নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
I am a house wife, I love to write something
”এক কন্যা যেন হয় কোটি পুত্রের সমান।”
গত ছুটিতে এসে মিষ্টি সোনা আমাকে জিজ্ঞসা করে, “মা, আমার হাত পা ছেলেদের মতো শক্ত কেন?”
আমি বললাম, “আসলে ঈশ্বর তোমাকে ছেলে করে পাঠাবেন বলে ঠিক করে ফেলেছিলেন, পরে আমার চাওয়া তে বিরক্ত হয়ে, তোমাকে মেয়ে করে দিয়েছেন।’ ”কেন মা?” তুমি কি চেয়েছিলে?”
আমি তখন মিষ্টিকে কঠিন সত্য কথাটা বলে দিলাম।
”তুমি যখন আমার গর্ভে ছিলে তখন তোমার ঠাকুমা বলেছিলেন, প্রথমটা তো মেয়ে।(তোমার টুনটুন দিদি) এবার যেন ঈশ্বর একটা ছেলে দেন। পাগল হোক, ছাগল হোক, তবুও যেন একটি ছেলে হয়।”
এরপর থেকে আমি আর ভালো থাকতে পারিনি। প্রতি মুহুর্তে প্রার্থনা করেছি, ”ঈশ্বর পাগল ছাগল পুত্র সন্তানের আমার প্রয়োজন নেই। আমার সুস্থ একটা কন্যা সন্তান দিও। তাই ঈশ্বর তোমাকে দিয়েছেন।”
মিষ্টি সরল বিশ্বাসে একটা মিষ্টি হাসি দিল।
কিন্তু এটা শুধু আমার শাশুড়ীর কথা নয়। এটা হলো এই অন্ধকার সমাজের কথা। এখনও তারা বিশ্বাস করে, পুত্র সন্তান হলেই স্বর্গের দুয়ার তাদের জন্য খুলে গেল।এই জন্যই বলে সোনার আংটি বাঁকাও ভালো। কিন্তু মেয়েরা যে এখন সোনাকেও ছাড়িয়ে গেছে এটা এই সমাজ এখনও মানতে চায় না।
হিন্দু আইনে বিবাহিত মেয়েরা বাবার কোন সম্প্ত্তি পায় না। আর এই সুযোগে বাবা/ভাই করেন কি কোন প্রকারে মেয়েটাকে বিয়ে দিতে পারলে হলো। কথিত আছে মেয়েরা সম্পত্তি পায় না বলে বিয়ের সময় তাদের কে দিয়ে দেওয়া হয়। কথাটা সম্পুর্ন ভুল।
কোনদিনই মেয়েদের তার বাবার সম্পত্তির যতার্থ হিসাবে অংশ দেওয়া হয় না।আর বিয়েতে যে সোনা গহনা বা অর্থ দেওয়া হয় তাতে তার কোন অধিকার থাকে না। এর অধিকার জন্মে জামাই নামক আর এক পুত্র সন্তানের। কারন মেয়েদের নামে তা লিখে দেওয়া হয় না।
আর অবিবাহিত মেয়েরা যদি নিজ ভাই না থাকে তাহলে ও সম্পত্তি পায় না। পাবে তার জেঠাতো কাকাতো ভাই।
এ ক্ষেত্রে বাবা যদি তার জীবিতকালে উইল বা দানপত্র করে দেন তাহলে মেয়েরা পাবে। কিন্তু আমার জানা মতে কোন বাবা এ কাজটি জ্ঞানত: করতে চান না। কারণ তিনিও তো পুত্র সন্তান।
মুসলিম আইনে মেয়েদের জন্য বাবার সম্পত্তি নির্দিষ্ট পরিমানে পাওয়ার বিধান আছে। কিন্তু আইন আর বাস্ত ব অনেক ফারাক। বাস্তবে বোনদের ফাঁকি দেবার জন্য ভাইদের সে কি নিরন্তর প্রচেষ্টা। আর্ এ জন্য মুসলিম সম্পত্তি কেনার সময় খুব যাচাই বাছাই করে কিনতে হয়। কারণ যখন তখন তার ওয়ারিশ মেয়ে সন্তান বের হয়ে যায়। অবশ্য এর ব্যাতিক্রম যে নেই তা আমি বলছি না। তবে বেশীর ভাগই চলে ছলে বলে কৌশলে বোনদের সম্পত্তি নেওয়া থেকে বিরত করার প্রচেষ্টা।
ভারতে অবশ্য এই হিন্দু আইনের প্রথা পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন সেখানে মেয়েরা বাবার উত্তরাধিকার।
মাননীয় প্রধান মন্ত্রী মেয়েদের উন্নয়নে অনেক কিছু করেছেন। আজকের এই কন্যা দিবসে তার কাছে আবেদন জানাচ্ছি তিনি যেন বিষয়টি নিয়ে গভীর ভাবে ভাবেন এবং আলোর পথ দেখান।
কন্যা দিবসে বিশ্বের সকল অবহেলিত কন্যাদের জন্য রইলো আমার অকৃত্রিম আদর আর ভালোবাসা। আর প্রার্থনা , ”এক কন্যা যেন হয় কোটি পুত্রের সমান।”
০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:৩৭
মঞ্জু রানী সরকার বলেছেন: আমি বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে লিখেছি। আমাদের সমাজ অনেক বড়্, আমি যা দেখেছি, তা আপনি দেখেনি। আবার আপনি যা দখেছেন আমি তা দেখেনি। তবে নেগেটিভ বিষয়গুলো হৃদয়কে নাড়া ড়েয়্ আপনাকে ধন্যবাদ সুন্দর সমালোচনার জন্য।
২| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:৪০
মানবী বলেছেন:
আমিও বাংলাদেশের কথাই বলেছি :-)
যে ভারতীয়দের কথা বলেছি তাঁরা আমার পরিচিত, বন্ধুবান্ধব!
তবে হ্যাঁ, হাজার ভালোর মাঝেও এমন একটি দুটি নেতিবাচক ঘটনা বেশি আলোড়িত করে।
০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৫৭
মঞ্জু রানী সরকার বলেছেন: ঠিক তাই। ভালো ধরেছেন
৩| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:১১
ভিটামিন সি বলেছেন: আপনার পোষ্ট ভালো লেগেছে। হিন্দু মুসলিম সকল আইনেই ছেলে এবং মেয়েকে সমান অংশীদার করা হউক। তাতে আমার ভাগ কমে গেলে যাক, আমার বোনেরা তো কিছু সম্পত্তির মালিক হবে। তাহলে তাদের আর সম্পত্তিহীনভাবে, অন্যর সম্পদ হয়ে বাঁচতে হবে না।
০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৫৬
মঞ্জু রানী সরকার বলেছেন: খুব সুন্দর বলেছেন। সকলে আমরা এভাবে বলি। আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ
৪| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:২৬
ঢাকাবাসী বলেছেন: এত ওমেনস লিব নিয়ে কথা বলি, ভাই বোন সুন্দর সম্পর্ক নিয়ে কথা বলি, সম্পদের বেলায় সবাই স্বার্থপর! সব্বাই!
০৩ রা অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৭
মঞ্জু রানী সরকার বলেছেন: এটা বড় নিষ্টুর বাস্তবতা
৫| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৩
সুমন কর বলেছেন: সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছেন। +।
০৩ রা অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৭
মঞ্জু রানী সরকার বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:৩৩
মানবী বলেছেন: আমার পরিচিত বেশ কয়েকজন ভারতীয় নারী আছেন, সদ্য বিবাহিতা অনেকেই. তাঁদের বাবারা যৌতুক দেননি বা কন্যাকে গহনা দিয়ে স্বামী শশুড়বাড়ির উপর তার অধিকার তুলে দেননি.. তাঁরা অনেকে মেয়ের সাথে ব্যাংকে যৌথ এ্যাকাউন্ট খুলে টাকাটা রেখে দিয়েছেন। স্বামী বা শশুড়বাড়ির জানার বা নেবার কোন অধিকার নেই।
সংস্কারী হিন্দু পরিবারের হয়েও আপনি কন্যা সন্তানের জন্য যে দৃঢ়তা আর প্রার্থনা করেছেন তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবী রাখে। আমাদের উপমহাদেশে পুত্র সন্তানের জন্য যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা বা হাহাকার তা নিঃসন্দেহে নিন্দনীয়। এরা বুঝেনা বার্ধক্যে কন্যা সন্তানরা যেভাবে মা বাবার সেবা করে খুব পুত্র এমনটা করতে পারে। আপনি নিঃসন্দেহে ভাগ্যবতী, আপনি দু্জন ক্যার জননী।
আর, অধিকাংশ মুসলিম পরিবারে, বিশেষ করে ধার্মিক পরিবারে আইন সন্মত ভাবেই সম্পত্তি ভাগ করা হয়। হয়তো আমার সৌভাগ্য যে আত্মীয় পরিবার পরিজনদের মাঝে কখনও কাউকে ছলে বলে বোনের বা কন্যার সম্পত্তি থেকে বন্চিত করার প্রবণতা দেখিনি। বরং একটু ভিন্ন দেখেছি, ভাইরা সবচেয়ে আগে বোনদের প্রাপ্য বুঝিয়ে দিয়েছেন, নিজেদেরটা নিয়ে তেমন মাথা ঘামাননি।
সুন্দর পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।