নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
I am a house wife, I love to write something
চারিদিকে যখন যুদ্ধের খবর শুনা যাচ্ছে, তখন আমাদের নিরাপত্তার জন্য পিশিমার বাড়ী নিশ্চিন্দিপুরে পাঠিয়ে দেবেন বলে বাবা ঠিক করলেন, পরদিন সকালে গরু গাড়ী আসলে
আমরা চলে যাব, মা সারা রাত ভর বস্তা করে সব কিছু নিতে লাগলো। যেমন হ্যারিকেন, শিল পাটা। বাবা দেখে মাকে বখতে লাগলেন, ”রাত পোহালে দেশ স্বাধীন হয়ে গেলে, সব চলে আসতে হবে”, মা তার শান্ত স্বভাবে উত্তর দিল, ”যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আশ। আমি যতক্ষণ বেঁচে থাকবো, ততক্ষণ আমার সব লাগবে।” এই মাকে দেখিছি দিনের পর দিন দেশের স্বাধীনতা চেয়ে উপোস করতে।
প্রতিবেশীরা যে যেমন পারলো ভারতের দিকে রওনা হলো্ ।সকলেই বাবাকে শেষ পরামর্শ দিলো দেশ ত্যাগের। বাবার একই কথা, ”মানুষ হয়ে একবারই জন্মেছি, এই দেশটাও এক বারই পেয়েছি, এ দেশ ছেড়ে আমি যাবো না।” আমার বাবা দেশ ছাড়েন নি। তিনি মারাও গেছেন এই দেশেতে। অথচ তার মৃত্যুর পর বহু কষ্টে প্রমাণ করে আমাদের জমি গুলো শত্রু সম্পত্তির হাত থেকে বাঁচাতে হয়েছিলো যে , তিনি কথনও ভারতে যাননি। জন্মেছি এই দেশে, অথচ অতি কষ্টে প্রমাণ করে জমির উত্তরাধিকার হলাম।
মিষ্টি যখন কৈফিয়ত চায় আমার কাছে, “ মা তোমার কাছে হাসিনার বাবার বক্তৃতা আছে, তুমি আমাদেরকে শোনাও নি কেন? এ বক্তৃতা তো সারা জীবনের সোনার ফসল। পাকলে তা তো ঘরে আসবেই।
অফিস থেকে ঘরে ঢুকলেই টুনু পাখী যখন ব্যাগের দিকে তাকিয়ে বলতো, “মা ,মুক্তিযুদ্ধের ছবি আনোনি ?” আর মিষ্টি যখন বুড়িমাড়ি সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করে, তখনই সেই সীমান্তের ধুলিকণা নিয়ে কপালে ছোয়াই, বলে দাঁড়াও মা, আমি বাংলাদেশের মাটি টা মেখে নেই। আমার দুচোখ ভরে জল আসে। ভাবতে থাকি এ ভাবেই বুঝি দেশপ্রেম ছুঁয়ে যায় জন্ম থেকে জন্মান্তরে।
©somewhere in net ltd.