নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি আসলে বুঝতে পারছি না আমি কে বা কি ?

মাধুকরী মৃণ্ময়

কিংকর্তব্যবিমুড়

মাধুকরী মৃণ্ময় › বিস্তারিত পোস্টঃ

ও মন রে !

১১ ই অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১০:৪৯



দেখবেন কিছু মানুষ আছে পৃথীবি রসাতলে গেলেও তাদের হাসের মতো ঠোট করে সেলফি তোলা বন্ধ হয় না। তাদের কাছে দুনিয়া মানে আই ফোন প্রো, দামি রেস্টরেন্টে খাওয়া এবং ছবি তোলা, বয় ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ড ক্যান মেসেজ সিন করলো না অথবা সিন করেও রিপ্লাই দিচ্ছে না কোন সাহসে । এই সব আল বাল আর কি। তাদের জন্য আল্লা তোমার কাছে বিচার দিলাম।

কিছু মানুষ আছে তাদের বুকের মধ্যে চলছে অগনিত হত্যাকান্ড, আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে মনের জমিন, ঝড়ো বাতাসে উড়ে যাচ্ছে তাদের একান্ত পৃথীবি। তাদের কাছেও বাইরের পৃথীবির সমস্ত ঘটনা মুল্যহীন। কারন মানুষ বাইরে যত বাচে তার চেয়েও বেশি বাচে ভেতরে, বাইরে যত মরে , তার চেয়েও সহস্র বার মরে ভেতরে ভেতরে। জীবনান্দ তাই আফসোস করে বলেছিলেন, আমি যদি বনহংস হতাম, বনহংসী হতে যদি তুমি, তাহলে আমাদের জীবনের এই ছোট ছোট মৃত্যু গুলো থাকতো না। তাদের জন্য আজকে লেখা। দেখেন রিলেট করতে পারেন কিনা।

চকবাজার আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে গেছে। আমি সেই সংবাদ জানলাম দুই দিন পর। আমি এই আগুন রঙ্গা দুনিয়াতে ছিলাম না । ছিলাম আমার নিজস্ব জগতে ,সেখানে চকবাজার থেকেও ভয়াবহ অগ্নিকান্ড, গ্যাস সিলান্ডের চেয়েও বেশি জোরে ব্লাস্ট হয়ে যাচ্ছে আমার হৃদয়। আমি দুই দিন পর যখন এই ঘটনা শুনলাম । তখন আমার কোন খারাপ লাগা্র অনুভূতি কাজ করলো না। আমি আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করলাম পৃথীবির কোন দুঃখ ই আমাকে আর স্পর্ষ করছে না । কারন আমি নিজেই সমুদ্র সমান দুঃখে ডুবে আছি। আমি একটা সিরিজ লেখা শুরু করলাম এই সব ভুলতে । দেখলাম সেটাও অখাদ্য হচ্ছে।

আমি দুঃখ ভাসিয়ে দিতে সমুদ্রে চলে গেলাম । একেবারে সেইন্টমার্টিন। রাতে শাক সবজি খেয়ে প্রবালের উপর পড়ে থাকি। মাথার উপর থাকে রুপার থালার মতো চাঁদ। পৃথীবি জুড়ে ধবল জ্যোৎস্না। সামনে অসীম সমুদ্র। সেই সমুদ্রে চাদের আলো পড়ে চিক চিক করছে। এই সব চোখে জল আনা সৌন্দর্যের দিকে আমার খেয়াল নাই। আমার কেবলি মনে হচ্ছে সমুদ্রে কুহু সুরু আমাকে ডাকছে , আয় আয় আয়। আমার তীব্র ইচ্ছে হচ্ছে সমুদ্রে ডুবে মরে যায়। কিন্তু আমি যেতে পারছি না কারন আমার উঠার মতো শক্তি নাই। আমি জোয়ারের অপেক্ষাই আছি। জোয়ার আসলে ভেসে যাবো।

আমি থাকি ঢাকা শহরের এক প্রান্তে । প্রতি সপ্তাহে ছুটির দিনে ঐতিহাসিক জ্যাম ঠেলে আমি ঢাকা শহরের আরেক প্রান্তে যেয়ে এক চিপা গলিতে খাম্বার মতো দাঁড়িয়ে থাকি আর একটার একটা বিড়ি ফুকি। ফেরার সময় অভ্যাসে বই কিনি প্রতিবার। বই গুনে বলে দেয়া যাবে কতো ছুটির দিন আমার বৃথায় গেছে। আসলে বৃথা যায় নাই। আমি বই গুলো পড়া শুরু করি এবং খেয়াল করি আমি আমার ক্ষুদ্র দুনিয়া থেকে আস্তে আস্তে বের হয়ে আসছি। আমি পৃথীবির সাথে রিলেট করতে পারছি। মানুষের সুখ কে নিজের সুখ মনে করতে পারছি , দুঃখকে নিজের দুঃখ।

আমার ক্ষেত্রে বই কাজ করেছে। আপনার ক্ষেত্রে হয়তোবা অন্য কিছু। খুজে বের করুন । একটার পর একটা ট্রাই করুন। আর আমার মতো যদি গরীব না হন তাহলে সাইক্যায়াট্রিস্টের কাছে যান। আল্লার দোয়াই লাগে। মন কে অবহেলা করবেন না। মন ভালো নেই সেটা লুকাতে ফেইক জীবন যাপন করবেন না। মন কে ফেইস করুন। দিন শেষে আপনি ছাড়া আপনার আর কেউ নেই। হ্যা এটাই ফ্যাক্ট , এটাই সাইন্স !

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১১:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: মানুষ আছে নানান রকম।
তারপরও এই মানুষের মধ্যেই আপনাকে আমৃত্যু থাকতে হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.