নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার সীমিত জ্ঞান কারো উপকারে আসলে শান্তি পাই

মায়মুনা আহমেদ

আমার সীমিত জ্ঞান কারো উপকারে আসলে শান্তি পাই...

মায়মুনা আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

উমরাহ টিপসঃঃ ১ম পর্ব - প্ল্যানিং

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৭




বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

মানুষ আধুনিক হচ্ছে। আধুনিকতার এই যুগে দ্বিধাহীনভাবে মানুষ উগ্রতাকে যেমন নিজেদের জীবনে ঠাই দিয়েছে আবার তেমনই ঝাকে ঝাকে দ্বীনের পথে আসছে! আলহামদুলিল্লাহ! প্রতি বছর আমাদের দেশ থেকে লাখো মানুষ হজ্জ ও উমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে পবিত্রভূমি মক্কা-মদিনায় যাচ্ছে। আল্লাহর অশেষ রহমতে উমরাহ পালনের সৌভাগ্য আল্লাহ তায়ালা আমাকে দান করেছিলেন। শিখে এসেছি নবীজী সাঃ এর দেশ থেকে, কিভাবে সবাই ছোট ছোট সাদকাহ-র মাধ্যমে নিজেদের নেকীর পাল্লা ভারী করতে ব্যস্ত থাকে। নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু "Do & Don't" লেখার চেষ্টা করছি। ভুলগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ জানাচ্ছি। আল্লাহ আমাদের সকলকে ভালো কাজ ও বেশি বেশি সাদকাহ করার তৌফিক দান করুক। আমীন।

উমরাহ যাওয়ার নিয়ত করার পর প্রথম কাজ শুরু হয় এজেন্সি নির্বাচনের মাধ্যমে। এজেন্সি ছাড়া উমরাহ ভিসা করা যায় না। প্রথমেই আপনি মনস্থির করুন, আপনি কি চান? ১. এজেন্সির মাধ্যমে শুধু ভিসা করিয়ে আপনি নিজে বাকী কাজ করে নিজদায়িত্বে যেতে চান, নাকি ২. কোনো এজেন্সির সাজানো প্যাকেজে ঝামেলাহীন(!!!) ভাবে ইবাদাত করে আসতে চান। দুই পদ্ধতিতেই ঝক্কি ঝামেলা আছে। তাই, আপনার চাহিদামাফিক চিন্তা করে বের করুন কি আপনার জন্য সেরা।

ধরুন, আপনি শুধু ভিসা করিয়ে নিজ দায়িত্বে যাবেন। ভালো কথা। নিজেকে প্রশ্ন করুন, সব কাজ নিজে করতে পারবেন তো!? আমি না পারার কোনো কারণ দেখি না। এজেন্সিকে দিয়ে একদিনের বা পুরো ট্যুরের হোটেল ভাড়া করিয়ে নিলে, বাকী থাকে খাওয়া আর জিয়ারা। একটু ঘোরাঘুরি করলে বা মসজিদের খাদিম বা হোটেলের কাউকে জিজ্ঞেস করে পেয়ে যাবেন খাওয়ার হোটেল। জিয়ারার জন্য ঐখানে ট্যাক্সি বা প্রাইভেট কারের অভাব নেই। যা দাম চাইবে, বাঙালি স্টাইলে দামাদামি করে জিয়ারা করে নিতে পারবেন।

তারপরও যদি আপনার মনে খুতখুত বা মাথায় অশান্তি থাকে। কাজগুলো নিজে করে নিতে ঝামেলার মনে হয়। যদি মনে কোনো প্রকার দ্বিধা থাকে যে এসবের চক্করে আপনার ইবাদাতে বিঘ্ন ঘটতে পারে বা এজেন্সির মাধ্যমে গেলে নিশ্চিন্ত এবং সিকিউরড থাকতে পারতেন। তাহলে কিছু টাকা বাড়তি খরচ হলেও এজেন্সির মাধ্যমে যান। আপনার মূল লক্ষ্য ইবাদাত। এমনভাবে প্ল্যানিং করুন যাতে ইবাদাতে অপূর্ণতা বা অতৃপ্তি না থাকে। বিশ্বাস করুন, এই প্ল্যানিংটা অনেক বড় বিষয়।

নিজের দায়িত্বে গেলে বুঝে নিলাম আপনার যথেষ্ট সাহস ও আত্মবিশ্বাস আছে। তাই নতুন করে আপনাকে জ্ঞান দেয়ার কোনো প্রয়োজনবোধ করছিনা। আপনি যদি এজেন্সির মাধ্যমে যেতে চান, তাহলে বলবো যাচাই করুন, যাচাই করুন, যাচাই করুন। অন্ধের মতো যে কোনো এজেন্সিকে বিশ্বাস করে বসবেন না। সময় নিন, যাচাই-বাছাই করুন, মিনিমাম ৩-৪টা এজেন্সির সাথে কথা বলুন। পার্থক্য নিজেই বুঝতে পারবেন। এজেন্সির প্যাকেজ সুবিধাজনক মনে না হলে কাস্টোমাইজ প্যাকেজ করুন। কথা বলুন, সময় করে বিভিন্নজনের সাথে কথা বলুন। মক্কা-মদিনায় আমি আমার আশেপাশে বসা মানুষের সাথে কথা বলতাম। যত জন বাঙালির সাথে কথা হয়েছে, বিশ্বাস করেন সবার এক কথা- "এজেন্সি থেকে যা বলেছিল সে সুযোগ সুবিধা দেয়নি"। আরো বাজে বিষয় হচ্ছে, ১৫ দিন বলে ১০ দিনে ট্যুর কমপ্লিট করা। আমার পরিচিত এক গ্রুপকে এজেন্সি জিয়ারা করাবে বলে আর করায় নি। পরবর্তীতে দেশে আসার পর যখন এজেন্সিকে ধরা হলো, সে বলে জিয়ারা তারা করায় না, আবেগে বলে ফেলেছিল। শিক্ষিত, তরুণ কি বৃদ্ধ, ঢাকা বা শহুরে অভিজাত অথবা গ্রামের সহজ সরল মানুষ - কেউ ই বাদ যায় না এবং এজেন্সিতে প্রতারণা একটা কমন বিষয়। তাই বলে সবাইকে খারাপ বলা ঠিক হবে না। আলহামদুলিল্লাহ! আমি ভালো পেয়েছি। ভালো পেতে হলে নিজের সে চেষ্টা করতে হবে। সময় নিয়ে যাচাই বাছাই করে সিদ্ধান্তে আসতে হবে। কথা বলার সময় যাদেরকে স্বচ্ছ মনে হবে, তাদের সাথেই ডিল করুন। তাদের কাজের পদ্ধতি বিস্তারিত জেনে নিন। নিজের চাহিদা সম্পর্কে নিজে ভালো ভাবে বোঝার চেষ্টা করুন।

আমার নিজের অভিজ্ঞতার কথা লিখি। আমাদের গ্রুপে আমরা চারজন মহিলা এবং একজন পুরুষ ছিলো। একজন পুরুষের ক্ষেত্রে এতো কিছুর হিসেব রাখা, আমার কাছে মনে হয়েছে ইবাদাতে বিঘ্ন ঘটাবে। এছাড়া আমি চাইছিলাম যতোটা চিন্তামুক্ত থাকা যায় সেভাবে প্ল্যানিং করার। আমি নিজে কয়েকটি এজেন্সির সাথে কথা বলেছি। একদিন এক এজেন্সিতে কথা বললাম, ভালো লাগলে কনফার্ম করে ফেলবো এমন অবস্থা। তার কথায় আমি ভুল পেলাম, যেমন তিনি বললেন(১)"মক্কায় ৫স্টার/৪স্টার হোটেল নেয়ার আসলে দরকার কি...সারাদিন তো মসজিদেই থাকা হয়...রাতে ঘুমানোর সময় শুধু হোটেলের দরকার।" (২) ২০ দিন থাকবেন, ভিসা তো ১৫দিনের দেয়(ভুল কথা)...(৩)এতোদিন আসলে থাকার কোনো দরকার দেখি না, উমরাহ করবেন-মদিনা থাকবেন-জিয়ারা করবেন-চলে আসবেন, ২-৩দিন থাকার পর জোশ চলে যায়।তাই ঐ জোশ থাকতে থাকতে ঘুরে আসা ভালো(!!!)..(৪) মসজিদের কাছাকাছি হোটেল নিতে চাচ্ছেন কেন? প্রতিদিন আসলে সবাই মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ে না, রুমেই পড়ে নেয়(!!!)

ঠান্ডা মাথায় সব শুনলাম, যা বুঝার বুঝে নিলাম। তাই, বারবার লিখেছি। নিজে কি চান তা স্থির করুন। পরিস্কারভাবে এজেন্সির সাথে নিজের চাওয়া-পাওয়া, পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে কথা বলুন। তাদের কাজের স্বচ্ছতা যাচাই করুন। সর্বাবস্থায় আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করুন এবং দ্বিধাহীনভাবে সিদ্ধান্ত নিন।

জাজাকাল্লাহ খাইরান!

চলবে.....ইনশাআল্লাহ

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৪৩

আরোগ্য বলেছেন: শুভ ব্লগিং। সামুতে আপনার যাত্রা শুভ হোক।
লেখাটি হজ্জযাত্রীদের বেশ কাজে লাগবে।

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৯:৪১

মায়মুনা আহমেদ বলেছেন: জাজাকাল্লাহ খাইরান

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.