নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাধবী

মাধবী

মাধবী › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুকুমার রায় ছড়াবলী -01

১৫ ই মে, ২০০৬ বিকাল ৩:২৮

সম্পাদকের দশা -সুকুমার রায়



সম্পাদকীয় _

একদা নিশীথে এক সম্পাদক গোবেচারা ।

পোঁটলা পুঁটুলি বাঁধি হইলেন দেশছাড়া

অনাহারী সম্পাদকী হাড়ভাঙ্গা খাটুনি সে।

জানে তাহা ভুক্তভোগী অপরে বুঝিবে কিসে?

লেখক পাঠক আদি সকলেরে দিয়া ফাঁকি।

বেচারি ভাবিল মনে- বিদেশে লুকায়ে থাকি।

এদিকে ত ক্রমে ক্রমে বৎসরেক হল শেষ।

'নোটিশ' পড়িল কত 'সম্পাদক নিরুদ্দেশ'

লেখক পাঠকদল রুষিয়া কহিল তবে।

জ্যান্ত হোক মৃত হোক ব্যাটারে ধরিতে হবে

বাহির হইল সবে শব্দ করিচ্ 'মার মার' ।

_দৈবের লিখন, হায় খন্ডাইতে সাধ্য কার

একদা কেমনে জানি সম্পাদক মহাশয়।

পড়িলেন ধরা _ আহা দুরদৃষ্ট অতিশয়

তারপরে কি ঘটিল কি করিল সম্পাদক ।

সে সকল বিবরনে নাহি তত আবশ্যক

মোট কথা হতভাগ্য সম্পাদক অবশেষে।

বসিলেন আপনার প্রাচীন গদিতে এসে

(অর্থাৎ লেখকদল লাঠ্যৌষধি শাসনেতে।

বসায়েছে তার পুনঃ সম্পাদকী আসনেতে।)

ঘুচে গেছে বেচারীর নিক সে শান্তি সুখ।

লেখকের তাড়া খেয়ে সদা তার শুস্কমুখ

দিস্তা দিস্তা পদ্য পদ্য দর্শন সাহিত্য পড়ে।

পুনরায় বেচারির নিত্যি নিত্যি মাথা ধরে

লোলচর্ম অস্থি সার জীর্ণ বেশ রুকেশ।

মুহুর্ত সোয়াস্তি নাই _লাঞ্ছনার নাহি শেষ

মন্তব্য ৪৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই মে, ২০০৬ রাত ১০:০৫

মাধবী বলেছেন: ভালরে ভাল -সুকুমার রায়

দাদা গো! দেখ্ছি ভেবে অনেক দূর_
এই দুনিয়ার সকল ভাল,
আসল ভাল নকল ভাল,
সস্তা ভাল দামীও ভাল,
তুমিও ভাল আমিও ভাল,
হেথায় গানের ছন্দ ভাল,
হেথায় ফুলের গন্ধ ভাল,
মেঘ-মাখানো আকাশ ভাল,
ঢেউ- জাগানো বাতাস ভাল,
গ্রীষ্ম ভাল বষর্া ভাল,
ময়লা ভাল ফরসা ভাল,
পোলাও ভাল কোমর্া ভাল,
মাছপটোলের দোলমা ভাল,
কাঁচাও ভাল পাকাও ভাল,
সোজাও ভাল বাঁকাও ভাল,
কাঁসিও ভাল ঢাকও ভাল,
টিকিও ভাল টাক্ও ভাল,
ঠেলার গাড়ী ঠেলতে ভাল,
খাস্তা লুচি বেলতে ভাল,
গিট্কিরি গান শুনতে ভাল,
শিমুল তুলো ধুনতে ভাল,
ঠান্ডা জলে নাইতে ভাল।
কিন্তু সবার চাইতে ভাল_
পাঁউরুটি আর ঝোলা গুড়।

২| ১৫ ই মে, ২০০৬ রাত ১০:০৫

মাধবী বলেছেন: সৎপাত্র -সুকুমার রায়

শুন্তে পেলুম পোস্তা গিয়ে_
তোমার নাকি মেয়ের বিয়ে?
গঙ্গারামকে পাত্র পেলে?
জান্তে চাও সে কেমন ছেলে?
মন্দ নয়, সে পাত্র ভাল_
রঙ যদিও বেজায় কালো;
তার উপরে মুখের গঠন
অনেকটা ঠিক প্যাঁচার মতন।
বিদ্যে বুদ্ধি? বল্ছি মশাই_
ধন্যি ছেলের অধ্যবসায়!
উনিশটি বার ম্যাট্টিকে সে
ঘায়েল হ'য়ে থামল শেষে।
বিষয় আশয় ? গরীব বেজায়_
কষ্টে- সৃষ্টে দিন চলে যায়।
মানুষ ত নয় ভাইগুলো তার_
একটা পাগল একটা গোঁয়ার ;
আরেকটি সে তৈরি ছেলে,
জাল করে নোট গেছেন জেলে।
কনিষ্ঠটি তবলা বাজায়
যাত্রাদলে পাঁচ টাকা পায়।
গঙ্গারাম ত কেবল ভোগে
পিলের জ্বর আর পান্ডু রোগে।
কিন্তু তারা উচ্চ ঘর,
কংসরাজের বংশধর!
শ্যাম লাহিড়ী বনগ্রামের
কি যেন হয়ে গঙ্গারামের ।
যাহোক্, এবার পাত্র পেলে,
এমন কি আর মন্দ ছেলে?

৩| ১৫ ই মে, ২০০৬ রাত ১০:০৫

মাধবী বলেছেন: আবোল তাবোল -সুকুমার রায়

আয়রে ভোলা খেয়াল - খোলা
স্বপনদোলা নাচিয়ে আয়,
আয়রে পাগল আবোল তাবোল
মত্ত মাদল বাজিয়ে আয়।
আয় যেখানে খ্যাপার গানে
নাইকো মনে নাইকো সুর।
আয়রে যেথায় উধাও হাওয়ায়
মন ভেসে যায় কোন্ সুদূর।
আয় খ্যাপা-মন ঘুচিয়ে বাঁধন
জাগিয়ে নাচন তাধি্ন ধিন্ ,
আয় বেয়াড়া সৃষ্টিছাড়া
নিয়মহারা হিসাব্হীন।
আজগুবি চাল্ বেঠিক বেতাল
মাতবি মাতাল রঙ্গেতে_
আয়রে তবে ভুলের ভাবে
অসম্ভবের ছন্দেতে।

৪| ১৫ ই মে, ২০০৬ রাত ১০:০৫

মাধবী বলেছেন: খিচুড়ি - সুকুমার রায়

হাঁস ছিল, সজারু, (ব্যাকরণ মানি না),
হয়ে গেলে "হাঁসজারু" কেমনে তা জানি না।
বক কহে কচ্ছপে_ "বাহবা কি ফুর্তি!
অতি খাসা আমাদের বকচ্ছপ মূর্তি।"
টিয়ামুখো গিরগিটি মনে ভারি শঙ্কা _
পোকা ছেড়ে শেষে কিগো খাবে কাঁচা লঙ্কা?
ছাগলের পেটে ছিল না জানি কি ফন্দি,
চাপিল বিছার ঘাড়ে, ধড়ে মুড়ো সন্ধি!
জিরাফের সাধ নাই মাঠে ঘাটে ঘুরিতে,
ফড়িঙের ঢং ধরি, সেও চায় উড়িতে।
গরু বলে, আমারেও ধরিলো কি ও রোগে?
মোর পিছে লাগে কেন হতভাগা মোরগে?
হাতিমির দশা দেখ , _ তিমি ভাবে জলে যাই,
হাতি বলে , "এই বেলা জঙ্গলে চল ভাই"।
সিংহের শিং নেই , এই তার কষ্ট_
হরিণের সাথে মিলে শিং হল পষ্ট।

৫| ১৫ ই মে, ২০০৬ রাত ১০:০৫

মাধবী বলেছেন: কাঠবুড়ো -সুকুমার রায়

হাঁড়ি নিয়ে দাড়িমুখো কে যেন কে বৃদ্ধ,
রোদে বসে চেটে খায় ভিজে কাঠ সিদ্ধ।
মাথা নেড়ে গান করে গুন গুন সংগীত_
ভাব দেখে মনে হয় না জানি কি পন্ডিত!

বিড়্ বিড়্ কি যে বকে নাহি তার অর্থ-
"আকাশেতে ঝূল ঝোলে, কাঠে তাই গর্ত।"
টেকো মাথা তেতে ওঠে গায়ে ছোটে ঘর্ম
রেগে বলে , "কেবা বোঝে এ সবের মর্ম?

আরে মোলো, গাধাগুলো একেবারে অন্ধ,
বোঝেনাকো কোন কিছু খালি করে দ্বন্ধ।
কোন্ কাঠে কত রস জানে নাকো তত্ত্ব_
একাদশী রাতে কেন কাঠে হয় গর্ত?"

আশে পাশে হিজি বিজি আঁকে কত অঙ্ক_
ফাটা কাঠ ফুটো কাঠ হিসাব অসংখ্য;
কোন ফুটো খেতে ভাল, কোনটা বা মন্দ,
কোন্ কোন্ ফাটলের কি রকম গন্ধ।

কাঠে কাঠে ঠুকে করে ঠকাঠক শব্দ,
বলে, "জানি কোন্ কাঠ কিসে হয় জব্দ।
কাঠকুটো ঘেঁটেঘুঁটে জানি আমি পষ্ট,
এ কাঠের বজ্জাতি কিসে হয় নষ্ট।

কোন্ কাঠ পোষ মানে, কোন্ কাঠ শান্ত,
কোন্ কাঠ টিম্টিমে, কোন্টা বা জ্যান্ত।
কোন কাঠে জ্ঞান নাই মিথ্যা কি সত্য,
আমি জানি কোন্ কাঠে কেন থাকে গর্ত।"

৬| ১৫ ই মে, ২০০৬ রাত ১০:০৫

মাধবী বলেছেন: বাবুরাম সাপুড়ে -সুকুমার রায়

বাবুরাম সাপুড়ে,
কোথা যাস্ বাপুরে?
আয় বাবা দেখে যা,
দুটো সাপ রেখে যা!
যে সাপের চোখ্ নেই,
শিং নেই নোখ্ নেই,
ছোটে না কি হাঁটে না,
কাউকে যে কাটে না,
করে নাকো ফোঁস্ ফোঁস্,
মারে নাকো ঢুঁশ্ঢাঁশ,
নেই কোন উৎপাত,
খায় শুধু দুধ ভাত_
সেই সাপ জ্যান্ত
গোটা দুই আনত?
তেড়ে মেরে ডান্ডা
করে দিই ঠান্ডা।

৭| ১৫ ই মে, ২০০৬ রাত ১০:০৫

মাধবী বলেছেন: বুড়ীর বাড়ী -সুকুমার রায়

গালভরা হাসিমুখে চালভাজা মুড়ি,
ঝুর্ঝুরে পড়ো ঘরে থুর থুরে বুড়ী।
কাঁথাভরা ঝুলকালি, মাথাভরা ধলো,
মিট্মিটে ঘোলা চোখ, পিঠখানা কুলো।
কাঁটা দিয়ে আঁটা ঘর _ আঠা দিয়ে সেঁটে,
সুতো দিয়ে বেঁধে রাখে থুতু দিয়ে চেটে।
ভর দিতে ভয় হয় ঘর বুঝি পড়ে,
খ্কখক্ কাশি দিলে ঠ্কঠক্ নড়ে।
ডাকে যদি ফিরিওলা হাঁকে যদি গাড়ি,
খসে পড়ে কড়িকাঠ ধসে পড়ে বাড়ী।
বাঁকাচোরা ঘরদোর ফাঁকা ফাঁকা কত,
ঝাঁট দিলে ঝ'রে পড়ে কাঠকুটো যত।
ছাদ গুলো ঝুলে পড়ে বাদ্লায় ভিজে,
একা বুড়ি কাঠী গুজে ঠেকা দেয় নিজে।
মেরামত দিন রাত কেরামত ভারি,
থুর্থুরে বুড়ী তার ঝর্ঝুরে বাড়ী।

৮| ১৫ ই মে, ২০০৬ রাত ১০:০৫

মাধবী বলেছেন: শব্দ কল্প দু্রম্-সুকুমার রায়

ঠাস্ ঠাস্ দ্রুম্ দ্রাম্, শুনে লাগে খট্কা_
ফুল ফোটে? তাই বল! আমি ভাবি পটকা!
শাঁই শাঁই পন্পন্ ভয়ে কান্ বন্ধ_
ওই বুঝি ছুটে যায় সে-ফুলের গন্ধ?
হুড়মুড় ধুপ্ধাপ_ ওকি শুনি ভাই রে!
দেখ্ছ না হিম পড়ে _ যেওনাকো বাইরে।
চুপ্ চুপ্ ঐ শোন! ঝুপ্ঝাপ্ ঝ-পাস্!
চাঁদ বুঝি ডুবে গেলে?_ গব্ গব্ গবা-স!
খঁ্যাশ্ খঁ্যাশ্ ঘঁ্যাচ্ ঘঁ্যাচ্, রাত কাটে ঐরে!
দুড়্ দাড়্ চুরমার _ ঘুম ভাঙে কই রে!
ঘর্ঘর ভন্ভন্ ঘোরে কত চিন্তা!
কত মন নাচে শোন্_ ধেই ধেই ধিন্তা!
ঠুংঠাং ঢংঢং, কত ব্যথা বাজে রে_
ফট্ফট্ বুুক ফাটে তাই মাঝে মাঝে রে!
হৈ হৈ মার্ মার্, বাপ্ বাপ্ চীৎকার_
মালকোঁচা মারে বুঝি? সারে পড়্ এইবার।

৯| ১৫ ই মে, ২০০৬ রাত ১০:০৫

মাধবী বলেছেন: গোঁফচুরি -সুকুমার রায়

হেড্ আফিসের বড় বাবু লোকটি বড় শান্ত,
তার যে এমন মাথায় ব্যামো কেউ কখনো জান্ত?
দিব্যি ছিলেন খোস্মেজাজে চেয়ারখানি চেপে,
একলা ব'সে ঝিম্ঝিমিয়ে হঠাৎ গেলেন েেপ!
আৎঁকে উঠে হাতে পা ছুঁড়ে চোখ্টি ক'রে গোল
হঠাৎ বলেন, "গেলুম গেলুম, আমায় ধ'রে তোল"!
তাই শুনে কেউ বদ্যি ডাকে , কেউ বা হাঁকে পুলিশ,
কেউবা বলে, "কাম্ড়ে দেবে সাবধানেতে তুলিস।
ব্যস্ত সবাই এদিক ওদিক কর্ছে ঘোরাঘুরি_
বাবু হাঁকেন, "ওরে আমার গোঁফ গিয়েছে চুরি"।
গোঁফ্ হারান! আজব কথা ! তাও কি হয় সত্যি?
গোফ জোড়া ত তেমনি আছে, কমেনি এক রত্তি!
সবাই তাঁরে বুঝিয়ে বলে, সামন্ ধে;'রে আয়না,
মোটেও গোঁফ হয়নি চুরি, কনো তা হয় না।

রেগে আগুন তেলে রেগুন, তেড়ে বলেন তিনি,
"কারো কথার ধার ধারিনে, সব ব্যাটাকেই চিনি।
নোংরা ছাঁটা খ্যাংরা ঝাঁটা বিচ্ছিরি আর ময়লা,
এমন গোফ ত রাখ্তে জানি শ্যামবাবুদের গয়লা।
এ গোঁফ যদি আমার বলিস কর্ব তোদের জবাই"_
এই না ব'লে জরিমানা কল্লেন তিনি সবায়।
ভীষণ রেগে বিষম খেয়ে দিলেন লিখে খাতায়_
"কাউকে বেশি লাই দিতে নেই, সবাই চড়ে মাথায়।
আফিসের এই বাঁদরগুলো, মাথায় খালি গোবর
গোঁফ জোড়া যে কোথায় গেলে কেউ রাখে না খবর।
ইচ্ছে করে এই ব্যাটাদের গোঁফ ধরে খুব নাচি,
মুখু্যগুলোর মুন্ড ধ'রে কোদাল দিয়ে চাঁচি।
গোঁফকে বলে তোমার আমার _ গোঁফ কি কারো কেনা?
গোঁফের আমি গোফের তুমি, তাই দিয়ে যায় চেনা।"

১০| ১৫ ই মে, ২০০৬ রাত ১০:০৫

মাধবী বলেছেন: সন্দেশ - সুকুমার রায়

সন্দেশের গন্ধে বুঝি দৌড়ে এল মাছি?
কেন ভন্ ভন্ হাড় জ্বালাতন ছেড়ে দেওনা বাঁচি!
নাকের গোড়ায় সুড়সুড়ি দাও শেষটা দিবে ফাঁকি?
সুযোগ বুঝে সুড়ুৎ করে হুল ফোটাবে নাকি?

১১| ১৫ ই মে, ২০০৬ রাত ১০:০৫

মাধবী বলেছেন: বিষম ভোজ - সুকুমার রায়

অবাক কান্ড! বললে পিসী, এক চাঙাড়ি মেঠাই এল_
এই ছিল সব খাটের তলায়, এক নিমিষে কোথায় গেল?
সত্যি বটে বললে খুড়ী আনলো দুসের মিঠাই কিনে_
হঠাৎ কোথায় উপসে গেল? ভেলি্কবাজি দুপুর দিনে?
দাঁড়াও দেখি বললে দাদা কর্ছি আমি এর কিনারা_
কোথায় গেল পটলা টঁ্যাপা _ পাচ্ছিনে যে তাদের সাড়া?
পদর্াঘেরা আড়াল দেওয়া বারান্দাটার ঐ কোণেতে
চলছে কি সব ফিস্ ফি্স ফিস্ শুনলে দাদা কানটি পেতে।
পটলা ট্যাঁপা ব্যস্ত দুজন ট্পটপা্টপ মিঠাই ভোজে,
হঠাৎ দেখে কার দুটো হাত এগিয়ে তাদের কানটি খোঁজে।
কানের ্উপর প্যাঁচ ঘুরাতেই দু চোখ বেয়ে অশ্রু ছোটে,
গিলবে কি ছাই মুখের মিঠাই ,কান বুঝি যায় টানের চোটে।
পটল বাবুর হোম্রা গলা মিল্ল ট্যাঁপার চিকন সুরে
জাগ্ল করুন রাগরাগিণী বিকট তানে আকাশ জুড়ে।

১২| ১৫ ই মে, ২০০৬ রাত ১০:০৫

হযবরল বলেছেন: কি হে মন্তব্য কি অশালীন ছিলো মুছে ফেললেন যে ?

১৩| ১৫ ই মে, ২০০৬ রাত ১০:০৫

মাধবী বলেছেন: দুঃখিত হ য ব র ল। পোস্টটাকে নতুন ভাবে সাজাচ্ছি। তাই আগের মন্তব্যগুলো অপ্রাসংগিক হয়ে গিয়েছিল। এখন যত খুশি মন্তব্য করুন ।

১৪| ১৫ ই মে, ২০০৬ রাত ১০:০৫

মাধবী বলেছেন: ও বাবা ! -সুকুমার রায়

পড়তে বসে মুখের পরে কাগজ খানি থুয়ে
রমেশ ভায়া ঘুমোয় পড়ে আরাম করে শুয়ে।
শুনছ নাকি ঘড়র ঘড়র নাক ডাকার ধুম?
সখ যে বড় বেজায় দেখি দিনের বেলায় ঘুম!
বাতাস পোরা এই যে থলি দেখছ আমার হাতে,
দুড়ম করে পিটলে পরে শব্দ হবে তাতে।
রমেশ ভায়া আতকে উঠে পড়বে কুপোকাৎ
লাগাও তবে _ধুম ধাড়াক্কা ! ক্যাবাৎ! ক্যাবাৎ!
ও বাবারে এ কেরে ভাই ! মারবে নাকি চাটি?
আমি ভাবছি রমেশ বুঝি ! সব করেছে মাটি!
আবার দেখ চোখ পাকিয়ে আসছে আমায় তেড়ে,
আর কেন ভাই ? দৌড়ে পালাই , প্রানের আশা ছেড়ে!

১৫| ১৫ ই মে, ২০০৬ রাত ১০:০৫

মাধবী বলেছেন: 'ভাল ছেলের' নালিশ -সুকুমার রায়

মাগো! প্রসনটা দুষ্টু এমন! খাচ্ছিল সে পরোটা
গুড় মাখিয়ে আরাম ক'রে বসে _
আমায় দেখে একটা দিল ,নয়কো তাও বড়টা,
দুইখানা সেই আপনি খেল ক'ষে!
তাইতে আমি কান ধরে তার একটুখানি পেঁচিয়ে
কিল মেরেছি 'হ্যাংলা ছেলে' বলে_
অমনি কিনা মিথ্যা করে ষাঁড়ের মত চেচিয়ে
গেল সে তার মায়ের কাছে চলে!
মাগো! এমনিধারা শয়তানি তার, খেলতে গেলাম দুপুরে,
বলল এখন খেলতে আমার মানা _
ঘন্টাখানেক পরেই দেখি দিব্যি ছাতের উপরে
ওড়াচ্ছে তার সবুজ ঘুড়ি খানা।
তাইতে আমি দৌড়ে গিয়ে ঢিল মেরে আর খুচিঁয়ে
ঘুড়ির পেটে দিলাম করে ফুটো_
আবার দেখ বুক ফুলিয়ে সটান মাথা উচিয়ে
আনছে কিনে নতুন ঘুড়ি দুটো!

১৬| ১৫ ই মে, ২০০৬ রাত ১১:০৫

হযবরল বলেছেন: ভালো , সুকুমারের সব কবিতা এক পোস্টে নিয়ে আসেন । যখন ইচ্ছা তখন পড়তে পারব।

১৭| ১৫ ই মে, ২০০৬ রাত ১১:০৫

মাধবী বলেছেন: খোকার ভাবনা -সুকুমার রায়

মোমের পুতুল লোমের পুতুল আগ্লে ধরে হাতে
তবুও কেন হাব্লা ছেলের মন ওঠে না তাতে?
একলা জেগে একমনেতে চুপ্টি করে বসে
আনমনা সে কিসের তরে আঙুলখানি চোষে?
নাইকো হাসি নাইকো খেলা নাইকো মুখে কথা,
আজ সকালে হাব্লাবাবুর মন গিয়েছে কোথা?
ভাবছে বুঝি দুধের বোতল আসছে নাকো কেন?
কিংবা ভাবে মায়ের কিসে হচ্ছে দেরী হেন।
ভাবছে এবার দুধ খাবে না, কেবল খাবে মুড়ি,
দাদার সাথে কোমর বেঁধে করবে হুড়োহুড়ি
ফেলবে ছুঁড়ে চামচটাকে পাশের বাড়ির চালে,
না হয় তেড়ে কামড়ে দেবে দুষ্ট দাদুর গালে।
কিংবা ভাবে একটা কিছু ঠুক্তে যদি পেতো_
পুতুলটাকে করত ঠুকে এক্কেবারে থেঁতো।

১৮| ১৫ ই মে, ২০০৬ রাত ১১:০৫

মাধবী বলেছেন: আনন্দ - সুকুমার রায়

যে আনন্দ ফুলের বাসে,
যে আনন্দ পাখির গানে,
যে আনন্দ অরুণ আলোয়,
যে আনন্দ শিশুর প্রাণে,
যে আনন্দ বাতাস বহে,
যে আনন্দ সাগরজলে,
যে আনন্দ ধুলির কণায়,
যে আনন্দ তৃণের দলে,
যে আনন্দ আকাশ ভরা ,
যে আনন্দ তারায় তারায়,
যে আনন্দ সকল সুখে,
যে আনন্দ রক্তধারায়
সে আনন্দ মধুর হয়ে
তোমার প্রাণে পড়ুক ঝরি,
সে আনন্দ আলোর মত
থাকুক তব জীবন ভরি।

১৯| ১৫ ই মে, ২০০৬ রাত ১১:০৫

মাধবী বলেছেন: বন্দনা -সুকুমার রায়

নমি সত্য সনাতন নিত্য ধনে,
নমি ভক্তিভরে নমি কায়েমনে।
নমি বিশ্বচরাচর লোকপতে
নমি সর্বজনাশ্রয় সর্বগতে।
নমি সৃষ্টি-বিধারণ শক্তিধরে,
নমি প্রাণপ্রবাহিত জীব জড়ে।
তব জ্যেতিবিভাসিত বিশ্বপটে
মহাশুন্যতলে তব নাম রটে।
কত সিন্ধুতরঙ্গিত ছন্দ ভরে
কত স্তব্ধ হিমাচল ধ্যান করে।
কত সৌরভ সঞ্চিত পুষ্পদলে
কত সূর্য বিলুন্ঠিত পাদতলে।
কত বন্দনঝকৃত ভক্তচিতে
নমি বিশ্ব বরাভয় মৃতু্যজিতে।

২০| ১৫ ই মে, ২০০৬ রাত ১১:০৫

মাধবী বলেছেন: বিচার - সুকুমার রায়

ইঁদুর দেখে মাম্দো ককুর বল্লে তেড়ে হেঁকে_
"বলব কি আর, বড়ই খুশি হলেম তোরে দেখে।
আজকে আমার কাজ কিছু নেই, সময় আছে মেলা,
আয় না খেলি দুইজনাতে মোকদ্দমা খেলা ।
তুই হবি চোর তোর নামেতে করব নালিশ ওুজু"_
"জজ্ কে হবে?" বল্লে ইঁদুর ,বিষম ভয়ে জুজু,
"কোথায় উকিল প্যায়দা পুলিশ , বিচার কিসে হবে?"
মাম্দো বলে "তাও জানিসনে ? শোন বলে দেই তবে!
আমিই হব উকিল হাকিম , আমিই হব জুরি,
কান ধরে তোর বলব ব্যাটা , ফের করেছিস চুরি?
সটান দেব ফাসির হুকুম অমনি একেবারে_
বুঝবি তখন চোর বাছাধন বিচার বলে কারে।"

২১| ১৬ ই মে, ২০০৬ রাত ১২:০৫

মাধবী বলেছেন: কুমড়ো পটাশ - সুকুমার রায়

(যদি) কুম্ড়োপটাশ নাচে_
খবরদার এসো না কেউ আস্তাবলের কাছে ;
চাইবে নাকো ডাইনে বাঁয়ে চাইবে নাকো পাছে;
চার পা তুলে থাকবে ঝুলে হট্টমূলার গাছে।

(যদি) কু্ম্ড়োপটাশ কাঁদে_
খবরদার! খবরদার! বসবে না কেউ ছাদে।
উপুড় হয়ে মাচায় শুয়ে লেপ কম্বল কাঁধে:
বেহাগ সুরে গাইবে খালি রাধে কৃষ্ণ রাধে'।

(যদি) কু্ম্ড়োপটাশ হাসে_
থাকবে খাড়া একটি ঠ্যাঙে রান্নাঘরের পাশে;
ঝাপসা গলায় ফার্সি ক'বে নিশ্বাসে ফিস্ফাসে;
তিনটি বেলা উপোস করে থাকবে শুয়ে ঘাসে!

(যদি) কুম্ড়োপটাশ ছোটে_
সবাই যেন তড়বড়িয়ে জানলা বেয়ে ওঠে;
হুঁকোর জলে আলতা গুলে লাগায় গালে ঠোঁটে;
ভুলেও যেন আকাশ পানে তাকায় না কেউ মোটে!

(যদি) কুমড়োপটাশ ডাকে_
সবাই যেন শামলা এঁটে গামলা চড়ে থাকে;
ছেঁচকি শাকের ঘন্ট বেটে মাথায় মলম মাখে;
শক্ত ইঁটের তপ্ত ঝামা ঘষতে থাকে নাকে!

তুচ্ছ ভেবে এ-সব কথা করছে যারা হেলা,
কু্ম্ড়োপটাশ জানতে পেলে বুঝবে তখন ঠেলা।
দেখবে তখন কোন্ কথাটি কেমন করে ফেলে,
আমায় তখন দোষ দিও না, আগেই রাখি বলে।

২২| ১৬ ই মে, ২০০৬ রাত ১২:০৫

মাধবী বলেছেন: প্যাঁচা আর প্যাঁচানি -সুকুমার রায়

প্যাঁচা কয় প্যাঁচানি,
খাসা তোর চ্যাঁচানি!
শুনে শুনে আন্মন
নাচে মোর প্রাণমন!
মাজা-গলা চাঁচা সুর
আহাদে ভরপুর!
গলা-চেরা গমকে
গাছ পালা চমকে,
সুরে সুরে কত পঁ্যাচ
গিট্কিরি ক্যাঁ্চকঁ্াচ!
যত ভয় যত দুখ
দুরু দুরু ধু্ক্ ধুক্,
তোর গানে পেঁচি রে
সব ভূলে গেছি রে_
চাঁদ মুখে মিঠে গান
শুনে ঝরে দু'নয়ান।

২৩| ১৬ ই মে, ২০০৬ রাত ১২:০৫

মাধবী বলেছেন: চোর ধরা -সুকুমার রায়

আর ছি ছি! রাম রাম! ব'লো না হে ব'লো না_
চলছে যা জুয়াচুরি , নাহি তার তুলনা।
যেই আমি দেই ঘুম টিফিনের আগেতে,
ভয়ানক ক'মে যায় খাবারের ভাগেতে ।
রোজ দেখি খেয়ে গেছে, জানিনেকো কারা সে_
কালকে যা হ'য়ে গেল ডাকাতির বাড়া সে!
পাঁচ খানা কাট্লেট্, লুচি তিন গন্ডা,
গোটা দুই জিবে গজা ,গুটি দুই মন্ডা,
আরো কত ছিল পাতে আলু ভাজা ঘুঙ্নি_
ঘুম থেকে উঠে দেখি পাতখানা শুন্যি!
তাই আজ েেপ গেছি_কত আর পার্ব ?
এতদিন স'য়ে স'য়ে এই বারে মারব।
খাড়া আছি সারাদিন হুসিয়ার পাহারা ,
দেখে নেব রোজ রোজ খেয়ে যায় কাহারা।
রামু হও দামু হও , ও পাড়ার ঘোষ বোস_
যেই হও এই বারে থেমে যাবে ফোঁস্ ফোঁস্।
খাট্বে না জারিজুরি আঁট্বে না মার প্যাঁচ্,
যারে পাব ঘাড়ে ধ'রে কেটে দেব ঘ্যাঁচ ঘ্যাঁচ্
এই দেখ ঢাল নিয়ে খাড়া আছি আড়ালে,
এই বারে টের পাবে মুন্ডুটা বাড়ালে।
রোজ বলি "সাবধান" কানে তবু যায় না?
ঠেলাখানা বুঝবি ত এইবারে আয় না!

২৪| ১৬ ই মে, ২০০৬ রাত ১২:০৫

অতিথি বলেছেন: মাধবী জটিল একটা কাজ করেছেন...
সুকুমার রায়ের এই কবিতাগুলো আমার খূবই প্রিয় ছিল ছোট বেলায়.. অনেকদিন পর আবার পড়লাম...
অনেকগুলো ধন্যবাদ একসাথে নিন। :)

২৫| ১৬ ই মে, ২০০৬ রাত ১:০৫

অতিথি বলেছেন: মাধবী, আপনার জন্য 21 টি ধন্যবাদ। অদ্ভুত পোষ্ট, দারুন সংগ্রহ।

২৬| ১৬ ই মে, ২০০৬ রাত ১:০৫

অতিথি বলেছেন: এটাকে আমার পার্সোনাল ওয়েবের কিডস সেকশানে রাখব ভাবছি.. :)
মাধবী কি বলেন? কোন সমস্যা আছে?

২৭| ১৬ ই মে, ২০০৬ রাত ১:০৫

মাধবী বলেছেন: একে তো নাচুনে বুড়ি
তায় পড়েছে ঢোলের বাড়ি,
সুকুমার প্রেমিকদের মন্তব্যে মুগ্ধ আমি
দেথি আর কি করতে পারি.....

২৮| ১৬ ই মে, ২০০৬ রাত ১:০৫

মাধবী বলেছেন: খুড়োর কল -সুকুমার রায়

কল করেছেন আজব রকম চন্ডীদাসের খুড়ো_
সবাই শুনে সাবাস্ বলে পাড়ার ছেলে বুড়ো।
খুড়োর যখন অল্প বয়স _ বছর খানকে হবে_
উঠ্লো কেঁদে "গুংগা' ব'লে ভীষণ অট্টরবে।
আর তো সবাই "মামা' গাগা' আবোল তাবোল বকে,
খুড়োর মুখে 'গুংগা' শুনে চমকে গেল লোকে।
বল্লে সবাই, "এই ছেলেটা বাঁচলে পরে তবে,
বুদ্ধি জোরে এ সংসারে একটা কিছু হবে।"
সেই খুড়ো আজ কল করেছেন আপন বুদ্ধি বলে,
পাঁচ ঘন্টার রাস্তা যাবে দেড় ঘন্টায় চলে।
দেখে এলাম কলটি অতি সহজ এবং সোজা,
ঘন্টা পাঁচেক ঘাঁট্লে পরে আপনি যাবে বোঝা।
বল্ব কি আর কলের ফিকির, বলতে না পাই ভাষা,
ঘাড়ের সঙ্গে যন্ত্র জুড়ে এক্কেবারে খাসা।

সামনে তাহার খাদ্য ঝোলে যার যে রকম রুচি_
মন্ডা মিঠাই চপ্ কাট লেট্খাজা কিংবা লুচি।
মন বলে তায় 'খাব খাব' মুখ চলে যায় তায় খেতে,
মুখের সঙ্গে খাবার ছোটে পাল্লা দিয়ে মেতে।
এমনি করে লোভের টানে খাবার পানে চেয়ে,
উৎসাহেতে হুঁস্ রবে না চলবে কেবল ধেয়ে।
হেসে খেলে দু'দশ যোজন চলবে বিনা কেশে,
খাবার গন্ধে পাগল হ'য়ে জিভের জলে ভেসে।
সবাই বলে সমস্বরে ছেলে জোয়ান বুড়ো,
অতুল কর্ীির্ত রাখল ভবে চন্ডীদাসের খুড়ো।

২৯| ১৬ ই মে, ২০০৬ রাত ১:০৫

মাধবী বলেছেন: গানের গুঁতো -সুকুমার রায়

গান জুড়েছেন গ্রীস্মকালে ভীস্মলোচন র্শমা_
আওয়াজখানা দিচ্ছে হানা দিলি্ল থেকে র্বমা!
গাইছে ছেড়ে প্রানের মায়া ,গাইছে তেড়ে প্রানপন,
ছুটছে লোকে চার দিকেতে ঘুরছে মাথা ভন্ ভন।

মর্ছে কত জখম হয়ে কর্ছে কত ছট্ফট্_
বলছে হেঁকে "প্রানটা গেল গানটা থামাও ঝট্ পট্ ।"
বাঁধন ছেঁড়া মহিষ ঘোড়া পথের ধারে চিৎপাত ।
ভীষ্মলোচন গাইছে তেড়ে নাইকো তাহে দৃক্পাত।

চার পা তুলি জন্তু গুলি পড়ছে বেগে মুর্ছায়,
লাঙ্গুল খাড়া পাগল পারা বল্ছে রেগে দূর ছাই।
জলের প্রাণী অবাক মানি গভীর জলে চুপ চাপ,
গাছের বংশ হ'চ্ছে ধ্বংস পড়্ছে দেদার ঝুপ ঝাপ্।

শুন্য মাঝে ঘূণর্া লেগে ডিগবাজি খায় পী,
সবাই হাঁকে , "আর না দাদা , গানটা থামাও লক্ষ্মী।"
গানের দাপে আকাশ কাঁপে দালান ফাটে বিলকুল ্
ভীষ্মলোচন গাইছে ভীষণ খোস্ মেজাজে দিল্ খুল্।
এক যে ছিল পাগলা ছাগল , এম্নি সেটা ওস্তাদ,
গানের তালে শিং বাগিয়ে মারলে গুঁতো পশ্চাৎ।
আর কোথা যায় একটি কথায় গানের মাথায় ডান্ডা
'বাপরে' ব'লে ভীস্ম লোচন এক্কেবারে ঠান্ডা।

৩০| ১৬ ই মে, ২০০৬ রাত ১:০৫

মাধবী বলেছেন: ছায়া বাজি - সুকুমার রায়

আজগুবি নয়, আজগুবি নয়,সত্যি কারের কথা _
ছায়ার সাথে কুস্তি করে গাত্রে হল ব্যাথা।
ছায়া ধারার ব্যবসা করি তাও জাননা বুঝি?
রোদের ছায়া, চাঁদের ছায়া, হরেক রকম পুঁজি!
শিশির ভেজা সদ্য ছায়া, সকাল বেলায় তাজা,
গ্রীষ্মকালে শুক্নো ছায়া ভীষণ রোদে ভাজা।
চিলগুলো যায় দুপুরে বেলায় আকাশ পথে ঘরে
ফাঁদ ফেলে তার ছায়ার উপর খাঁচায় রাখি পুরে।
কাগের ছায়া বগের ছায়া দেখছি কত ঘেঁটে_
হাল্কা মেঘের পানসে ছায়া তাও দেখ্ছি চেটে।
কেউ জানে না এ সব কথা কেউ বোঝে না কিছু,
কেউ ঘোরে না আমার মত ছায়ার পিছু পিছু।
তোমরা ভাব গাছের ছায়া অম্নি লুটায় ভূয়ে,
অম্নি শুধু ঘুমায় বুঝি শান্ত মতন শুয়ে;
আসল ব্যাপার জান্বে যদি আমার কথা শোনো,
বলছি যা তা সত্যি কথা,সন্দেহ নাই কোনো।
কেউ যবে তার রয় না কাছে ,দেখতে নাহি পায়
গাছের ছায়া ফুটফুটিয়ে এদিক ওদিক চায়।
সেই সময়ে গুড় গুড়িয়ে পিছন হ'তে এসে
ধামায় চেপে ধপাস্ করে ধরবে তারে ঠেসে।
পাৎলা ছায়া ফোকলা ছায়া,ছায়া গভীরকালো_
গাছের চেয়ে গাছের ছায়া সব রকমেই ভালো।
গাছ গাছালি শেকড় বাকল মিথ্যে সবাই গেলে,
বাপরে বলে পালায় ব্যামো ছায়ার ওষুধ খেলে।
নিমের ছায়া ঝিঙের ছায়া তিক্ত ছায়ার পাক,
যেই খাবে ভাই অঘোর ঘুমে ডাক্বে তাহার নাক।
চাঁদের আলোয় পেঁপের ছায়া ধরতে যদি পার,
শুঁকালে পরে সর্দিকাশি থাকবে না আর কারো।
আমড়া গাছের নোংরা ছায়া কামড়ে যদি খায়
ল্যাংড়া লোকের ঠ্যাং গজবে সন্দেহ নাই তায়।
আষাঢ় মাসের বাদ্লা দিনে বাঁচতে যদি চাও,
তেঁতুল তলার তপ্ত ছায়া হপ্তা তিনেক খাও।
মৌয়া গাছের মিষ্টি ছায়া ব্লটিং দিয়ে শুষে
ধুয়ে মুছে সাবানেতে রাখছি ঘরে পুষে!
পাক্কা নতুন টাটকা ওষুধ এক্কেবারে দিশি_
দাম করেছি সস্তা বড়, চোদ্দ আনা শিশি।

৩১| ১৬ ই মে, ২০০৬ রাত ১:০৫

হযবরল বলেছেন: আমি আসার সময় আমার প্রিয় সন্দেশ আনিনি । সন্দেশ থেকে " রাবণ বধ' নাটিকা কি দেওয়া যাবে? কৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ থাকিব।

৩২| ১৬ ই মে, ২০০৬ রাত ২:০৫

মাধবী বলেছেন: ঠিকানা -সুকুমার রায়

আরে আরে জগমোহন _এস ,এস,এস_
বলতে পার কোথায় থাকে আদ্যনাথের মেশো?
আদ্যনাথের নাম শোননি? খগেনকে তো চেনো?
শ্যাম বাগ্চি খগেনেরই মামাশশুর জেনো।
শ্যামের জামাই কেষ্টমোহন, তার যে বাড়ীওলা_
(কি যেন নাম ভুলে গেছি), তারই মামার শালা;
তারই পিশের খড়তুতো ভাই আদ্যনাথের মেশো_
লী দাদা ,ঠিকানা তার একটু জেনে এসো।
ঠিকানা চাও? বল্ছি শোন; আমড়াতলার মোড়ে
তিন _মুখো তিন রাস্তা গেছে তারি একটা ধ'রে,
চলবে সিধে নাক বরাবর ,ডান দিকে চোখ রেখে;
চল্তে চল্তে দেখবে শেষে রাস্তা গেছে বেঁকে।
দেখবে সেথায় ডাইনে বায়ে পথ গিয়াছে কত,
তারি ভিতর ঘুর্বে খানিক গোলকধাধার মত।
তারপরেতে হঠাৎ বেঁকে ডাইনে মোচর মেরে ,
ফিরবে আবার বাঁয়ের দিকে তিন্টে গলি ছেড়ে।
তবেই আবার পড়্বে এসে আমড়া তলার মোড়ে_
তারপরে যাও যেথায় খুশি _ জ্বালিয়ে নাকো মোরে ।

৩৩| ১৬ ই মে, ২০০৬ রাত ২:০৫

মাধবী বলেছেন: কি মুস্কিল -সুকুমার রায়

সব লিখেছে এই কেতাবে দুনিয়ার সব খবর যত,
সরকারী সব অফিস খানার কোন্ সাহেবের কদর কত।
কেমন ক'রে চাটনি বানায়, কেমন ক'রে পোলাও করে,
হরেক্ রকম মুষ্টিযোগের বিধান লিখ্ছে ফলাও করে ,
সাবান কালি দাঁতের মাজন বানাবার সময় সব কায়দাকেতা,
পূজা পর্াবণ তিথির হিসাব শ্রাদ্ববিধি লিখ্ছে হেথা ।
সব লিখেছে, কেবল দেখ পাচিছনেকো লেখা কোথায়_
পাগ্লা ষাঁড়ে কর্লে তাড়া কেমন করে ঠেকাব তায় !

৩৪| ১৬ ই মে, ২০০৬ রাত ২:০৫

মাধবী বলেছেন: হুঁকোমুখো হ্যাংলা -সুকুমার রায়

হুঁকোমুখো হ্যাংলা বাড়ী তার বাঙলা
মুখে তার হাসি নাই ,দেখেছ?
নাই তার মানে কি? কেউ তাহা জানে কি?
কেউ কভু তার কাছে থেকেছ?

শ্যামাদাস মামা তার আপিঙের থানাদার ,
আর তার কেউ নাই এছাড়া_
তাই বুঝি একা সে মুখ খানা ফ্যাকাশে,
ব'সে আছে কাঁদ _কাঁদ বেচারা?

থ্প থ্প পায়ে সে নাচ্ত যে আয়েসে,
গাল ভরা ছিল তার ফুর্তি,
গাইত সে সারাদিন 'সারে গামা টিম্টিম্,
আহাদে গদ-গদ মূর্তি!
এই তো সে দুপু'রে বসে ওই উপরে,
খাচ্ছিল কাঁচকলা চট্কে_
ওর মাঝে হল কি? মামা তার মোলো কি?
অথবা কি ঠ্যাং গেল মট্কে?

হুঁকো মুখো হেঁকে কয়, আরে দূর, তা তো নয়,
দেখ্ছ না কি রকম চিন্তা?
মাছি মারা ফন্দি এ যত ভাবি মন দিয়ে_
ভেবে ভেবে কেটে যায় দিনটা।

বসে যদি ডাইনে, লেখে মোর আইনে_
এই ল্যাজে মাছি মারি এস্ত;
বামে যদি বসে তাও, নাহি আমি পিছপাও,
এই ল্যাজে আছে তার অস্ত্র!

যদি দেখি কোন পাজি বসে ঠিক মাঝামাঝি,
কি যে করি ভেবে নাহি পাইরে_
ভেবে দেখ একি দায়, কোন্ ল্যাজে মারি তায়
দুটি বই ল্যাজ মোর নাই রে!

৩৫| ১৬ ই মে, ২০০৬ রাত ২:০৫

মাধবী বলেছেন: হাতুড়ে -সুকুমার রায়

একবার দেখে যাও ডাক্তারি কেরামৎ_
কাটা ছেঁড়া ভাঙা চেরা চট্পট মেরামৎ
কয়েছেন গুরু মোর, "শোন শোন বৎস,
কাগজের রোগী কেটে আগে কর মক্স"
উৎসাহে কি না হয়? কি না হয় চেষ্টায়?
অভ্যাসে চটপট্ হাত পাকে শেষটায়।
খেটে খুটে জল হ'ল শরীরের রক্ত_
শিখে দেখি বিদ্যেটা নয় কিছু শক্ত।
কাটা ছেঁড়া ঠুক্ ঠাক। কত দেখ যন্ত্র,
ভেঙে চুরে জুড়ে দেই তারও জানি মন্ত্র
চোখ বুজে চটপট বড় বড় মুর্তি,
যত কাটি ঘ্যাঁ্ ঘঁ্যাস্ তত বাড়ে ফুর্তি।
ঠ্যাং- কাটা গলাকাটা কত কাটা হস্ত,
শিরিষের আঠা দিয়ে জুড়ে দেয় চোস্ত।
এইবারে বলি তাই, রোগী চাই জ্যান্ত_
ওরে ভোলা, গোটাছয় রোগী ধরে আন্ত!

গেঁটেবাতে ভুগে মরে ও পাড়ার নন্দী,
কিছুতেই সারাবে না এই তার ফন্দি_
একদিন এনে তারে এইখানে ভুলিয়ে,
গেটেঁবাত ঘেঁটে- ঘুঁটে সব দেব ঘুলিয়ে।
কার কানে কট্মট্ কার নাকে সর্দি,
এস, এস, ভয় কিসে? আমি আছি বদ্যি।
শুয়ে কে রে? ঠ্যাং-ভাঙা? ধরে আন্ এখেনে_
স্ত্রুপ্ দিয়ে এঁটে দিব কি রকম দেখেনে।
গলা ফোলা কাঁদ কেন? দাঁতে বুঝি বেদনা?
এস এস ঠুকে দেই_ আর মিছে কেঁদ না,
এই পাশে গোটা দুই, ওই পাশে তিনটে_
দাঁতগুলো টেনে দেখি_ কোথা গেল চি্মটে?
ছেলে হও, বুড়ো হও, অন্ধ কি পঙ্গু,
মোর কাছে ভেদ নাই, কলেরা কি ডেঙ্গু_
কালাজ্বর, পালাজ্বর, পুরানো কি টাটকা,
হাতুড়ির একঘায়ে একেবারে আট্কা!

৩৬| ১৬ ই মে, ২০০৬ রাত ২:০৫

মাধবী বলেছেন: রামগরুড়ের ছানা -সুকুমার রায়

রামগরুড়ের ছানা হাসতে তাদের মানা,
হাসির কথা শুনলে বলে,
"হাসব্ না_না, না _না"।
সদাই মরে এাসে _ ঐ বুঝি কেউ হাসে!
এক চোখে তাই মিট্মিটিয়ে
তাকায় আশে পাশে।
ঘুম নাহি তার চোখে আপনি বকে বকে
আপনারে কয় , "হা'সিস যদি
মারব কিন্তু তোকে!'
যায় না বনের কাছে , কিম্বা গাছে গাছে ,
দখিন হাওয়ার সুড়সুড়িতে
হাসিয়ে ফেলে পাছে!
সোয়াস্তি নেই মনে _ মেঘের কোণে কোণে
হাসির বাস্প উঠ্ছে ফেঁপে
কান পেতে তাই শোনে।
ঝোপের ধারে ধারে রাতের অন্ধকারে
জোনাক্ জ্বলে আলোর তালে
হাসির ঠারে ঠারে ।
হাসতে হাসতে যারা হচ্ছে কেবল সারা
রামগরুড়ের লাগছে ব্যথা
বুঝছে না কি তারা?
রামগরুড়ের বাসা ধমক দিয়ে ঠাসা,
হাসির হাওয়া বন্ধ সেথায়
নিষেধ সেথায় হাসা।

৩৭| ১৬ ই মে, ২০০৬ রাত ২:০৫

মাধবী বলেছেন: কিম্ভুত -সুকুমার

বিদঘুটে জানোয়ার কিমাকার কিম্ভুত,
সারাদিন ধরে তার শুনি শুধু খুঁৎ খুঁৎ।
মাঠ পারে ঘাট পারে কেঁদে মরে খালি সে,
ঘ্যান্ ঘ্যান আব্দারে ঘন ঘন নালিশে।
এটা চাই সেটা চাই কত তার বায়না _
কি যে চায় তাও ছাই বোঝা কিছু যায়না ।
কোকিলের মত তার কন্ঠেতে সুর চাই,
গলা শুনে আপনার বলে ,"উহু,দুর ছাই!"
আকাশেতে উড়ে যেতে পাখিদের মানা নেই_
তাই দেখে মরে কেঁদে _ তার কোন ডানা নেই!
হাতিটার কি বাহার দাঁতে আর শুন্ডে_
ও রকম জুরে তার দিতে হবে মুন্ডে!
কাঙ্গারুর লাফ দেখে ভারি তার হিংসে_
ঠ্যাং চাই আজ থেকে ঢ্যাংঢেঙে চিমসে!
সিংহের কেশরের মত তার তেজ কৈ?
পিছে খাসা গোসাপের খাজ কাটা লেজ কৈ?
একলা সে সব হলে মেটে তার প্যাখনা;
যারে পায় তারে বলে ,মোর দশা দেখ্না!"
কেদেঁ কেদেঁ শেষটায়_আষাঢ়ের বাইশে
হল বিনা চেষ্টায় চেয়েছে যা তাই সে।
ভুলে গিয়ে কাঁদা কাটি আহাদে আবেশে
চুপিচুপি একলাটি বসে বসে ভাবে সে_
লাফ দিয়ে হুশ্ করে হাতি কভু নাচে কি?
কলাগাছ খেলে পরে কাঙ্গারুটা বাঁেচ কি ?
ভোঁতামুখে কুহুডাক শুনে লোকে কবে কি?
এই দেহে শুঁড়ো নাক খাপ ছাড়া হবে কি?"
"বুড়ো হাতি ওড়ে" বলে কেউ যদি গালি দেয় ?
কান টেনে ল্যাজ মলে "দুয়ো" বলে তালি দেয়?
কেউ যদি তেড়েমেরে বলে তার সামনেই_
কোথাকার তুই কেরে, নাম নেই ধাম নেই?
জবাব কি দেবে ছাই,আছে কিছু বলবার?
কাচুঁ মাচুঁ বসে তাই ,মনে শুধু তোলপার _
"নই ঘোড়া,নই হাতি, নই সাপ বিচছু
মৌমাছি প্রজাপতি নই আমি কিচছু।
মাছ ব্যাং গাছপাতা জলমাটি ঢেউ নই,
নই জুতা নই ছাতা,আমি তবে কেউ নই!"

৩৮| ১৬ ই মে, ২০০৬ রাত ২:০৫

মাধবী বলেছেন: শুনেছ কি বলে গেল -সুকুমার রায়

শুনেছ কি বলে গেল সীতা নাথবন্দ্যো?
আকাশের গায়ে নাকি টকটক গন্ধ?
টকটক থাকে নাকো হলে পরে বৃষ্টিথ_
তখন দেখেছি চেটে একেবারে মিষ্টি।

৩৯| ১৬ ই মে, ২০০৬ রাত ২:০৫

মাধবী বলেছেন: পালোয়ান -সুকুমার রায়

খেলার ছলে ষষ্ঠি চরন হাতী লোফেন যখন তখন,
দেহের ওজন উনিশটি মন, শক্ত যেন লোহার গঠন।
একদিন এক গুন্ডা তাকে বাশ বাগিয়ে মারল বেগে_
ভাঙল সে বাশ শোলার মত মট্ ক'রে তার কনুই লেগে।
এইত সে দিন রাস্তা দিয়ে চল্তে গিয়ে দৈব বশে,
উপর থেকে প্রকান্ড ইট পড়্ল তাহার মাথায় খ'সে।
মুন্ডুতে তার যেম্নি ঠেকা অম্নি সে ইট্ এক নিমিষে
গুঁড়িয়ে হ'ল ধুলোর মত, ষষ্ঠি চলেন মুচকি হেসে।
ষষ্ঠি যখন ধমক হাঁকে কাঁপ্তে থাকে দালান বাড়ী,
ফুঁয়ের জোরে পথের মোড়ে উল্টে পড়ে গরুর গাড়ী।
ধুম্সো কাঠের ত্ক্তা ছেঁড়ে মোচড় মেরে মুহুর্তেকে,
একশো জালা জল ঢালে রোজ স্নানের সময় পুকুর থেকে।
সকাল বেলার জল পানি তার তিনটি ধামা পেস্তা মেওয়া,
সঙ্গেতে তার চৌদ্দ হাঁড়ি দৈ কি মালাই মুড়কি দেওয়া ।
দুপুর হ'লে খাবার আসে কাতার দিয়ে ডেকচি্ ভ'রে,
বরফ দেওয়া উনিশ কুঁজো সরবতে তার তৃষ্ণা হরে।
বিকাল বেলা খায়না কিছু গন্ডা দশেক মন্ডা ছাড়া,
সন্ধ্যা হলে লাগায় তেড়ে দিস্তা দিস্তা লুচির তাড়া ।
রাএে সে তার হাত পা টেপায় দশটি চেলা মজুত থাকে,
দুম্দুমাদুম্ সবাই মিলে মুগুর দিয়ে পেটায় তাকে।
বললে বেশি ভাব্বে শেষে এসকব কথা ফেনিয়ে বলা_
দেখবে যদি আপন চোখে যাওনা কেন বেনিয়াটোলা।

৪০| ১৬ ই মে, ২০০৬ ভোর ৪:০৫

অতিথি বলেছেন: খুব ই ভাল.ইচ্ছে হলে ই মন ভাল করে নেয়া যাবে...ছড়া পড়ে

৪১| ১৬ ই মে, ২০০৬ ভোর ৬:০৫

কালপুরুষ বলেছেন: ওরে বাবা, আমি মরেছি এতো লেখা মানে টাইপ করার সময় পেলেন কোথায়?? মাগো, হাত ব্যথা হয়ে যাবার কথা। উফ পারেন কি করে এতো টাইপ করতে? আমি তো এক মন্তব্য লিখতে গেলেই দেখি আমার আগেই দশ মন্তব্য জমা পরে গ্যাছে। হবে, আপনাকে দিয়ে লেখা লেখি হবে । শুভাশিষ রইল।

৪২| ১৬ ই মে, ২০০৬ সকাল ৯:০৫

মাধবী বলেছেন: লড়াই - ক্ষ্যাপা ঃ সুকুমার রায়

ওই আমাদের পাগলা জগাই, নিত্যি হেথায় আসে;
আপন মনে গুন্ গুনিয়ে মুচ্কি হাসি হাসে ।
চলতে গিয়ে হঠাৎ যেন ধমক লেগে থামে;
তড়াক্ করে লাফ দিয়ে যায় ডাইনে থেকে বামে।
ভীষন রোখে হাত গুটিয়ে সামলে নিয়ে কোচাঁ ;
"এইয়ো" বলে ক্ষ্যাপার মতো শুন্যে মারে খোচাঁ ।
চেঁচিয়ে বলে ,"ফাদঁ পেতেছ ? জগাই কি তায় পড়ে?
সাত জামর্ান ,জগাই একা ,তবুও জগাই লড়ে।"
উৎসাহেতে গরম হয়ে তিড়িং বিড়িং নাচে,
কখনও যায় সামনে তেড়ে , কখনও যায় পাছে।
এলোপাতাড়ি ছাতার বাড়ি ধুপুস ধাপুস্ কত!
চক্ষু বুজে কায়দা খেলায় চর্কি বাজির মত।
লাফের চোটে হাঁপিয়ে ওঠে গায়েতে ঘাম ঝরে,
দুড়ুম ক'রে মাটির পরে লম্বা হয়ে পড়ে।
হাত পা ছুঁড়ে চেঁচায় খালি চোখ্টি ক'রে ঘোলা,
"জগাই মেলো হঠাৎ খেয়ে কামানের এক গোলা"!
এই না বলে মিনিট খানেক ছট্ফটিয়ে খুব,
মড়ার মত শক্ত হ'য়ে এক্কেবারে চুপ !
তার পরেতে সটান্ বসে চুলকে খানিক মাথা,
পকেট থেকে বার করে তার হিসেব লেখার খাতা।
লিখলে তাতে _"শোনরে জগাই , ভীষন লড়াই হলো
পাচ ব্যাটাকে খতম করে জগাই দাদা মোলো।"

৪৩| ১৬ ই মে, ২০০৬ সকাল ৯:০৫

মাধবী বলেছেন: একুশে আইন -সুকুমার রায়

শিবঠাকুরের আপন দেশে ,
আইন কানুন সর্ব নেশে!
কেউ যদি যায় পিছলে প'ড়ে,
প্যাযদা এসে পাক্ড়ে ধরে ,
কাজির কাছে হয় বিচার _
একুশ টাকা দন্ড তার।
সেথায় সন্ধে ছটার আগে
হাঁচতে হলে টিকিট লাগে
হাঁচলে পরে বিন্ টিকিটে
দম্দমাদম্ লাগায় পিঠে ,
কোটাল এসে নস্যি ঝাড়ে_
একুশ দফা হাচিয়ে মারে
কারুর যদি দাতটি নড়ে,
চার্টি টাকা মাশুল ধরে ,
কারুর যদি গোঁফ গজায় ,
একশো আনা ট্যাক্সো চায়_
খুঁচিয়ে পিঠে গুঁজিয়ে ঘাড়,
সেলাম ঠোকায় একুশ বার
চলতে গিয়ে কেউ যদি চায়
এদিক্ ওদিক্ ডাইনে বাঁয়,
রাজার কাছে খবর ছোটে,
পল্টনেরা লাফিয়ে ওঠে ,
দুপুরে রোদে ঘামিয়ে তায়
একুশ হাতা জল গেলায়
যে সব লোকে পদ্য লেখে,
তাদের ধরে খাঁচায় রেখে,
কানের কাছে নানান্ সুরে
নামতা শোনায় একশো উড়ে,
সামনে রেখে মুদীর খাতা_
হিসেব কষায় একুশ পাতা
হঠাৎ সেথায় রাত দুপুরে
নাক ডাকালে ঘুমের ঘোরে,
অম্নি তেড়ে মাথায় ঘষে,
গোবর গুলে বেলের কষে,
একুশটি পাক ঘুরিয়ে তাকে
একশ ঘন্টা ঝুলিয়ে রাখে

৪৪| ১৬ ই মে, ২০০৬ সকাল ১০:০৫

অতিথি বলেছেন: জটিল জটিল.... মাধবী কাল রাতে 'রামগরুরের ছানা' টা খুজে পাচ্ছিলাম না.. আজকে দেখে ভালই লাগল... ঠ্যাংকু :-)

হযবরল - 'রাবন বধ' নাটিকাটি বিশাল বড়... ওটার জন্যই আলাদা আরেকটা পোষ্ট ওপেন করতে হবে.. তারচেয়ে এখানে শুধুই ছড়া থাকুক...

মাধবী, আপনি কি 'লুৎফর রহমান রিটনের' ছড়া গুলো পড়েছেন? ঐ যে-
'হালুম হালুম হালুম-
চিড়িয়াখানা থেকে আলুম...'

বইটা আমার কাছে ছিন.. কেউ একজন মেরে দিয়েছে... থাকলে কবিতাগুলো দিয়ে আরেকটি পোষ্ট মারেন :-)

৪৫| ১৭ ই মে, ২০০৬ সকাল ৯:০৫

মাধবী বলেছেন: ন্যাড়া বেলতলায় যায় ক'বার -সুকুমার রায়

রোদে রাঙা ইঁটের পাঁজা, তার উপরে বস্ল রাজা_
ঠোঙাভরা বাদাম ভাজা খাচ্ছে কিন্তু গিল্ছে না।
গায়ে আঁটা গরম জামা, পুড়ে পিঠ হচ্ছে ঝামা;
রাজা বলে, "বৃষ্টি নামা _ নইলে কিচ্ছু মিলছে না"।
থাকে সারা দুপুর ধ'রে, ব'সে ব'সে চুপটি করে,
হাঁড়িপানা মুখটি ক'রে আঁকড়ে ধরে শ্লেটটুকু;
ঘেমে ঘেমে উঠছে ভিজে, ভ্যাবাচ্যাকা একলা নিজে,
হিজিবিজি লিখ্ছে কি যে বুঝ্ছে না কেউ একটুকু।

ঝাঁঝা রোদ আকাশ জুড়ে, মাথাটার ঝাঁঝ্রা ফুঁড়ে,
মগজেতে নাচ্ছে ঘুরে রক্তগুলো ঝন্র ঝন:
ঠাঠা-পড়া দুপুৃর দিনে, রাজা বলে "আর বাঁচিনে,
ছুটে আন্ বরফ কিনে _ ক'চ্ছে কেমন গা ছন্ছন্।
সবে বলে, "হায় কি হল! রাজা বুঝি ভেবেই মোলো।
ওগো রাজা মুখ্টি খোল_ কওনা ইহার কারণ কি?
রাঙামুখ পান্সে যেন, তেলে ভাজা আম্সি হেন,
রাজা এত ঘাম্ছে কেন _ শুনতে মোদের বারণ কি"?

রাজা বলে, "কেইবা শোনে যে কথাটা ঘুরছে মনে,
মগজের নানান্ কোণে _ আন্ছি টেনে বাইরে তায়;
সে কথাটি বলছি শোন, যতই ভাব যতই গোন,
নাহি তার জবাব কোন কুলকিনারা নাইরে হায়।
লেখা আছে পুথিঁর পাতে,"নেড়া যায় বেলতলাতে",
নাহি কোনো সন্ধ তাতে - কিন্তু প্রশ্ন করার যায়?
এ কথাটা এদ্দিনেও পারে নিকো বঝতে কেও,
লেখে নিকো পুস্তকেও, দিচ্ছে না কেউ জবাব তায়।

লাখোবার যায় যদি সে, যাওয়া তার ঠেকায় কিসে?
ভেবে তাই পাইনে দিশে নাই কি কিচ্ছু উপায় তার?
এ কথাটা যেম্নি বলা, রোগা এক ভিস্তিওলা
টিপ্ ক'রে বাড়িয়ে গলা প্রমান করল দু পায় তাঁর।
হেসে বলে, "আজ্ঞে সে কি?, এতে আর গোল হবে কি?
নেড়াকে তো নিত্যি দেখি আপন চোখে পরিষ্কার_
আমাদেরি বেলতলা যে, নেড়া সেথা খেলতে আসে
হরে দরে হয়তো মাসে নিদেন পক্ষে পঁিচশ বার"।

৪৬| ১৭ ই মে, ২০০৬ সকাল ৯:০৫

মাধবী বলেছেন: সাবধান - সুকুমার রায়

আরে আরে, ওকি কর প্যালারাম বিশ্বাস?
ফোঁস্ ফোঁস্ অত জোরে ফেলোনাকো নিশ্বাস।
জানোনা কি সে বছর ওপাড়ার ভূতোনাথ,
নিশ্বাস নিতে গিয়ে হয়েছিল কুপোকাৎ?
হাঁপ ছাড় হঁ্যাস্ফ্যাঁস্ ও রকম হাঁ করে_
মুখে যদি ঢুকে বসে পোকা মাছি মাকড়ে?
বিপিনের খুড়ো হয় বুড়ো সেই হল' রায়,
মাছি খেয়ে পাঁচ মাস ভুগেছিল কলেরায়।
তাই বলি_সাবধান! ক'রোনাকো ধুপ্ধাপ্,
টিপি টিপি পায় পায় চলে যাও চুপ্ চাপ্।
চেয়োনাকো আগে পিছে, যেয়োনাকো ডাইনে
সাবধানে বাঁচে লোকে , _এই লেখে আইনে।
পড়েছ ত কথা মালা ? কে যেন সে কি করে
পথে যেতে পড়ে গেল পাতকো'র ভিতরে ?
ভালো কথা _ আর যেন সকালে কি দুপুরে ,
নেয়োনাকো কোনো দিন ঘোষেদের পুকুরে,
এরকম মোটা েেদহে কি যে হবে কোন্ দিন,
কথাটাকে ভেবে দেখ কি রকম সঙ্গিন!
চটো কেন? হয় নয় কে বা জানে পষ্ট,
যদি কিছু হ'য়ে পড়ে পাবে শেষে কষ্ট।
মিছিমিছি ঘ্যান্ ঘ্যান্ কেন কর তক্ক?
শিখেছ জ্যাঠামো খালি, ইঁচরেতে পক্ক ,
মানবে না কোন কথা চলা ফেরা আহারে ,
একদিন টের পাবে ঠেলা কয় কাহারে ।
রমেশের মেঝ মামা সেও ছিল সেয়না,
যত বলি ভালো কথা কানে কিছু নেয়না
শেষকালে একদিন চানি্নর বাজারে
প'ড়ে গেল গাড়ি চাপা রাস্তার মাঝারে!

৪৭| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১০ সকাল ৮:৪২

মনে নাই বলেছেন: জটিল হচ্ছে, চালিয়ে যান। প্রিয়তে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.