নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
I am a house wife, I love to write something
আমি মফ:স্বলের মেয়ে। বিনোদন বলতে তখন ছিল সিনেমা দেখা। ৭১ এর যুদ্ধের সময় যখন আমরা বাড়ী ছাড়ি, তার আগেও সিনেমা দেখে গিয়েছি।
ছোটবেলাতে বাবা মাকে বলতো, সিনেমা হলে একটা ভালো বই লেগেছে, আজ তৈরী থেকো, আমি এসে নিয়ে যাবো। শুরু হতো তখন থেকে সিনেমা দেখতে যাবার প্রস্তুতি। মায়ের কথা মতো রাতের পড়াটা দিনে করে নিতাম। মা রাতকার রান্নাটাও বিকালে সেরে ফেলতো।ব্কিাল হতে সাজা আরম্ভ হতো আর সারাদিন সবাইকে বলা হতো আমরা আজকে বই দেখতে যাবো।
সন্ধ্যা বেলা হতে চলতো পুরোগমে চূড়ান্ক প্রস্তুতি। সাবান মেকে হাত মুখ ধোয়া, সম্ভব হলে স্নান করে নেওয়া, মা কোন শাড়ীটা পড়বে, কি ভাবে পড়বে. আমাদের জামা, আয়না হাতে চুল বাঁধা, তিব্বত স্নো আর পাউডার মাখা, লাল ফিতা দিয়ে চুল বাঁধা, একটা আয়না নিয়ে কে আগে সাজবে তার প্রতিযোগিতা চলতো।
অবশেষে রাত ৯টার শো দেখতে চলতাম। আমাদের সাথে বাবা থাকতো বলে পাড়ার কিছু দিদিরাও আামাদের সংগী হতো। আমরা মা মেয়ে, মাসিমা, দিদিরা আগে আর বাবা পিছে হাঁটতে হাঁটতে চলেছি।
সিনেমা শেষ হতো রাত ১২ টায়। তখণ বাদামস কিনে চিবুতে চিবুতে ফাকাঁ রাস্তা দিয়ে সিনেমার বিশেষ বিশেষ দৃশ্যাবলীর আলোচনা করতে করতে বাড়ী ফিরতাম। তখন জেলখানাতে পুলিশ আর প্রহরীরা বাঁশীতে ফু দিয়ে তাদের ডিউটি করছে। আমরা নির্ভয়ে বাড়ী ফিরতাম।
এ ভাবে বাবা আমার সিনেমা দেখার অভ্যাসটা গড়ে তোলেন। এমন হয়েছে সিনেমা হলে র কোন ছবি আমার দেখা ছাড়া ফেরত যেত না। তখন একটু বড় হয়েছি। তাই ম্যাটানি শোতে একা একা সিনেমা দেখার অনুমতি লাভ করি। আমি বার্ষিক পরীক্ষার আগেগর দিনও সিনেমা দেখেছি। তবে সিনেমা শেষ হলে বাবা বাড়ী নিয়ে আসতেন। শর্ত ছিল পথে তাকে সিনেমার কাহিনী বলে কি শিখলাম- এই সিনেমা থেকে এটা বাবাকে বলতে হতো। পাশও করতাম। তাই অনুমতি থেকে গেল। তবে নতুন সিনেমা এলে বাবা আগে দেখতেন। দেখে বলতেন কোন সিনেমা দেখা যাবে, কোনটা যাবে না।
এই ভাবে বাদ গেল গুন্ডা ছবি। রংবাজ বাদ পড়তে পড়তে বেঁচে যায়। নিষেধাজ্ঞা জারী হলো “দি রেইন” এর উপর। সমনটা আমার ছো৭ ছোঁ করে বেড়াচ্ছ্ কি ভাবে বাবাকে রাজী করানো যায়? এমন সময় গ্রাম থেকে আমার জেঠাতো দিদি-পুতুল দিদি আসলো সিনেমা দেখতে। আমার সাপে বর হলো। কিন্তু বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাধবে কে?
বাবাকে রাজী করানোর ভারটা পড়লো আমার উপর। সারা রাত বিছানায় শুয়ে ঘুমাচ্ছি না। বিনা কারণে হেসেব চলেছি। বাবা হাসির কারণ জানতে চাইলে হাসির মাত্রা আরো বেড়ে গেল। শেষে বাবাকে বলতেই যেহেতু পুতুল দিদি সিনেমা দেখতে এসেছে তাই আর কিছু না বলে পরের দিন ম্যাটানি শো দেখবার অনুমতি দিলেন।
যে কারণে “দি রেইন’ দেখতে নিষেধাজ্ঞা ছিল। ছবিতে অলিভিয়ার একটা খোলামেলা জলে দৃশ্য ছিল। এতটুকুতেই এত বড় সর্বনাশ। আজ বাবা থাকলে দেখতে পেতেন আমাদের মেয়েরা এখন কি দেখে। অবশ্য সিনেমা হলে যেয়ে নয়। ল্যাপটপে। ঘরে বসে। এখানে জাতীয় সংগীতে উঠে দাঁড়াতে হয় না। তখন ছবি শুরুর আগে বিশাল পর্দা জুড়ে জাতীয় সংগীত হতো। হল ভর্তি লোক উঠে দাঁড়াতাম।
দেখলাম ”দি রেইন”। নিটোল একটা প্রেমের ছবি। সম্ভবত প্রথম কালার করা ছবি। আহা কি প্রেম অলিভিয়ার আর ওয়াসিমের?
আর পেলাম রুনা লায়লা এবং মাহমুদুন নবির কিছু অনবদ্য গান। যা আজও বেজে চলে কানে কানে। পুতুল দিদির সাথে পথে পরামর্শ করে নিলাম, বাবা যদি জানতে চান কি শিখলাম ছবি থেকে? বলবো,
“ আমি তো আজ ভুলে গেছি সবই”Amito aj bhule gechi shobi Mahamudun Nabi
২| ০৫ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৫:২৯
ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: নাষ্টালজিক, তবে হারানো সেই ঐতিহ্য মনে হয় আর ফিরে আসবে না!!!????
০৬ ই মে, ২০১৫ সকাল ১০:৫১
মঞ্জু রানী সরকার বলেছেন: কি যে মজা হতো যদি সত্যিই ফিরে পেতাম
৩| ০৭ ই মে, ২০১৫ রাত ১২:০৬
মোঃমোজাম হক বলেছেন: আপনিতো দেখছি আমার চেয়েও বড় সিনেমাখোড়
দি রেইন দেখেছিলাম হাইস্কুলে পড়ার সময়।
কাল রাতেই ইউটিউব থেকে আবারো মধুমিলন সিনেমা দেখে গিন্নীকে বলছিলাম পুরানো দিনের সিনেমা দেখার গল্প
০৭ ই মে, ২০১৫ সকাল ১১:০৬
মঞ্জু রানী সরকার বলেছেন: আমি তো এখনও “ দি রেইনে” আছি। “তোমাকে আমি কিঝু বলতে চাই”
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৫:১০
ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: প্রথম ভাল লাগা, তবে মন্তব্য করছি একটু পরে।