নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
I am a house wife, I love to write something
পনের(চোখ দুটো ছানাবড়া)
মায়েরা এক জায়গায় জড়ো হলেই তাদের ছেলে মেয়ের গল্প করতেই পছন্দ করে। বিষয়বম্তু থাকে ওপেন। ছেলে মেয়ে সংক্রান্ত সব গল্পই চলে। তবে লক্ষ করলে দেখা যায় গল্পের বড় একটা অংশ জুড়ে থাকে খাওয়ার গল্প। তারা কি খেতে পছন্দ করে আর কি করে না এই সব।
এর সংগে আর একটি বিষয় থাকে যে তাদের ছেলে মেয়েরা কেউ নিজে হাতে খেতে পারে না। সবাইকে ই মায়েদের খাইয়ে দিতে হয়। এর মধ্যে ছোট থেকে মেডিকেলে পড়া ছেলে মেয়েও আছে।
এর মধ্যে দিয়ে মায়েরো কি প্রমাণ করতে চায় আমি বুঝি না। তাদের ছেলে মেয়ে এখনও শিশু আছে? না তারা মাকে খুব ভালো বাসে নাকি তারা লুলা বা খোঁড়া?
প্রসংগক্রমে কিছু ঘটনার উল্লেখ করি। আমার ছোট মেয়ে যখন আমার গর্ভে তখন টুনটুনের বয়স ৩ বছর। ডা: সুরাইয়া চৌধুরীর কাছে আমি নিয়মিত চেক আপ করাতাম। একদিন চেক আপ শেষে গল্প করছেন। বলছেন,’ চাকরী সংসার এক সংগে এই সময় বড় কষ্ট লাগে তাই না?”
আমি বল্লাম,” তা লাগে, তবে আমার বড় মেয়েটি খুব ভালো। ও সব নিজের কাজ নিজে হাতে করে। আমাকে ওর খাইয়ে দিতেও হয় না।” এই বার ডা: বললেন, ”এর জন্য আমি তো মেয়েকে ভালো বলিনা্। মেয়ের মাকে ভালো বলি। আপনি শিখিয়েছেন তাই ও খায়।”
টুনটুনকে হোষ্টেলে দেবার পর ২০০২ সালে মুন্সী গজ্ঞে এক বিয়ে তে গেছি আমার ছোট মেয়েকে নিয়ে। তখন ওর বয়স ৩ বছর।
বিয়ে বাড়ীতে অতিথি মায়েরা সব এক ঘরে বসে গল্প করছি। এমন সময় খাবারের ডাক এলো। আগে বাচ্চাদের খাওয়া। মায়েরা সব হুমড়ী খেয়ে পড়তে পড়তে বাচ্ছাদের খাওয়াতে বসে গেল।
আমি একা পড়ে রইলাম। একটা সানন্দা তুলে পড়তে যাচ্ছি। কনে বোনটির বড় দাদা আমাকে বললেন, দিদি আপনি গেলেন না?” কোথায় যাবো?”
”মেয়েকে খাওয়াতে।” “আমার যাওয়া লাগবে না। যেয়ে দেখুন আমার মেয়েটি সবার আগে বসে নিজে হাতে খাচ্ছে।”
দাদা বললেন, ”আজকের দিনে আপনি সবচেয়ে সুখী মা।’
২০০৫ সালে আমরা স পরিবারে নেপাল ভ্রমন করি। পোখরা হতে কাঠমন্ডু ফিরে আসছি। পথে একটা রেস্টুরেন্টে সাময়িক বিশ্রাম। হালকা কিছু খেয়ে নিয়ে বসে আমি আর রীতা বৌদি কফি খাচ্ছি। টুনটুন ,মিষ্টি, নিকিতা, রাজা, মিলন সব পাশের পাথর ভরা নদীতে নেমে গেছেছ্। আর দূরে দাড়িয়ে অশোক, সুদেব দা আর মৃণাল বাবু তা উপভোগ করছে।
আমার চোখ চলে গেল এক বিদেশীনি মায়ের দিকে।
সে একটা টেবিলে বসে সফর সংগীদের সংগে কথা বলছে।।আর পাশেই ছোট্ট একটা ছেলে বাচ্চা একা একা চামচে করে ভাত তুলছে মুখে। আমি তাকিয়ে থাকলাম। বাচ্চাটার গলাতে একটা বেল্টের সাথে ছোট একটা ট্রে ঝুলানো আর হাতে একটা বড় হাতল ওয়ালা ফাইবারের চামচ। বাচ্চাটি আপন মনে ট্রে থেকে ভাত নিয়ে মুখে তুলছে। কখনও মুখের পাশে চামচ চলে যাচ্ছে।
আমি মায়ের সংগে কথা বলার লোভ সামলাতে পারলাম না। উঠে গিয়ে মায়ের পাশের চেয়ারটিতে বসলাম। সংগীরা তার ততক্ষণে চা কফি খেতে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে।
জানতে পারলাম মহিলা কানাডিয়ান। প্রতি বছর বেড়াতে বের হন। এই বাচ্চাটি যখন আরো ছোট ছিল, তখনও সে একবার নেপাল ঘুরে গেছে। বাচ্চাটির বয়স ১৬ মাস। এই বয়সে তাকে একা ভাওয়ার অভ্যাস করানো হচ্ছে।
এবার মহিলা আমার সম্পর্কে জানতে চাইলো। বললো.” তোমরা কি কর বাচ্চাদের?” “ আমাদের মায়েরা বাচ্চাদের খাইয়ে দেয়।” এ কথাটি সে আর বুঝতে পারে না। শেষে বল্লাম,”মায়েরা বাচ্চাদের গলার ভিতরে খাবার পুষ করে।’
শুনে তো মহিলার চোখ দুটো ছানা বড়া।
২| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৩
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন । অামাদের মায়েদের এখনই সচেতন হওয়া উচিত । তা না হলে অদূর ভবিষ্যতে জাতি অকর্মন্য হয়ে যাবে ।
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:২৯
মঞ্জু রানী সরকার বলেছেন: বেশীর ভাগ হাউজ ওয়াইফ মায়েদের এই দুর্গতি। চাকুরীজীবি যে নেই তা নয় তবে খুব কম সংখ্যক
৩| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৭
কাজী রিদয় বলেছেন: সব মায়েদের উচিত মেয়েদেরকে ছোট বেলা থেকে স্বনির্ভর হওয়ার শিক্ষা দেয়া। কিন্ত অনেক মায়ের স্নেহের যন্ত্রনায় মেয়েরা তা পারে না। মা দের বুঝাবে কে...অতিরিক্ত স্নেহতে যে মেয়ের ক্ষতি হয়..এটি বুঝানো মুস্কিল। কারন আমি নিজেও ভুক্তভোগি..
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:২৩
মঞ্জু রানী সরকার বলেছেন: শুধু মেয়ে সন্তান নয়, ছেরেদেরকেও স্ব নির্ভর করে গড়ে তুলতে হবে। তবেই আমরা স্বাবলম্বি জাতি হিসেবে গেড়ে উঠতে পারবো
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:০৮
চাঁদগাজী বলেছেন:
মা'গুলো চাকরাণীকে দিয়ে সব করায়, নিজেরা মোটাসোটা ও অলস হয়ে, বাচ্ছাগুলোকে হাবলা বানায়