নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
প্রায় দেড়শো বছর আগে, কোকাকোলার জন্ম নাকি হয়েছিল এনার্জি ড্রিংক হিসেবে। কার কি অবস্থা, জানিনা, তবে কোক খেলে আসলেই আমার শরীর চাঙ্গা হয়ে যায়। আমি না পারতে রাতে কোক খাইনা। সারারাত ঘুম আসে না। রাতে ঠিক মত ঘুম না হলে সারাদিন ঝিমাতে থাকি। কাম-কাজ সব মাথায় উঠে।
কালকে ভাই/বন্ধু তারেকের জন্মদিন ছিল। আমরা আমাদের ঐতিহ্যমত সব বন্ধুরা মিলে তাকে 'সারপ্রাইজ' দিতে গভীর রাতে হাজির হলাম। পেটে ছিল চরম ক্ষিধা। তারেকের বউ স্বর্ণা খাবার বানিয়েই রেখেছিল। খিচুরী দিয়ে চিলি চিকেন আর ডিমের তরকারী শেষে না চাইতেও একগ্লাস কোক খেয়ে ফেললাম।
আর যায় কই! সারারাত শুধু চোখটাই বন্ধ করে থাকা গেছে, ঘুম আসেনি। বরাবরের মত নিজেকে কষতে লাগলাম, "আর জীবনেও রাতে কোক খাবি?"
পাকিস্তান-বাংলাদেশের খেলা দেখার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু ভাবলাম, বরাবরের মতই সকালে উঠে সেকেন্ড ইনিংস দেখে নিব। আসল খেলাতো তখনই জমে।
ঘুম আসছিল না বলে মাঝে দেখে নিয়েছিলাম মুশফিক টসে জিতে ব্যাটিং নিয়েছে। বাংলাদেশ দলে পাঁচটি পরিবর্তন হয়েছে। সাকিব ফিরে এসেছে।
ঘুমাবার আগে স্ট্যাটাসে লিখেছিলাম বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচে বাংলাদেশ জিততেও পারে। কয়েকজন দেশভক্ত যুবসমাজের প্রতিনিধি আমার সে লেখায় লাইক দিয়েছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক ফর্মের অবস্থা দেখে কয়জন সত্যিকারের আশা করেছিলেন?
আমি কেন জানি আশা করেছিলাম। আমরা যেবার তাদের হারিয়েছিলাম, সেবার তাদের ছিল ওয়াসিম, ওয়াকার, শোয়েব, সাকলাইন, সাঈদ, ইজাজ, সেলিম মালিক, ইনজামাম, আফ্রিদি, মইন খান! আমাদের কারা ছিল? কেউ না। এবারে অন্তত আমাদের সাকিব, মুশফিক, রাজ্জাক, মমিনুলরা আছে। যদি সেই লেজেন্ডারি পাকিস্তানি দলকে সেই পুঁচকে ব্যাঘ্র শাবকেরা দাপটের সাথে হারিয়ে দিতে পারে, তবে এখন এই সাধারণ পাকিস্তানি দলকে কেন হারানো সম্ভব না?
খেলা শুরু হলো। বাংলাদেশের ইমরুল কায়েস প্রথমেই জীবন পেলেন। গত ম্যাচে আমাদের "মিস্টার ডিপেন্ডেবল" চারটা লাইফ পাবার পরেও যেভাবে নিজের উপাধির প্রতি বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে আউট হয়েছিলেন, সেখানে বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানদের ক্যাচ ড্রপে খুব বেশি একটা স্বস্তি আসেনা। চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকার চেষ্টা করলাম। ঘুমাতে হবে। নাহলে কালকে অফিসে বারোটা বাজবে। কালকেই বিল ক্লোজিংয়ের ডেডলাইন। ঠান্ডা মাথায় টানা কাজ করে যেতে হবে।
ঘুম ভাঙ্গলো (শেষ রাতের দিকে ঘুম এসেছিল) ভোর সাড়ে ছয়টায়। উঠেই স্কোর দেখতে ক্রিকইনফো ওয়েবসাইটে গেলাম। স্কোর দেখে চোখ কপাল ছাড়িয়ে আরেকটুর জন্য ছাদে গিয়ে ঠেকত। তিনশো ছাব্বিশ তাও মাত্র তিন উইকেটে! তাও আবার পাকিস্তানের বোলিংয়ের বিপক্ষে! যারা কিনা বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বোলিং পরাশক্তি বলে দাবী করে! বাংলাদেশই খেলছেতো? নাকি আমি স্বপ্ন দেখছি? এখনও ঘুম ভাঙ্গেনি?
স্কোর কার্ড খুলে দেখি অবস্থা আরও ফাটাফাটি! আনামুল একশো, ইমরুল ফিফটি, মুশফিক ফিফটি, সাকিব প্রায় ফিফটি! সবচেয়ে বেশি চোখ কেড়েছে সাকিবের ইনিংসে যখন দেখলাম মাত্র ষোল বলে সে চুয়াল্লিশ করেছে! সাবাস ব্যাটা! একেই বলে প্রত্যাবর্তন!
পাকিস্তানের 'বিখ্যাত' ব্যাটিং লাইনআপের চেজিংয়ের 'সুখ্যাতির' জন্য প্রায় ধরেই নিচ্ছিলাম ম্যাচ অর্ধেক জিতে গেছি। তারপরেও একটা চিন্তা মাথায় এসেছিল, যে উইকেটে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা পাকিস্তানি বোলারদের পিটিয়ে তিনশো ছাব্বিশ করতে পারে, পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা বাংলাদেশী বোলারদের পিটিয়ে তার চেয়ে বেশি করতে পারবেনাতো? গত টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই এমনভাবে বড় স্কোর করার পরেও আমাদের হারতে হয়েছিল কিনা!
পাকিস্তান ব্যাটিংয়ে নামলো। অতি সাবধান হতে গিয়ে তিনটা উইকেট হারালো। এইদিকে রানের চাকাও প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। মনে হচ্ছিল জিততে আমাদের খুব বেশি বাকি নেই!
একটাই ভয় ছিল, আফ্রিদি। যাকে দলে রাখা অনেকটা লটারির টিকিটে ইনভেস্ট করার মত ব্যাপার। যদি তার ব্যাটে বল লাগে, তাহলে জ্যাকপট! দশ টাকার লটারিই কোটিপতি বানিয়ে দেয়! আর নাহলে "আবার সুযোগ নিন।"
আফ্রিদি আগের ম্যাচেই ইন্ডিয়ার সাথে ভাল খেলে ফেলেছে। টানা দুই ম্যাচে আফ্রিদি দুর্দান্ত ব্যাট করেছে, এমন ঘটনা খুব একটা ঘটে না।
আমাদের ভাগ্য খারাপ, ব্যতিক্রম ঘটলো। আফ্রিদির ব্যাট আজকেই সবচেয়ে বেশি চওড়া হলো! মিসবাহর লটারি "লাইগা গ্যাল!"
কেউই হারার জন্য খেলতে নামেনা। দেশের কোন বোলারকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। তাঁরা তাঁদের সাধ্যমত চেষ্টা করেছেন। নিজের দিনে আফ্রিদি মুরালি, স্টেইন, ম্যাকগ্রাকে পর্যন্ত পিটিয়ে তক্তা বানিয়ে দেয়, আজকেও তার দিন ছিল। আমরা আবারও পাকিস্তানের সাথে জিতি জিতি করেও হেরে গেলাম। প্রায় পনের বছর হয়ে গেল, ওদের আমরা হারাতেই পারছি না! পাকিস্তানের সাথে আরও কয়েকটা খেলা আমাদের মাটিতে হওয়া উচিৎ। ইনশা আল্লাহ, আমরা জিতবই। পনের বছরের ক্ষরা দ্রুত কাটানো উচিৎ।
২| ০৫ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ৯:১৪
সাইবার অভিযত্রী বলেছেন: ইনশা আল্লাহ, আমরা জিতবই। পনের বছরের ক্ষরা দ্রুত কাটানো উচিৎ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:৪৭
ভ্রমন কারী বলেছেন: পাকিস্তানের সাথে আরও কয়েকটা খেলা আমাদের মাটিতে হওয়া উচিৎ। ইনশা আল্লাহ, আমরা জিতবই। পনের বছরের ক্ষরা দ্রুত কাটানো উচিৎ।