিয়ের প্রস্তাব দেয়না। অনার্সের ছাত্রী বিয়ে করার দু:সাহস কেউ দেখায়না। ফ্লাট বাসায় থাকি । নেকাব পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করি । আশে পাশের মানুষ আমাকে খুবই কম দেখেছে। দেখলেও ভাল করে দেখেনি। খুব সমীহ করত বিধায় আমার দিকে কেউ তাকাত না। স্মার্ট আধুনিকাদের সাথে চলাফেরায় কমপোর্ট ফিল করতামনা বিধায় বান্ধবীদের কাছেও আমার উপযোগিতা কম। আমি সুন্দরী ও । সবার বিয়ে হয়ে যায় কিন্তু আমার বিয়ের প্রস্তাব আসেনা। ২ একজন আগালেও আমার বাহ্যিক অবয়ব দেখে ধারনা করে আমি পরিবারের সাথে ম্যাচ করে থাকতে পারবনা। আত্বীয় স্বজন সহ সবাইয়ের আতিথেয়তার জন্য আমি যুতসই নই।



চলে আসল বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের ৪র্থ বর্ষ । রমজানের ঈদে বাড়ি গেলাম। আম্মু আব্বু থেকে ভাল ব্যবহার পাইনি। তারা আমার বিয়ে নিয়ে আতংকিত। বলল এই মেয়ে পোড়া কপালী ,আনারস (অনার্স)পড়ার শখ জাগছিল, গ্রামের সবাই বলে তোমাদের মেয়ে বুড়ি হয়ে গেছে , বয়স হয়ে গেছে , বোরকার তলায় সব বরবাদ হয়ে গেছে, হাজার হাজার মরদের ঠেলা থেতে গেছে ইউর্নিভার্সিটিতে আরও অনেক কিছু । কোন মতে ঈদ করে বাড়ি ছাড়লাম । ছাত্রী সংগঠনের কাউকে কিছু না জানিয়ে নেকাব পড়া বন্ধ করে দিলাম । সিনিয়র আপুরা কারন জিজ্ঞাসা করাতে বললাম আমার শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা । বিয়েত করা লাগবে। একা তো জীবন চলবেনা। নেকাব খুলে ফেলাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢিঁ ঢিঁ পড়ে গেল "অব্যাক্ত কথামালা " নেকাব পড়েনা। বুঝতে পারতাম শয়ে শয়ে দেখতে আসত আমাকে। নজর কাড়া সুন্দরী ছিলাম। মোবাইলে উৎপাত বেড়ে গেল। কি করব বুঝতে পারছিনা। অনেক বিয়ের প্রস্তাব আমার হাতে। বিষয়টা কারো সাথে শেয়ারও করতে পারছিনা।





ইচ্ছা ছিল একটা ইসলামী মাইন্ডের ছেলেকে বিয়ে করব কেননা তাড়া অনেক মেয়ের সাথে ডিলিংসে অভ্যস্ত না, মাদকাসক্ত না, আল্লাহকে ভয় করে , নামাজ - রোযা করে, ধুমপান করেনা , যৌতুক নেয়না, ভাল ব্যবহার সহ বউয়ের প্রতি খুবই যত্নবান কারন তারা জানে যে রাসুল স: বলেছেন "তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তি উত্তম যে তার স্ত্রীর নিকট ভাল "



কিন্ত কোন কোন বিয়ে উপযুক্ত ইসলামিক মাইন্ডের ছেলেরা আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে লজ্জা পাচ্ছিল । কারন আমার শহুরে চাচা ছিল রাশভারী আর আমার আব্বা ছিল গ্রামে। বিয়ের প্রস্তাব যত আসছিল সব আনপ্র্যাকটিসিং মুসলিম।





ইচ্ছা ছিল ইসলামী ছাত্র সংগঠনের সিনিয়র কাউকে বিয়ে করব অথচ উনারা ৩৬-৩৭ বছর পর্যন্ত সংগঠন করে কাটিয়ে দেন । এমনিতেই উনাদের বিয়ের বয়স শেষ হওয়ার পথে তার উপর উনাদের হাতে কোন টাকা পয়সা জমা থাকেনা । সংগঠন করবে না টাকা কামাবে? শেষ র্পযন্ত চিন্তা করলাম বয়স্ক ও ব্যাংক ব্যালেন্সহীন কাউকে বিয়ে করে ডেলিভারীর সময় না আবার বেঘোরে প্রান হারাতে হয়! তাই প্র্যাকটিসিং মুসলিম নয় এমন কাউকে বিয়ে করতে হল।



ইসলামিষ্ট ভাইয়েরা শুধু সাহিত্যিক ভাষায় কথা বলে আমাদের মত "অব্যাক্ত কথামালা" দের কথা কখনো ভাবেননা। উনারা হয়ত ক্ষমতার দিবাস্বপ্ন দেখেন। ক্ষমতা তো পাবেনই না বরং নারী সমাজের সাথে অঘোষিত একটা যুদ্ধ জিঁইয়ে রেখেছেন বিভিন্ন ভাবে। আমার অনেক বান্ধবী প্রেম করত। ইসলামিস্ট ভাইয়েরা তাদের ও তাদের প্রেমিককে আদর করে বলতে পারেনি যে তোমরা বিয়ে করে ফেল। দিয়েছেন শুধু থ্রেড। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের হলের মেয়েদের দু:খ কষ্ট ইসলামিস্ট ভাইয়েরা বুঝতে চাননি, অনুভব করতে চাননি । তাই অনেক নারীদের কাছে ইসলামিস্ট ভাইয়েরা বিরক্তিকর । আমার বান্ধবীরা ইসলামিস্ট ভাইদেরকে অনেক চরিত্রবান মনে করে কিন্তু নিজেদের জীবনের সাথে জড়াতে ভয় পায়।



প্রিয় ইসলামিষ্ট ভাইয়েরা ভূল হলে ক্ষমা করবেন। মনের আকুতি নিয়ে লিখলাম। যদি বা ইসলামী আন্দোলনের কোন উপকারে পৌছে!

আল্লাহ হাফেজ।





ইতি

আপনাদেরই দ্বীনি বোন

অব্যক্ত কথামালা

২৭.৬.১২

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জুন, ২০১২ বিকাল ৪:৩৭

মদন বলেছেন: দারুন গল্প

২৮ শে জুন, ২০১২ বিকাল ৫:০৮

লোকমান বিন ইউসুপ বলেছেন: সত্যি! কল্পনাপ্রসুত লেখা তবে বাস্তব সমস্যাকে নিয়ে।

২| ২৮ শে জুন, ২০১২ বিকাল ৪:৪৩

কালো পতাকার খোঁজে বলেছেন: শিবিরের বড় ভাই বিয়ে কর্তারেনাই দেইখা মাইয়া কষ্ট পাইছে =p~ =p~ =p~

২৮ শে জুন, ২০১২ বিকাল ৫:০৭

লোকমান বিন ইউসুপ বলেছেন: ওহহোরে............

৩| ২৮ শে জুন, ২০১২ বিকাল ৪:৫১

ইকরাম উল্যাহ বলেছেন: প্রিয় ইসলামিস্ট ভাইয়েরা "আমি নারী সমাজ" বলছি...

লিখেছেন লোকমান বিন ইউসুপ, =p~ =p~ =p~ =p~ =p~

২৮ শে জুন, ২০১২ বিকাল ৫:০৭

লোকমান বিন ইউসুপ বলেছেন: নারী সমাজের কথা ফুটিয়ে তোলার ট্রাই করা হয়েছে।

৪| ২৮ শে জুন, ২০১২ বিকাল ৪:৫৩

তোমোদাচি বলেছেন: এত বড় লেখা সাধারনত পড়িনা, আপনার লেখাটা পড়তে পড়তে শেষ করলাম; কিন্তু শেষের বক্তব্যটা বুঝতে পারলাম না।

২৮ শে জুন, ২০১২ বিকাল ৫:০৪

লোকমান বিন ইউসুপ বলেছেন: ইসলামিস্টদের সাথে নারীদের চিন্তা ভাবনার গ্যাফটা ফুটিয়ে তোলার ট্রাই করা হয়েছে।

৫| ২৮ শে জুন, ২০১২ বিকাল ৫:০৩

প্রিন্স অফ ব-দ্বীপ বলেছেন: ইকরাম উল্যাহ বলেছেন: প্রিয় ইসলামিস্ট ভাইয়েরা "আমি নারী সমাজ" বলছি...

লিখেছেন লোকমান বিন ইউসুপ,


নাস্তিকরা আজকাল খুব সুন্দর কইরা মুসলমান সাজতেছে। এই সামু ব্লগেই কয়েকটারে পাইছি।আগের দিন জিহাদি জোস জাগাইন্না পোস্ট দেয় পরের দিন ল্যাঞ্জা বাইর হয়। আপনার পোস্ট পুরাটা না পরলেও আচ করতে পারতেছি কোন চিপায় কথা বলতে চাচ্ছেন। পোস্ট পুড়াটা পরে কমেন্ট করব খন। আপাতত রেস্ট নেই।

২৮ শে জুন, ২০১২ বিকাল ৫:০৬

লোকমান বিন ইউসুপ বলেছেন: তাইলে ভাল কইরা পইড়েন..... ফতোয়া দিতে চান নাকি....আমার আগের লিখাগুলোও পইড়েন....

৬| ২৮ শে জুন, ২০১২ বিকাল ৫:১১

মুসাফির রকস বলেছেন:

কার লেখা কে পোস্ট করল বুঝলাম না।

২৮ শে জুন, ২০১২ রাত ১১:৫২

লোকমান বিন ইউসুপ বলেছেন: অব্যক্ত কথামালার মুখ দিয়ে বাস্তব কিছু সমস্যা ফুটিয়ে তোলার ট্রাই কররাম।

৭| ২৮ শে জুন, ২০১২ বিকাল ৫:১১

শিপন মোল্লা বলেছেন: ইসলামিস্ট ভাইদের যোগের পরিবর্তন হয়া উচিত।

২৮ শে জুন, ২০১২ রাত ১১:৫২

লোকমান বিন ইউসুপ বলেছেন: হাছা কইলেন

৮| ২৮ শে জুন, ২০১২ বিকাল ৫:৪০

মাইন রানা বলেছেন: এটা কি গল্প না বাস্তব না কি কিছুই বিজলাম না!!!!!

২৮ শে জুন, ২০১২ রাত ১১:৫৩

লোকমান বিন ইউসুপ বলেছেন: একজনের জীবনে পুরোটা ঘটেনি। বিভিন্নজনের জীবনে ঘটেছে। একজনকে দিয়ে উপস্থাপন করলাম....

৯| ২৮ শে জুন, ২০১২ বিকাল ৫:৫০

জানালার বাইরে বলেছেন: ওরে আল্লহরে! :-&

২৮ শে জুন, ২০১২ রাত ১১:৫৪

লোকমান বিন ইউসুপ বলেছেন: আল্লাহ...

১০| ২৮ শে জুন, ২০১২ বিকাল ৫:৫৬

একলা বগ বলেছেন: হার্ডকোর ক্যারিয়ারিস্ট (বোরকা ওয়ালি হইলেও) মেয়েদের বিয়ে নিয়ে সমস্যা হওয়াটাই স্বাভাবিক। এই ধরনের মেয়েদের ভাল বিয়ে হওয়া দরকার, কিন্তু পড়াশুনা করতে করতে সময় শেষ করে ফেলে পরে আর মনমত পাত্র পায় না।

২৮ শে জুন, ২০১২ রাত ১১:৫৫

লোকমান বিন ইউসুপ বলেছেন: এই রকম কেহ থাকলে আমারে খবর দিয়েন...

১১| ২৮ শে জুন, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৪৪

চিরতার রস বলেছেন: কেউ লেখাটার সামারিটা বলেন প্লিজ। এতো বড় লেখা দেইখা ভয় পাইছি। B:-)

২৮ শে জুন, ২০১২ রাত ১১:৫৬

লোকমান বিন ইউসুপ বলেছেন: মেয়েদের প্রতি ইসলামিস্টরা সহনমীল হলে ভোটের রাজনীতিতে নারীদের আর্শীবাদ পাওয়া সম্ভব।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.