![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সত্য যখন আপনার সামনে প্রকাশিত হয়, আপনার মুখোমুখি দাঁড়ায়, আপনি কতক্ষণ এটা গ্রহণ না করে থাকতে পারেন? আপনি কতক্ষণ তা প্রত্যাখ্যান করে থাকতে পারবেন?
প্রত্যেকের জীবনেই এমন সময় আসে, যখন সব শৃঙ্খল ভেঙে সত্যের আহ্বানে আপনাকে সাড়া দিতেই হয়। ওই সময় আল্লাহ সর্বশক্তিমানের ডাকে সাড়া দেয়া ছাড়া বাকি সবকিছুই তুচ্ছ মনে হয়।
আমার মনে আছে সেই দিনের কথা, যেদিন আমি আমার রুমে আয়নার সামনে দাঁড়িয়েছিলাম। সবকিছুই ঠুনকো মনে হচ্ছিল। কিছু একটার জবাব চাইছিলাম, কিন্তু জবাব পাচ্ছিলাম না।
তবে আমি কখনো নাস্তিক ছিলাম না। আমি সবসময় স্রষ্টার অস্তিত্বে বিশ্বাসী ছিলাম। হিন্দু হিসেবে ¯্রষ্টা অনেক অবয়বে অস্তিত্বশীল ছিলেন : পাথর, গাছ, নদী। আমার পরিবার এবং ঐতিহ্য এই সবকিছুকে উপাসনা করতে বলত।
বহু ঈশ্বরবাদে বিশ্বাসী হওয়াটাকে আমি গর্বের বিষয় মনে করতাম। আমি মনে করতাম, ঈশ্বরের সৃষ্টি সবকিছু উপাসনার যোগ্য, সেগুলোর মধ্যে ঈশ্বর অস্তিত্বশীল।
আমার কাছে ইসলামকে মনে হতো একগুঁয়ে, গোঁড়া। আর মুসলমানদের মনে করতাম অতীতের সাথে লেগে থাকা অনড়। তারা পিছিয়ে আছে, অথচ বিশ্ব অনেক এগিয়ে আছে। তাদের ধর্মবিশ্বাস আমার কাছে অযৌক্তিক মনে হতো। মনে হতো তারা অবাস্তব, নৃশংস, সেকেলে।
সম্ভবত আমার ভুলে নয়, পরিস্থিতিই এমনটা করে তুলেছিল। আমি যে সমাজে বাস করতাম, সেই সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মুসলমান সম্পর্কে এমন ধারণাই বিরাজ করছিল।
ইসলাম সম্পর্কে আমার প্রথম স্পষ্ট কোনো ধারণা পাই হাইস্কুলে। গুজরাটে দাঙ্গার পর ইসলামবিরোধী প্রপাগান্ডা ব্যাপক হওয়ায় ইসলাম নিয়ে ফ্রি ক্লাসের আয়োজন করা হয়েছিল তখন। ক্লাসে অবশ্য বেশির ভাগ ছাত্র ছিল মুসলমান।
এখানেই ইসলাম সম্পর্কে আমার অনেক ভুল ধারণার অবসান ঘটে। আমি একেশ্বরবাদ, নারীদের অধিকার, তাদের মর্যাদা এবং আরো নানা ধারণা পাই।
অবশ্য, সবকিছু আমার পছন্দ হয়েছিল তা নয়। বরং তখনো আমার বহু ঈশ্বরবাদ নিয়ে আমার গর্বের কমতি ছিল না। তবে ভিন্ন ধর্ম অনুসরণ করার জন্য যখন লোকজন দুর্ভোগ পোহাত, তখন আমার ভালো লাগত না। আমি এ সময় দৃষ্টিভঙ্গিতে সেক্যুলার হয়ে পড়ি।
আমার একেশ্বরবাদী হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছিল ‘আর্য সমাজ’। এই হিন্দু সংগঠনটি একেশ্বরবাদ প্রচার করত, তারা মূর্তি পূজা বর্জন করতে বলত। তাদের প্রভাবে আমি মূর্তিপূজা বন্ধ করি।
এর ধারাবাহিকতায় আমি ইসলাম সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে ওঠি। কলেজে পারিবারিক আইন নিয়ে পড়াশোনার সময় আমি সত্যের আরো কাছাকাছি হই। হিন্দু পারিবারিক আইনের পাশাপাশি মুসলিম পারিবারিক আইন পড়ি। হিন্দু আইন যেখানে নানা বিভ্রান্তি আর ভুল ধারণায় পরিপূর্ণ,ে সখাে ইসলামি আইন স্বচ্ছ, নিখুঁত ও নির্দিষ্ট।
তারপর আমি বিভিন্ন মাধ্যমের সাথে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করি। অনেক বন্ধুর সাথেও আলাপ করি। ধীরে ধীরে ইসলাম সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা গড়ে ওঠতে থাকে।
বিষয়টা প্রথমে পরিবার সদস্যদের কাছে গোপনই করে থাকি। কিন্তু একপর্যায়ে প্রকাশ্যেই ইসলাম গ্রহণের কথা ঘোষণা করি। এখন আমি ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। আলহামদুলিল্লাহ।
আল্লাহ আমাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার শক্তি দিয়েছেন, এজন্য শুকরিয়া।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১০:১৩
প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ