নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিজয় না হওয়া পযন্ত সংগ্রাম করো

মানুষ আজিজ১

মানুষ আজিজ১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

উত্তরা

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:০৪

শৈশব কৈশর নিয়ে অনেককে অনেক সময় খুব আনন্দে আহ্রলাদ হতে দেখি কিন্তু আমার বেলায় ও রকম কিছু হয় না যদিও
শৈশব আমার ভালই কাটছিল,গ্রামের আট দশটা ছেলের মত ।গ্রামের পুকুরে ঝাপা ঝাপি গোল্লা ছুট,ফুট বল খেলা, লাটিম খেলা,রাতে দলবেধে পরশী দাদীর গল্প শুনা দাদীর গল্প বলা ছিল অসাধারণ ভুতের গল্প শুনে গায়ের লোমকুপ জেগে উঠতো ।শীতের সময় খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠা লুকিয়ে খেজুরের রস চুরি করা ।কোন কোন সময় স্কুল ফাকি দিয়ে খেলতে যাওয়া খেলার মাঠ থেকে বাড়ি এসে এক সময় বাবা- মার হাতে বেধম পিটুনী খাওয়া । সবচেয়ে বেশি ভালোলাগতো পাড়াগাঁ চসে বেড়ানো কোন কোনদিন আমাদের কয়েক জনকে এলাকাতে খোজে পাওয়া যেত না ..ছোটবেলায় আমি ,অনীক , তুর্ষার বহুদুর হেঠে হেঠে চলে যেতাম একবার আমাদের এলাকাতে লাল কাপর পড়া এক যৌতিশী আসছিলো লোকটা অনেক যাদু জানতো অনেক মজার মজার যাদু দেখাইতো সত্যিই মুগ্ধ হওয়ার মত ছোট বেলার সেই স্মৃতি আজও ভুলতে পারিনি আমরা সারাদিন সেই যৌতিশীর পিছনে ঘুরেছিলাম যাদু শিখবো বলে । শীতের সময় আনন্দের আমেজ টা একটু বেশি থাকতো নুতন খরে বসে শীতে রোদ পোহানো পোড়া খেজুরের রসদিয়ে মুড়ি মেখে খাওয়া , আমাদের এলাকাতে বিশাল এক জাম গাছ ছিল সেখানেই ছিল আমাদের প্রধান খেলা দুলার স্থল । আমাদের গ্রামে একদিগে বহমান নদী অন্য দিগে আরণ্যক তাই মানুষের বসতী বাড়ি ছিল বেশ কিছু দুর দুর যেখানে বসতী থাকতো এক সাথে দশ থেকে পনের পরিবারের উপরে একসাথে বসবাস করতো কিন্তু এলাকার সবাই সবাইকে চিনতো আমার শৈশব ভালই ছিল তাই এখন আর শৈশব নিয়ে আফসোস নেই বললেই চলে ।তখন মাএ ক্লাস সর্প্তম শ্রেনীতে ছিলাম ।গ্রামে সর্প্তম শ্রেনীতে উঠতে গিয়ে অনেকের মুখে দাড়ি গজিয়ে যেত । আমাদের স্কুল ছিল বিশাল ,বিশাল মাঠ ছিল স্কুল ছুর্টি হলে হই হুল্লা করে মাঠে ছুটা ছুটি । আমার পারিচয় দেই আমর বাবা একজন কৃষক ছিল ,কৃষক বললে অনেকে মনে করবেন হয়তো গরীব কিন্তু তা না ,খুব ভালোবাবেই আমাদের দিন চলতো ।আমরা দুই ভাই এক বোন আমার বড় ভাইয়া রাশেদ ছোট বোন নীলা ।আমার বড় ভাইয়ার কথা যদি বলি ওর একটা বর্তমানে নাম আছে বখাটে,শুধু বখাটে বললে ভুল হবে বখাটের দের চেয়ে খারাব কাজ করে ওরা ,ওদের একটা গ্রুপ আছে এলাকার চেয়্যারম্যান ওদের পোষে ।আমার ভাইয়াকে খুব ভয় পেতাম সব সময় চোখ লাল থাকতো ,কিছু বললেই বলতো মাথায় তুলে আছার দিমু ও সব সময় রাত করে বাসায় আসতো বাসায় এসে কোন কোন সময় মাঝ রাতে বাবা-মার সাথে চিৎকার চেচামেচি আরম্ভ করতো,রাতের খাবার খেয়ে পরের দিন দুপুর ১ থেকে ২টার মধ্য ঘুম থেকে উঠতো দুপুরের খাবার খেয়ে আবার নিয়ম মাফিক বখাটে পনায় বেড়িয়ে যাওয়া । ওর সাথে আমার কোন ভালো সর্স্পক ছিল না,শুধু আমার কেন কারো না । মার এই নিয়ে আফসোসের কোন কমতি ছিল না ছেলেটা কিভাবে নস্ট হয়ে গেল ।পীর দরবেশের কাছে যাওয়া নানা জায়গায় মানত করা কোনটা কম করেননি বেচারি কোন কিছুতেই কিছু হল না । যদিও এ নিয়ে আমি তত একটা মাধা ঘামাতাম না বরংচ কিছুটা ভাইয়া কে সাপোর্ট করতাম ওর নাম বললে অনেকে ভয় পাইতো তার জন্য একবার টেন ক্লাস পড়ুয়া তুহিন আমার সাথে ঝগড়া লেগে আমাকে মার দেয় ছোট বেলায় আমি কারো কাছে মার খেলে বাসায় এসে কোনদিন বলতাম না সেই দিন তুহিনের মার খেয়ে বাসায় ফিরছিলাম রাস্তায় রাশেদ ভাইয়াকে দেলাম কিছু লোকের সাথে বসে সিগারেট টানচ্ছে তাকে দেখলে আমি দশ হাত দুর দিয়ে থাকি ও সিগারেট খায় এটা বাসায় বলে ওর হাতে প্রচন্ড মার খেয়েছিলাম এর পর থেকেই ওকে এড়িয়ে চলা ঐদিন আমার বন্ধু তুর্ষার বললো চল রাশেদ ভাইকে বলি তোকে যে মারছে আমি বললাম না থাক , কিন্তু তুর্ষার আমার কথা না মেনে দৌড়ে গিয়ে ভাইয়াকে বলে দিল সেদিন ভাইয়া তুহিনকে খুব মার দিয়েছিল । আমাদের গ্রামে কিছু হিন্দু বসতী ছিল তারা উগ্র সামাজ পতিদের কাছে তত একটা পাত্তা পেত না ,ওরা সব সময় কেমন জানি একটা ভয়ে থাকত আর সামাজ পতিরা ওদের সব সময় ভয় দেখিয়ে রাখতো ,ওরা ভয়ে সন্ধ্যা পুর্জা পযন্ত দিতে পারতো না । হিন্দু পাড়া থেকে একটি মেয়ে আমাদের ক্লাসে পড়তো,একটি রাস্তা দিয়ে খুব শান্ত ভাবে ক্লাসে আসতো ক্লাসে সব সময় নীরব থাকতো হই হুল্লা আমি ওকে কখনো করতে দেখিনি ও খুব সাদা সীদে সাজ গোজ করতো ও মাথার দুই পাশে দুইটা চুলের বেনি জুলিয়ে রাখতো প্রায়শই ওকে দেখতাম লাল ফরাক পড়তে কি জানি লালই ছিল সস্ভবত ওর প্রিয় কালার ওকে যে কোন সাজে খুব সুন্দর মানাতো ও পায়ে সব সময় সেন্ডেল পড়তো যখন রাস্তাদিয়ে হাঠতো ওর সেন্ডেলের শব্দ আমার কাছে বাদ্য যন্তের মত কানে বাজতো ওর নাম টাইতো বলা হয়নি ওর নাম ছিল উত্তরা চক্রবর্তী । ক্লাসে আমি ছিলাম মাঝা মাঝি ধরনের ছাএ খুব ভালো ছাএ তখন ছিলাম না কিন্তু ভালো ছাএদের সাথে আমার বেশ খাতির ছিল । উত্তরার সাথে প্রথম কথা হয় পরীক্ষায় সময় ,পরীক্ষার সময় ওর সাথেই আমার সিট পড়ে পরীক্ষার সময় আমার দেখা দেখির অভ্যাশ থাকায় ওর খাতা দেখাতে বললে ও বিনে বাক্যতে ওর খাতা দেখায় ভালো স্টুডেন্টের পাশে বসার এইটা একটা সুবিধা ,শুধু আমাকে নয় যে ওর কাছ থেকে দেখতে চায় সবাই কে ও দেখায় ।ওর সাদা সীদে সিমসাম চলা ফেরা আমাদের সকলকে মুগ্ধ করতো । উত্তরাকে সব সময় নীরবে বসে থাকতে দেখতাম ক্লাসের কারো সাথে বেশি কথা বলতো না একদিন ওকে বললাম তুমি এমন নীরব থাকো কেন সব সময় ও একটু হাসি দিয়ে বললো কই নাতো ? না ….তোমাকেতো প্রায়ই দেখি ও বললো ও কিছু না এমনি । কিন্তু কেন জানি মনে হলো উত্তরা কি যেন বলতে চায় বলতে পারচ্ছে না ওকে আর বেশি ঘাটাইনি কিছুদিনের মধ্যেই ওর সমস্ত কিছুর উত্তর পেয়ে গেলাম ।

একবার আমার জ্বরের কারনে কিছু দিন ক্লাসে যেত পারিনি ।তাই চিন্তে করলাম উত্তরাদের বাড়িতে গিয়ে পড়াটা জেনে আসবো ,যদিও ওদের বাসা থেকে অন্য ক্লাসমেটের বাড়ি কাছে তার পরও ওদের বাড়িতে গেলাম । ওদের বাড়ির পরিবেশ খুব সুন্দর মাটির বাড়ি হলেও বাড়িতে উঠানে কোন ময়লার চিন্হ নেই বাড়ির আঙিনায় খুব সুন্দর ফুলের বাগান সত্যিই মুগ্ধ করান মত তুলশী গাছের তলাটা কত সুন্দর করে সাজানো আমরা কখনো গাছকে সজিয়ে দেখিনি এখন দেখলাম যে কোন কিছুকে সাজালে খুব সুন্দর দেখায় আমার দেখা তুলশী গাছটি তার বড় প্রমান । বাড়িতে ঢোকতেই উত্তরার আম্মার সাথে দেখা হল ,আমি বললাম আংটি আমি উত্তরার কাছে একটু পড়াটা জানতে এসেছি আজ আমি ক্লাসে যাইনি,ওর আম্মা চোখের কোনে বিরক্ত ভাব করে উত্তরাকে ডেকে দিল ।বাড়ির বারান্দাতে ও আমাকে পড়া বুঝিয়ে দিল । হঠাৎ করে উত্তরা বললো নিলয় আমরা কলকাতা চলে যাচ্ছি । কবে? ও বললো আগামী বছর জমি জমা সব বিক্রি করে বাবা চিন্তে করছে কলকাতা চলে যাবে । ওকে বললাম দেশের জন্য মায়া হবে না ও বললো হবে না আবার এতটা বছর ধরে এখানে আছি ।তা ছাড়া তোমরা তো জান এখানে আমরা স্বাধীনতা পাই না তাছাড়া আমাদের আত্বীয় সজনতো সবাই কলকাতায় আমরা গুটি কিছু মানুষ এখানে পড়ে রয়েছি ।আমি কথা বাড়ালাম না ওর দিগে চেয়ে রইলাম দেলাম চোখ দু'টো কেমন ছল ছল করছে যে চোখের চাহনি ছিল নিস্পন্দ নিরপরাধ থেকেও উর্ধ্বে . .সত্যিই তো এখানে ওরা স্বাধীনতা পায় না ক্লাসের মেয়েরা ভালো করে কথা বলে না ও হিন্দু বলে । কিছু দিন ধরে নাকি বখাটরা ওকে খু্ব নানা আজে বাজে কথা বলে রাস্তায় আটকায় নানান হুমকি দেখায় এটাও অজানা নয় যে এ বাখাটেদের মাঝে আমার ভাইয়াও রয়েছে । ঐ দিন পড়াটা জেনে বাড়িতে চলে এসেছিলুম । কিছু দিন সব কিছুই স্বাবাভিক নিয়মে চলছিলো । একদিন সকালে ঘুমিয়ে রয়েছি আমার ছোট বোন নীলা এসে চিৎকার করে বললো ছোট ভাইয়া তারাতারি ঘুম থেক উঠ হিন্দু পাড়া থেকে কান্নার চিৎকার আসছে,আমি শরীর থেকে কাথা ঝেড়ে ফেলেদিয়ে দৌর দিলাম ।পরে লোক মুখে জানতে পারলাম হরিহরের বাড়িতে ডাকাত ডুকেছিল,হরিহরের মেয়েকে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে ডাকাতরা ডাকাতি করে চলে যায় । উত্তরার বাবার নাম হরিহর জানতে পেয়ে আমার কান্না এসে গেল । ওই দিন উত্তরাদের বাড়িতে ইচ্ছে হলেও যেতে পারিনি লোক মুখে নানা ভীতির কথা শুনে আর যাওয়া হয়নি ।


শেষ কথা
নিজের প্রেয়োজনেই আজ আজপাড়া গাঁ থেকে উঠে এসে বিশাল এপাটমেন্টে বসে উত্তরার গল্প লিখছি ।এটা কি শুধু উত্তরার গল্প এটা তো আমারও গল্প । যে দিন শুনেছিলাম উত্তরার করূণ অবস্থার কথা সে দিন যে কত বার আমি চোখের জল ফেলেছি হিসাব করে বলতে পারবো না । ওর প্রতি যে আমার দুর্বলতা তাতো কেউ দেখেনি দেখলে হয়তো ধর্মদ্রোহীর খেতাব পেতাম । ওর খারাব অবস্থার জন্য এক সময় আমার ভাইকে খুন করে মন চাইছিলো সে তো এমনি এমনি নয় ।ওদের বাসায় ডাকাতির কিছুদিন পরই ওরা কলকাতা চলে যায় । উত্তরারা কলকাতায় চলে যাওয়ার বেশ কিছুদিন পর ওদের বাশায় গিয়েছিলাম গিয়ে দেখি সবই কিছুই নীরবে পড়ে রয়েছে বাড়ির উঠানে ফুল গাছ ও তুলশী গাছটা বেচেঁ থাকার জন্য কি আকুতিইনা জানাচ্ছে বার বার ওদের পাতাও খয়রী রং ধারণ করেছে কিছুদিনের মাঝেই যেন সব কিছু ঝড়ে যাবে । এখনও প্রতি বছর প্রকৃতির নীয়ম মেনে শীত আসে হয়তো সেই পাড়া গায়েঁ হয়তো খেলা ধুলার ধুম পড়ে যায় ..কিন্তু কোনদিন আমার আর যাওয়া হয় না সেই গাঁয়ে । মাঝরাতে ঘুম ভাংলে এপাটমেন্টের উত্তরের জানালাটা খোলে দেই আনমনেই উত্তরার কথা মনে আসে । মনে হয় এলো মেলো চুলে ঘেরা কে যেন এক দৃস্টিতে আমার দিগে চেয়ে হঠাৎ চোখে জল এসে যায়.. আমি ওকে এখনো নীরবে কত ডাকি ও কি ভাবে জানবে?




শৈশব কৈশর নিয়ে অনেককে অনেক সময় খুব আনন্দে আহ্রলাদ হতে দেখি কিন্তু আমার বেলায় ও রকম কিছু হয় না যদিও
শৈশব আমার ভালই কাটছিল,গ্রামের আট দশটা ছেলের মত ।গ্রামের পুকুরে ঝাপা ঝাপি গোল্লা ছুট,ফুট বল খেলা, লাটিম খেলা,রাতে দলবেধে পরশী দাদীর গল্প শুনা দাদীর গল্প বলা ছিল অসাধারণ ভুতের গল্প শুনে গায়ের লোমকুপ জেগে উঠতো ।শীতের সময় খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠা লুকিয়ে খেজুরের রস চুরি করা ।কোন কোন সময় স্কুল ফাকি দিয়ে খেলতে যাওয়া খেলার মাঠ থেকে বাড়ি এসে এক সময় বাবা- মার হাতে বেধম পিটুনী খাওয়া । সবচেয়ে বেশি ভালোলাগতো পাড়াগাঁ চসে বেড়ানো কোন কোনদিন আমাদের কয়েক জনকে এলাকাতে খোজে পাওয়া যেত না ..ছোটবেলায় আমি ,অনীক , তুর্ষার বহুদুর হেঠে হেঠে চলে যেতাম একবার আমাদের এলাকাতে লাল কাপর পড়া এক যৌতিশী আসছিলো লোকটা অনেক যাদু জানতো অনেক মজার মজার যাদু দেখাইতো সত্যিই মুগ্ধ হওয়ার মত ছোট বেলার সেই স্মৃতি আজও ভুলতে পারিনি আমরা সারাদিন সেই যৌতিশীর পিছনে ঘুরেছিলাম যাদু শিখবো বলে । শীতের সময় আনন্দের আমেজ টা একটু বেশি থাকতো নুতন খরে বসে শীতে রোদ পোহানো পোড়া খেজুরের রসদিয়ে মুড়ি মেখে খাওয়া , আমাদের এলাকাতে বিশাল এক জাম গাছ ছিল সেখানেই ছিল আমাদের প্রধান খেলা দুলার স্থল । আমাদের গ্রামে একদিগে বহমান নদী অন্য দিগে আরণ্যক তাই মানুষের বসতী বাড়ি ছিল বেশ কিছু দুর দুর যেখানে বসতী থাকতো এক সাথে দশ থেকে পনের পরিবারের উপরে একসাথে বসবাস করতো কিন্তু এলাকার সবাই সবাইকে চিনতো আমার শৈশব ভালই ছিল তাই এখন আর শৈশব নিয়ে আফসোস নেই বললেই চলে ।তখন মাএ ক্লাস সর্প্তম শ্রেনীতে ছিলাম ।গ্রামে সর্প্তম শ্রেনীতে উঠতে গিয়ে অনেকের মুখে দাড়ি গজিয়ে যেত । আমাদের স্কুল ছিল বিশাল ,বিশাল মাঠ ছিল স্কুল ছুর্টি হলে হই হুল্লা করে মাঠে ছুটা ছুটি । আমার পারিচয় দেই আমর বাবা একজন কৃষক ছিল ,কৃষক বললে অনেকে মনে করবেন হয়তো গরীব কিন্তু তা না ,খুব ভালোবাবেই আমাদের দিন চলতো ।আমরা দুই ভাই এক বোন আমার বড় ভাইয়া রাশেদ ছোট বোন নীলা ।আমার বড় ভাইয়ার কথা যদি বলি ওর একটা বর্তমানে নাম আছে বখাটে,শুধু বখাটে বললে ভুল হবে বখাটের দের চেয়ে খারাব কাজ করে ওরা ,ওদের একটা গ্রুপ আছে এলাকার চেয়্যারম্যান ওদের পোষে ।আমার ভাইয়াকে খুব ভয় পেতাম সব সময় চোখ লাল থাকতো ,কিছু বললেই বলতো মাথায় তুলে আছার দিমু ও সব সময় রাত করে বাসায় আসতো বাসায় এসে কোন কোন সময় মাঝ রাতে বাবা-মার সাথে চিৎকার চেচামেচি আরম্ভ করতো,রাতের খাবার খেয়ে পরের দিন দুপুর ১ থেকে ২টার মধ্য ঘুম থেকে উঠতো দুপুরের খাবার খেয়ে আবার নিয়ম মাফিক বখাটে পনায় বেড়িয়ে যাওয়া । ওর সাথে আমার কোন ভালো সর্স্পক ছিল না,শুধু আমার কেন কারো না । মার এই নিয়ে আফসোসের কোন কমতি ছিল না ছেলেটা কিভাবে নস্ট হয়ে গেল ।পীর দরবেশের কাছে যাওয়া নানা জায়গায় মানত করা কোনটা কম করেননি বেচারি কোন কিছুতেই কিছু হল না । যদিও এ নিয়ে আমি তত একটা মাধা ঘামাতাম না বরংচ কিছুটা ভাইয়া কে সাপোর্ট করতাম ওর নাম বললে অনেকে ভয় পাইতো তার জন্য একবার টেন ক্লাস পড়ুয়া তুহিন আমার সাথে ঝগড়া লেগে আমাকে মার দেয় ছোট বেলায় আমি কারো কাছে মার খেলে বাসায় এসে কোনদিন বলতাম না সেই দিন তুহিনের মার খেয়ে বাসায় ফিরছিলাম রাস্তায় রাশেদ ভাইয়াকে দেলাম কিছু লোকের সাথে বসে সিগারেট টানচ্ছে তাকে দেখলে আমি দশ হাত দুর দিয়ে থাকি ও সিগারেট খায় এটা বাসায় বলে ওর হাতে প্রচন্ড মার খেয়েছিলাম এর পর থেকেই ওকে এড়িয়ে চলা ঐদিন আমার বন্ধু তুর্ষার বললো চল রাশেদ ভাইকে বলি তোকে যে মারছে আমি বললাম না থাক , কিন্তু তুর্ষার আমার কথা না মেনে দৌড়ে গিয়ে ভাইয়াকে বলে দিল সেদিন ভাইয়া তুহিনকে খুব মার দিয়েছিল । আমাদের গ্রামে কিছু হিন্দু বসতী ছিল তারা উগ্র সামাজ পতিদের কাছে তত একটা পাত্তা পেত না ,ওরা সব সময় কেমন জানি একটা ভয়ে থাকত আর সামাজ পতিরা ওদের সব সময় ভয় দেখিয়ে রাখতো ,ওরা ভয়ে সন্ধ্যা পুর্জা পযন্ত দিতে পারতো না । হিন্দু পাড়া থেকে একটি মেয়ে আমাদের ক্লাসে পড়তো,একটি রাস্তা দিয়ে খুব শান্ত ভাবে ক্লাসে আসতো ক্লাসে সব সময় নীরব থাকতো হই হুল্লা আমি ওকে কখনো করতে দেখিনি ও খুব সাদা সীদে সাজ গোজ করতো ও মাথার দুই পাশে দুইটা চুলের বেনি জুলিয়ে রাখতো প্রায়শই ওকে দেখতাম লাল ফরাক পড়তে কি জানি লালই ছিল সস্ভবত ওর প্রিয় কালার ওকে যে কোন সাজে খুব সুন্দর মানাতো ও পায়ে সব সময় সেন্ডেল পড়তো যখন রাস্তাদিয়ে হাঠতো ওর সেন্ডেলের শব্দ আমার কাছে বাদ্য যন্তের মত কানে বাজতো ওর নাম টাইতো বলা হয়নি ওর নাম ছিল উত্তরা চক্রবর্তী । ক্লাসে আমি ছিলাম মাঝা মাঝি ধরনের ছাএ খুব ভালো ছাএ তখন ছিলাম না কিন্তু ভালো ছাএদের সাথে আমার বেশ খাতির ছিল । উত্তরার সাথে প্রথম কথা হয় পরীক্ষায় সময় ,পরীক্ষার সময় ওর সাথেই আমার সিট পড়ে পরীক্ষার সময় আমার দেখা দেখির অভ্যাশ থাকায় ওর খাতা দেখাতে বললে ও বিনে বাক্যতে ওর খাতা দেখায় ভালো স্টুডেন্টের পাশে বসার এইটা একটা সুবিধা ,শুধু আমাকে নয় যে ওর কাছ থেকে দেখতে চায় সবাই কে ও দেখায় ।ওর সাদা সীদে সিমসাম চলা ফেরা আমাদের সকলকে মুগ্ধ করতো । উত্তরাকে সব সময় নীরবে বসে থাকতে দেখতাম ক্লাসের কারো সাথে বেশি কথা বলতো না একদিন ওকে বললাম তুমি এমন নীরব থাকো কেন সব সময় ও একটু হাসি দিয়ে বললো কই নাতো ? না ….তোমাকেতো প্রায়ই দেখি ও বললো ও কিছু না এমনি । কিন্তু কেন জানি মনে হলো উত্তরা কি যেন বলতে চায় বলতে পারচ্ছে না ওকে আর বেশি ঘাটাইনি কিছুদিনের মধ্যেই ওর সমস্ত কিছুর উত্তর পেয়ে গেলাম ।

একবার আমার জ্বরের কারনে কিছু দিন ক্লাসে যেত পারিনি ।তাই চিন্তে করলাম উত্তরাদের বাড়িতে গিয়ে পড়াটা জেনে আসবো ,যদিও ওদের বাসা থেকে অন্য ক্লাসমেটের বাড়ি কাছে তার পরও ওদের বাড়িতে গেলাম । ওদের বাড়ির পরিবেশ খুব সুন্দর মাটির বাড়ি হলেও বাড়িতে উঠানে কোন ময়লার চিন্হ নেই বাড়ির আঙিনায় খুব সুন্দর ফুলের বাগান সত্যিই মুগ্ধ করান মত তুলশী গাছের তলাটা কত সুন্দর করে সাজানো আমরা কখনো গাছকে সজিয়ে দেখিনি এখন দেখলাম যে কোন কিছুকে সাজালে খুব সুন্দর দেখায় আমার দেখা তুলশী গাছটি তার বড় প্রমান । বাড়িতে ঢোকতেই উত্তরার আম্মার সাথে দেখা হল ,আমি বললাম আংটি আমি উত্তরার কাছে একটু পড়াটা জানতে এসেছি আজ আমি ক্লাসে যাইনি,ওর আম্মা চোখের কোনে বিরক্ত ভাব করে উত্তরাকে ডেকে দিল ।বাড়ির বারান্দাতে ও আমাকে পড়া বুঝিয়ে দিল । হঠাৎ করে উত্তরা বললো নিলয় আমরা কলকাতা চলে যাচ্ছি । কবে? ও বললো আগামী বছর জমি জমা সব বিক্রি করে বাবা চিন্তে করছে কলকাতা চলে যাবে । ওকে বললাম দেশের জন্য মায়া হবে না ও বললো হবে না আবার এতটা বছর ধরে এখানে আছি ।তা ছাড়া তোমরা তো জান এখানে আমরা স্বাধীনতা পাই না তাছাড়া আমাদের আত্বীয় সজনতো সবাই কলকাতায় আমরা গুটি কিছু মানুষ এখানে পড়ে রয়েছি ।আমি কথা বাড়ালাম না ওর দিগে চেয়ে রইলাম দেলাম চোখ দু'টো কেমন ছল ছল করছে যে চোখের চাহনি ছিল নিস্পন্দ নিরপরাধ থেকেও উর্ধ্বে . .সত্যিই তো এখানে ওরা স্বাধীনতা পায় না ক্লাসের মেয়েরা ভালো করে কথা বলে না ও হিন্দু বলে । কিছু দিন ধরে নাকি বখাটরা ওকে খু্ব নানা আজে বাজে কথা বলে রাস্তায় আটকায় নানান হুমকি দেখায় এটাও অজানা নয় যে এ বাখাটেদের মাঝে আমার ভাইয়াও রয়েছে । ঐ দিন পড়াটা জেনে বাড়িতে চলে এসেছিলুম । কিছু দিন সব কিছুই স্বাবাভিক নিয়মে চলছিলো । একদিন সকালে ঘুমিয়ে রয়েছি আমার ছোট বোন নীলা এসে চিৎকার করে বললো ছোট ভাইয়া তারাতারি ঘুম থেক উঠ হিন্দু পাড়া থেকে কান্নার চিৎকার আসছে,আমি শরীর থেকে কাথা ঝেড়ে ফেলেদিয়ে দৌর দিলাম ।পরে লোক মুখে জানতে পারলাম হরিহরের বাড়িতে ডাকাত ডুকেছিল,হরিহরের মেয়েকে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে ডাকাতরা ডাকাতি করে চলে যায় । উত্তরার বাবার নাম হরিহর জানতে পেয়ে আমার কান্না এসে গেল । ওই দিন উত্তরাদের বাড়িতে ইচ্ছে হলেও যেতে পারিনি লোক মুখে নানা ভীতির কথা শুনে আর যাওয়া হয়নি ।


শেষ কথা
নিজের প্রেয়োজনেই আজ আজপাড়া গাঁ থেকে উঠে এসে বিশাল এপাটমেন্টে বসে উত্তরার গল্প লিখছি ।এটা কি শুধু উত্তরার গল্প এটা তো আমারও গল্প । যে দিন শুনেছিলাম উত্তরার করূণ অবস্থার কথা সে দিন যে কত বার আমি চোখের জল ফেলেছি হিসাব করে বলতে পারবো না । ওর প্রতি যে আমার দুর্বলতা তাতো কেউ দেখেনি দেখলে হয়তো ধর্মদ্রোহীর খেতাব পেতাম । ওর খারাব অবস্থার জন্য এক সময় আমার ভাইকে খুন করে মন চাইছিলো সে তো এমনি এমনি নয় ।ওদের বাসায় ডাকাতির কিছুদিন পরই ওরা কলকাতা চলে যায় । উত্তরারা কলকাতায় চলে যাওয়ার বেশ কিছুদিন পর ওদের বাশায় গিয়েছিলাম গিয়ে দেখি সবই কিছুই নীরবে পড়ে রয়েছে বাড়ির উঠানে ফুল গাছ ও তুলশী গাছটা বেচেঁ থাকার জন্য কি আকুতিইনা জানাচ্ছে বার বার ওদের পাতাও খয়রী রং ধারণ করেছে কিছুদিনের মাঝেই যেন সব কিছু ঝড়ে যাবে । এখনও প্রতি বছর প্রকৃতির নীয়ম মেনে শীত আসে হয়তো সেই পাড়া গায়েঁ হয়তো খেলা ধুলার ধুম পড়ে যায় ..কিন্তু কোনদিন আমার আর যাওয়া হয় না সেই গাঁয়ে । মাঝরাতে ঘুম ভাংলে এপাটমেন্টের উত্তরের জানালাটা খোলে দেই আনমনেই উত্তরার কথা মনে আসে । মনে হয় এলো মেলো চুলে ঘেরা কে যেন এক দৃস্টিতে আমার দিগে চেয়ে আছে হঠাৎ যেন চোখে জল এসে যায়.. আমি ওকে এখনো নীরবে কত ডাকি ও কি ভাবে জানবে?

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৪

সুমন কর বলেছেন: ভাই, আপনি এখন পর্যন্ত আজকে ৪৭টি পোস্ট দিয়েছেন !! X(( X( X(( আরো কি পোস্ট দিবেন !!! X((

সামুর মডুরা কোথায়...........আমাদের বাঁচাও.....

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.