নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার সীমিত জ্ঞান কারো উপকারে আসলে শান্তি পাই

মায়মুনা আহমেদ

আমার সীমিত জ্ঞান কারো উপকারে আসলে শান্তি পাই...

মায়মুনা আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডায়েরি থেকে...(১)

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:৩৪



বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

২০১৮ সাল, রমজান মাস। মেঝ ফুফু-ফুফা, ভাইয়া-ভাবী-ছোট্ট ভাতিজিসহ উমরাহ-তে যাচ্ছে। আব্বু-আম্মু হজ্জ করে আসার পর থেকেই আমাদের যাওয়ার খুব ইচ্ছা কিন্তু সেরকম সময়-সুযোগ আর হয়ে উঠেনি। ফুফুদের যাওয়া দেখে এতো বছরের সে আকাঙ্ক্ষা মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো। আব্বুর কাছে আবদার করলাম, এ বছর আমাদেরকে উমরাহ-তে নিয়ে যেতে হবে। আব্বু কোনোকিছুতে না করে না এবং এই ব্যাপারেও না করেনি। বললো, আল্লাহ ভরসা।

আমি সিরিয়াস, এবার আমি যাবোই, ইনশাআল্লাহ। এতো বছর ক্লাস-পরীক্ষা-চাকরি, এই ঝামেলা, সেই ঝামেলার কথা চিন্তা করে উমরাহ এর ব্যাপারে সিরিয়াস হতে পারিনি। এ বছর ঝামেলা কম। ঠিক করলাম, যাবোই ইনশাআল্লাহ।

২০১৮ এর রমজান মাস থেকে শুরু হলো, আমার উমরাহ প্ল্যানিং। দেশের মধ্যে যেসব জায়গায় ঘুরতে গিয়েছি, চেষ্টা করেছি এমনভাবে প্ল্যান করতে যেন এক ট্রিপে ম্যাক্সিমাম স্পট কাভার করে। উমরাহ এর বেলায়ও আমার চিন্তাভাবনা এরকম ছিলো। রমজান মাসে রোজা রেখে এতো জিয়ারাহ(বিভিন্ন স্পটে বেড়ানো) সম্ভব না। এছাড়া, বেশি গরমে গেলে গরমেই অস্থির হয়ে থাকবো। চাইছিলাম এমনভাবে প্ল্যান করতে যাতে উমরাহ পালন বা ইবাদাতের পাশাপাশি আমার এই তৃপ্তিও থাকে যে, হ্যা! আলহামদুলিল্লাহ আমি অমুক অমুক জায়গা দেখে আসতে পেরেছি এবং গরম যেন আমার ইবাদাতে অলসতার সৃষ্টি করতে না পারে।

চেকলিস্ট তৈরি করলাম। আমার/আমাদের চাহিদার চেকলিস্ট। প্রথমেই সময়। সৌদি আরবে অক্টোবর-নভেম্বরে বৃষ্টি হয় এবং বৃষ্টি শীতের বার্তা বয়ে আনে; ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাস শীতকাল(তুলনামূলক কম গরম)। শীতকালের আরেকটা সুবিধা হচ্ছে, শীতে হোটেল ভাড়া কমে যায়। সময় শীতকাল ফিক্সড করলাম।

এবার লিস্টে আছে থাকার জায়গা। মক্কায় মদিনার তুলনায় কাজ বেশি। আবার আমার গ্রুপে আমরা চারজন মহিলা এবং একজন পুরুষ, যাদের মধ্যে একজন বয়স্ক। আমি যেহেতু অফ-সিজনে যেতে চাচ্ছি সেহেতু মক্কায় আমি হেরেমের খুব কাছের হোটেল খুজছিলাম। হেরেমের খুব কাছের হোটেলগুলো ৪*/৫* মানের। আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের জন্য এসব হোটেলের খরচ একটু বেশি কিন্তু ৩* হোটেল পছন্দ হচ্ছিল না। প্রথমে একটা ৩* মানের হোটেল নিতে রাজি হলাম কিন্তু কিছুদিন পর মাথায় ঢুকলো, "আমি আল্লাহর মেহমান। আমার যে জায়গা পছন্দ না সেখানে থাকবো কেন? আমাদের না হয় সীমাবদ্ধতা আছে কিন্তু আল্লাহর তো কোনো সীমাবদ্ধতা নেই! আমি চাইবো, আল্লাহ দিবেন। দিবে না কেন!?" ব্যস! আব্বুকে জানালাম, আমি মক্কা মিলেনিয়াম(মক্কা টাওয়ার) এ থাকতে চাই। আব্বু হ্যা-না কিচ্ছু বলে নি। আমার প্ল্যান ছিলো, যেহেতু মক্কায় কাজ বেশি সেহেতু মক্কায় আমি মক্কা মিলেনিয়ামে থাকবো আর মদিনায় কম বাজেটের কোনো হোটেলে উঠবো। এভাবে খরচ কিছুটা ব্যালান্স হবে। হোটেল ফিক্সড- মক্কায় মক্কা মিলেনিয়াম আর মদিনায় ২৫নং গেটের কাছাকাছি (মহিলাদের জন্য রওজা জিয়ারাতের সহজ রাস্তা) কোনো হোটেলে থাকার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ ।

তৃতীয় পয়েন্ট জিয়ারাহ/দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ। জিয়ারাহ নিজেরা করবো নাকি এজেন্সির মাধ্যমে করবো এসব নিয়ে কয়েকদিন ঘাটাঘাটি করলাম। আগেই লিখেছি , ম্যাক্সিমাম স্পট কাভার করতে চাই। স্পটগুলো হচ্ছে, মক্কা-মদিনার রেগুলার জিয়ারাহ স্পট, তায়েফ, জেদ্দা, ওয়াদিয়ে জিন ও বদর প্রান্তর। মনে হলো আমাদের নিজ দায়িত্বে এসব জিয়ারাহ মেইনটেইন করা কষ্টকর হবে। তাই, এজেন্সির মাধ্যমে জিয়ারাহ করবো ঠিক করলাম।

চতুর্থ- এবার প্লেন। ডিরেক্ট ফ্লাইট নেয়ার প্ল্যান করলাম। পঞ্চমে কতোদিন থাকবো, তা ঠিক করলাম। ভিসা একমাসের জন্য দেয়। ১৫ দিনের কম থাকলে আমার তৃপ্তি হবে না। মদিনায় ৮ রাত এবং মক্কায় ৭ রাত থাকার প্ল্যান করলাম।

আমার চাহিদার চেকলিস্ট তৈরি । সবার সাথে কথা বলে ঠিক করলাম এজেন্সির মাধ্যমে যাবো। শুরু হলো এজেন্সি খোঁজা। আমার হাতে যথেষ্ট সময় ছিলো। তাই ধীরেসুস্থে বিভিন্ন এজেন্সির সাথে কথা বলছিলাম। এরমধ্যে কোরবানির ঈদ গেলো। এজেন্সিগুলো হজ্জের পর নতুন বছর/মৌসুমের উমরাহ প্যাকেজ করে থাকে। যেখানে যে এজেন্সির প্যাকেজ দেখছিলাম, একটু ঘেটে দেখছিলাম যে প্যাকেজগুলো আমার চাহিদা কতোটা পুরো করতে পারে। অনেক সময় আছে। শুধু যাচাই করছিলাম। যেসব এজেন্সির সাথে কথা বলেছি, তাদেরকে আমি আমার চাহিদা মোতাবেক প্যাকেজ করে দিতে বলতাম।

অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে এক এজেন্সির সাথে কথা বললাম। অন্যান্যদের তুলনায় দক্ষ এবং স্বচ্ছ মনে হলো। আল্লাহর উপর ভরসা করে তাদের সাথেই ডিল করবো ঠিক করলাম। আমার চাহিদা আমার বাজেটকে ক্রস করে যাচ্ছে। তাই খরচ কমাতে প্লেনে ট্রানজিট ফ্লাইট নিলাম। আমি যেদিন এজেন্সিতে আমার কাস্টোমাইজ প্যাকেজ কনফার্ম করলাম সেদিনই আমার সামনে বসে প্লেনের টিকেট বুকিং দিয়েছিল। তাদের কাজ সম্পর্কে কোনো দ্বিধাদ্বন্দে ছিলাম না , আলহামদুলিল্লাহ। আমার সাধ্যমতো আমি যাচাই করেছি। এবার ভোগান্তি হলে বলতে হবে নসীবে ছিলো। এই ছিলো আমার উমরাহ প্ল্যানিং এর আদ্যোপান্ত। আরো কথা পরের পোস্টে লিখবো ইনশাআল্লাহ ।

ছবি-নেট

জাজাকাল্লাহ খাইরান

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: ওমরা এবং হজ্ব পালন করার ইচ্ছা আমারও আছে।

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:০৭

মায়মুনা আহমেদ বলেছেন: আল্লাহ আপনার ইচ্ছা পূরণ করুক, আমীন।

২| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৫৬

রাফা বলেছেন: আপনি ট্যুরিজম নিয়ে কাজ শুরু করে দিন ।সাফল্য অনিবার্য্য।পরের পোষ্টে নিশ্চই আসছে কতটুকু নিখুত হয়েছিলো আপনার প্ল্যান?

বেশ গুছিয়ে লেখার জন্য ধন্যবাদ,মা.আহমেদ।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১০:৪৯

মায়মুনা আহমেদ বলেছেন: ভালো বুদ্ধি! জাজাকাল্লাহ খাইরান ☺

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.