![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিংবা দিগন্ত নীলিমার আহবানে ।
ঊশ্রীর পাড়া বেড়ানো । ঐ যেমন -তেমন ।
তিয়া জানালায় ধারে লেপ মুড়ো দিয়ে পুটিন খাচ্ছে । মা সন্ধের পর পরই শুয়ে পড়ে, শীতকাল রাত জেগে থাকাটাই বিষাদের । তাই রাত ১০ টার মধ্যই দেখি রাস্তা-ঘাট ফাকাঁ । বাবা ঘুমের মধ্য এত খুল্লুর খুল্লুর কাশে যে পাশে রুমে তার তীব্র আওয়াজ চলে যায় । শীতের দিন তাই আর পাখাঁ ছাড়ার উপায় নেই, পাখাঁ ছাড়লে কিছুটা শব্দ কম লাগতো । তাই মাঝে মাঝে রাত্রিরে ঘুমাই না, জেগে বসে থাকি ।
তিয়া কোন সময় রাত্রির বেলা এসে বসে, একটু আকটু গল্প করতে চায় । সংক্ষেপে উত্তর দিতেই ওর বিরক্ত লক্ষ্য করা যায় । তিয়া হুমায়ুন আহমদের খুব ভক্ত , ইউনিউবে নাকি কোন মাওলানা তাকে গালি দিছে শয়তান বলে এ জন্যই সারাদিন ওর মন খারাপ আর রাতের বেলা আমার সাথে আসছে ঝগড়া করতে । তিয়া চায় ওই মাওলানাকে কিছু গালি দিই, তাতেই ওর শান্তি ।
আজকে গালি না দিয়ে বললুম- আসলে কি তিয়া জানিস, জগৎ এমন লোকের অভাব নেই । গালি দিলে তো কিছু হবে না, বরং চো ও বেটা যদি শুনে আরো উত্তেজিত হয়ে যাবে ।
তিয়া আমার উপর রাগ করে বলে- ও বুঝেছি, হুমায়ুন স্যার তো তোমার প্রিয় রাইটার না তাই এর প্রতিবাদে তুমি ঔ বেটাকে গালি দিব না । তোমার প্রিয় রাইটার নিয়ে যদি কেউ বলতো ?
ও মাথা মোটাওয়ালের কথা শুনতেই হবে কেন তোর ? ও ওয়াজ, কি তোর জন্য বা আমার জন্য ? হ্যাঁ জন কিটর্স নিয়ে কেউ কিছু বললে একটু খারাপ লাগবে ঠিক আছে কিন্তু আগের মত অত চটে যাই না , জীবন এমনি । সবাই তো আমরা মানুষ । এক মানুষের সন্মান রক্ষার্থে আমরা আরেক মানুষের অসুস্থতাকে হেয়ো করি ।
তিয়া: তাহলে কি ওরা ওগুলো বলে , বেড়াবে আমরা কিছু করতে পারবো না ।
আমি: হুম পারবে, তাকে শিক্ষিত করো গিয়ে ?
তিয়া: এটা আমি কি ভাবে করবো? শুধু কি শিক্ষা দিয়ে কিছু হয় ? ভেতরের মনুষ্যত্বটা কি থাকে না ওদের ?
আমি: তুমি যেমন ভালো বিদ্যালয়ে পড়েছো , সবাই কি তেমন সুযোগ পায় ? ছোট থেকে মিথ্যা নিয়ে জন্মালে তো মানুষ মিথ্যাকেই সত্য মনে করবে তাই কি নয় ?
তিয়া : হুম তা ঠিক কিন্তু উপায় কি ?
আমি: উপায় কিছু নেই, বৈচিত্র শিক্ষার ফল এটা ।
তিয়া : তুমি ভেবে দেখ , হুমায়ুন স্যার দাড়ি -মোছ রাখেনি এজন্য তাকে শয়তান বললো ?!!
আমি: হুম । বলেছে তো কি করবে ?
তিয়া: বেটাকে ঝাড়ু মারা উচিত ।
আমি: এক কাজ করতে পারিস ,বেটাকে বিয়ে করে তারপর ঝাড়ু মারলি ।
তিয়া: ও বেটাকে বিয়ে করবো? গেয়ো একটা !
আমি: পৃথিবীতে কেউ সব কিছু জেনে জন্মায় না । বিভেদটা মানুষের তৈরী করা ।
তিয়া: কেন করেছে মানুষ?
আমি: ব্যাবসার জন্য । আজ ধর্মীয় বিশ্বাসটাই যদি না থাকে কত কত মানুষ পথে বসে যাবে জানো?
তিয়া: বিশ্বাসর সমস্যা নেই । সমস্যা মানুষের আচরণগত ।
আমি : হুম । গতকাল দেখলাম ,যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম প্রবেশ বন্ধ করতে যাচ্ছে , তার মানে কি সমস্ত মুসলিম ক্রিমিনাল হয়ে গেল ?
তিয়া: হুম ।
আমি: ঘুড়ামি সব জায়গাই আছে । ওগুলো না থাকলে পৃথিবীটা আরো সুন্দর হতো সুতরাং যে ঐ রকম বিদঘুটে কথাও বলে তোমাকে সয়ে যেতে হবে, কথা দিয়ে বুদ্ধি দিয়ে জয় লাভ করতে হবে, তার ভেতরের অন্ধকারও দুর করতে হবে ।
তিয়া: হুম ।
আমি: আজকে আমি নিজেই একটি ওয়াজ শুনিচি, যে ওয়াজ করেছে তিনি বাংলাদেশের পপুলার ছিলেন কিন্তু সে এখন জেলে । সে বলেছে- আল্লাহ বানিয়েছে -মসজিদ,মিনার,এতিম খানা আর শয়তান বানিয়েছে সিনেমাহল,বার । এখন এ কথার প্রতিবাদে কি বলবো? শত শত মানুষ হাত তুলে তাকে সমর্থন দিচ্ছে? আমি যদি তাকে বলি শয়তানের সৃষ্টিকর্তা কে ? শয়তানকে মানুষের রক্তের ভেতর ঢুকে শয়তানি করার অনুমতি কে দিয়েছে? সাম্যর কবি নজরুল বলতো- শয়তান সৃষ্টি করার পরও আমি বাধাতাকে সন্মান করি । আমাদেরও উচিত যারা জানে না, অবুঝ তাদের কে জানানো তাদের কে মানুষ হিসবে সন্মান করা ।
©somewhere in net ltd.