![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একবিংশ শতাব্দির এক বয়াভহ সমস্যা হলো ক্যানসার রোগ. জীবন যাত্রার মান উন্নত হওয়ার সাথে সাথে ক্যান্সার হওয়ার প্রবনতা বেড়েই চলেছে.বয়বুহল্য চিকিতাসা খরচ এবং সম্পুর্ননিরাময় না হওয়ায় ক্যান্সার মধ্যবিত্ত পারিবারের কাছে বিভীষিকা হয়ে দাড়িয়েছে. সোলেমান মিয়া একজন স্কুল শিক্ষক, মাইনে বেতন পায় ৩০ হাজার টাকা. দুই ছেলে আরে স্ত্রী কে নিয়ে টানাপড়েনে ই সংসার চলে যাচ্ছিলো.বড় ছেলে ক্লাশ সিক্স এ পড়ে সরকারি বিদ্যালয়ে আর ছোট ছেলেটা তা পড়ে ক্লাস ২ তে. টিউশন খরচ সহ মাসে ২-৩ হাজার খরচা হয় ছেলেদের পড়ালেখায়.বাকি সংসার খরচ বাদ দিয়ে মাসে ৩-৪ হাজার টাকার সঞ্চয় হয়. নিজের কৃষিক্ষেত নেই. ২ জোরা গাই গোরু এবং বলদ পালে. সেখান থেকে দুধ বিক্রি করে মাস শেষে কিছু আয় হয়.সোলেমান মিয়ার সংসারে আর কেও নেই , ছোট বেলায় মা মারা গেছে, একমাত্র মামা ই তাঁকে লালন পালন ,লেখা পরা শিখিয়ে ছিলো. উনিও মারা গেছেন সোলেমান বিয়ে করার আগেই. ছোটবেলায় বাবা গরু আনতে গিয়ে বর্ডার থেকে আর ফিরে আসেনি. লোকে বলাবলি করে বিএসএফ এর গুলিতে মারা গেছেন.সোলেমানএর স্ত্রী মোহিতন অনেক ভালো মনের লোক. এই টানাপোড়নের সংসার কে আগলে রেখেছেন.কিছুদিন হলো একদিন রাত্রে সোলেমান কে বললো তার বাম স্তন এ চাঁক এর মতো ফুলে গেছে এবং ব্যথা করছে.এটা অনেকদিন ধরে ছিলো, ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে , প্রথমে ব্যথা না করলেও এখন হচ্ছে.পরের দিন সরকারি হাসপিটাল এ opd তে দেখালে বললো, বড় হসপিটাল এ দেখতে হবে,ঢাকা যেতে হবে .অবশেষে ঢাকায় গিয়ে দেখানোর পরে ডায়াগনসিস হলো স্তন ক্যান্সার. দেরী করে ফেলায় সরিয়ে পড়েছে শরীরে বাকি অংশে স্টেজ ৩. চিকিৎসা খরচ শুনে সোলেমান যেন আকাশ থেকে পড়লো. সার্জারি করতে হবে তারপরে আবার কেমো নিতে হবে . সবকিছুর মিলিয়ে খরচ হবে ৬-৭ লাখ প্রাইভেট হসপিটাল এ . সরকারি হসপিটাল এরকম চিকিৎসার সুবিধাই নাই.হলে ও মিনিমাম ৬ মাস অপেক্ষা করতে হবে .নিম্নআয়ের সোলেমান এর ব্যাংক এ ৫০ হাজার এর বেশি সঞ্চয় নেই. এখন কীভাবে বলবে যে চিকিৎসা হবেনা তার প্রিয়তমা স্ত্রী এর. ডাওক্তার বলেছেন দেরি করলে আরও ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়বে এবং চিকিৎসা খরচ বাড়বে. সোলেমান তার ২ জোড়া গরু বিক্রি করে এবং তার জমানো টাকা নিয়ে চিকিৎসা আর জন্য dakhar এক হাঁসপাতাল ভর্তি হলো .ডক্টর বলে দিয়েছেন যে তার স্ত্রী এর ক্যান্সার সম্পুর্ন নিরাময় নাও হতে পারে কারণ এটা অ্যাডভান্স স্টেজ এ আছে. সোলেমান তা শোনেই গভীর দুর্চিন্তাই এবং শোকে নিমর্জীত হলো. তার জমানোও সব গেলো এবং তার সবচেয়ে কাছের মানুষ টিকেও হইতো বেশিদিন টিকিয়ে রাখা যাবেনা. পুরো পরিবারটাই সর্বশ্রান্তু হয়ে গেলো ক্যান্সার রোগটির কাছে. এখন প্রশ্ন হলো কেনো ক্যান্সার একটি দূররোগ্য বায়াদি. তাহলে জানতে হবে ক্যান্সার এর কিভাবে হয় এবং এটার physiopathology কেমন.
ক্যান্সার কেন হয় -
১) জেনেটিক চেঞ্জেস - আমাদের ডিএনএ লেভেল এ gene মিউটেশন হয় ফলে সেল সাইকেল অনিয়ন্ত্রিত ভাবে বিভাজিত হয় ক্যান্সার সেল টিউমার এ পরিনিত হয়. gene মিউটেশন হয় যদি অনেক দিন ধরে স্ট্রেস থাকে মলিকিউল লেভেল , যেমন এনভায়রনমেন্টাল পলিউশন, হ্যাবিট অফ সাবস্টেন্সেস ইউজ লাইক টোব্যাকো স্মোকিং,মদ্যাপন,
২) ইনহেরিটেন্স- ফ্যামিলি তে করোও যদি ক্যানসার এর হিস্ট্রি থাকে তাহলে ইনহারিটেন্টেলি হওয়ার চান্স বেড়ে যাই.
৩) Infection- হিউমান পাপিলোমা ভাইরাস(Hpv) ভাইরাস, - সেক্সচুয়াল ট্রান্সমিটেড, হেপাটাইটিস C,বি এটিসি
৪)টক্সিক exposure- যেমন রেডিওএক্টিভ প্রোডাক্ট, Vinyl ক্লোরাইড -plastic, benzene-petroliumপ্রোডাক্ট, বেটা napthalene/color paint- bladder ক্যান্সার, pesticides, আর্সেনিক যা বাংলাদেশ এ পানিতে পাওয়া যাই.
কেন ক্যান্সার ট্রিটমেন্ট কঠিন এবং সম্পর্ণ নিরামযোগ্যে নই-
১) জেনেটিক মিউটেশন, মলিকিউল লেভেল হয়ে থাকে যা রিভার্স করা যাইনআ
২)ক্যান্সার / টিউমার parasite এর মতো সরীরের সমস্ত রিসোর্স খেয়ে নেই যা পেশেন্ট কে দুর্বল করে দেই
৩)chemotherapy-একমাত্র কার্যকরী ট্রিটমেন্ট মডালিটি কিন্ত এটার সাইড ইফেক্ট পেশেন্ট কে আরো দুর্বল করে দেই, এবং একবার নিরাময় হয়ে গেলে যখন ক্যান্সার ফিরে আসে তখন same কেমো agent ই আর কাজ হইনা, সেটা রেসিস্টেন্ট হয়ে যাই,
৪) Recurrance/ ক্যান্সার ফিরে আসা- ক্যান্সার একটি জেনেটিক মিউটেশইন এর ফলে হয়ে থাকে যা মলিকিউল লেভেল এ হয়ে থাকে এই জন্যই টিউমার remove বা chemo দাড়া ক্যান্সার cells নস্ট করার পরও ফিরে আসার সম্বাবনা থেকে যাই.
৪) Metastasis/ ক্যান্সার ছড়িয়ে পরা- চিকিৎসা নিতে যতো দেরি হবে ক্যান্সার ততো শরীরের অন্যান্য জায়গাই ছড়িয়ে পরে. যেমন কারো প্রথম ব্রেষ্ট ক্যান্সার হলো চিকিৎসা নিতে দেরি হলে ক্যান্সার cells মেরোদণ্ড, লিভার, কিডনি বা ব্রেন এ ছড়িয়ে যেতে পারে , এই অবস্তাই ব্রেস্ট ক্যান্সার এর ট্রিটমেন্ট করে টিউমার রিমুভ করা হলেও সেটা আবার ফিরে আসে ছড়িয়ে থাকা ক্যান্সার cells থেকে.
৫)expensive treatmen- ক্যান্সার চিকিৎসা অনেক ব্যবহুল, এক একটা chemotherapyসাইকেল এর খরচ লাখ টাকার ওপরে চলে যাই সেজন্য যাদের খরচ বহন করার ক্ষমতা থাকেনা তারা চিকিৎসা করেনা বা অসম্পুর্ণ থেকে যাই . রোগী বিনা চিকিৎসায় মারা যাই.
ক্যান্সার একবিংশ শতাব্ধির এক অবিশাপ, এটা কোনো পরিবার কে সর্বশ্রান্ত করে যাই. সেজন্যে আমাদের ক্যান্সার রোগের সম্পর্কে সচেতন হতে হবে এবং ক্যান্সার এ আক্রান্ত পেশেন্ট এবং তার পরিবার এর প্রতি মানবিকতা রাখতে হবে .
©somewhere in net ltd.