![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
poet-novelist-editor & development researcher.
পথজার্নাল/দিবসন্ত ভালোবাসা।
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
..........................................
ভালবাসার বুঝি 'দিবস' হয়?
যা চিরন্তন, যা সবসময়ের, তাকে ভাগ করলে বোধকরি এর ঔদার্য কমে যায়। আর ভালোবাসা তো কোন দাপ্তরিক বা অফিসিয়াল আনুষ্ঠানিক বিষয়ও নয় যে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপন করতে হবে।
যা অনুভবের, যা লালন করতে হয় গভীরভাবে তাকে পণ্য করা ঠিক নয়। বরং প্রতিনিয়ত ধারণ করা এবং এর প্রতি শ্রদ্ধা রাখার বিষয়টিই মুখ্য!
আরেকটি বিষয়ও মনে রাখা প্রয়োজন যে ভালবাসা শুধু বিশেষ কারো জন্য নয়। পরিবার, বন্ধু, সমাজ এবং সৃষ্টির সামগ্রিক কল্যাণের জন্যই ভালবাসা। সামগ্রিক কল্যাণের দিক বিবেচনা করে উদযাপন করলে তবেই এর মর্যদা রক্ষা পায়!
আর যার জন্য এই দিনটি পালন করা হয় সেই সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন কিন্তু ছিলেন শিশুপ্রেমিক, সামাজিক ও সদালাপি এবং খ্রিস্টধর্ম প্রচারক। তার উদ্দেশ্য ছিল মানুষকে ভালোবাসা এবং শান্তির জন্য কাজ করা। তার সামগ্রিক বিবেচনায় ছিলো সমাজ ও মানুষের কল্যাণের বিষয়টি। শুধু একটি দিন বা বিশেষ ব্যক্তির জন্য তার ভালোবাসা নয়!
সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে হত্যা করা হয় এবং মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে তিনি প্রমাণও করেছেন যে সমাজ ও মানুষের মুক্তি এবং স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে তার দৃঢ় অবস্থান!
'ভ্যালেন্টাইনস ডে' পালন করলে তার আদর্শটুকুও মনে রাখা আবশ্যিক
সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন সম্পর্কে প্রচলিত কয়েকটি প্রচলিত ধারণা
..........................................
সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ছিলেন শিশুপ্রেমিক, সামাজিক ও সদালাপি এবং খ্রিস্টধর্ম প্রচারক। রোম সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস ছিলেন বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজায় বিশ্বাসী। সম্রাটের পক্ষ থেকে তাকে দেব-দেবীর পূজা করতে বলা হলে ভ্যালেন্টাইন তা অস্বীকার করায় তাকে কারারুদ্ধ করা হয়। সম্রাটের বারবার খ্রিস্টধর্ম ত্যাগের আজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করলে ২৭০ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রীয় আদেশ লঙ্ঘনের দায়ে ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। সেই থেকেই দিনটির শুরু।
এ ছাড়া আরও একটি প্রচলিত ঘটনা আছে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে নিয়েই। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন কারারুদ্ধ হওয়ার পর প্রেমাসক্ত যুবক-যুবতীদের অনেকেই প্রতিদিন তাকে কারাগারে দেখতে আসত এবং ফুল উপহার দিত। তারা বিভিন্ন উদ্দীপনামূলক কথা বলে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে উদ্দীপ্ত রাখত। এক কারারক্ষীর এক অন্ধ মেয়েও ভ্যালেন্টাইনকে দেখতে যেত। অনেকক্ষণ ধরে তারা দু'জন প্রাণ খুলে কথা বলত। একসময় ভ্যালেন্টাইন তার প্রেমে পড়ে যায়। ভ্যালেন্টাইনের ভালোবাসা ও তার প্রতি দেশের যুবক-যুবতীদের ভালোবাসার কথা সম্রাটের কানে গেলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ২৬৯ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
এছাড়া খ্রিস্টীয় ইতিহাস মতে, ২৬৯ খ্রিস্টাব্দের সাম্রাজ্যবাদী, রক্তপিপাষু রোমান সম্রাট ক্লডিয়াসের দরকার এক বিশাল সৈন্যবাহিনীর। একসময় তার সেনাবাহিনীতে সেনা সংকট দেখা দেয়। কিন্তু কেউ তার সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে রাজি নয়। সম্রাট লক্ষ করলেন যে, অবিবাহিত যুবকরা যুদ্ধের কঠিন মুহূর্তে অত্যধিক ধৈর্যশীল হয়। ফলে তিনি যুবকদের বিবাহ কিংবা যুগলবন্দী হওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। যাতে তারা সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে অনীহা প্রকাশ না করে। তার এ ঘোষণায় দেশের যুবক-যুবতীরা ক্ষেপে যায়। যুবক সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামের এক ধর্মযাজকও সম্রাটের এ নিষেধাজ্ঞা কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি। প্রথমে তিনি সেন্ট মারিয়াসকে ভালোবেসে বিয়ের মাধ্যমে রাজার আজ্ঞাকে প্রত্যাখ্যান করেন এবং তার গির্জায় গোপনে বিয়ে পড়ানোর কাজও চালাতে থাকেন। একটি রুমে বর-বধূ বসিয়ে মোমবাতির স্বল্প আলোয় ভ্যালেন্টাইন ফিস ফিস করে বিয়ের মন্ত্র পড়াতেন। কিন্তু এ বিষয়টি একসময়ে সম্রাট ক্লডিয়াসের কানে গেলে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। ২৭০ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি সৈন্যরা ভ্যালেন্টাইনকে হাত-পা বেঁধে টেনে-হিঁচড়ে সম্রাটের সামনে হাজির করলে তিনি তাকে হত্যার আদেশ দেন।
..........................................
মাহমুদ টোকন
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
©somewhere in net ltd.