নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

Heil বাংলাদেশ!

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩৪



"এই রায়ান! তুমি ইন্ডিয়ার কোন অঞ্চল থেকে এসেছ?"

"আমি ইন্ডিয়ান নই। আমি বাংলাদেশী।"

রায়ান তার অ্যামেরিকান বস উইলিয়াম ব্রুকসের প্রশ্নের জবাব দেয়।

"ব্যাংলাডেশী? তাহলে তোমাকে দেখতে ইন্ডিয়ানদের মত লাগে কেন?"

"একটা সময়ে আমরাও ইন্ডিয়ার অংশ ছিলাম। সাতচল্লিশ সালে ব্রিটিশদের থেকে স্বাধীন হয়ে আলাদা হয়েছি।"

"কিন্তু আমি যেটুকু জানি, সেটা পাকিস্তান ছিল।"

"আমরাও পাকিস্তানি ছিলাম, ইস্ট পাকিস্তান। সেভেন্টি ওয়ানে আমরা ওদের সাথেও যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছি।"

"তোমরা তাহলে দেখছি খুবই ঝগড়াটে জাতি। দুষ্টু মেয়ে মানুষের মত। কারো সাথে বেশিদিন সংসার করতে পারোনা। হাহাহা।"

উইলিয়াম ব্রুকস স্বভাব সুলভ রসিকতা করলো। অ্যামেরিকানরা খুবই আমুদে জাতি। তারা সবকিছু নিয়েই রসিকতা করতে পছন্দ করে। রসিকতায় মনে করারও কিছু নেই। তবু এই রসিকতাটা রায়ানের মনে একটা খোঁচা দিল।

কারো রসিকতায় না হাসাটা অভদ্রতা। রায়ান ভদ্রতা রক্ষা করতেই হাসলো। বাংলায় যাকে বলে কাষ্ঠ হাসি।

"আবার কবে তোমরা কারো কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হবে?"

"খুব শীঘ্রই।"

রায়ান কিছু বলার আগে তাশফিন বলে উঠলো।

তাশফিনও রায়ানের সাথে একই অ্যাকাউন্টিং ফার্মে কাজ করে। রায়ানের মতই সেও বাঙ্গালী।

মাত্রই ট্যাক্স সিজন শেষ হয়েছে। টানা কয়েক মাস হারভাঙ্গা খাটুনির পর এই প্রথম অফিসে কোন কাজের চাপ নেই। সবাই খুব ফুরফুরে মেজাজে কাজ করছে। তাই কাজের ফাঁকে ফাঁকে আড্ডাবাজি জমছে ভাল।

"আমাদের দেশের মানুষ একে অপরকে দেখতে পারেনা। মুসলমানদের হাতে মার খায় হিন্দুরা, ধনীদের হাতে গরীবেরা এবং রাজনীতিবিদেরা একে অপরের সাথে মারামারি করে মরে।"

তাশফিনের জন্ম ঢাকায়। ছয় বছর আগে ইমিগ্র্যান্ট ভিসা পেয়ে এদেশে এসেছে। পড়াশোনা শেষ করে এখন স্টাফ একাউন্টেন্ট হিসেবে চাকরি করছে।

"ব্যাংলাডেশ আর কিছুদিনের মধ্যেই দুভাগ হবে। তারপর আবার ভাগ হবে। সোভিয়েত রাশিয়ার মত। টুকরো টুকরো রাষ্ট্র।"

রায়ান শীতল গলায় বলল, "বাংলাদেশ। উচ্চারনটা 'বাংলাদেশ' হবে।"

রায়ান এদেশেই জন্মেছে। বাংলাদেশে সে জীবনে একবারই গিয়েছে। তাও তিন বছর বয়সে। তখনকার কোন স্মৃতিই মানুষের মনে থাকে না। তারও নেই। তবু দেশটাকে সে ভালবাসে। সেই দেশে তার শেকড় পড়ে আছে। তার বাপ দাদার জন্ম সে দেশে। এখনও বাড়িতে তারা সে দেশের ভাষাতেই কথা বলে। তাদের সব আত্মীয়স্বজন সেদেশী। বিদেশী কেউ যদি সেই দেশের নাম ভুল উচ্চারণ করে, তাহলে মেনে নেয়া যায়। ওদের দোষ নেই। সঠিক উচ্চারন করার ক্ষমতা তাদের নেই। তবে সেই দেশে জন্মে, সেদেশেই বড় হয়ে, মাত্র ছয় বছর আগে এদেশে এসে কেউ যদি ইচ্ছে করে দেশটির নাম বিদেশী ঢংয়ে উচ্চারন করে বিকৃত করার চেষ্টা করে, তাহলে মেজাজ ঠিক রাখা কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়।

উইলিয়াম ব্রুকস বুদ্ধিমান মানুষ। সে রায়ানের গলার স্বর আর তীক্ষ্ণ চোখের দৃষ্টি দেখেই বুঝে ফেলল ঘটনা কুৎসিত মোড় নিতে যাচ্ছে। তাই সে পরিস্থিতি হালকা করতে বলল, "শুনেছি তোমাদের দেশের মেয়েদের বিয়ে করলে নাকি প্রচুর 'ডাউরি' পাওয়া যায়? একেই তোমাদের দেশের মেয়েরা সুন্দরী, তার উপর তাদের বিয়ে করলে যদি ভাল যৌতুক পাওয়া যায়, তাহলে আমার সাথে তোমাদের দেশের কোন মেয়ের 'হুক আপ' করায় দাও না!"

রায়ান বলল, "আমার দেশে যৌতুক দেয়া ও নেয়া দুটাই আইনত দন্ডনীয় অপরাধ।"

"কিন্তু গিফটের নামে যৌতুক আদান প্রদান হতে পারে।"

তাশফিন যোগ করে।

"তবে আমাদের দেশের কোন মেয়েকে তুমি বিয়ে করতে পারবে না। ওদের প্যারেন্টস কখনই বিদেশীর সাথে মেয়ের বিয়ের অনুমোদন দিবে না।"

উইল (অ্যামেরিকানরা লম্বা পোশাক ও লম্বা নামে অভ্যস্ত নয়। দুটোকেই কেঁটে ছোট করে ফেলে। উইলিয়াম তাই ছোট হয়ে 'উইল' হয়ে গেছে।) চোখ বড় বড় করে বলল, "মেয়ে যদি আমাকে ভালবাসে, তাহলে প্যারেন্টসের সমস্যা কী?"

"আমাদের দেশে এটাই নিয়ম। মা বাবাই ঠিক করেন ছেলে মেয়েরা কাদের বিয়ে করবে।"

"অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ? সেটা এখনও এক্সিস্ট করে? ধরো আমার বাবা আমার জন্য একটা মেয়ে বাছাই করে বিয়ে করিয়ে দিলেন। আমার তাকে পছন্দ হলো না। তাহলে?"

"কিছুই করার নেই। ঝুলে থাকো।"

উইল খুব অবাক হলো।

"আচ্ছা, মনে কর, আমার এখনই বিয়ে করতে ইচ্ছে করছে না। আমি আরো কিছুদিন নিজের জীবনটা এঞ্জয় করতে চাই। পার্টি করতে চাই, ফূর্তি করতে চাই, মেয়েদের সাথে বদমায়েশি করতে চাই। আমার বাবা আমার জন্য মেয়ে খুঁজতে গেলে আমি বললাম, 'বাবা! আমি মেয়েদের ভালবাসি। শুধু মাত্র একজনকে বিয়ে করে আমি আমার জীবন বর্বাদ করতে রাজি নই।' তখনও কি আমার বাবা মা আমার জন্য মেয়ে খুঁজবেন?"

রায়ান বলল, "তখন তোমাকে একজন আদর্শ বাঙ্গালী পিতা বেত দিয়ে পিটিয়ে পাছা লাল করে দিবেন। এবং মার খাবার পরে তুমি নিজের আগ্রহেই তোমার মা বাবার পছন্দ করা মেয়ের গলায় মালা পড়াবে।"

উইল খুব ভীত আর হতাশ গলায় বলল, "তোমাদেরও কি অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ হবে?"

রায়ান চোখের ভাষায় বোঝায় উইলের আশঙ্কা সত্যি।

"তাছাড়া আরেকটা বাঁধা আছে আমাদের দেশী মেয়ে বিয়ের ব্যাপারে। তোমার গায়ের রং। আমাদের দেশের মানুষ ভীষন রেসিস্ট। ওরা কালো মানুষদের দেখতে পারেনা।"

উইল খুবই আহত দৃষ্টিতে একবার তাশফিনের দিকে, আরেকবার রায়ানের দিকে তাকালো। মুখে কিছু বলল না। একজন বাঙ্গালী মেয়েকে বিয়ে করে প্রচুর যৌতুক পাওয়া হবে না, তারচেয়েও বর্ণবাদী কথাগুলো বেশি খারাপ লেগেছে তার মনে।

"স্টুপিড কান্ট্রির স্টুপিড পিপল!"

"স্টুপিড কান্ট্রি মানে?"

তাশফিনের কথায় তাত্ক্ষনিক প্রতিবাদ করলো রায়ান।

"স্টুপিড কান্ট্রি নয়? ঐ দেশে কেউ জোরে পাদ দিলেই দাঙ্গা লেগে যায়। এ ওকে মেরে রাস্তায় ফেলে রাখে। গাড়ি বাড়ি ভাংচুর করে। পলিটিশিয়ানরা একে অপরকে দোষ দেয়, ছাগলের মত কথা বলে। তুমি ঐ দেশকে স্টুপিড কান্ট্রি বলবে না?"

রায়ান কিছু বলে না। বলতে পারেনা। এটা ঠিক বাংলাদেশকে নিয়ে কেউ কিছু বললে তার খারাপ লাগে। তবে এটাও ঠিক যে দেশকে নিয়ে ভাল কিছু বলার মত জ্ঞানও তার নেই। পত্রপত্রিকায় যা সে পড়তে পারে সেদেশ সম্পর্কে, সবই বাজে সংবাদ।

উইল বলল, "আমি হালকা পাতলা শুনেছি তোমাদের দেশ সম্পর্কে। এই কিছুদিন আগেই একটা বিল্ডিং ধসে পড়েছিল। এক হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল। খুবই দুঃখজনক ঘটনা।"

তাশফিন যেন বাহানা খুঁজে দেশের বদনাম করার। সে সুযোগ পেয়ে গেল।

"এরকম ঘটনা ওদেশে প্রতিদিন ঘটে। এটা নতুন নয় যে প্রতি বছর আমাদের দেশে হাজারে হাজারে মানুষ মারা পড়ে, শুধু কারনটাই ভিন্ন হয়। এখন বিল্ডিং ধসে মানুষ মরছে। কিছুদিন আগেও মরতো লঞ্চডুবিতে। তাছাড়া সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুতো অতি স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে গেছে। রাস্তায় ফকির থেকে শুরু করে মন্ত্রী পর্যন্ত - কেউই মুক্তি পায়না সড়ক দুর্ঘটনার হাত থেকে।"

"বল কি! কেন?"

"করাপশন। ট্রাফিক পুলিশ থেকে শুরু করে মন্ত্রী পর্যন্ত ঘুষ খান, তাহলে সেখানে সাধারন মানুষ মরবে না কেন? স্বাভাবিক মৃত্যুটাই ওদেশে এখন অস্বাভাবিক ঘটনা। তোমাদের একটা জাহাজ ডুবেছিল, তোমরা ফিল্ম বানিয়ে ফেললে ‘টাইটানিক।‘ আমাদের ওখানে এরকম হাজারটা টাইটানিক বানানো যাবে। এই যে আমরা এখন কথা বলছি, এর মধ্যেই দু চারটা লাশ পড়ে গেছে ওদেশে।"

"কি সর্বনাশ!"

"আমি খুব লাকি যে সময়মত নরক থেকে বেড়িয়ে পড়েছি।"

"তোমার মা বাবা?"

"ওদেরও শীঘ্রই নিয়ে আসবো। ওখানে থাকা যায় নাকি? মশা মাছি, ধুলা-ময়লা! তুমি যদি ঢাকা শহরে একটা চক্কর দিয়ে এসে নিজের ফুসফুসে একটা মোচড় দাও, তাহলে দেখবে এক মুঠ ধূলা বেরিয়ে এসেছে।"

রায়ানের মেজাজ খারাপ হচ্ছে। বাংলাদেশের নামে ক্রমাগত বদনাম করা হচ্ছে, এবং সে সেটার বিপক্ষে কিছু বলতেও পারছে না। তাশফিন যা বলছে, কথাগুলো মিথ্যেও নয়। তবে এটাও ঠিক যে দেশে নিশ্চই ভাল কিছুও ঘটে। প্রতিটা মুদ্রার অবশ্যই দুটা পিঠ থাকে। থাকতে বাধ্য। তবে না জেনে শুনে আন্দাজে বানিয়ে বানিয়ে কোন কিছু বলতে যাওয়াটাও ঠিক হবে না। মিথ্যা যুক্তির ভিত্তি সবসময়েই দূর্বল হয়ে থাকে। কারও প্রশংসা করতেও তাই কখনও মিথ্যা বলতে নেই।

রায়ান কাজের বাহানায় আড্ডা থেকে উঠে গেল। উইল কিছু মনে করলো না। সে চোখ বড় বড় করে বাংলাদেশ সম্পর্কে জ্ঞান নিচ্ছে। তাশফিন বিপুল উৎসাহে তার স্বরচিত 'আমার দেশ' রচনা মুখস্ত বলে যাচ্ছে।

".....ব্যাংলাডেসে একটা গ্যাং আছে। তারা সুযোগ পেলেই চোখে মলম দিয়ে ছিনতাই করে। মলমে এমনই বাজে কেমিক্যাল মেশানো থাকে যে মাঝে মাঝে ভিকটিমের চোখ নষ্ট হয়ে যায়।....."

"....গুন্ডাগিরি আর চাঁদাবাজি এখন ইয়ং জেনারেশনের নাম্বার ওয়ান পেশা। টাকা পয়সার দরকার? কোন ধনী ব্যবসায়ীকে ফোনে বাজে গালি দাও, ভয় দেখাও - দেখবে সময় মত টাকা হাজির! গার্লফ্রেন্ড তোমার প্রপোজালে রাজি হয়নি? কোন টেনশন নেই। ওকে জোর করে উঠিয়ে আনো। বন্ধু বান্ধব মিলে রেপ করো। তারপর তাকে ইচ্ছে করলে ছেড়ে দাও, বা খুন করে ফেলো।....."

".....গাড়ি আছে? সেটা নিয়ে বাইরে বেরোনোর চিন্তাও করো না যেন। শেয়ার বাজারে শেয়ারের দাম পড়লেই মানুষ গাড়ি ভাঙ্গে। শ্রমিকদের বেতন ঠিকমত দেয়া না হলেও গাড়ি ভাঙ্গে। অন্য কেউ এক্সিডেন্ট করে পালিয়েছে? অন্যের গাড়ি ভাঙ্গো। আগুনে পোড়াও। স্টুপিড দেশের যতসব মূর্খ জনগন! ভালভাবে বেঁচে থাকতে হলে সে দেশে একটাই উপায় আছে, দেশ ছেড়ে যেভাবেই হোক, পালাও!"



ঘরে ফিরে এসেও রায়ানের মন খুব খারাপ থাকলো। সে থাকে তার বাবা মায়ের সাথে। তার দাদুও থাকেন তাদের সাথে। দাদী মারা গেছেন বছর পাঁচেক আগে।

দাদু (জনাব আব্দুস সোবহান) সারাদিন ধর্ম কর্ম করেন। নামাজ পড়েন, কোরআন তিলাওয়াত করেন। বিকেলে হাঁটতে বেরোন। সাংসারিক কোন কর্মকান্ডে তিনি মাথা ঘামান না। সে দায়িত্ব রায়ানের মায়ের। রেহানা পারভিন। তিনি একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে কাজ করেন। ইংরেজিতে একটু দুর্বলতা থাকায় কাজে বোবার অভিনয় করেন। তারই ধারাবাহিকতায় মাঝে মাঝে তিনি বাড়িতেও নীরব থাকেন। তবে সে ঘাটতি জনাব আব্দুল জলিল (রায়ানের বাবা) পুষিয়ে দেন। তিনি এখানকার একটা গ্যাস স্টেশন চালান। মালিক নন, তিনি ম্যানেজার। তবে তাঁর কথাবার্তা এবং হাবভাব দেখে কেউ যদি উনাকে সেই কর্পোরেশনের সিইও মনে করে বসেন, তাহলে তাকে খুব একটা দোষ দেয়া যাবে না। ছোটখাট বিষয় নিয়ে কি করে অহংকার করতে হয় এ ব্যপারে তিনি একটি বই লেখার যোগ্যতা রাখেন।

মধ্যবিত্ত বাঙ্গালী যে দেশেই যাক না কেন, সুযোগ পেলেই পয়সা বাঁচাবে। রায়ানদের পরিবারটিও যেমন। সামর্থ্য থাকার পরেও তাই দু কামরার এপার্টমেন্ট ভাড়া করে সেভিংস একাউন্টে টাকার পরিমান বাড়িয়ে চলেছে। রায়ানের যেহেতু এখনও বিয়ে হয়নি, তাই সে অনায়াসেই দাদুর সাথে শুতে পারে। শুধু শুধু আরেকটা রুমের জন্য অতিরিক্ত ভাড়া গোনার প্রয়োজন কী?

আব্দুল জলিল সাহেব টিভি দেখছিলেন। তখন রায়ান এসে বাবার পাশে বসলো।

"ড্যাড! তুমি কি বিজি?"

"না। কেন?"

"আমার কিছু ইনফরমেশন লাগবে।"

"কিসের ব্যপারে?"

"বাংলাদেশের ব্যপারে।"

আব্দুল জলিল সাহেব কুঞ্চিত নেত্রে ছেলের দিকে তাকালেন। তারপর আবার টিভির দিকে চোখ সরিয়ে নিয়ে বললেন, "কী ধরনের ইনফরমেশন?"

"সব কিছু।"

"হঠাৎ বাংলাদেশ সম্পর্কে তোমার ইনফরমেশন লাগবে কেন?"

রায়ান অফিসের ঘটনা খুলে বলল। আব্দুল জলিল সাহেব খুব মন দিয়ে শুনলেন। তারপর বললেন, "তুমি কি চাও?"

"আমি তাশফিনকে জবাব দিতে চাই।"

"কী বলবে তাকে? ও মিথ্যাতো কিছু বলেনি। সত্যি কথা শুনতে সবসময়েই খারাপ লাগে। তবে তর্কের খাতিরে সত্যির বিপরীতে কিছু বলতে যাওয়াটা বোকামি।"

"একটা দেশের সবকিছুই খারাপ হতে পারেনা। সেখানেও নিশ্চই ভাল কিছু আছে।"

"নরকের কোন ভাল কোয়ালিটি থাকেনা। নরক নরকই হয়ে থাকে। বাংলাদেশও ঠিক তাই। তুমি অনেক লাকি যে তোমার জন্ম আমেরিকায় হয়েছে। ঐ দেশে হলে শুধু মাত্র সারভাইভ করার প্রচেষ্টা করতে করতেই তোমার একটা জীবন ফুরিয়ে যেত।"

এরপর তিনি শুরু করলেন দেশ সম্পর্কে নিজের বাজে অভিজ্ঞতাগুলোর বর্ণনা। একবার ট্রেনে করে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ জানালা দিয়ে একটা পাথর ছুটে এসে তাঁর নাক ফাটিয়ে দিল। একটু এদিক ওদিক হলেই তাঁর চোখে এসে পড়তো। এটা নাকি কিছু মানুষের খেলা। চলন্ত ট্রেনে ঢিল ছুড়ে মারা! সে জানে এরপর বাবা বর্ণনা করবেন ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় কি করে একদল ছিনতাইকারী এসে তাঁর বেতনের সব টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। মাসের প্রথম দিন। পুরো মাসের সাংসারিক খরচের টাকা। সব চলে গেল নেশাখোরদের হাতে! রায়ান এই এক জীবনে বহুবার এসব ঘটনা শুনেছে। আজকেও আরেকবার শোনা হয়ে যাচ্ছে। একটা সময়ে তার মনে হলো, তার পিতা নয়, এসব কথা যেন তাশফিন বলছে! দুজনের কন্ঠস্বরই এখন এক শোনাচ্ছে।

রায়ান মন খারাপ করে চুপ হয়ে যায়। তার বাবা বাংলাদেশকে পছন্দ করেননা। ওনার জীবনে অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে বাংলাদেশ সম্পর্কে। তবু নিজের দেশ নিজের হয়ে থাকে। কেউ যখন সেদেশের নামে বদনাম রটায়, তখন তার প্রতিবাদ করাটাও অবশ্য কর্তব্য হয়ে দাঁড়ায়।

রাতের খাওয়া দাওয়া শেষে রায়ান ঘুমাতে যাবার সময়ে দাদু আব্দুস সোবহান সাহেব বললেন, "কীরে দাদু ভাই! মন খারাপ নাকি?"

"জ্বী দাদু।"

"কেউ কিছু বলেছে?"

"হু।"

"কেউ তোকে গালি দিয়েছে?"

"আমাকে না। বাংলাদেশকে গালি দিয়েছে।"

"কে গালি দিয়েছে? তোর বাপ? ঐ হারামজাদা জীবনে আর কিছু পারুক কি না পারুক, নিজের দেশরে ঠিকই গাইলাইতে পারে! বদমাইশ কোথাকার!"

"না, না। ড্যাড না। গালি দিয়েছে আমার অফিসের এক ছেলে।"

"তাকে চড় মারলি না ক্যান? বিদেশী হয়ে একটা দেশ সম্পর্কে না জেনে উল্টা পাল্টা কথা বলে কোন সাহসে?"

"গালিটা দিয়েছে এক বাঙ্গালী ছেলে।"

আব্দুস সোবহান সাহেব খানিক্ষণ নাতির দিকে তাকিয়ে রইলেন। কিছু বললেন না। যেন বলার মত ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না।

অবশেষে মুখ খুললেন, "কমিনের বাচ্চাটার জিহ্বা টেনে ছিড়ে ফেলতে পারলি না? কি বলেছে ফকিরনির পোলাটা?"

রায়ান এবারও অফিসের ঘটনা খুলে বলল। দাড়ি কমা কিছুই বাদ দিল না। আব্দুস সোবহান সাহেবও তাঁর ছেলের মত খুব মনোযোগ দিয়ে শুনলেন।

বর্ণনা শেষে রায়ান বলল, "আমি ছেলেটাকে একটা জবাব দিতে চাই। এজন্য দেশ সম্পর্কে কিছু ইনফরমেশন নিতে ড্যাডের কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু ড্যাড ওর কথাগুলোই সাপোর্ট করলো।"

"তোর বাপতো সাপোর্ট করবেই। হারামজাদায় কয়, দ্যাশ তারে কী দিছে? আরে হারামজাদা! তুই দ্যাশরে কি দিছোস? ম্যাট্রিকটাও ঠিক মতন পাশ করতে পারলি না। পরথমবারে করছোস ফেইল! গাধায় কয়, আমেরিকায় আইসা হে নাকি সফল হইছে! ব্যঙ্গের মাথাটা হইছে! এইখানে আইসা দোকানদারী করতেছে। দিনরাত কুত্তার মতন খাটতাছে। কাস্টমারের পাছায় হাসিমুখে তেল মালিশ করতাছে। আরে হারামজাদা! দোকানদারিই যদি করতি, তাইলে নিজের দ্যাশে করলে সমস্যাটা কি আছিল?"

বাংলা কম জানায় রায়ান দাদুর সব কথার মানে বুঝলো না, তবে এ বুঝলো যে দাদু অন্য ট্র্যাকে কথা নিয়ে যাচ্ছেন। তাই সে প্রসঙ্গে ফিরতে জিজ্ঞেস করলো, "ছেলেটাকে কী বলা যায় বলতো!"

আব্দুস সোবহান সাহেব অবাক হয়ে জানতে চাইলেন, "কোন ছেলেকে?"

"তাশফিন।"

"তাশফিনটা কে?"

"ঐ যে আমার অফিসের যে ছেলেটা বাংলাদেশকে নিয়ে আজেবাজে কথা বলেছিল।"

"ও আচ্ছা! এখন মনে পড়ছে! তোর বাপের কান্ডকারখানা এমন যে মেজাজ খারাপ করায় দেয়! যাই হোক, পোলাটারে কিছু বলার দরকার কি? পায়ের থেইকা জুতা খুইলা ধামাধাম মারা শুরু কর!"

"আহা। অফিসে সবার সামনে মারধর করবো নাকি? ও যেহেতু মুখে বলেছে। তাই ওকে জবাবটাও মুখেই দিতে হবে। কিন্তু কী বলবো তাকে?"

আব্দুস সোবহান সাহেব থেমে থেমে বললেন, "আমার জীবনের সবচেয়ে বড় আফসোস কি জানো দাদু ভাই? আমার দেশের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় সময়টাতে আমি পিঠ দেখায় ভাগছি। আমার মায়ের উপর দখলদার শত্রুরা আক্রমন করছিল। আমার দূর্বল মা তাঁর সন্তানদের কাছে সাহায্য চাইছিল। আমার ভাইয়েরা যুদ্ধে গ্যাছে। আমিই স্বার্থপরের মতন মুখ ঘুরায়া রাখছিলাম। সিংহের মতন লড়ার বদলে আমি ইন্দুরের মতন পলায়া বেড়াইছি। যুদ্ধে গ্যালে একবারই মরতাম, কিন্তু না যাওয়াতে হাজারবার মরছি। যুদ্ধে গ্যালে মিত্যুর পরে আমার কবরটা অন্তত আমার নিজের দ্যাশের মাটিতেই হইতো। আফসোস! আমাকে এই বিদেশের মাটিতে পইরা থাকতে হইব!"

তারপর নাতির দিকে তাকিয়ে গলার স্বর পাল্টে বললেন, "দ্যাশরে ভালবাসতে শিখ। একটা কথা মনে রাখবি, তুই দুনিয়ার যে দ্যাশেই যাস না ক্যান, দিনের শেষে তুই একজন বাঙ্গালী। যদি দ্যাশরে ঠিক মতন ভালবাসতে পারিস, তাইলে তার বিরুদ্ধে আক্রমনের পাল্টা জবাবটা আপনাতেই তোর মুখ দিয়া বারাইবে।"

রায়ান দাদুর দিকে তাকিয়ে সন্তুষ্টের হাসি হাসলো। আব্দুস সোবহান সাহেব নাতির কাঁধে হাত রেখে তাকে ভরসা দিলেন।



পরদিন অফিসে উইলিয়াম ব্রুকস তাঁর টিম মেম্বারদের সাথে যথারীতি আড্ডা দিচ্ছিলেন। তাঁর কিছু প্রশ্ন আছে "ব্যাংলাডেসি কালচার" সম্পর্কে। তার উপর জ্ঞান গর্ভ বক্তৃতা দিচ্ছে তাশফিন।

"আমি শুনেছি, তোমাদের ওখানে নাকি কাস্ট সিস্টেম আছে? যার মানে, আমি যদি মেথরের ঘরে জন্মে থাকি, এবং পরবর্তীতে যথেষ্ট পরিশ্রম করার পরে ধনী হয়েও যাই, তারপরেও নাকি আমি সমাজে নিম্নশ্রেণীর মানুষ হিসেবেই গন্য হব? কোন ধনীর সুন্দরী মেয়ের সাথে আমার বিয়ে হতে পারবে না?"

তাশফিন বেশ ভাবগম্ভীর স্বরে বলল, "ঠিকই শুনেছ। ওখানে কেউ কাউকে পছন্দ করেনা। ঢাকার মানুষ বরিশালের মানুষদের তুচ্ছজ্ঞান করে। সিলেটের মানুষ গোটা বাংলাদেশীদের অপছন্দ করে। আবার নোয়াখালী নামের একটা অঞ্চল আছে সেখানে, গোটা বাংলাদেশের মানুষ ঐ অঞ্চলের মানুষদের অপছন্দ করে!"

উইলের সাথে গোটা টিমের সবার চোখ বড় বড় হয়ে গেল।

"বল কি? কেন?"

"বলেছি না, মূর্খের দেশ! তাছাড়া সেই দেশের মানুষের হৃদয় হিংসায় ভর্তি। কেউ কারও ভাল চায় না। পাঁচজনের মধ্যে একজন যদি ধনী হয়ে যায়, তাহলে বাকি চারজনের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায় কি করে ধনী ব্যক্তিকে বাঁশ মেরে আবার গরীব বানানো যায়।"

টিম মেম্বাররা একে অপরের মুখ চাওয়া চাওয়ি করতে লাগলো। মিলাদ মাহফিলে হুজুরের মুখে দোযখের বর্ণনা শুনে মুরিদদের চেহারা যেমন দেখায়, তাশফিনের কথা শুনে সবার চেহারা এখন ঠিক তেমনটাই দেখাচ্ছে।

"আমি কি জয়েন করতে পারি?"

"শিওর! তোমাকেই আমরা মিস করছিলাম।"

রায়ানকে আসতে দেখে উইলের জবাব।

"তাশফিন তোমার দেশের বর্ণনা দিচ্ছিল। মানুষ এখনও বেঁচে আছে কি করে সেখানে?"

"কেন? বেঁচে থাকার জন্য খুব কি খারাপ জায়গা বাংলাদেশ?"

"কেন নয়?"

রায়ান একটু দম নিল। তারপর বলতে শুরু করলো, "আমার দেশের পলিটিশিয়ানরা সবকটা বদমায়েশ। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে আমাদের কিছু বলার অধিকার নেই। আমরা যারা সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, তারা দিব্যি বিদেশে বসে টাকা কমিয়ে যার যার জীবন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে আছি। যেহেতু আমরা দেশ উদ্ধারের জন্য কিছু করছি না, তাই আমাদের মুখে কোন অভিযোগও মানায় না।"

কেউ কিছু বলল না। সবাই আগ্রহী হয়ে রায়ানের কথা শুনছে।

"আমাদের দেশে একজন আরেক জনের সাথে তুচ্ছ কারনে ঝগড়া করে ঠিকই, কিন্তু ঐ দেশেই দেখা যায় একটি ক্রিকেট ম্যাচ জয়ের আনন্দেই গোটা দেশ সব কিছু ভুলে আবার এক হয়ে যায়!

হিন্দু মুসলিম রায়ট করে শুধুমাত্র কিছু মূর্খ ফান্ডামেন্টালিস্ট। সেদেশের বেশিরভাগ মুসলমান ছেলে পুজোর সময়ে হিন্দুদের বাড়িতে গিয়ে মিষ্টি খায়, হিন্দুরাও মুসলিম বন্ধুদের সাথে মিলে ঈদে আনন্দ করে।

কিছু মানুষের করাপশনের জন্য লঞ্চডুবি হয়, বিল্ডিং ধসে পড়ে। আবার হতাহত মানুষের উদ্ধার কাজে কিন্তু সে দেশেরই হাজার হাজার মানুষ এগিয়ে আসে। কেউ শ্রম দিয়ে, কেউ অর্থ দিয়ে, কেউবা রক্ত দিয়ে সাহায্য করে। একজন অনাত্মীয় ভিকটিমকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের প্রাণ দেয়ার ঘটনাও কিন্তু সেদেশেই ঘটে।

রাজনৈতিক কর্মীদের সহিংস কর্মসূচির কারনে দেশটা অশান্ত হয়ে উঠে। আবার সেদেশেরই ড. ইউনূস নোবেলে শান্তি পুরষ্কার পান।

আমাদের মা বাবারা সন্তানদের মঙ্গলের জন্য সারাজীবন নিজেদের সুখ আহ্লাদ ত্যাগ করে থাকেন। বিনিময়ে আমরাও বৃদ্ধ পিতামাতার সেবা করি। তোমরা তোমাদের মা বাবাদের বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসো, এটা তোমাদের জন্য খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু আমার দেশে যে কুলাঙ্গার তার মা বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে ফেলে রেখে আসে, আমরা সামাজিকভাবে তার মুখে থুথু দেই।

একটি দেশ কখনও খারাপ হতে পারেনা। দেশের শাসক খারাপ হতে পারেন, সমাজ ব্যবস্থা খারাপ হতে পারে, কিছু মানুষও খারাপ হতে পারে, কিন্তু দেশ সব অবস্থাতেই পবিত্র থাকে। সন্তানের যেমন গরীব মাকে অস্বীকার করার উপায় নেই, তেমনি দেশ ছেড়ে আসা বাঙ্গালী যতই নিজেকে বিদেশী বানাবার চেষ্টা করুক না কেন, দিনের শেষে সে একজন বাঙ্গালিই থাকে। যে নমক হারাম নিজেকে অবাঙ্গালী দাবী করার চেষ্টা করে, তাকে পায়ের জুতা খুলে ধামাধাম পেটানো উচিৎ।"

উইলের টিমের কেউ কোন কথা বলছে না। সবাই থমথমে মুখে বসে আছে। তাশফিনের মুখেও কোন কথা নেই। সে কোন কথা খুঁজে পাচ্ছে না।

রায়ান তাশফিনের দিকে ফিরে চিবিয়ে চিবিয়ে পরিষ্কার বাংলায় বলল, "ভবিষ্যতে যদি দেখি বা শুনি যে তুই বিদেশীদের কাছে বাংলাদেশের নামে বাজে কথা বলছিস, তাহলে আল্লাহর কসম, আমি তোর মুখের নকশা পাল্টে দিব!"

রায়ান উঠে নিজের ডেস্কে চলে গেল।

উইল তাশফিনকে ফ্যাকাশে মুখে বসে থাকতে দেখে জিজ্ঞেস করলো, "ও যাবার সময়ে কী বলে গেল?"

তাশফিন শুন্য দৃষ্টিতে উইলের দিকে তাকালো। তারপর বিড়বিড় করে বলল, "জয় বাংলা! Heil বাংলাদেশ!"

মন্তব্য ২৯ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:২৪

দ্বীন মুহাম্মদ সুমন বলেছেন: অসম্ভব ভাল লেগেছে ++++++

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৪

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!

২| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:২৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: রায়ান রা দীর্ঘজীবি হোক।

তাশফিনদের কাকস্য ময়ূরা চেষ্টা শেষ হোক। দিনশেষে হোক ঝীবন শেষেও আমি শুধুই একজন বাঙালী, বাংলাদেশী।

বাংলাদেশ কতইনা সুন্দর। প্রেম, মায়া, প্রকৃতির অফুরান ভালবাসার এক দেশ।

দুষ্ট ডাইনি বুড়িরা শুধু জ্বালায়। জিয়ন কাঠি নিয়ে রাজপুত্র এলে ঠিকই ডাইনি পালিয়ে যাবে- দেশ আবার সোনার বাংলা হয়ে যাবে।
আমরা সুন্দর স্বপ্ন নিয়েই বা৭চতে চাই।

প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ
জীবন বাংলাদেশ আমার মরণ বাংলাদেশ......

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৪

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!

৩| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:২৯

পথহারা সৈকত বলেছেন: আনেক ভাল হয়েছে একটা লাইন ছারা........

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৩

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ! বুঝতে পারছি কোন লাইনের কথা বলছেন। কিন্তু সে লাইনটা কোন রাজনৈতিক দলের বাপ দাদার সম্পত্তি না যে ওটা ব্যবহার করা যাবে না।

৪| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৮

নিরব বাংলাদেশী বলেছেন: চুরি ওরা ও করে তবে সেটা ভিন্নদেশে আর আমরা করি নিজ দেশে, ওরা কখনো নিজ দেশের খারাপ কিছু বাইরের কারো কাছে প্রকাশ করে না আর আমরা নিজ দেশে যত ভাল কিছুই থাকুক না কেন আগে খারাপটা ই তুলে ধরি, ওরা ওদের মা কে বৃদ্ধ বয়সেই বৃদ্ধাশ্রমে দেয়া জাতি আর আমরা চিরকাল মাকে গালি দেয়া জাতি

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪৪

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ!

৫| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩১

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: অসাধারণ লিখেছেন!!!

++++++++

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪৪

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!

৬| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩৮

আহমেদ নিশো বলেছেন: ++++++++++++++++++++++++

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:১৩

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ!!!

৭| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১০

তন্দ্রা বিলাস বলেছেন: কত হাজার প্লাস দিব বুঝতে পারছি না।

এক কথাই দারুণ! দুর্দান্ত।
একটা লাইন বলতে চাই
"আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি।"

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:১৩

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ!!! :)

৮| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৩৮

তারছেড়া লিমন বলেছেন: স্যালুট বস...................কিছু নেমক-হারাম , বেজন্মাদের জন্যই আমরা অন্যদের কাছে ছোট হই.... আপনার লেখনিটা অসম্ভব ভালো লাগলো...........++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:১৪

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ!!!

৯| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:০৪

অদ্ভুত স্বপ্ন বলেছেন: অসাধারণ লেখনী। খুব ভাল লাগল লেখাটা পড়ে।

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:১৫

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ!!! :)

১০| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:৫৫

সামুর ভক্ত বলেছেন: সামু তে অনেক দিন পর পুরো লেখাটা পড়ে মজা পেলাম ।
B-) "জয় বাংলা! Heil বাংলাদেশ!" B-) ;)
সে লাইনটা কোন রাজনৈতিক দলের বাপ দাদার সম্পত্তি না যে ওটা ব্যবহার করা যাবে না।

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:১৫

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ!!! :)

১১| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:৪০

নূর আদনান বলেছেন: দেশতো দেশই, নিজের দেশ, স্বদেশ...... বুঝিনা মানুষ কিভাবে নিজের দেশের নিন্দা করে...

বেশ কিছুদিন যাবত আমি উপলদ্ধি করছি, আমরা অন্য দেশের চেয়ে অনেক ভালই আছি। যদি এই পলিটিশিয়ানরা দূর্নীতি না করতো তাহলে এই দেশ সত্যই সোনার দেশ হয়ে যেত, আমার সোনার বাংলাদেশ।।

আপনার দেশকে নিয়ে ভাবনা এবং দেশকে নিয়ে লেখার জন্য ধন্যবাদ, সত্যই খুব ভাল লাগল আপনার লেখনী আর এই মহৎ প্রচেষ্টা।
আমরা সবাই যদি দেশকে পজিটিভলি দেখি এবং দেশের জন্য একটু ভাবি তাহলেই এ দেশ আরো এগিয়ে যাবে।
ভাল থাকবেন।

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:১৮

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ!! মাঝে মাঝে টুকিটাকি লিখি, ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগলো।

১২| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭:০৫

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: “রায়ান এদেশেই জন্মেছে। বাংলাদেশে সে জীবনে একবারই গিয়েছে। তাও তিন বছর বয়সে। তখনকার কোন স্মৃতিই মানুষের মনে থাকে না। তারও নেই। তবু দেশটাকে সে ভালবাসে। সেই দেশে তার শেকড় পড়ে আছে। তার বাপ দাদার জন্ম সে দেশে।”

চমৎকার দেশপ্রেমের গল্প। পড়ে ভালো লাগলো। নেতিবাচক কথাগুলো খারাপ লাগলেও সব মিথ্যে নয়।


শিরোনামের ইংরেজি শব্দটির বানান দয়া করে সংশোধন করুন!

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:২৬

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: লেখা ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগলো। অনেক ধন্যবাদ!
নামের শিরোনামের শব্দটা ইংরেজি নয়, জার্মান। নাৎজি বাহিনী তাদের নাটের গুরুর নামে জয়ধ্বনি দিত এই শব্দ ব্যবহার করে। পরবর্তিতে শব্দটা আমেরিকায় চলতি ভাষায় ঢুকে পড়েছে। তাশফিন সে অর্থেই শব্দটার ব্যবহার করেছে।

১৩| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৫৫

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: “নামের শিরোনামের শব্দটা ইংরেজি নয়, জার্মান। নাৎজি বাহিনী তাদের নাটের গুরুর নামে জয়ধ্বনি দিত এই শব্দ ব্যবহার করে। পরবর্তিতে শব্দটা আমেরিকায় চলতি ভাষায় ঢুকে পড়েছে।”

বিস্তৃত ব্যাখ্যা দেবার জন্য ধন্যবাদ। এটি লেখার নিচে থাকলে আরও উত্তম হতো।

বলা বাহুল্য, ইংরেজি ভাষার ত্রিশ শতাংশেরও বেশি শব্দ জার্মান অরিজিন থেকে। সবই পরিশীলিত হয়ে ইংরেজিতে রূপ নিয়েছে। আপনার লেখা পড়ে তা সকলেই ইংরেজি শব্দ বলে ধরে নেবে - কেউ সেভাবে উদ্ধৃতিও করছে।

আমাদের দেশে সরাসরি জার্মান ভাষা কেউ তাদের কথোপকথনে ব্যবহার করে না। আমেরিকান চলতি ভাষাও নয়। এটি একটি পাবলিক ব্লগ - তাছাড়া শব্দটি দিয়েছেন শিরোনামে। এখানে সকলেই একে অন্যের লেখা থেকে চেতনে-অবচেতনে অনুসরণ করে। এজন্যই বিষয়টি তুলে ধরলাম। শুভেচ্ছা!

১৪| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪৫

এহসান সাবির বলেছেন: চমৎকার.... দেরিতে হলেও ভালোলাগা জানিয়ে গেলাম...

১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০১

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ। :)

১৫| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫২

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:
ভাল লাগল।

++++

১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০১

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: থ্যাংক ইউ। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.