নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তুফান মেইল

বসন্তে মাতাল আমি এক অপূর্ণতা ...

মাহতাব সমুদ্র

আমি কে...আসলেই নিজেকে খুঁজতে গিয়ে নিজেই হারিয়ে যাই। আমি আসলে কে আমি জানিনা ফেসবুকে- facebook.com/mahatab.hossain2

মাহতাব সমুদ্র › বিস্তারিত পোস্টঃ

'হুমায়ুন অনুরাগী সংঘ'র সভাপতি

১৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:২৪

সারাদিন যেই ছেলেটা মাঠে পড়ে থাকতো। শুকনো মৌসুমে ক্রিকেট আর বর্ষা এলেই ফুটবল নিয়ে মেতে থাকতো, ওয়াপদা'র পেছনের মনির দেওয়ানির দীঘি যারা লাফালাফি করে ব্যস্ত রাখতো সেই ছেলেটা মাঠ ছেড়ে ঘরে। হঠাত করে সেই ছেলেটার ঘরমুখি হওয়ায় আশ্চর্য হয়ে উঠতে হয় বৈকি। আম্মা বলে কিরে বাড়িতে ক্যান যা বাইরে যা। মাঠে যা। আমি মাঠে যাই না। বাসায় থাকি সন্ধ্যার আগে বাসা থেকে বের হই এরপর রাতে জোসনা থাকলে উদাস হয়ে হাটাহাটি করি এরপর আবার বাসায় সেই আগের মত।



ইতোমধ্যে মাঠে আমি নেই কোথায় গেছি ইত্যাদি নিয়ে অনেক বন্ধুই চিন্তিত। আমাকে খুঁজে বেড়ায় তারা কিন্তু আমি নেই। বনে বাঁদারে, হাটে বাজারে আমি নেই। আমি যে বাসায় থাকতে পারি এই চিন্তা তারা কল্পনাতেও আনতে পারে নি। অথচ আমি দিব্যি বাসায়।



তখন এইটে পড়তাম।স্কুল যাওয়া পুরোপুরি ছেড়ে দিয়েছি। সারাদিন বই নিয়ে ব্যস্ত। দিনে দুইটাটা আড়াইটা অথবা তিনটা বই শেষ হয়ে যায়। বই বলতে একাডেমিক নয় হুমায়ুন আহমেদ নামের একজন লেখক আছেন তার উপন্যাস। ধারাবাহিক ভাবে তার 'হিমু' সিরিজের উপন্যাসগুলো পড়ছি। হিমু পড়তে পড়তে আমার অবস্থা অন্যরকম হয়ে গেছে। সন্ধ্যায় বাসা থেকে বের হয়ে লাইব্রেরি যাই দুই তিনটা বই উঠাই এরপর রেল কলোনীর দিকে উদাস ভবে হেটে আসি।



প্রাইমারি থেকে ছোটদের পাতার লেখাগুলো পড়তাম লেখা পাঠাতাম। সিক্সে উঠে বড়বোনদের কড়া নির্দেশেও উপন্যাস নামের নিষিদ্ধ বস্তু দুএকবার পড়েছি। সেভেনেও একই অবস্থা। এইটে উঠেই আমাকে আর পায় কে এই সুযোগেই এতোদিন ছিলাম। আমি বড় হয়ে গেছি। এখন থেকে সব পোড়তে পারবো। যদিও সেবা প্রকাশনীর রহস্য পত্রিকা পড়া কখনই নিষিদ্ধ ছিল না তবুও অনেক সঙ্কোচ।



'তোমাদের এই নগরে' দিয়ে শুরু এরপর গোটা এইটে হুমায়ুন কম্পলিট দেয়ার চেষ্টা করেছি। লাইব্রেরি যখন যোগান দিতে পারে নি তখন এগিয়ে এসেছে বন্ধু শাকিল। সে ইয়া বড় বড় সমগ্র কিনে আনতো। আগে আমাকে৩ই পড়তে দিতো তারপর সে। হুমায়ুন আর হিমু বলতে তখন অন্যরকম অবস্থা।



চরিত্রে ভয়াবহ ভাবে 'হিমু' ভর করেছে। হুমায়ুন আহমেদকে নিয়ে এতোটাই পাগল হয়ে গেলাম যে আমার বন্ধু দ্বীপ, শিমুল কে নিয়ে 'হুমায়ুন অনুরাগী সংঘ' নামে একটি সংগঠন খুলে ফেললাম। বিভিন্ন পত্র পত্রিকার পাঠক পেজে লেখালেখি করতাম। সেই সুবাদে 'আজকের কাগজ' পত্রিকার 'কাগজ পাঠক' পেজে হুমায়ুন অনুরাগী সংঘের কমিটি ও বই সাহায্য চেয়ে লিখলাম। আতিয়ার ভাই নামে এক বড় ভাই ছাড়া আর কেউ সাহায্য করতে আসেনি। নাইনে উঠেছি ওঠার পর একদিন স্কুলে গেলাম। হিসেব করে দেখা গেলো দুইদিন স্কুলে গেছি। আর গড়ে আড়াইটা উপন্যাস শেষ করেছি। অবশ্য এরমধ্যে সুনীল, শীর্ষেন্দু, বুদ্ধদেব, বিভূতি, সুচিত্রাও আছে।



নাইনেও একি অবস্থা। স্কুলে রেজিস্ট্রেশন শেষ আমি জানিই না। যখন জানলাম তখন বলা হলো আমাকে ২০০৫ সালে এসএসসি দিতে হবে। তখন ২০০২ চলছে। হিমুগিরি ছুটে যাওয়ার মত অবস্থা।



আরেক ফ্রেন্ড জুটেছে সেও আরেক হিমু। দুইজনেই সন্ধ্যার পর ঘন্টা দুই অথবা তিন হেটে ঘরে ফিরি। যাই হোক প্রাইভেটে এক স্যারের কাছে অঙ্ক করতে শুরু করেছিলাম। সেই স্যার কে হাতে পায়ে ধরে স্কুলে নিয়ে গিয়ে প্রধান অফিস সহকারিকে রাজশাহী পাঠাই। এরপর হয় রেজিস্ট্রেশন। ২০০৪ সালেই এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলাম। নাইনের শেষের দিকে হিমুত্ব কমতে থাকে। সেই হিমালয়ের উচ্চতা কমে গেলেও এখনো শেষ হয়ে যায় নি। আকাশে চাঁদ উঠলে গৃহত্যাগী হতে না পারলেও হেটে হেটে ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফিরি... বাইরে হিমু না থাকলেও বুকের ভেতরে এখনো হিমু থেকে গেছে...





হুমায়ুন আহমেদ কে নিয়ে লেখা-

একটি নোবেল পুরস্কার এবং হুমায়ুন আহমেদ



হিমুকে নিয়ে একটি গল্প লিখেছিলাম। হুমায়ুন আহমেদের মৃত্যুর পর। বোঝাতে চেয়েছি হিমুদের প্রস্থান নেই-



হিমু আছে! এইতো হিমু

মন্তব্য ২৭ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:২৮

খেয়া ঘাট বলেছেন: বাইরে হিমু না থাকলেও বুকের ভেতরে এখনো হিমু থেকে গেছে...
হিমুর জনককে আল্লাহরাব্বুল আলামীন শান্তিতে রাখুন।

১৯ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:৪৭

মাহতাব সমুদ্র বলেছেন: হিমুর জনককে আল্লাহরাব্বুল আলামীন শান্তিতে রাখুন

২| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৩৯

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর। সব তরুণের মধ্যে হিমু প্রীতিআছে। অনেকে হিমুকে অনুকরণ করার চেষ্টা করেছেন। সাহিত্যেএমন জনপ্রিয় চরিত্রআর ২য়টি নেই তবে লেখাটি কিন্তু হিমুউন্মাদনার হলো না । হিমু কিন্তু দুষ্টুমি দিয়েই সবাইকে নিয়ন্ত্রণ করতো।আপনি হিমুকে খুব শান্ত নম্র ভদ্র আরআধুনিক পোষাকে মুড়িয়ে দিলেন বোধ হয়। পোস্টে প্লাস । শ্রদ্ধাঞ্জলী হুমায়ূনআহমেদ।

১৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৫০

মাহতাব সমুদ্র বলেছেন: হিমুরে তো চেনেন না সেলিম ভাই!!! কোন সময় মোটিভ চেঞ্জ করে বলা মুস্কিল! শৈশবের হিমু তো!!

৩| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৪২

হাবিব০৪২০০২ বলেছেন: সুন্দর ভালো লাগল

তিনি জাগরুক থাকুক সবার মনে

১৯ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:১২

মাহতাব সমুদ্র বলেছেন: তিনি জাগরুক থাকুক সবার মনে

৪| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৪৬

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: সুন্দর, ভালো লাগলো।

১৯ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৪

মাহতাব সমুদ্র বলেছেন: ধন্যবাদ তনিমা

৫| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৪৭

মেংগো পিপোল বলেছেন: ভাই লেখা টা ভালো লাগলো। হুমায়ুন স্যার যেখানে ই থাকুন আল্লাহ ওনাকে ভালো রাখুন।

প্রথম ছবিটা ছাড়া বাকি গুলো কি আপনার তোলা? যদি তোলা হয় দারুন। আর প্রথম ছবিটা আমার এডিট করা একটা ছবি। আপনি সম্ভবত আমার নিচের পোষ্ট টা থেকে নিয়েছেন। জানালে খুশি হই।

View this link

১৯ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:১২

মাহতাব সমুদ্র বলেছেন: ধন্যবাদ। আমার তোলা নয়। সব গুগলের অবদান।

৬| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৫৪

তাসনুভা সাখাওয়াত বীথি বলেছেন: +++++

১৯ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:৩০

মাহতাব সমুদ্র বলেছেন: ধন্যবাদ বিথি।

৭| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:০১

মামুন রশিদ বলেছেন: একজন মাহতাবের হিমু হয়ে উঠার গল্প ;)



আপনার একটানা বই পড়ে যাওয়ার অভ্যাসটা ভালো লেগেছে ।

১৯ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৯

মাহতাব সমুদ্র বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

৮| ১৯ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:২৭

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: হিমু কিন্তু মহাপুরুষ না। তবেআধ্যাত্বিক ক্ষমতা টাইপ কিছুএকটা ছিল।বাস্তবে সেটি পাওয়া দুস্কর।আমি কিন্তুএক সময় পাবলিকের মনের কথা বলে দিতাম। অনেক ক্ষেত্রে সত্য হয়ে যেত।তখন অবশ্য অনেক ভাল লোক ছিলাম।লোকজন ভ্যাবচ্যাকা খেত। বেশউপভোগ করতাম ।

১৯ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:০৫

মাহতাব সমুদ্র বলেছেন: দারুন!!!

৯| ১৯ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ২:১০

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:

+++++++

১৯ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:১৭

মাহতাব সমুদ্র বলেছেন: ধন্যবাদ

১০| ১৯ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ২:২৩

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: হিমু পোষ্টে ভালোলাগা !

১৯ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:২৫

মাহতাব সমুদ্র বলেছেন: ধন্যবাদ

১১| ১৯ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ২:২৩

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: হিমু পোষ্টে ভালোলাগা !

১৯ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৫

মাহতাব সমুদ্র বলেছেন: দুইবার?

১২| ১৯ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:৫০

শায়মা বলেছেন: হিমু বেঁচে থাকুক সারাটাজীবন!

২০ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৩

মাহতাব সমুদ্র বলেছেন: হিমু বেঁচে থাকুক সারাটাজীবন!

১৩| ১৯ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:২৫

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

আর এভাবেই বেঁচে রইবে হিমুরা আমার মাঝে

২০ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৬

মাহতাব সমুদ্র বলেছেন: এভাবেই বেঁচে রইবে হিমুরা আমার মাঝে

১৪| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:১১

আদনান শাহ্‌িরয়ার বলেছেন: আকাশে চাঁদ উঠলে গৃহত্যাগী হতে না পারলেও হেটে হেটে ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফিরি... বাইরে হিমু না থাকলেও বুকের ভেতরে এখনো হিমু থেকে গেছে..

আমরা যারা হিমুকে বুকের ভিতরে লালন করি কিংবা হতে পারি না তাদের সবার গল্পই এক! ভালো লাগলো!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.