নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
I am a house wife, I love to write something
স্কুল জীবনে ভূগোল পড়তে যেয়ে পড়েছিলাম, সবচেয়ে বেশী বৃষ্টিপাত হয় চেরাপুজ্ঞীতে। তথন বৃষ্টি নামলে আর ছাড়তে চাইতো না্। ২/৩ দিন যখন একটানা বৃষ্টি পড়তো তখন মুরুব্বীরা হিসেব করতে বসতেন, কবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। কথায় আছে, ”শনিতে সাত মংগলে তিন, আর সব দিন দিন “
এ ছাড়া রথের বৃষ্টি, অম্ববুচির বৃষ্টি তো আছেই। ঝড়তে শুরু হলে ঝরেই যেত, আর থামার নামটি নেই। ছিপ ছিপ করে বৃষ্টি। কত নাম ছিল তার ইলশে গুড়ি, ছাগল তাড়ানো বৃষ্টি।
বৃষ্টি ছাড়ার সময় হলে হটাত করে রোদ উঠে পড়তো। সংগে বৃষ্টির ফোটাও পড়তো। অমনি ছড়া কাটতে বসে যেতাম।” রোদ হচ্ছে বৃষ্টি হচ্ছে, খেকশিয়ালের বিয়ে হচ্ছে।” আবার কথনও চলতো, “বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদে এলো বান, শিব ঠাকুরের বিয়ে হচ্ছে তিন কন্যা রাঁধ।”
দুপুরে বৃষ্টি এলে প্লাস্টিকের বল নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে খেলা, ছাদের ড্রেনের কাছ দাঁড়িয়ে বৃষ্টির জরে ভেজা আর লাঠি হাতে মায়ের দাবরানি খাওয়া, কত যে আনন্দের তা বলে বোঝানো যাবে না।
কাঁচা কাঠের ধোঁয়াতে মা রান্না করতে পারতো না, বৃষ্টির ক দিন হতো চালে ডালে। বিকালে মুড়ি আর সরিষার তেল, ৭/৮ দিন পর যখন বৃষ্টি ছাড়তো তখন ভ্যাপসা গন্ধে জড়ানো কাঁথা শুকানোর তাড়া পড়ে যেত। আর সকলে জড়ো হতাম রংধনু দেখবার আশায়। এরকম বৃষ্টি আষাঢে শুরু হয়ে শারদীয় পুজা পর্যন্ত চলতো।
এত অসুবিধা হলেও বৃষ্টি দেখতে আমার ভালো লাগে। আগে মনে করতাম, ভগবান বোধ হয় আকাশে চাপ কল চেপে জল জমিয়ে আকাশ ফুটো করে দিত। তাই এত বৃষ্টি হয়।
বড় হয়ে যখন রহস্য খুলে গেল, তখন চেরাপুজ্ঞী খুঁজতে লাগলাম। জানতে পারলাম, ভারতের মেঘালয়ে এর অবস্থান। যাবার জন্য রাস্তা খুঁজতে লাগলাম।
রবীন্দ্র নাথের ”শেষের কবিতা” মেঘালয়ের শিলংকে ভালোবাসতে শেখালো নতুন করে। তখন কতবার যে নিজেকে লাবন্য কল্পনা করে শিলং এর পাহাড়ে ঘুরে বেড়িয়েছি আর অমিত কে খুঁজে ফিরেছি তা গুনে বলতে পারবো না।
২০০২ সাল থেকে আমার ভিসা করা থাকে চ্যাংড়াবান্ধা দিয়ে। তাই শিলিগুড়ি থেকে ট্রেনে মেঘালয় অনেক দিনের ব্যাপার। আবার আগের ভিসা থাকতে ডাহুকির ভিসাও পাবো না। তাই আমার আর শিলং, চেরাপুজ্ঞী কেবল ভালোবাসার জায়গা হয়ে রইলো। ভালো লাগাতে আর পারলাম না।
এবার টুনটুনকে বল্লাম, “বাবু আমার চেরাপুজ্ঞী যাবার অনেক সখ। ওখানে যাবো বৃষ্টি দেখতে। একটা হোটেলে জানালার পাশে বসে দেখবো বৃষ্টি আর শুধু বৃষ্টি। সারাদিন কেবল বৃষ্টির গান শুনবো।” টুনটুন বল্রো ওর সখ আছে, ‘ চেরাপুজ্ঞী” যাবার।
আমার আর একটা সখ আছে শিলং যেয়ে একটি বার নিজেকে লাবন্য ভাবতে।
কিন্তু এখন ভাবছি আমার এই শহরটাকে তো সালাউদ্দিন কলংকিত করে দিল। এখন যদি কখনও শিলং যাই, তবে কাকে ভাববো অমিত কে না সালাউদ্দিনকে? সালাউদ্দিনের কথা মনে পড়তেই পোড়া মানুষের গন্ধ যে আমাকে শিলং শহর থেকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াবে।
১৭ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৫:২৫
মঞ্জু রানী সরকার বলেছেন: াওয়া হয় নি তো কাহিনী হবে কি করে?
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৭
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ভাবলাম ভ্রমণ কাহিনী। যাই হোক গেলে আমাদের নিরাশ করবেন না