নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
I am a house wife, I love to write something
গত রাত্রে শুতে অনেক রাত হয়েছে। পরদিন ছুটির দিন ভেবে রাত ভোর রান্না, খাওয়া গপশপ করে সকালে দেরী করে উঠবে একরকম ঠিক ঠাক করে রাত ৩টার দিকে শুতে গেল অন্তরা আর ভাস্কর বাবু।
কিন্তু ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই কলিং বেলের শব্দে দুজনের ঘুম ভেঙ্গে গেল। হাই তুলতে তুলতে দুচোখ ভরা ঘুম নিয়ে অন্তরা দরজা খুলে দিল। সামেন শহীদের মা দাঁড়িয়ে। অন্তরা জানে, সে এসেছে ভাস্করের কাছে। তাই বাইরের ঘরে বসতে বলে লাইট আর ফ্যানের সুইচটা দিয়ে ভিতরে যেয়ে ভিতরের ঘরে যেয়ে ভাস্করকে বললো,”শহীদের মা”।
ভাস্কর জামাটা গায়ে দিতে দিতে ঘরে ঢুকে বলে, ”কি গো শহীদের মা, এত সকালে?” শহীদের মা কেঁদে ফেললো,” বাবা আমাকে বাচাও। আজ ২দিন আমি বাড়ী ছাড়া। কিছু খাই নি।” কি হয়েছে জানতে চাইলে বলে, ”শহীদ জামিনে বাড়ী এসেই গাড়ী চালাবে বলে গাড়ীটা মেরামতের জন্য কিছু টাকা নিয়ে বাইরে গেল। ফিরে এলো ডজনখানেক জুতার গাম কিনে। সারা রাত এ গাম দিয়ে নেশা করলো এবং তারপরে আমাকে মারধর। বলে, তুই আমাকে জেলে দিলি ক্যান?বেড়ীয়ে যা বাড়ী থেকে না হলে তোরে খুন করে আমি আবার জেলে যাবো। ভয়ে ঐ যে বের হয়েছি আমি আর বাড়ী যাই নি্”।
”শহীদের মা, তোমাকে বল্লম ও আরো কিছুদিন হাজতে থাক। তোমার মন মানলো না, বললে ভালো হয়ে গেছে। এই নিয়ে ২বার তুমি একই কাজ করলে। তুমিই জেলে পাঠাও আবার বেটা আমার ভালো হয়ে গেছে বলে নিয়ে আস। কিন্তু এরা কি এত সহজে ভালো হয়্?। আমি বল্লাম আরো কিছুদিন থাক।”
বাবা, ও যে বললো, ”আমাকে বের কর মা, দেখবি আমি ভালো হয়ে গেছি। আমি গ্রামে চলে যাবো। বিয়ে করবো ,সংসার করেবো”। “কিন্তু যা ছিল তার চেয়েও খারাপ হয়েছে। আগে নেশা করে মারতো না। এখন মারে, গালাগালি করে, কি করবো মা তো থাকতে পারি না”। বলেই হা্উমাউ করে কেঁদে ফেললো শহীদের মা।
”এখন কি করতে চাও?”
”আবার জেলে দিতে চাই, এবার না মরে গেলে আমি আর আনবো না। বাবা, যেদিন ওর লাশ আনতে বলবে, আমি সে দিন যাবো, ওর লশ আনতে”।তবে বাবা দেখবেন, ওকে যেন কাশিমপুর জেলে রাখে। শুনলাম ওটা একটু বড়”
ভাস্কর বললো,”ঠিক আছে, আজ কাল তো ছুটি। রবি বারে আমি কোর্টে যাই, দেখি কি করতে পারি”।
অন্তরা এসে দেখে শহীদের মার পরনের কাপড়টা ভিজা। বাইরে বৃষ্টিতে ভিজে গেছে। ও কিছু খাবারে এনে দিল।
শহীদের মা খায় আর বলে, ”আজ ৩দিন জেল থেকে এসে আমার শহীদ একমুঠো ভাত খায় নি। শুধু জুতার কালি শুকে শুকে আছে”।
তার দুচোখ বেয়ে পড়ছে স্রোতহীন নদীর মরা ধারা।
©somewhere in net ltd.