নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মামুনুর রহমান খাঁন, পেশায় সফট্‌ওয়্যার প্রকৌশলী। নজরুলগীতি বিষয়ক একটি ওয়েব পোর্টাল করেছি নজরুলের গানকে সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে। লিঙ্ক: https://nazrulgeeti.org

মামুনুর রহমান খাঁন

একজন সাধারণ মানুষ অসাধারণ কিছু করার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।

মামুনুর রহমান খাঁন › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প: সিক্সথ সেন্স

২৯ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:০৮

সিক্সথ সেন্স

ফেসবুক নোটিফিকেশন সাউন্ড শুনে সাহেদ হাতের বইটা পাশে রেখে আধ-শোয়া থেকে উঠে বসল। ওয়ারড্রবের উপরের ঘড়িতে সাড়ে ৮ টা বাজে। বিছানা থেকে উঠে গিয়ে চেয়ারে বসতে বসতে কম্পিউটারের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে মুখে একটা হালকা মুচকি হাসির রেখা খেলে গেল সাহেদের। সন্ধ্যা থেকে চেপে বসা শূন্যতা যেন এক মুহূর্তে হাওয়া হয়ে গেল।
‘কেমন আছেন সাহেদ ভাই?’ মিথিলার মেসেজ। সাহেদ যেন অপেক্ষা করে ছিল মেসেজটির জন্য। কারণ সে নিজে থেকে কখনো মিথিলাকে নক করেনা। কেন করেনা সেটা এক রহস্য! হয়তো চায়না আগ বাড়িয়ে কথা বলতে কিংবা নিজের উপর অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণ আছে বলে আবেগগুলোকে বেসামাল হতে দেয়না। সে যা-ই হোক, ‘এই তো ভাল। তুমি কেমন আছো?’ সাহেদের রিপ্লাই।
মিথিলা একটি প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে থার্ড ইয়ারে পড়ছে। সাহেদের সাথে পরিচয় খুব বেশিদিন হয়নি, মাস পাঁচেক হবে। ফেসবুকে যোগাযোগ তারও কম, মাস দেড়েকের বেশি হবেনা। তবে ইদানীং প্রায় প্রতিদিন কথা হচ্ছে ফেসবুকে। সাহেদও কথা বলে মজা পাচ্ছে কারণ মিথিলার সেন্স-অব-হিউমার এক কথায় চমৎকার। নানা প্রসঙ্গে বেশ জমজমাট আড্ডা হয়। দুজনেরই সময়টা বেশ ভালো কাটছে।
কিন্তু আজকে মিথিলার কথায় কেমন যেন একটা অন্য সুর শোনা যাচ্ছে— ‘ভাল না সাহেদ ভাই। খুব অস্থির লাগছে। পেট ব্যথা করছে।’
‘কি হয়েছে? শরীর খারাপ? জ্বর-টর এসেছে নাকি?’
‘না, জ্বর-টর না।শরীর ভাল।’
‘তাহলে?’
‘সামনে প্রফ। মাত্র দুই সপ্তাহ সময় আছে, কিন্তু কিছুই পড়তে পারছিনা। রেজাল্ট খারাপ করলে বাসায় মুখ দেখাতে পারবোনা।’
‘ও এই কথা? কিন্তু পেট ব্যথা?’
‘আমার এমন হয়। আমার এক্সাম ফোবিয়া আছে। পরীক্ষা কাছে আসলেই আমার পেট ব্যথা করতে থাকে।’
‘বেশ অদ্ভুত তো। জীবনে প্রথম শুনলাম পরীক্ষা কাছে আসলে কারো পেট ব্যথা করে। আমি তো ভেবেছিলাম অন্য কিছু।’ এই বলে সাহেদ একটা উইংক ইমো পাঠায়। ওপাশ থেকে মিথিলাও হাসির ইমো পাঠায়।
মিথিলার এই এংক্সাইটি রিলিফ করার জন্য সাহেদ খানিকটা অভয় দেয়ার চেষ্টা করে— ‘একদম টেনশন করোনা। দেখো সব ঠিক হয়ে যাবে। আর রেজাল্টও ভালো হবে।’
‘কচু হবে।’
‘সত্যি বলছি, তুমি দেখো। রেজাল্ট অনেক ভালো হবে।’
‘আমার চেয়ে আপনার কনফিডেন্স বেশি মনে হচ্ছে। কি ব্যাপার সাহেদ ভাই?’
‘কারণ আমি দেখতে পাচ্ছি।’
‘দেখতে পাচ্ছেন মানে কি?’
‘আমার সিক্সথ সেন্স বলছে।’
‘প্লিজ সাহেদ ভাই, অন্তত: আমার সাথে চাপা মাইরেন না।’
‘তুমি বিশ্বাস করছো না, তাই তো? সত্যি বলছি, আমার সিক্সথ সেন্স অনেক স্ট্রং।’
‘প্রমাণ দেন।’
‘কি প্রমাণ দিব?’
‘বলেন তো, আমি যে ড্রেসটা পড়ে আছি সেটা কি কালার?’
কিছুক্ষণ সময় নিয়ে সাহেদ লিখল— ‘কালো।’
একটা অট্টহাসির ইমো দিয়ে মিথিলা লিখল— ‘হলো না সাহেদ ভাই।’
‘ওহ। আসলে এটা ঠিক এভাবে কাজ করেনা। এমন নয় যে আমি তোমাকে সরাসরি দেখতে পাচ্ছি আর দেখে দেখে হুবহু বলে দিচ্ছি। ব্যাপারটা হচ্ছে কি, একটা ভিশন তৈরি হয়। মনে মনে একটা ছবি দেখতে পাওয়া যায় যেটা কখনো সত্যি হয় আবার কখনো হয়না।’
‘একদমই হয়নি তা না। আসলে আমার ড্রেসটাতে তিনটা কালার আছে। তার মধ্যে অবশ্য কালোও আছে।’
‘তাহলে তো ৩৩% মার্ক পাচ্ছি। পরীক্ষায় তো তাহলে পাস করেছি, কি বলো?’
‘এভাবে চিন্তা করলে পাস বলতে পারেন তবে আমি একটু বেশি এক্সপেক্ট করেছিলাম। এনি ওয়ে, বাদ দেন।’
‘অন্য দুইটা কালার যা আমি দেখতে পাচ্ছি দেখো তো হয় কিনা?’
‘বলেন।’
‘নীল আর ম্যাজেন্টা’
চোখ বিস্ফোরিত হওয়ার এত্তো বড় একটা ইমো ভেসে উঠল চ্যাট উইন্ডোতে। সাথে আরও আসতে লাগল— ‘OMG!!!!!! How is it possible?’
সাহেদ চেয়ার থেকে উঠে বারান্দায় এসে একটা সিগারেট ধরাল। ঠোটের কোনায় মৃদু একটা হাসির রেখা ফুটে উঠেছে। ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে সাহেদ আকাশের দিকে তাকালো। আকাশে আজ অনেক তারা উঠেছে। কম্পিউটারের স্পিকার থেকে অনবরত নোটিফিকেশন সাউন্ড ভেসে আসছে। কিন্তু সাহেদের রিপ্লাই দেয়ার কোন তাড়া নেই। তারাদের দিকে তাকিয়ে আয়েশ করে সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়তে বরং তার ভালো লাগছে।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:১২

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: সিক্সথ সেন্স এমন নিখুঁত হয়? জানা ছিল না!

২৯ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:১৫

মামুনুর রহমান খাঁন বলেছেন: কখনো কখনো এরচেও নিখুঁত হয়। হয়তো কাকতালীয় তবে অসম্ভব নয়। ধন্যবাদ

২| ২৯ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:১৮

শামচুল হক বলেছেন: ভালো লাগল।

২৯ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:২০

মামুনুর রহমান খাঁন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ

৩| ২৯ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:১৮

শায়মা বলেছেন: তারপর??

২৯ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:২১

মামুনুর রহমান খাঁন বলেছেন: গল্পটা আপাততঃ এতটুকুই

৪| ২৯ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:১৯

সৈয়দ তাজুল বলেছেন:
আহ! বেচারা!

সাহেদের জন্য করুণা হয়, তাকে নিয়ে আজ গল্প লেখা হচ্ছে বলে ;)


ভাল লিখছেন।

২৯ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:২২

মামুনুর রহমান খাঁন বলেছেন: করুণা কেন?

৫| ২৯ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:২৫

সৈয়দ তাজুল বলেছেন:
ফেসবোকের চ্যাটিংচুটিং আজ ব্লগেও আসছে! =p~

২৯ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৩১

মামুনুর রহমান খাঁন বলেছেন: :P

৬| ২৯ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:২৮

মোহেবুল্লাহ অয়ন বলেছেন: আমি একজনের জন্মতারিখ অনুমান করেছিলাম এবং মিলেছিল সেটা। B-)

২৯ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৩১

মামুনুর রহমান খাঁন বলেছেন: বাহ দারুন তো

৭| ২৯ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৩৫

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ভাল লাগল।

আপাতত ভাবসের উপর ধূয়া ফুকতে দেন ;) হা হাহা

+++

২৯ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৩৬

মামুনুর রহমান খাঁন বলেছেন: ;)

৮| ৩০ শে মার্চ, ২০১৮ ভোর ৬:৩২

কালীদাস বলেছেন: ছোট গল্প হিসাবে চমৎকার :)

৩০ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:৪৬

মামুনুর রহমান খাঁন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.