নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
I am a house wife, I love to write something
”ওরে ভাই ফাগুন লেগেছে বনে বনে”
ফাগুন বনে বনে এসেছে, আসবেই তো। কিন্তু মনে মনে কি সব সময় একইভাবে ফাগুন আসে? আসে না। যেমন-মেয়েদের মনে যে ভাবে ফাগুন আসে, ছেলেদের মনে সেভাবে আসে না। উৎসব আনন্দকে শত প্রতিকুলতার মাঝেও মেয়েরাই বাঁচিয়ে রাখে। এই প্রসংগে শ্রদ্ধেয় নরেন (নরেন বিশ্বাস)স্যারের একটি উক্তির উল্লেখ না করলেই নয়। উনি বলতেন যে, শত বিবর্তনের মাঝেও মা, দিদিমা, ঠাকুমারা ভাষার প্রকৃত রূপ বয়ে নিয়ে বেড়ান। এক সময় কণ্ঠশীলনে আবৃত্তির ক্লাশ করতাম। ঘটনা্ক্রমে পড়লো ১লা ফাল্গুণ। তথন ইরান ইরাক যুদ্ধ চলছিল।মেয়েরা সকলে হলুদ গাদা ফুল আর শাড়ীতে সেজে এসেছে। ক্লাশে ঢুকলেন শ্রদ্ধেয় ওয়াহিদুল হক স্যার। ছেলেরা বলতে শুরু করলো-বিশ্বের একদিকে যুদ্ধে মানুষ মারা যাচ্ছে, আর এদের মনে রং লেগেছে। ওয়াহিদুল স্যার বললেন, যে শিশুটি মাতৃগর্ভে আছে, সে কি যুদ্ধ চলছে বলে পৃথিবীর আলো দেখবে না? জীবন বহমান সে চলবে তার গতি নিয়ে, তার সময় হলে পাতা ঝরবে, ফুল ফুটবে। সত্যিই তো আজ বুঝি হৃদয় কাজ করে তার আপন গতিতে, সে কারও বেগও মানে না,আবেগও মানে না।যার হৃদয় আছে, তার গতিও আছে।তার হৃদয়ে ফাগুন আসবে, বসন্ত আসরে ফুল ফুটবে, পাখি গাইবে। আজ মনে পড়ছে আরও একটা ঘটনা। আমি বিএনএসবি প্রজেক্টে বদলি হয়ে জীবনের প্রথম ট্যুরে গেছি, বিএনএসবি মৌলভী বাজারে। পরের দিন ১লা ফাগুন পড়বে এটা আমি ক্যালেন্ডার দেখে হিসেব করে নিয়েছি।তাই ব্যাগে একটা হলুদ শাড়ী নিতে ভুলিনি। মৌলভী বাজার যাবার পরদিন আমার প্রোগ্রাম মাধবদি আই ক্যাম্প পরিদর্শ্ন । সংগে যাবেন বিএনএসবি মৌলভীবাজারের তৎকালীন অবৈতনিক সাধারন সম্পাদক শাহ নুরুল ইসলাম স্যার।আমি যখারীতি হলুদ শাড়ীটা পড়লাম এবং আনুসাংগিক সাজ সজ্জাও করলাম, সারাদিন মাধবদিতে আই ক্যাম্প দেখলাম, বহু চক্ষু রেগীর ইন্টারভিউ করলাম। এখানে একজন মায়ের কথা আমার আজও মনে পড়ে, যে মা আমার হাত ধরে কেঁদেছিল এই জন্য যে, আল্লাহ তাকে একটি মেয়ে সন্তান দেননি, তার ৪টি পুত্র সন্তান আছে। সে বললো আল্লাহর কাছে কত করে একটি মেয়ে চাইলাম, আল্লাহ আমাকে মেয়ে দিল না।সংগে সংগে আমার শাশুড়ির কথা মনে হলো, কত বিচিত্র এই মানুষের মন। আমার পুত্র সন্তান নেই বলে আমার শাশুড়ী ফোন করেও আমার মেয়েদের সাথে কথা বলে না্, আমার ভাসুরের পুত্র সন্তানটি তার ইহকাল, পরকাল। অথচ এই নিরক্ষর দরিদ্র মায়ের মেয়ে সন্তানের জন্য চোখে জল দেখলাম। যাই হোক এইসব শেষ করে বিকাল ৫টায় আমরা হাসপাতালের জীপে মৌলভীবাজার রওনা হলাম। জীপের রেডিও তে জনপদের খবর শুরু হলো- আজ ১লা ফাল্গুন। প্রকৃতির সংগে মেয়েরা্ও আজ সেজেছে বিভিন্ন রং এ। খবরটা শুনে স্যার আপন মনে বলে উঠলেন, ও আজ ১লা ফাল্গুন। আমি বল্লাম, সত্যিই স্যার আপনার বয়স হয়েছে, এখন খবর শুনে বুঝলেন যে আজ ১লা ফাল্গুন। আর সারাদিন আমি হলুদ শাড়ী পড়ে আপনার সংগে ঘুরে বেড়ালাম আপনি বুঝলেন না, আজ ১লা ফাল্গুন। আমি উপলদ্ধি করলাম কারও কারও মনে দেরীতে হলেও ফাগুন আসে।ফাগুন তো আসবেই। ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজ যে বসন্ত! আজ ফুল ফুটবেই, পাখী গাইবেই, বাঁশী বাজবেই, সখীর হৃদয় হাহকার করবেই।সকলের জন্য রইলো আমার বাসন্তী রং মাখা প্রথম ফাল্গুনের ভালোবাসা।
১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:২১
মঞ্জু রানী সরকার বলেছেন: আমার এই ক্ষুদ্র লেখাটি পড়েছেন এবং মন্তব্য করেছেন এজন্য আন্তরিক ধন্যবাদ
২| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৪
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: অল্প কথায় গোছানো চমৎকার লিখা । ++++++++++
১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:২২
মঞ্জু রানী সরকার বলেছেন: চমতকার মন্তব্যের জন্য চমতকার ধন্যবাদ
৩| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:৪১
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৯
প্রামানিক বলেছেন: ছেলেরা বলতে শুরু করলো-বিশ্বের একদিকে যুদ্ধে মানুষ মারা যাচ্ছে, আর এদের মনে রং লেগেছে। ওয়াহিদুল স্যার বললেন, যে শিশুটি মাতৃগর্ভে আছে, সে কি যুদ্ধ চলছে বলে পৃথিবীর আলো দেখবে না?
চমৎকার লেখা। ধন্যবাদ বোন মঞ্জু রানী সরকার।