নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
মনু মাঝির নতুন পয়সা হয়েছে। একটা সময়ে ছোট একটা নৌকা দিয়ে সে ক্ষেয়া পারাপারের কাজ করতো। তারপর কিভাবে কিভাবে যেন সে একটা লঞ্চ কিনে ফেলল। লোকমুখে শোনা যায় সে আফিমের ব্যবসা করে কাঁচা টাকা কামিয়েছে। কিন্তু যেহেতু কেউ প্রমান দিতে পারেনি - সেই প্রসঙ্গ থাক।
কিছুদিনের মধ্যেই তিনি আরেকটা লঞ্চ কিনলেন। তারপর আরেকটা। এইভাবে সে এখন চার চারটা লঞ্চের মালিক। প্রচুর টাকা পয়সা!
এইতো সেদিনই সে বাড়িতে লাখের বাতি জ্বালিয়েছে। যারা জানেন না তাঁদের জ্ঞাতার্থে বলছি, এক সময়ে গ্রামের মানুষের এক লাখ টাকার সম্পত্তি হলে লম্বা বাঁশের আগায় হারিকেন বেঁধে উঠানে টাঙিয়ে রাখতো। এতে করে আশেপাশের দশ গ্রামের মানুষ জানতে পারতো এই বাড়ির কর্তা এখন লাখপতি, তাঁকে ইজ্জত দিয়ে কথা বলতে হবে।
তা লাখের বাতি জ্বালানোর একটা যন্ত্রণা হচ্ছে ভাল মানুষের সাথে সাথে চোর ডাকাতেরও চোখ পরে। লাখের বাতি জ্বালানো বাড়িতে এক সপ্তাহের মধ্যেই ডাকাতি পরে। এইটাই নিয়ম। তাই মনু মাঝি ডাকাতদের উদ্দেশ্যে বার্তা পৌছাতেই একটা দোনলা বন্দুক কিনে বাজার করতে গেলেন। তাঁর পায়ে নতুন পাম্প শু, ঢাকা শহর থেকে কিনেছেন। গায়ে দামী পাঞ্জাবি। এটিও ঢাকা থেকেই কেনা। মাথায় পার্সি টুপি। বিদেশ থেকে আনিয়েছেন। তাঁর চালচলনে এখন পুরাই জমিদারী ভাব।
তাঁর ছোট শ্যালকের পা খালি, তবে তাঁর কাঁধেই যেহেতু বন্দুকটা শোভা পাচ্ছে সেহেতু সে মহা খুশি।
বাজার করতে এসেছেন চৌধুরী সাহেবও। কয়েক পুরুষ ধরে গ্রামের জমিদার। যদিও সেই ব্রিটিশ আমলেই জমিদারী প্রথা লুপ্ত হয়েছে, তবুও গ্রামের সবচেয়ে প্রভাবশালী ও ধনী ব্যক্তিটি তিনি।
এখনও তিনি লোকজন সাথে না নিয়ে চলাফেরা করেননা। বাজারের সবচেয়ে বড় মাছটা তাঁর জন্যই তোলা থাকে। নদী থেকে ধরার পর এই মাছ বাজারে এনে চৌধুরী সাহেবের আগমন পর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখা হয়। চৌধুরী সাহেব আসবেন, তাঁর সামনেই মাছটা মুখ হা করে লেজ নাড়াচাড়া করবে - তারপর তাঁর পছন্দ হলে তবেই মাছটি তাঁর বাড়িতে পৌছে দেয়া হবে।
দাম নিয়ে জেলেকে চিন্তা করতে হয় না। জমিদারী চলে গেলেও চৌধুরীদের হাত বরাবরই খোলা।
প্রথা অনুযায়ী চৌধুরী সাহেবের জন্য একটি ষোল কেজি ওজনের আইড় মাছ রাখা হয়েছে। বিশাল এই মাছটি দেখতে লোকজনের ভিড় হয়েছে দারুন। কেউ মনে করতে পারছে না শেষ কবে এমন বড় মাছ দেখার সৌভাগ্য তাঁদের হয়েছিল। সবাই ললুপ দৃষ্টিতে মাছটির মুখ হা করে মাঝে মাঝে দাপাদাপি দেখছে। এ দৃশ্য দেখলেও জীবন স্বার্থক!
ভিড়ের মধ্যে উপস্থিত আছে মনু মাঝিও। চৌধুরী সাহেব এখনও এই দোকানে এসে পৌছাননি। তিনি এখনও বঙ্গাই মিয়ার মাংসের দোকানে আছেন। সেখান থেকে এক মণ গরুর মাংস কিনছেন। চৌধুরী বাড়িতে এক মণের কম মাংস যাওয়ার নিয়ম নেই।
মনু মাঝি হারুন মিয়া জেলেকে তাড়া দিল, "তুমি এই মাছ আমার কাছে কততে দিবা হেইডা কও। চৌধুরী সাব তোমারে যত দিব, আমি তার থেইকা চার আনা বেশি দিমুনে। তুমি হইতাছো গিয়া ব্যাপারী, যে বেশি দিব, তুমি তার কাছে মাল ব্যাচবা।"
হক কথা। হারুন মিয়া খানিকটা ধন্দে পরে যায়। আসলেইতো, যে বেশি দিবে তাঁর কাছেইতো মাল বেচা উচিৎ। কিন্তু এতদিন ধরে চলে আসা একটি প্রথা - চৌধুরীদের রাগালে উপায় আছে? ইশ! কোন দুর্ভাগ্যে যে আজকে মাছটা তাঁর জালেই ধরা পড়ল!
"আরে তুমি এত ডরাও ক্যান? দেশে এখন জমিদারী আইন নাই। কেউ তোমার বা** টাও ফালাইতে পারবো না। পুলিশরে বিচার দিলে সবরে জেলে পুরব। তুমি আমার কাছে বেচ। উনি আইলে কইবা মনু শেখ (লাখ টাকা কামাবার সাথে সাথে মনু মাঝি নাম পাল্টে মনু শেখ হয়ে গেছে) কিইন্যা নিছে। স্বাধীন দ্যাশের সরকারে বাস করি, কোন জমিদারের জমিদারিরে পুছি না।"
উপস্থিত জনতা চোখ কপালে তুলে ফেলল। বলে কী মনু মাঝি! চৌধুরী সাহেবের জন্য রাখা মাছ কেনার সাহস দেখাচ্ছে! এ যে পরম ধৃষ্টতা!
উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্তে চৌধুরী সাহেব দৃশ্যে প্রবেশ করলেন। উপস্থিত জনতা সরে গিয়ে তাঁকে স্থান করে দিল। মাছটা দেখে তাঁর বেশ পছন্দও হলো। এতক্ষণ বাহাসের কোন কিছুই তাঁর কানে যায়নি। কাজেই তিনি অভ্যাসবসতই নিজের লোকজনদের বললেন মাছটি বাড়ি নেয়ার ব্যবস্থা করতে। গৃহকর্ত্রীকে দেখিয়ে কাটাকুটি যা হবার বাড়িতেই হবে।
তিনি পাঞ্জাবির পকেট থেকে দশ টাকা বের করে হারুন মিয়ার হাতে ধরিয়ে দিলেন।
জেলে হারুন মিয়া খুবই খুশি। বাজারে এই মাছের দর কিছুতেই সাত টাকা ছাড়াতো না।
ঠিক তখনই মনু শেখ বাজারের সবাইকে স্তম্ভিত করে বলে উঠলো, "চৌধুরী সাব, আমি দশ ট্যাকা চাইর আনা দিলাম, এই মাছ আমার।"
চৌধুরী সাহেবের ভুরু খানিকটা কুঁচকে গেল। মনু মাঝির লাখের বাতি জ্বালানোর খবর তিনিও পেয়েছেন। সে কলকাতা থেকে বন্দুক আনিয়েছে এও তিনি শুনেছেন। এতদিন এই অঞ্চলে শুধু তাঁর বাড়িতেই বন্দুক ছিল - মনু মাঝি তাঁর সমকক্ষ হবার চেষ্টা করছে দেখে তিনি মনে মনে বেশ মজাও পেয়েছেন। কিন্তু সে যে বাজারে এত মানুষের সামনে এইরকম বেয়াদবি করবে সেটা তিনি কল্পনাও করেননি। মনু মাঝির কত টাকা হয়েছে যে সে চৌধুরীদের বাজার কিনতে চায়?
তিনি থমথমে কন্ঠে বললেন, "তোমার এই মাছটাই লাগবো?"
"জ্বী চৌধুরী সাব। আমার বেগম সাহেবার অনেক দিনের শখ বাজারের সবচেয়ে বড় মাছটার মাথা আমারে পাক কইরা খাওয়ায়। এখন আল্লায় যখন আমারে সামর্থ দিছেন, আমি আমার বেগমের শখ পূরণ করতে চাই মাত্র।"
চৌধুরী সাহেব তাঁর পকেট থেকে আট আনা বের করে হারুন জেলের দিকে এগিয়ে দিয়ে নিজের লোকজনদের নির্দেশ দিলেন মাছটা যেন মনু শেখের বাড়িতে দিয়ে আসা হয়। নতুন লাখপতি মহিলার শখ পূরণে চৌধুরী বাড়ির উপহার।
তারচেয়ে বড় কথা, চৌধুরীদের কাছে ইজ্জতের মূল্য সবচেয়ে বেশি। কোন মনু মাঝি হঠাৎ টাকা কামিয়ে ভরা বাজারে সবার সামনে সেটা কিনে ফেলতে পারেনা।
সেই রাতেই যখন মনু শেখের স্ত্রী তাঁর স্বামীর পাতে আইড় মাছের আস্ত মাথা তুলে দিচ্ছিলেন, ঠিক তখনই তাঁর ছোট শ্যালক হন্তদন্ত হয়ে এসে খবর দেয় যে লঞ্চ ঘাটে তাঁর চারটা লঞ্চেই আগুন ধরেছে। দাউ দাউ করে জ্বলা আগুন কেউ নেভাতে পারেনি।
বোধয় কেরোসিন দেয়া হয়েছিল। কিন্তু যেহেতু কেউ প্রমান দিতে পারেনি - সেই প্রসঙ্গও থাক।
তাঁর সব শেষ হয়ে গ্যাছে। তিনি আবারও এক নৌকার মাঝিই হয়ে গেলেন।
উপরের গল্পটা একটি সত্য ঘটনা। ভিলেজ পলিটিক্স। এখনও আমাদের দেশে এমন রাজনীতি চলে। এবং দেখা যাচ্ছে বৈশ্বিক ক্যানভাসেও এমন পলিটিক্স অংকিত হয়।
ব্যক্তিগতভাবে আমি বিশ্বাস করিনা ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা আমাদের বোলারদের ভয় পায়। যারা করেন আমার ধারনা সেটা ১০০% আবেগ, এবং দেশপ্রেম।
আমার হয়তো দেশপ্রেম একটু কম। তাই আমি দেখি তাসকিন-মুস্তাফিজ-রুবেল-আল আমিন থেকেও বিশ্ব ক্রিকেটে অনেক বড় বড় বোলার আছে। এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে ওদের বিরাট কোহলি সন্দেহাতীতভাবে বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। হয়তোবা টেন্ডুলকারের চেয়েও বড়। এই বয়সেই তাঁর যতটা ম্যাচ উইনিং ইনিংস আছে - টেন্ডুলকারের সারা ক্যারিয়ারেও ততটা নাই।
আমার ধারনা ঘটনার পেছনে আমাদের একটা উচিৎ শিক্ষা দেয়ার চক্রান্ত লুকিয়ে আছে। এবং কারা করেছে সেটাতো সবাই জানেনই।
কথা হচ্ছে তাসকিনকে নিষিদ্ধ করার পেছনে আইসিসির এই এক তরফা সিদ্ধান্ত হজম করতে পারছিনা। সানির বোলিং নিয়ে সন্দেহ থাকতেই পারে, কিন্তু তাসকিন!
মুরালির দুসরায় ওরা ফল্ট পেয়েছিল, মুরালিকে কেউ নিষিদ্ধ করেনি। বলেছিল দুসরা করতে পারবে না।
আমাদের তাসকিনের বেলায় সরাসরি নিষিদ্ধ!
সাধারনত আম্পায়ারদের আপত্তি থাকতে হয় কোন অ্যাকশন নিয়ে। যেই বলটির জন্য তাসকিন নিষিদ্ধ হলো, সেই ম্যাচে তাসকিন সেই কুখ্যাত বাউন্সার একটাও ছোড়েনি।
সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয় কোন এক পারভার্টের তৈরী ধোনির কাটা মুন্ডু হাতে তাসকিনের উল্লাসরত ছবিটি দেখে ভারতীয় মিডিয়া ও দর্শকদের তীব্র প্রতিক্রিয়ায় (যেটা জাস্টিফায়েডও ছিল - আমাদের খেলোয়ারদের নিয়ে এই কাজ করলে হারামজাদাকে মাঝ বরাবর ছিড়ে ফেলতাম)।
এর আগে পুরানো ক্ষততো ছিলই - সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের কাছে মাত। এবং প্রথম আলোর মুস্তাফিজের হাতে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের অর্ধমুণ্ডনের ছবিটি।এবং সুধীরকে ধাওয়া করা।
এক কালের মনু মাঝি ইদানিং লাখপতি হয়েছে। সে বাড়িতে লাখের বাত্তি জ্বালিয়েছে। চৌধুরীদের মতন দোনলা বন্দুকও কিনেছে। এখন খোলা বাজারে চৌধুরীদের অপমান করার চেষ্টা করে - কাহাতক সহ্য করা যায়?
দিল লঞ্চগুলো পুড়িয়ে।
আমরা আমাদের লঞ্চ পুড়তে দিব না। হোক প্রতিবাদ। মুরালিকে ড্যারেল হেয়ার নো বল ডাকায় রানাতুঙ্গা দল নিয়ে মাঠ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। শ্রীলংকা তখনও বিশ্বচ্যাম্পিয়ন।
আমাদের দলটা এখনও ততটা বড় হয়নি। কিন্তু মাশরাফির মধ্যে আমরা লংকার সিংহ রানাতুঙ্গার ছায়া দেখতে পাই। মাশরাফি যদি টুর্নামেন্ট বয়কট করেও চলে আসে - আমি সাথে আছি। আর যদি খেলে যায়, তাতেও আপত্তি নেই। যে অধিনায়ক নিজের খেলোয়ারের প্রতি অন্যায় হতে দেখে কাঁদতে পারে - তাঁকে কোটি কোটি সালাম দিলেও কম দেয়া হয়।
আমাদের তাসকিন ফিরবেই ইন শা আল্লাহ। বিশ্বের বড় বড় ব্যাটসম্যানদের আউট করে দিয়ে ঈগলের মতন ডানা মেলে বাতাসে উড়তে সে ফিরবেই। সত্যের জয় হবেই। এবং আমরাও একে একে সবাইকে একদিন দেখিয়ে দেব - আমরা "দুই এক ম্যাচ জিতেই ফূর্তিতে অন্ধ হয়ে যাওয়ার" মতন ছোট দল না।
২| ২১ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ৯:২৪
আব্দুল্লাহ তুহিন বলেছেন: ইনশাল্লাহ, ওরা ফিরবেই।
৩| ২১ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ৯:২৮
বিজন রয় বলেছেন: সহমত। ফিরবেই।
৪| ২১ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:০৬
প্রন্তিক বাঙ্গালী বলেছেন: আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, তাসকিন আমাদের দেশের একজন ভাল বলার তাকে সড়যন্ত করে বাংলার উত্থান ক্রিকেট থেকে সরানো হয়েছে। আমি আশা করি সে সব বাধা ভেঙ্গে আবার আমরা দলে দেখতে পাব।
৫| ২১ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৩
মশার কয়েল বলেছেন: অসাধারণ বলেছেন ৷ ওরা ফিরবেই ইনশাআল্লাহ ৷
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ৯:১৭
সাগর মাঝি বলেছেন: নিশ্চয়-জয় আমাদেরই হবে একদিন।