নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লুৎফুল আহসান

কথা সাহিত্যিক

লুৎফুল আহসান

কথা সাহিত্যিক

লুৎফুল আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাগজের নৌকা

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৪৬



সেদিনের সকালটা ছিল রোদেভেজা।

আমার আঙুলের ছোয়ায়

হঠাৎ চমকে ওঠা তোমার হাসিতে

হেসেছিল ঐ আষাঢ়ের সুর্য।

আর মেঘ গলে গলে বৃষ্টি।

তোমার কথামালার রিনঝিন শব্দে

হঠাৎ থমকে গিয়েছিল

জামরুল গাছের চিকন ডালের চুড়ায় সাজানো

জোড়া শালিখের তৃপ্ত কোলাহল।

ঐ আনত চোখের লাজুক দৃষ্টির স্পর্শে

স্নিগ্ধ হয়েছিল প্রকৃতির স্নিগ্ধতা।

আর আমার চোখ আটকে গিয়েছিল

ঢেউহীন লেকের দিকে তাকিয়ে থাকা

তোমার ঐ আনমনা তীলে।

সুতোয় বাধা ঘড়ি দেখার ছুতোয়

তোমার হাত ধরেছিলাম পরম চাহিদায়।



সেদিনের সকালটা ছিল সত্যি অদ্ভুত!

বাতাশের গন্ধে ছিলনা

ক্ষুধাতুর পৃথিবীর চিৎকার

কিংবা নর্দমার তীক্ষ্ণ হাসি।

পাকা ধানের শীষের গহীনে

মেশানো কৃষকের খুশির

বর্ণীল ছটায় যেন মোহিত হয়ে ছিল।

প্রকৃতির রঙে ছিলনা

নিষ্পাপ জলে ধোয়া রক্তের দাগ।

যার ব্যকগ্রাউন্ড মিউজিকএ বাজে দুঃখের জাতীয় সংগীত।

ছিল শুধু কচি পাতার

সবুজ বনে যাওয়ার বর্ণীল সাজ।

তোমার সাদা ওড়নায় সে বাতাশ

নিজেকে জড়িয়ে নিয়েছিল বারংবার।

খোলা চুলের ফাঁকে

নিজেকে বন্দী করেছিল স্বেচ্ছায়।

তোমার ঐ ঠোটের গোলাপি আভার সাথে

সবুজের ছায়াচ্ছন্নতায় প্রকৃতি

পেয়েছিল শত জন্মের আকাঙ্খিত রুপ।

তুমি যখন বৃষ্টি ভেজা হাতে

পাতাবাহার গাছটির গাল ছুলে

কি পরম বিনম্র লজ্জায়

সে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিল।

তুমি হয়ত খেয়াল করনি।

আর ঐ ঘাটে বাধা নৌকাটি?

সে তো অধীর উদ্দীপনায়

শীতের সকালে ভেজা কাকের মত কাঁপতে কাঁপতে

ঘন ঘন নিঃশ্বাষ ফেলছিল

তুমি আসবে বলে।।

সে সকাল পেরিয়ে দুপুর এসেছিল।

তারপর আরেকটা সকাল

তারপর আরেকটা. . .

এরি মাঝে

আমার বুকে যে আকাশ পুষেছিলাম

সে আকাশকে শামুকের খোসায় বন্দী করে হারিয়ে গেছো অন্য কোন খোলা আকাশে

রঙীন ঘুড়ি হয়ে।



যে বর্শিতে আদাড় গেথে

শিকার করেছি কত শত কই,তেলাপিয়া।

নিজেকে আজ সে বর্শির আদাড় মনে হয়।

আমি এখন

আদাড়হীন বর্শি দিয়ে

পুটি শিকারের বৃথা চেষ্টা করি।

সুখের মরুভুমির বুক চিরে

জেগে ওঠা দুঃখের নদীতে

স্রোতের বিপরীতে সাতার কাটি।

ভাদ্রের সকালে

পাতার বাশিতে চুমু দিয়ে বিরহের সূর তুলি।

পেয়ারা ফুলের গন্ধে

কলাপাতার শরীরে হাত বুলাই।

বিশুদ্ধ বাতাশের তৃষ্ণায়

দখিনদ্বাড়ে শীতলপাটির পসরা সাজাই।

দূর থেকে ভেসে আসা পাতিহাসের ডাক শুনি।

কচুপাতার বুকে আছড়ে পরে

নিঃশব্দে গড়িয়ে পরা

আশ্রয়হীন বৃষ্টির ফোটাকে

তালুবন্দী করি।

শীমের লতার ডগায়

চুপচাপ বসে থাকা প্রজাপতীর রঙীন পাখা থেকে

হরেক রকমের রঙ তুলে

স্বপ্নহীন চোখে রঙীন আভা ছড়াই।

আর

নিশ্চুপ ভালবেসে

ঢেউহীন পুকুরের সাদামাটা জলে

রঙীন কাগজের নৌকা ভাসাই।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.