![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
poet-novelist-editor & development researcher.
মাহমুদ টোকন এর ছয়টি কবিতা
বেগুনচাষি
বিপনীবিতানগুলো খুলেছে কেবলি, মাথা তোলে কৃত্রিম উজ্জ্বলতা
বিহ্বল সত্যের মতো। বেনিআসহকলা’য়-
মুছে গেল প্রকৃত চেহারা
বেচারা চাষির কাছে নিজের বেগুন ক্যামোফ্লেজ
অচেনা অচেনা মনে হয়...
এক মরশুমে ঘর। দো-ফসলে বউয়ের নাকফুল
বাবার চোখের ছানি-
চলে যাবে, যাবে বলে বছর গড়ালো। এখন সে ঘরেই হোঁচট
খায় আর ম্লান হেসে বলে,
- বয়স হলে খানিকটা এরকম হয়!
ঘন্টা বাজিয়ে যাচ্ছে প্রাত্যহিক বিলম্বিত ট্রেন
স্টেশন ছেড়ে যাওয়া বিষন্ন ভেঁপুটি বাজে পোঁ...ও
বেগুনের বস্তা রেখে স্টোর মালিক
গুঁজে দিল কড়কড়ে নোট, ওয়ানটাইম ঝাঁঝালো পানীয়
টাকার আনন্দ থেকে মন্দদ্বন্দ্বে বেগুনকৃষক
জনকের ছানি না-কি লালপাড় নবান্ন প্রহরে
মাথাচুলকে, নেড়ে কোন সংকেত দ্যাখে না
বিড়ম্বনার দিন তার খুউব রসগোল্লা খেতে ইচ্ছে করে...
মাটি
সর্বতো ব্যবহার, সৃষ্টি থেকে এই বর্তমান। এই আমি-
সর্বভূতে ছায়া প্রিজমের আখ্যান।
আর মানুষের উপাদান, শস্য ও গৃহনির্মাণ
কারখানা জলাধার এবং শৎকার, মিলে ও সংঘাতে
নির্মাণ-বিনির্মাণে আমি আজও উপলদ্বি করি
বিবিধ আগুন আছে হৃদয়ে নিউরনে। ভেতরে ভেতরে জ্বলি...
অবকাঠামোর গান, অট্টালিকা সমূদয় জলের সন্ধান
বিদ্ধ করে করে আহরণ, ফসিল ফুয়েল আর
খনিজ প্রস্তর। পাতার সংসার পোড়ে।
ভেতরে ভেতরে আশ্চর্য উত্তাপ, সে কেবলই...
আমায় কি দিয়েছ তুমি, তোমরা, এই সম্প্রদায়?
অস্থির ইঞ্জিন এবং খেউড়মাত্র; বায়ুবিষ আর অবিশ্বাস
আর দিয়েছ ছড়িয়ে খুউব অদ্ভূত প্রদাহ।
আমার দহন বোঝ? মর্মন্তুদ এই বেদনায়
জলসবুজ এই সমর্পণ, ঘুমের ভান করে পড়ে থাকি
আকাশ আর মেঘের ফোয়ারা। তবুও নেভে না-
অস্থির প্রদাহ জুড়ে চরাচর, দাঁতের ঝিলিক
ভেতরে ভেতরে জ্বলি, দেখতে পাও
শুনতে পাও পাজর ভঙ্গুর, পাথরে পাথরে বহু রাত জেগে আছে ?
অহম
তোমার গায়ের রঙ, লাবণ্যটুকু
ধুয়ে ম্লান অহমিকা জ্বলে। এ অম্ল মুছে দেয়, ক্ষয় করে
ঈশ্বরেরও ভুল হলে পড়ে...
বাজারের দরে যে চেহারা; ঝকমকে প্রলুব্ধ সনদ
প্রিজমের প্রতিবিম্বে নিজেকেই চিনতে পারবে না।
আর গৃহ নির্মাণ কিংবা স্রোতজলে সাঁকো; স্বর্ণ নয়-
লোহাই শেখাবে।
যুক্তি এনে গ্রীবা তুলে তুমি খুউব জানাতেও পারো
বহু ইস্পাত তবে কিনে নেবে সামান্য সোনায়...
ও অহম, ও শঙ্খচূড়
জেনো সে দূরত্ব দেবে, সুখনিদ্রা আদৌ দেবে না।
আজও বহু খণ্ডিত হৃদয়
অহমিকা এবং স্বর্ণ ফসিল করেছে; রি-সাইকেল কাদাও করেনি।
ছাড়পত্র
স্বীকৃতি দাওনি আমায় প্রিয় গাছ সবুজ উৎসবে
তীব্র আহত স্বর তবু আমি আকাঙ্খা ডাকিনি...
দূর্গ দখিন হাওয়া, দূরবর্তী হিজলের দিন
মাতৃস্নেহ ভাই-বোন বন্ধুর ছাতাওয়ালা হাত
সে-ও তো দেয়ালে ঘেরা প্রাত্যহিক প্রয়োজন, দ্রব্যসমৃহ
স্বীকৃতি দাওনি আমায় প্রিয় বিষদাঁত।
উৎসবদিনের গান প্রিয় উপহার; স্বীকৃতি মেলেনি
উদ্বোধন চারাগাছ, যৌথচুমুক আর
প্রিয়জল স্বীকৃতি মেলেনি।
বিমর্ষ টেবিল-বুকে নৃত্যরত কয়েন আর ম্লান আঁকিবুঁকি
অভিমান ক্রন্দণের অতিক্রমরেখা
এক বাসে বাড়িফেরা, স্বীকৃতি মেলেনি।
প্রিয়ফুল গুঁজে দেয়া কৃষ্ণচূড়ার দিন, হেঁটে যাওয়া-
আর হাতে লেখা প্রিয়চিঠি স্বীকৃতি মেলেনি।
দ্বিধাখণ্ড, কলঙ্ক পৃষ্ঠায় থেকে কষ্ট-পিরামিড
যুক্তিতর্কে মেলেনি স্বীকৃতি...
শহরে বৃক্ষমেলা- উদ্বোধন, আবৃত্তি সন্ধ্যায়
পুড়ে গিয়েছিল চোখ, বাসনার ছোটবুকটুকু
ক্রমাগত এসিড ঝলসানো; বিড়ম্বনার দিন
ছবিয়াল প্রোমো মঞ্চে অচ্ছুত স্বীকৃতি মেলেনি...
স্বেচ্ছা উপোষ আর অ্যালকোহলের ফেনা-
রোদবিকেল, স্বীকৃতি মেলেনি।
হিংস্রতম হয়ে ওঠা বিবর্ণ দিনের অভিপ্রায়ে
মুঠো খুলতে চেয়েছি চোখ বুঁজে; মেলেনি স্বীকৃতি।
বলো-
আমাকে তুমি কি এই মৃত্যুরও স্বীকৃতি দেবে না ?
নেশা
এবং ফুলের স্মৃতি, বৃক্ষ আর বিষন্ন বিকেল
পোড়া বাদামের গন্ধে ভেঙ্গে গেছে সব প্রতিরোধ
তৃষ্ণার্তদিনের শেষে বেজে উঠলে জল সাইরেন
আর্তনাদে কেঁপে ওঠে শেষ বাসটিও
ভল্লুকের উন্মাদনায় মৃত শবদেহ
কেঁপে কেঁপে ওঠে জানলায়- অপেক্ষামূখর দিনগুলি।
আর রক্তের মধ্যে নেশা দূর্বার, ও মহুয়াদিন
টেনে আনে সাঁওতাল রাত
বিগত মৃত্যুরেখা, অনিবার্য রাতকংকাল
তবুও তোমার কথা বলে...
হে অমরত্ত্ব, হে মৃত্যুহীন প্রেম
উৎসব থেকে এনে বিষের পেয়ালা
উন্মুক্ত করো নীলকণ্ঠ পাখির গান, একবার-
শুধু একবার, গলা ছেড়ে গাই।
তোমাকে পাবার তীব্র আকাঙ্খার সুর
একবার গলা ছেড়ে গাই...
পাখি আর ব্রোথেলখুকি
জানলা খোলা রাখছো কেন, জানালায় কি?
আকাশ আকাশ বুকের ভেতর, কৃষ্ণচূড়া আহলাদে ফুল
অচিন পাখি আমায় ডাকে... সেই শৈশব। জানলা দিয়ে একটি শালিক।
মাটির সোঁদা গন্ধমাখা প্রথম বৃষ্টি। আর্তের স্বর-
ওই বাতাসে, জানলা খোলা... একটি ঘূড়ি
পিঁপড়ে পাতায় বনপলাশের, পোয়াতি মেঘ রোদ্দুর ঘ্রাণ
ঘাস চিৎকার... জানলা খোলা। জানলাতে প্রাণ।
তোমার তো খুব জানলা আকাশ, আমার তবে?
বৃক্ষের বিলাপ মাখা শহুরে শরীর, জলে জলে চোখ অন্ধ বলে
তোমার মতো আমারও খুব ভয়। তোমার মতো-
ডানাওলা গান জানিনে, জানলা খোলা। ফুলের মধ্যে ঠোঁট চুবিয়ে
কম্পিত স্বর দেখতে কি পাও?
তোমার তবু পাখনা আছে।
তোমার কিন্তু পূর্ণ আকাশ, তোমার তবে ছয় ঋতুকাল...
জানলা তবে খোলাই থাকে? জানলাখুকি?
আমার যখন মৃত্যু লাগে, আমার যখন রক্তক্ষরণ
চারপাশে মেঘ, দাঁড়াশ সাপের ক্রুদ্ধ ফণা
মৃত্যুউপোস বিদীর্ণঘাস, ডানায় আমার রক্তগন্ধ
জানলা খোলা জানলা বন্ধ...
২| ০১ লা মার্চ, ২০১৯ রাত ৯:৪৫
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এত্ত গুলা ভাল একসাথে দিলে কেম্নে কি
খালি বাসে উঠে কোন সিটে বসার দ্বন্দ্ধ!এর মতো ঘোর লাগে!
জিএম ফুডের ক্ষতি নিয়ে বেগুনটা বেশি ভাল লাগলো!
বাকী সবগুলো আপন আপন রুপে গুনে অনুভবে অনন্য
+++
৩| ০১ লা মার্চ, ২০১৯ রাত ১১:৪৭
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: সবগুলো কবিতায়ই অত্যান্ত সুন্দর।
৪| ০৩ রা মার্চ, ২০১৯ রাত ২:১৫
কিরন রুদ্র বলেছেন: আপনি শুধু শুধু মোবাইলের ডাটা নষ্ট না করে
ধাঁধার প্রশ্নের উত্তরে জিতে নিন বিকাশ টাকা
বিস্তারিত জানতে
এই লিঙ্কে প্রবেশ করুন shorturl.at/gxzEO
৫| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১২:৩৩
অর্পিতা মন্ডল বলেছেন: বাহ্,ভালো লাগলো কবিতাদের।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা মার্চ, ২০১৯ রাত ৮:১১
রাজীব নুর বলেছেন: সহজ সরল সুন্দর কবিতা।