নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
আমি প্রায়ই আমার লেখায় ইসলামিক রেফারেন্স ব্যবহার করি। অনেকেই সে কারনে আমাকে মৌলবাদী বলে থাকেন। যখন আমি জিজ্ঞেস করি, "মৌলবাদের আমি কি দেখালাম?"
তখন আর উত্তর দিতে পারেনা। আমতা আমতা করেন। একপর্যায়ে কথা ঘুরিয়ে নেন।
সুযোগ পেলেই ইসলামকে গালাগালি করে মজা পায়। মুসলমানের ছেলে, অথচ ইচ্ছা করেই নবীজির নাম ঠিকভাবে উচ্চারণ করেনা। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলাতো বহুদূর!
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বুঝতে পারি যে ইসলাম তাঁদের কাছে একটি তিক্ততার নাম। তাঁদের অধিকাংশই জন্মগতভাবেই মুসলমান। এবং প্রায় একশো ভাগ ক্ষেত্রেই তাঁরা নিজেদের ধর্ম সম্পর্কে কিছুই জানেননা।
আমাদের দেশ সহ বিশ্বের এখন প্রতিটা দেশেই দেখা যায় চরমপন্থী কিছু মাওলানা ইসলামকে যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করে একে হিংসার দিকে ঠেলে দিয়েছে। তাদের এমন আচরণে বিধর্মীরাতো বটেই, এমনকি স্বল্প জ্ঞান সম্পন্ন মুসলিমরাও ধর্মটিকে গালাগালি করতে মুখ আটকায় না। এইসব মাওলানারা নাস্তিকদের "নাস্তিক! নাস্তিক!!" বলে গালাগালি করে, কিন্তু এটা কেউ বুঝতে চায়না যে তাদের নাস্তিকতার দিকে ঠেলে দেয়ার জন্য তারাও কোন অংশে কম দায়ী নন।
আমার মনে আছে একবার দূর্গা পূজোর সময়ে আমাদের রমযান মাস পড়ে গিয়েছিল। মনে পড়ে, হিন্দুরা তখন কেমন অস্বস্তি নিয়ে তাঁদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতেন। তাঁদের হয়তো আশঙ্কা ছিল, কোন সময়ে ক্ষেপে গিয়ে মুসলমানেরা তাঁদের পূজো মন্ডপে আক্রমণ করে বসে!
দেশের কোথাও কোথাও এমন ঘটনা ঘটে থাকতেও পারে, আমার জানা নেই।
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টানদের আমাদের দেশে অনায়াসে মারধর করা যায়। ইসলামের একটা লেবেল লাগিয়ে দিলেই হলো। তখন সেটা জিহাদের রূপ পায়। এবং বকধার্মিক মুসলমানেরা একে পবিত্র দায়িত্ব মনে করে লাঠি হাতে রাস্তায় নেমে আসেন। কোন ভাবা ভাবি নেই। মসজিদের মাওলানা আওয়াজ দিয়েছে, এত ভাবার কি আছে?
তাদের জন্যই একটি ছোট গল্প বলতে চাই। এবং অবশ্যই তা হযরত মুহাম্মদের(সঃ) জীবন থেকে।
ইসলামের একদম শুরুর দিকে খ্রীষ্ট ধর্মীয় একদল লোক মদিনায় এসেছিলেন হযরত মুহাম্মদের(সঃ) সাথে দেখা করতে। নবীজি তাঁদের অভ্যর্থনা জানালেন, এবং মসজিদে নববীতেই তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করলেন।
এখানে লক্ষ্য করার মতন বিষয় হচ্ছে, খ্রিষ্টান দলটিতে বেশির ভাগই ছিলেন পাদ্রী বা ধার্মিক খ্রিষ্টান। তাঁরা অবশ্যই তখন যীশুর পূজা করতেন। এবং নবীজি(সঃ) সেটা জানার পরেও মসজিদের ভিতরেই তাঁদের থাকার অনুমতি দিয়েছিলেন। তাঁরা সেই মসজিদে বসেই যীশুর পূজা করেছিলেন।
এই ঘটনা যদি কারও কাছে যথেষ্ট মনে না হয়, তাহলে আরেকবার এক আরব বেদূইন তাঁর সাথে দেখা করতে মসজিদে নববীতে আসেন। নবীজির সাথে তখন সাহাবীরা (তাঁর সঙ্গী) ছিলেন। বেদূইন বেচারা প্রায় জংলী একজন মানুষ, সে ভদ্রতার কিছুই জানেনা। তাঁর প্রকৃতির ডাক আসলো, সে মসজিদের ভিতরেই এক কোণায় গিয়ে পেশাব করতে শুরু করে দিল।
সাহাবীরা তেড়ে এলেন।
"এই ব্যাটা! তুই করিস কি!"
নবীজি (সঃ) সাথে সাথে তাঁদের থামিয়ে দিলেন। বললেন, "ওকে ওর কাজ শেষ করতে দাও।"
বেদূইন বেচারা ঘাবড়ে গিয়েছিল। প্রাকৃতিক কর্মের মাঝপথে কেউ বললেই কি থেমে যাওয়া সম্ভব নাকি? নবীজির (সঃ) কথায় সে আশ্বস্ত হলো। ধীরে সুস্থেই সে কর্ম সম্পাদন করলো।
সে উঠে এলে নবীজি(সঃ) তাঁর সঙ্গীদের নির্দেশ দিলেন, "তোমরা এখন পানি দিয়ে জায়গাটা ভাল মত ধুয়ে ফেল।"
সাহাবীরা চলে গেলে তিনি বেদূইন বেচারাকে খুবই নরম স্বরে বোঝালেন যে মসজিদ একটি পবিত্র স্থান, এখানে আল্লাহর ইবাদত হয়। আজেবাজে কাজ করার স্থান মসজিদ নয়।
যদি স্বয়ং নবীজি (সঃ) এত ধৈর্য্যের পরিচয় দিতে পারেন, যদি তাঁর জীবনকেই আমাদের অনুসরণ করার কথা হয়ে থাকে, তবে কোন লজিকে আমাদের দেশে একদল মানুষ আরেকদলকে মারার অপরাধকে যায়েজ করার যুক্তি দেখায়? তাও আবার নবীজির দোহাই দিয়ে?
কিছুদিন আগে নেলসন ম্যান্ডেলা মারা গেলেন। গান্ধী পরবর্তী যুগে এমন মহান নেতা বিশ্বে আর একটিও আসেননি। ফেসবুকে সবাই R.I.P লিখতে লিখতে ভরিয়ে দিল, আমি নিজেও শ্রদ্ধাঞ্জলী হিসেবে দুই চার লাইন লিখেছিলাম।
মজা লাগলো সেসময়ে যখন কয়েকজনের "ম্যান্ডেলা জ্ঞান" সম্পর্কে জানতে পারলাম।
"ম্যান্ডেলা ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার একজন মহান নেতা। যিনি কালোদের অধিকারের জন্য লড়েছেন!"
বেশিরভাগের দৌড় দেখি এই পর্যন্তই। এর বেশি আর কিছু বলতে পারেনা। কিন্তু তাঁর মৃত্যুতে স্ট্যাটাস, প্রোফাইল পিকচার বদল ইত্যাদি দেখে মনে হচ্ছিল যেন তাঁর চেয়ে বড় ম্যান্ডেলা ভক্ত পৃথিবীতে আর কেউ নেই।
কালোদের অধিকারের জন্য অনেকেই লড়েছেন। আমাদের দেশের সন্তু লারমাও চাকমাদের অধিকারের জন্য লড়েছেন। কিন্তু ম্যান্ডেলা পর্যায়ে কেউই যেতে পারেননি।
নেলসন ম্যান্ডেলার সবচেয়ে মহান দিকটি ছিল তাঁর ক্ষমা করার গুণ। সাতাশ বছর অন্যায়ভাবে জেল খাটার পরেও যখন তিনি বেরিয়ে এসে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট হলেন তখনও তিনি প্রতিশোধ না নিয়ে উল্টো সবাইকে ক্ষমা করে দিলেন। শত শত বছর ধরে চলে আসা বর্ণবাদী সাদা চামড়ার মানুষদের তিনি ক্ষমা করে দিলেন নিঃশর্তে। বিশ্ব তাঁর মহানুভবতায় মুগ্ধ হয়ে গেল। নেলসন মেন্ডেলা ভালবাসা দিয়েই বিশ্ব জয় করে ফেললেন।
ঠিক একই ঘটনা কি চৌদ্দশো বছর আগে ঘটেনি?
যখন দশ হাজার সেনা নিয়ে বিনা রক্তপাতে হযরত মক্কা জয় করলেন, এবং পরাজিত মক্কাবাসী যখন এই ভেবে ভয়ে কাঁপছে যে তাঁদের সাথে কী ঘটতে চলেছে, তখন নবীজি (সঃ) তাঁদের জিজ্ঞেস করলেন, "তোমাদের কি মনে হয়? আমি তোমাদের কী শাস্তি দেব?"
তখন মক্কাবাসীদের মনে পড়ে গেল কী অত্যাচারটাই না তাঁরা করেছিলেন মুসলমানদের উপর। তাঁদের অবরুদ্ধ করে ফেলা হয়েছিল, সমাজচ্যুত করা হয়েছিল। বছরের পর বছর নির্বাসনে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল। গায়ে হাত তুলে মারধর করাতো ছিল প্রতিদিনকার ব্যপার। তাঁকে হত্যাকরারোতো কম চেষ্টা হয়নি। হত্যা করা হয়েছিল অনেক সাহাবীদের। হযরত হামজার (রাঃ) মৃত দেহের নাক কান কেটে ফেলা হয়েছিল, দাঁত গিয়ে কামড়ানো হয়েছিল তাঁর কেটে ফেলা কলিজা! স্বয়ং নবীজিও সেদিন প্রকাশ্যে কেঁদে ফেলেছিলেন।
এত এত অত্যাচারের কি শাস্তি হবে আজকে?
তাঁরা বিনীত স্বরে বলল, "আপনি একজন মহান মানুষ। আমরা আপনার কাছে মহানুভবতাই আশা করি।"
নবীজি(সঃ) তখন একবাক্যে বললেন, "যাও! আজকে তোমাদের সবাইকে ক্ষমা করে দেয়া হলো! আজকে থেকে তোমরা মুক্ত!"
এখন আমি নেলসন ম্যান্ডেলার গুণগান গাইলে প্রগতিশীল, কিন্তু মুহাম্মদের(সঃ) কথা বললেই হয়ে যাব মৌলবাদী?
তাঁদেরকে আমি বলবো, educate yourselves my dear brothers and sisters! নবীজি আপনার নিজের অমূল্য সম্পদ, তাঁকে ফেলে অন্য মানুষের সম্পত্তিতে নজর দেয়ার কোনই প্রয়োজন নেই আপনার।
১২ ই জুন, ২০১৪ রাত ৩:২৩
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!
২| ১২ ই জুন, ২০১৪ রাত ১:১৩
আজব গোয়েন্দা বলেছেন: " তাঁদের অধিকাংশই জন্মগতভাবেই মুসলমান। এবং প্রায় একশো ভাগ ক্ষেত্রেই তাঁরা নিজেদের ধর্ম সম্পর্কে কিছুই জানেননা। "
কথাটা ঠিক বলেছেন আমাদের মুসলিমদের মধ্যে যারা যুবক তাদের ইসলামের "ই" টাও জানা নেই। অথচ না বুঝে না শুনে উলঠা পালঠা ফতোয়া দেওয়া শুরু করে। কিছু বললে উত্তর দেয়, আপনি এত ভাল হলে অনলাইন বা ইন্টারনেটে কি করেন।!
"এমনকি স্বল্প জ্ঞান সম্পন্ন মুসলিমরাও ধর্মটিকে গালাগালি করতে মুখ আটকায় না।"
এখানেও আমি আপনার সাথে একমত, তারা ধর্মটাকে বিকৃতি করে।
আর আমাদের নবীজির কথা কি লিখব! সারা জীবন লিখলেও যে শেষ হবে না।
তিনিই বিশ্বের সর্ব শ্রেষ্ঠ নেতা,তিনিই বিশ্ব মানবতার দূত, মানব জাতি প্রায় মানবতা ভুলেই গিয়েছিল, মানবতার শিক্ষক তিনি, তিনি মহিয়ান।
১২ ই জুন, ২০১৪ রাত ৩:২৪
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ঠিক!
৩| ১২ ই জুন, ২০১৪ রাত ১:১৯
বেপরোয়া বেদুঈন বলেছেন: শুধু ইসলামিক রেফারেন্স নয়, আপনার গোটা লেখাটা পড়ে মনে হল আপনি মৌলবাদী । কারণ, প্রগতিশীল যুগপোযুগী বৈজ্ঞানিক চিন্তা-ভাবনার বিপরীতে প্রাচীন মধ্যযুগীয় ধর্মশাস্ত্রপন্থী চিন্তা-ভাবনা পোষণ করে এবং তাকে আঁকড়ে ধরে থাকাটাই মৌলবাদের প্রথম লক্ষণ । যেটি আপনার লেখার পরতে পরতে দেখতে পাচ্ছি ।
১২ ই জুন, ২০১৪ রাত ৩:২৬
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: তাহলে আপনি আমাকে আধুনিকতা শেখান! দেখি আপনার কাছ থেকে কিছু প্রগতিশীলতা শিখতে পারি কিনা।
৪| ১২ ই জুন, ২০১৪ রাত ১:১৯
পংবাড়ী বলেছেন:
মানুষ গুহায় বসবাস করে না এখন, তারা জানে মহাবিশ্বে কোথায় কি আছে! তারা জানে ঈসা নবী কোন গ্রামে জন্মেছিলেন, কি বলেছিলেন, কিভাবে মরেছেন; গল্পের যুগ শেষ হয়ে গেছে।
১২ ই জুন, ২০১৪ রাত ৩:২৮
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: আপনার কথার মানে এখনও বুঝিনি। একটু বুঝিয়ে বলুন।
৫| ১২ ই জুন, ২০১৪ রাত ৩:০৩
পাউডার বলেছেন:
@পংবাড়ী - গল্পের যুগ কিভাবে শেষ হইলো, রেফারেন্স দেন।
৬| ১২ ই জুন, ২০১৪ সকাল ১১:১৭
নাহিদ ইসলাম ৩৫০ বলেছেন: ঠিক ভালো লাগলেঅ লেখাটি।
আইডিয়া বাজ
১২ ই জুন, ২০১৪ রাত ৮:৫২
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!
৭| ১২ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:২৪
আজব গোয়েন্দা বলেছেন: পংড়ী ভাই, আপনি নিশ্চয় গল্প ও ইতিহাসের মধ্যে পার্থক্যটা আমার চায়তে ভালই জানেন তার পরও বলছি, গল্প মনের মত করে বানানো যায়, কিন্তু ইতিহাস কারো মনগড়া বানোয়াট গল্প নয়, ইতিহাস গড়তে হয়, ঐতিহাসিক ব্যক্তিরাই ইতিহাস গড়েন, ইতিহাস যুগ যুগ ধরে চলতে থাকে এর কোন শেষ হয় না, আর যুগ যুগান্তরের ইতিহাস কখনো মিথ্যা হয় না, ইতিহাস যুগ যুগ ধরে সত্যর সাক্ষ্য বহন করে, । আর এখানে ওনি ঈসা (আ) এর কথা নয় মোহাম্মদ (স এর কথা বলেছেন, পুরোটা না পড়ে না বুঝে মন্তব্য করা ঠিক না।
৮| ১২ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:৩০
আজব গোয়েন্দা বলেছেন: সুতরাং লেখক আমাদেরকে ঘুম পারানোর গল্প শুনায়নি, শুনিয়েছেন ঘুম থেকে জেগে উঠার ইতিহাস।
১২ ই জুন, ২০১৪ রাত ৮:৫২
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: খুব ভাল লাগলো আপনার মন্তব্যটি। পংড়ি ভাইর মতন অনেকেই আছেন, কিছু না জেনেই আঁতলামি করতে শুরু করে দেন।
বেদুইন ভাইর কমেন্ট পড়েছেন? উনি 'মৌলবাদ' বলতে কি বুঝালেন কিছুই বুঝলাম না। বোঝাতে বললাম, বোঝালেনও না। :/
৯| ১৩ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ২:৫৬
আজব গোয়েন্দা বলেছেন: হ্যাঁ ভাই আমিও বুঝলাম না! ওনি মৌলবাদের কি দেখলেন!
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই জুন, ২০১৪ রাত ১২:৫৫
মনে নাই বলেছেন: ভালো লেগেছে লেখা।