![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একটা সময় ছিল যখন আমাদের সবার বাড়ীতে একজন সম্পূর্ন অপরিচিত ব্যক্তিকে বিনা খরছে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হত। এটা মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত সকলের বাড়ীতেই ছিল। এরা সাধারণত ছাত্র অথবা শিক্ষক অথবা হজুর ছিলেন। এদের কাজ ছিল বাড়ীর বাচ্চাদের পড়ান আর টুকটাক বাজার করা। মাসের বা সাপ্তাহের বাজার সাধারণত বাড়ীর কর্তা ব্যক্তিটি করে থাকেন। যারা বিনা খরছে বাড়ীতে থাকতেন তাদেরকে "লজিং মাস্টার" বলা হত আমদের গ্রামে। শুধু যে গ্রামে "লজিং মাস্টার" ছিল তা নয় শহরেও প্রায় প্রতি ঘরে একজন করে "লজিং মাস্টার" ছিল। "লজিং মাস্টার" কারা হত? যাদের বাড়ী স্কুল বা মাদ্রাসা থেকে অনেক দুরে আর যাদের আর্থিক অবস্থা অতি খারাপ, তারাই "লজিং মাস্টার" হত। তবে তাদেরকে অবশ্যই শিক্ষিত বা শিক্ষার্থি হতে হত।
সময় পাল্টেছে, যুগ বদলেছে। এখন আর "লজিং মাস্টার" মাস্টার দেখা যায় না। কেউ এখন আর "লজিং মাস্টার" রাখতে চায় না। কারণটা কি? এর কারণ যতটা না আর্থিক তারচেয়ে বেশি "প্রাইভেসি" আর "ব্যক্তি স্বাধীনতা" নামক শব্দগুলোর উত্তরণ বা জাগরণ। এই শব্দগুলো দিয়েই আমারা আমাদের মূল্যবোধের অবক্ষয়কে, অমানবিকতাকে আড়াল করে রাখি।
উদাহরণ দিচ্ছি। আমি যখন সিগারেট খাওয়া শুরু করি তখন আমার পাড়ার দোকান থেকে আমি সিগারেট কিনতে পারতাম না। কারণ আমার মনে তখন ভয় কাজ করত, যে দোকানিতো আমাকে এবং আমার পরিবারকে চিনে!!! দোকানি আমাকে মারবে না তা আমি জানি কিন্তু এই ভয়টুকু ছিল নিজেরে আত্মসম্মানের ভয়। সিগারেট কিনতে গেলে দোকানি আমার দিকে যে চাহনিটা দিবে তার ভয়ে আমি কোন দিন নিজের পাড়া থেকে সিগারেট কিনতে পারি নাই। আর রাস্তায় কোন মুরব্বির সামনে সিগারেট খাব তা ছিল কল্পনাতীত।
আর এখন সিগারেট কিনতে পারাটা ব্যক্তি স্বাধীনতা। রাস্তায় সবার সামনে সিগারেট খাওয়াটা আধুনিকতা আর কেউ কিছু বললে তা প্রাইভেসি নষ্ট করা।
আবার ফিরে যাই "লজিং মাস্টার" এর কাছে।
"লজিং মাস্টার" ধারনা তৎকালীন বাঙ্গালী মূল্যবোধের, মানুষিকতার, পরোপকারী মনোভাবের প্রতিফলন। একজন ছাত্রের পড়াশুনার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা মানে একটা জাতীকে কতটুকু উন্নত করা তা নিশ্চয়ই কারও অজানা নয়। তখন সকল সামর্থবান পরিবার একজন করে পড়াশুনার সুযোগ করে দিয়েছে। আর আজকে যদি তার প্রচলন থাকত তবে শিক্ষিতের হার কত হত?
আজকে "লজিং মাস্টার" থাকার প্রচলন নাই বলে অনেক গরীব মেধাবী ছাত্রকে শিক্ষা সুবিধা থেকে বঞ্চিত করতেছে এই আধুনিক সমাজ। আজকে "লজিং মাস্টার" না রাখার সবচেয়ে বড় যুক্তি হচ্ছে নিরাপত্তাহীনতা। আমার প্রশ্ন হল "লজিং মাস্টার" যখন ছিল তখনতো সমাজে এত র্যাব আর পুলিশ ছিল না। তখন নিরাপত্তা কে দিত? তখন নিরাপত্তা দিত আমাদের মূল্যবোধ, আমাদের মানবিকতা, আমাদের আত্মসম্মানবোধ। যে ছেলে পাড়ার দোকান থেকে সিগারেট কিনতে পারে না, যে ছেলে রাস্তায় দাড়ায়ে সিগারেট খেতে পারে না তার কাছে সমাজ কখনই নিরাপত্তাহীন নয়। বরং তার কাছে সমাজ সবচেয়ে নিরাপদ। কারণ ওই ছেলে কখনও রাস্তায় চলা মেয়েদের উত্ত্যক্ত করবে না, চাকুরীজীবনে ঘুস খাবে না আত্মসম্মানবোধের কারণে। ইতিহাস সাক্ষী নীতিহীন, মুল্যবোধহীন মানুষকে তৎকালীন বাঙ্গালী সমাজ ভালো চোখে দেখেনি, বরং ক্ষেত্র বিশেষে সমাজচুত্য করেছে।
আমার মনে এখন একটা প্রশ্ন জাগে। বাঙ্গালিয়ানা ত্যাগ করার কারণ কি? কি আছে এই আধুনিক সভ্যতায়?
২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:৩২
মানুষমানব বলেছেন: ব্যক্তি স্বাধীনতা নামক আধুনিতা বড়দের শিকল পরিয়েছে আর সমাজকে নিয়ে যাচ্ছে অজানা গন্তব্যে।
২| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:১৮
বিজন রয় বলেছেন: দিন বদলায়, এ নিয়ে চিন্তা করার কিছু নেই। বিপদ-সুপদ পাশাপাশি চলে।
২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:২৮
মানুষমানব বলেছেন: নিজের বিপর্যয় ডেকে নিয়ে আসার মদ্ধে কি চিন্তার কোন কারণ নেই?
৩| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:০৫
আবরার নাঈম বলেছেন: আরেহ! ভাই, লজিং মাস্টার থাকলে মেয়ে বাইরে নস্টামি করবে কিভাবে। আর ছেলেই বা ভাইরে অসৎ সঙ্গে মিশবে কিভাবে?হ্যা?
৪| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:১৫
আর্ফ জামান সুজন বলেছেন: আমার বাবা লজিং মাষ্টার থেকে পড়ালেখা করেছেন। প্রায়ই উনি সেই গৃহকর্তার শোকরিয়া আদায় করেন। ভাল লাগল আপনার লিখাটা পড়ে।
২৭ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:২৮
মানুষমানব বলেছেন: আমার স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা যিনি তিনি ছাত্র জীবনে আমাদের বাড়ীতে লজিং মাষ্টার ছিলেন। আর আমি আমার ছাত্র জীবনে তার বানান স্কুলে পড়তাম। উনি প্রায়ই স্কুলের এসেম্বলিতে এই কথা বলতেন। একে অপরের সামান্য সাহায্য সহযোগিতা পেলে মানুষ কত কি করতে পারে তার উদাহরণ দিতেন।
৫| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:২৮
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: সময়ের পরিবর্তন মেনে নিতে হবে। পরিবারগুলো ছোট হয়ে যাচ্ছে। টাকার প্রতিযোগীতা বেড়ে চলেছে। লজিং মাস্টার দিয়ে জিপিএ ফাইফ পাওয়া যাবে না...
৬| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:১৭
নতুন বলেছেন: আপনি যেমন হাতে চিঠি লিখে তা পত্রিকায় না পাঠিয়ে এখানে ব্লগে লিখছেন..... এটার পেছনে যেমন কিছু যুক্তি আছে .... তেমনি একই রকমের যুক্তিতেই সমাজও আধুনিকতার দিকে এগিয়ে যাবে....
৭| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:৪৮
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: হাসি পাচ্ছে লেখাটা পড়ে।
লজিং মাস্টাররা কী এমন পড়ালো যে তাদের শিষ্যরা পরবর্তী প্রজন্মকে এমন একটা দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ উপহার দিল?
কদিন আগে একজন লজিং মাস্টার, আমার এলাকায়, ছাত্রীকে রেপ করতে গিয়ে ধরা খেয়েছে। এমন আগে হত না?
যারা ধরুন সিগারেট খায় না, খুব ভদ্র, ওরা সব মহামানব?
৮| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ২:৫০
রাজীব নুর বলেছেন: ‘হে বঙ্গ ভাণ্ডারে তব বিবিধ মদন’ ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:১৯
শিখণ্ডী বলেছেন: আমরা ছোট বেলায় দেখতাম ভুল করলে, বিড়ি টানলে, সন্ধ্যার পরে খেলতে দেখলে, মুখে দু/একটি অশ্লীল শব্দ উচ্চারণ করলে গ্রামের সে যেই হোক, হোক অন্য পাড়ার, বড়রা ছোটদের ধমকে দিত। এখন কারও সন্তানকে ধমক দিলে বাব-মা তেড়ে আসে, তুমি আমার সন্তানকে ্শাসন করার কে? এমন কি দাদা-দাদি পর্যন্ত নাতি/নাতনিদের শাসন করতে পারে না।