![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মেঘা দেখে একটা টেবিলে মোমবাতি জ্বালানো। খুব সুন্দর একটা ঘ্রান আসছে তা থেকে। পাশে রাখা মেঘার পছন্দের একগুচ্ছ রজনীগন্ধা। মেঘা অয়নের দিকে তাকিয়ে থাকে।
“এসবের মানে কি অয়ন? এগুলো কখন করলে?” এক রাশি প্রশ্ন তার চোখে।
“আচ্ছা, তুমি সবকিছুর এতো মানে খুজে বেড়াও কেনো বলো তো? আর তোমাকে বাইরে দাড়া করিয়ে কি আমি শরবত খেয়েছি এখানে? বোকা মেয়ে” মেঘাকে একটি চেয়ার টেনে বসিয়ে দেয় অয়ন। মেঘার পাশে হাটু গেড়ে বসে সে। মেঘার হাত ধরে তার দিকে তাকিয়ে বলে-
“আমি অনেক কষ্ট দিয়েছি তোমাকে তাই না ? বিশ্বাস কড়, নিজের অজান্তে হয়েছে এটা। স্যরি। মাফ কর দাও এবারের মতো। আর কখনও এমনটা হবে না”
"অয়ন, এসবের কোনো দরকার ছিলো না। আমি এমনিও তোমাকে ক্ষমা করে দিয়েছি। আফটার অল, তুমিই আছো যাকে আমি চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করতে পারি। যার কাছে আমার মনের সব কথা বলতে পারি। তোমার ওপর রাগ ধরে রাখাটা আমার পক্ষে বোধহয় সম্ভব্ হচ্ছে না” হাসি মুখে বলে মেঘা।
“হুম, তো বেশ। আমার অনেক ক্ষুধা লেগেছে। কি খাবে জলদি অর্ডার করো প্লিজ” বলে অয়ন
“না। সবসময় আমি অর্ডার করি, আজকে তুমি অর্ডার করো”
“আচ্ছা ঠিক আছে” বলে অয়ন
“ বাহ, আমি বললাম আর রাজি হয়ে গেলে?”
“পরী, তোমরা মেয়েরা এতো কনফিউজিং কেনো? বলো তো”
“আমরা মেয়েরা কনফিউজিং না, তোমরা ছেলেরা গাধা। হুমায়ুন আজাদ স্যার ঠিকই বলেছেন, প্রত্যেকটা সুদর্শন পুরূষ এক একটি সুদর্শন গাধা” হেসে ফেলে মেঘা
“তুমি কি আমকে গাধা বললে ?”
“নাহ ! আমি তো বলেছি সুদর্শন পুরূষদের” অট্টহাসিতে মেতে ওঠে মেঘা।
“ওহ অয়ন, তোমার সেন্স অফ হিউমার তো ভয়াবহ, একদম ০” হাসতে হাসতে বলে মেঘা
অয়ন মুখ ফুলিয়ে বসে থাকে। মেঘার হাসি তাকে প্রচন্ড বিরক্ত করে। কিছুক্ষন পর মেঘা খেয়াল করতে পারে অয়ন এর বিরক্তি। অয়ন খুব অপমান বোধ করে। মেঘা তার হাসি থাকিয়ে অয়নের দিকে তাকিয়ে থাকে।
“আচ্ছা বাবা আর মজা করবো না তোমাকে নিয়ে। ব্যাস? এবার তো একটু হাসো” মেঘা অনুরোধ করে অয়নকে। অয়ন মেঘার দিকে তাকিয়ে হেসে ফেলে।
খাবার অর্ডার করে তারা। খাবার খেতে শুরু করে।
“মেঘা ! কেমন আছো?” একটি পরিচিত কন্ঠ মেঘাকে অবাক করে
“রিমি আপু, কি খবর তোমার, কতোদিন পর। আমি বেশ ভালো আছি”
“তা তো তোমাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে। সাথে কে? বয়ফ্রেন্ড?”
“ফ্রেন্ড !” “রিমি আপু, ও অয়ন। অয়ন, ইনি রিমি আপু। আমার এক বড়ি আপু” বলে মেঘা
“আমি শুনেছি তোমার আর যাহিন এর কথা, ও ফোন করেছিলো বেশ কিছুদিন আগে। আসলে তোমাদের…” “আপু ভাইয়া কোথায়? আর তিতলী? অনেক বড় হয়ে গেছে নিশ্চই?” রিমিকে থাকিয়ে দেয় মেঘা
“এইতো এই মাত্র বেড়িয়ে গেলো ওরা। অনেক দুষ্ট হয়েছে তিতলী। আচ্ছা থাকো তোমরা। আমি বরং যাই।বাসায় এসো মেঘা।
“হ্যা, আপু। আসবো। ভালো থেকো তুমি” বিদায় নেয় মেঘা
“তিতলী কে?” জিজ্ঞেস করে অয়ন
“রিমি আপুর মেয়ে। অনেক কিউট একটা বেবি”
“আর রিমি আপু নিশ্চই যাহিন সাহেবের বোন?”
“হ্যা” উত্তর দেয় মেঘা, ঠান্ডা গলায়
“যাহিন সাহেব আমার হ্যাপি মোমেন্ট গুলোকে বরবাদ করার জন্যে সবসময় তৎপর” বিরবির করে বলে অয়ন।
“আচ্ছা পরী, আমি যদি তোমাকে কিছু দেখাই, তুমি চিৎকার দেবে না তো?”
“বুঝলাম না” বলে মেঘা
“বাম দিকে তাকাও। তোমার পেছনের টেবিলে তোমার বোন, মমো। ইফ আই অ্যাম নট রঙ।
মেঘা তাকিয়ে দেখে সত্যিই মমো ও ফাহাদ। মেঘা খুব খুশি হয়ে যায়। সে সজোড়ে চিৎকার দেয় “মমো…”
“ড্যাম, পরী এটা পাবলিক প্লেস” বলে অয়ন
“মেঘ…আমার খরগোশ…”মেঘাকে জড়িয়ে ধরে মমো।
“তোরা কি করিস এখানে?
“জিজ্ঞেস কর এই ভদ্রলোক কে। ইনিই আমাকে নিয়ে এসেছেন এখানে” অয়নের দিকে ইশারা করে মেঘা
“আমি জাস্ট তোমার বোনকে ডিনার করাতে নিয়ে এসেছিলাম মমো” বলে অয়ন।
“ভাইয়া, বিয়ের পর আমাকে এভাবে ভুলে গেলে? তোমার সাথে কথা আছে, এদিকে আসো” ফাহাদ এর সাথে একটু দূরে চলে যায় মেঘা
“এরা বরাবরই এরকম। মেঘাতো ফাহাদকে পেলে আমাকে ভুলে যায়। কখনও কখনও আমার মনে হয়, মেঘা আমার না, ফাহাদেরই বোন হাহাহা” হাসে মমো। সাথে অয়নও হাসে
“উম, অয়ন, তোমার একটা হেল্প দরকার ভাই”
“কি হেল্প বলো তো”
“আমার পরিচিত একজন। তার একটু সমস্যা আছে। সে কিছু বুঝতে পারে না। তোমাকে তার চিকিৎসা করতে হবে” বলে মমো
“মমো, তুমি হয়তো জানোনা, আমি ডেন্টিস্ট। তুমি ওনাকে নিয়ে বরং কোনো সাইকায়াট্রিস্টের কাছে যাও। তুমি যদি চাও, আমি রেকমেন্ড করতে পারি” উত্তর দেয় অয়ন
“না। শুধু তুমিই পারো তার চিকিৎসা করতে। আমি মেঘার কথা বলছি”
অয়ন একদমই অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে। তার ধারণার বাইরে ছিলো মমো মেঘার কথা বলছে
“আমার বোনটা সবকিছুই একটু দেড়িতে বোঝে। ওর এই সমস্যাতা ছোটবেলা থেকেই আছে। এজন্যেই, এতোদিন পরেও সে বোঝেনি তুমি তার জন্যে কি। সব দেখেও এড়িয়ে চলছে”
অয়ন নীচের দিকে তাকিয়ে থাকে। সে বুঝে উঠতে পারে না তার কি বলা উচিৎ।
“তোমার অর দিকে হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। ও হয়তো এখনও জানেনা, তুমি তার জন্যে কি। তোমার অকে বোঝাতে হবে। কি? দেবে তো অর দিকে হাত বাড়িয়ে?” বলে মমো
অয়ন মমোর দিকে তাকিয়ে একগাল হাসি দেয়
“কি ব্যপার কি নিয়ে আলাপ করছিলে তোমরা? মহল এত গরম কেনো?” প্রশ্ন করে ফাহাদ।
“কিছুনা, অয়নের একটা পেশেন্ট নিয়ে আলাপ করছিলাম। কিরে মেঘা কি নিয়ে আলাপ করে এলি তোরা?” প্রশ্ন করে মমো
“তোকে কেনো বলবো আমাদের ভাই বোনের কথা? তুই ভাগ” বলে মেঘা
“আচ্ছা অয়ন মেঘা, অনেক দেড়ি হয়ে গেছে, আমরা যাই এখন। মেঘা তুমি তারাতারি বাসায় যা দেড়ি করিস না। দেখা হবে অয়ন” মমো ও ফাহাদ বিদায় নিলো
মেঘা ও অয়ন রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে আসে। অয়ন তখনও মমোর বলা কথাগুলো নিয়ে ভাবতে থাকে। মেঘার প্রতি তার ভালোবাসা মমো বুঝতে পারলো, কিন্তু মেঘা এতোদিন তার সাথে পার করেও বুঝতে পারলো না। মেঘা কি সত্যিই তার চোখে নিজের জন্যে ভালোবাসা দেখতে পায়না, নাকি সব দেখেও সে এড়িয়ে চলে।
“অয়ন…কুলফি” প্রচন্ড উৎসুকতার কন্ঠে বলে মেঘা
“তো তুমি ভেতরে বলোনি কেনো? এই রোডসাইড খাবার কেনো খাবে?” বিরক্তির কন্ঠে বলে অয়ন।
“আমি ভেতরে বলিনি কারন আমি এই রোডসাইড কুলফি খাবো”
“পরী, ভেতরে চলো। ওদের ডেযার্টগুলো খুব ভালো। তোমার ভালো লাগবে।
“আমি এই কুলফিই খাবো”
“তুমি ! চলো খাওয়াই তোমেকে, এই পচা কুলফি”
কুলফি খেতে থাকে তারা দুজন। “হুম, খারাপ না খেতে” বলে অয়ন
“তুমি স্বীকার করলেই পারো তোমার ওই রেস্টুরেন্টের ওভাররেটেড ডেযার্টের চেয়ে এই কুলফি মজা”
“ঠিক আছে, কিন্তু এটাতো হাইজেনিক না। আল্লাহ জানে কিভাবে বানিয়েছে” বলে অয়ন
“আর তুমিতো ওই রেস্টুরেন্টের কিচেনে ঢুকে দেখেছো অরা কিভাবে বানায় তাইনা?”
“পরী তুমি কিসের সাথে কি তুলনা করছো?”
“তোমার ভালো না লাগলে তুমি খেওনা। আমি তোমাকে জোড় করিনি খাবার জন্যে। কিন্তু আমার পছন্দকে তুমি এভাবে ক্রিটিসাইজ করতে পারোনা। তুমি জানো…” “আচ্ছা বাবা স্যরি। ভুল হয়ে গেছে। এই কুলফি অনেক মজা। আমরা সবসময় এই কুলফি খাবো, কেমন?” মেঘাকে থামিয়ে অয়ন বলে
মেঘা হেসে ফেলে।
“এই, অনেক রাত হয়েছে। চলো বাসায় যাই” হাতঘড়ির দিকে তাকিয়ে অয়ন বলে
“ওহ, হ্যা, তাই তো। দেখো তো, আমি ভুলেই গেছি। চলো জলদি”
গাড়িতে ওঠে ওরা দুজন। মেঘা আজ খুব খুশি। ওর এই হাশিমুখটার চেয়ে বেশি চাওয়া হয়তোবা অয়নের নেই। মেঘাকে খুশি করতে পেরে অয়ন খুব সন্তষ্ট। কিন্তু মমোর বলা কথাগুলো তখনও তার পিছু ছাড়েনি।
“পরী, একটা জিনিষ বলবে?”
“কী?”
“ভালোবাসার অর্থ কী?”
“ভালোবাসার কোনো অর্থ নেই। এর অর্থ খোঁজা নিরর্থক। অর্থ রয়েছে সেখানে, যেখানে ভালোবাসার মানুষটি আছে…অর্থ রয়েছে তার সমী্পে…” একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে মেঘা
বাসায় চলে আসে তারা দুজন। মেঘা অয়নকে বিদায় দিয়ে বাসায় এসে সোজা তার রুমে চলে যায়। হাতের ব্যাগটি রেখে লাইট নিভিয়ে বিছানায় শুয়ে পরে সে। তার ভেতরে এক ধরনের চাঞ্চল্য কাজ করে, যার কারন সম্পর্কে সে এখনও অজ্ঞাত। কিছুক্ষন পর অয়নের ফোন আসে।
“হ্যালো…”
“ফ্রেশ হয়েছো পরী?”
“উহু”
“কেনো?”
“জানি না। তুমি ফ্রেশ হয়েছো?”
“না”
“কেনো বলো তো?”
“জানি না তো” বলে অয়ন।
তাদের কথা চলতে থাকে।
মেঘা সকাল সকাল অফিসে চলে গেলো। বেশ কাজ আজ অফিসে। সে প্রচন্ড ব্যাস্ত হয়ে পড়লো কাজে। দুপুর গড়িয়ে গেলো, তার কাজের চাপ কিছুটা কমে এলো। জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখে সে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। তার প্রচন্ড ইচ্ছে হলো বৃষ্টিতে ভিজতে। ঠিক সেই মুহুর্তে তার ফোনে অয়নের কল আসে।
“পরী, জলদি বের হও”
“অয়ন, পাগলামী করে না। এভাবে যখন তখন অফিস থেকে বের হওয়া যায় নাকি”
“পরী তুমি একটা বার বাইরে তাকাও। আমাদের এরকম ঝুম বৃষ্টিতে ভেজার কথা ছিলো। তুমি প্রমিস করেছিলে। আমি তোমার অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে আছি। প্লিজ এসো”
মেঘা নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলো না। সে বেরিয়ে গেলো অয়নের সাথে।
“একি, বৃষ্টিতে ভিজবে তো গাড়ি কেনো?” বলে মেঘা
“বলছি কেনো। গাড়িতে ওঠো। জলদি”
“ততক্ষনে বৃষ্টি থেমে যায় যদি?”
“আর বৃষ্টি যদি বেড়ে যায়?” প্রশ্ন করে অয়ন
মেঘা চুপচাপ গাড়িতে উঠে পরে। অয়ন গাড়ি চালাতে থাকে। তারা একটি নদীর তীরে খোলা মাঠের কাছে যায়।অয়ন গাড়ি থেকে বের হয়ে মেঘার দিকের জানালার কাছে দাঁড়িয়ে বলে “ কি বইলেছিলাম না বৃষ্টি যদি বাড়ে? বাড়ল তো?”
মেঘা তাকিয়ে রইলো অয়নের দিকে
“আজ বৃষ্টি, মেঘ, প্রকৃতি সব আমার সমর্থনে। বের হয়ে এসো পরী। দেখো বৃষ্টি চিৎকার করে তোমাকে, আমাকে, আমাদেরকে ডাকছে”
সে মেঘাকে গাড়ি থেকে বের করে আনে। দুজন হাতে হাত ধরে মাঠের মাঝখানে চলে যায়। বৃষ্টির প্রতিটা ফোঁটা মেঘাকে যেনো আরো প্রানবন্ত করে তোলে
“চোখ বন্ধ করো মেঘা। বৃষ্টির প্রতিটা ফোটা বিন্দু বিন্দু করে তোমার হৃদয় স্পর্শ করতে দাও। জাগিয়ে তোলো অচেতন মনকে”
মেঘা চোখ বন্ধ করে বৃষ্টির প্রতিটা ফোটা অনুভব করে। কি সম্ভব সুন্দর এক সুবাশ বৃষ্টির।
“তোমার ভেতরের সব যন্ত্রণা, কষ্ট এই বৃষ্টিত জলে ধুয়ে মুছে যেতে দাও। নিজেকে আর আরাল করে রেখোনা” বলে অয়ন
মেঘা চোখ বন্ধ করে হাসিমুখে বৃষ্টি অনুভব করতে থাকে। অয়ন মেঘার দিকে এগিয়ে আসে। মেঘার খুব কাছাকাছি, তার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে অয়ন বলে-
“মেঘা, অনেক ভালোবাসি তোমাকে”
“কি বললে? আমি শুনতে পাইনি, আবার বলো” ঘন নিশ্বাস নিচ্ছে মেঘা। মেঘার আরো কাছে গিয়ে অর দুগালে হাত রেখে অয়ন বলে-
“প্রথম যেদিন দেখেছি, ভালো লেগেছে তোমার হাসি, তোমার কথা, তোমাকে। এই ভালোলাগা কবে যে প্রচন্ড ভালোবাসায় পরিনত হলো, আমি জানি না। শুধু এইটুকু জানি, আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি, হয়তো নিজের চাইতেও বেশি”
মেঘা চোখ খুলে ফেললো। অয়নের এতো কাছাকাছি সে। অয়ন খুব দ্রুত নিশ্বাস নিচ্ছে। মেঘার উষনতা অনুভুত হচ্ছে। সে অয়নের হাত সড়িয়ে পিছে চলে আসে।
“না পরী, তুমি ঘাবড়িও না। আমি জানি তুমিও আমাকে ফিল করো। আমি তোমার কাছে শুধু একটা সুযোগ চাই তোমার মন জয় করার। আমাকে ভালো না বাসো, অন্তত আমাকে সুযোগ দাও তোমাকে ভালোবাসার” অয়ন মেঘার দিকে এগিয়ে যায়।
“অয়ন, আমার খুব শীত করছে। আমি বাসায় যাবো। এখনই” বলে মেঘা
“পরী…” “অয়ন প্লিজ,” অয়নকে থাকিয়ে দেয় মেঘা। অয়ন মেঘাকে নিয়ে বাসায় ফীরে এলো। পুরো রাস্তায় সে অয়নের সাথে একটি কথাও বলেনি। একবার সে তাকায়নি অয়নের দিকে।
বাসায় এসে ভেজা জামা নিয়েই সে তার রুমের কোনায় দেয়াল ঘেষে ফ্লোরে বসে পরলো। সে খন ঘন নিশ্বাস নিচ্ছিলো। তার চুল গড়িয়ে পানি পরছে। তার চোখ থেকে অঝড়ে পানি ঝড়ছে। সে কাদঁছে। তার কানে বার বার অয়নের বলা কথাগুলো বাজছে। এক পর্যায়ে সে কান্নায় ভেঙ্গে পরলো। সে ফ্লোরে ভেজা শরীরে পড়ে রইলো।
অনবরত কাঁদছে মেঘা। বাইরে বৃষ্টি নামছে মুষলধারে। তার কান্নায় যেনো আকাশ আরো বেশি কাদছে। বৃষ্টি হয়ে ঝড়ে পরছে আকাশের কান্না।
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হয়ে এলো। মেঘা তখনোও ফ্লোরে পরে রইলো। তার রুমের বাইরে তার মা ডাকছে। কিন্তু সে সাড়া দিচ্ছেনা কারো ডাকে।সে তার ফোন হাতে নিয়ে অয়নকে ফোন করে, কিন্তু অয়ন ফোন ধরেনা। সে দেখে অফিস থেকে তার এক কলিগ তাকে মেসেজ করে কিছু জরূরী অফিসিয়াল মেইল চেক করার জন্যে। সে চোখ মুছে উঠে বসে। বাথরুমে গিয়ে গোসল করে ফ্রেস হয়ে আসে সে। ল্যাপটপ অন করে মেইল চেক করতে থাকে মেঘা। সে দেখে তার ইনবক্সে নতুন দুটি মেইল। যার একটিতে লেখা
“Dear Megh,
I know I have hurt you a lot. I can’t even say sorry to you, as I know its not going to change all past years that you had gone through. All I want to say I’ve realized what I had lost. Without you, it was never me. With you, its everything. I am coming back to Bangladesh, to you, by next week. I will see you once I reach. I love you a lot baby. Please forgive me.
Yours’ only, Zahin."
মেঘা বাকরুদ্ধ হয়ে যায় মেইলটি পড়ে। তার হাত পা হিম হয়ে আসে। সে কি করবে বুঝতে পারে না। তার প্রচন্ড রাগ হয়। সে রাগটা নিজের ওপর, নাকি অয়নের ওপর, নাকি যাহিনের ওপর তা সে জানে না। সে আবার অয়নকে ফোন করে। অয়ন এবারও তার ফোন ধরে না।
চলবে.....
©somewhere in net ltd.