নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বউ পেটাবি? ইসলামি শরিয়ত মতেই পেটা।

০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:৫৬

ডমেস্টিক ভায়োলেন্স নিয়ে লেখালেখি করার অনুরোধ অনেকে করেন। আগেও লিখেছি বহুবার, আজকে আবারও লিখলাম। দেখা যাক কারও কোন পরিবর্তন ঘটে কিনা।
প্রথমেই একটা হাদিস বর্ণনা করি। সহিহ হাদিস। অনেকেই হাদিসটি শুনেছেন - এবং অবশ্যই হাদিসটি নিয়ে ইস্যু বানিয়েছেন।
"যদি আল্লাহ ব্যতীত আর কাউকে সিজদাহ দেয়ার অনুমতি থাকতো তবে আমি নারীদের নির্দেশ দিতাম তাঁরা যেন তাঁদের স্বামীদের সিজদাহ দেয়।"
ও মাই গড! আল্লাহর নবী কী বলে ফেললেন! এ যে সুস্পষ্ট পুরুষবাদী মন্তব্য! আগেই বলেছিলাম, ইসলাম নারিপুরুষে বৈষম্য সৃষ্টি করে। মেয়েদের দমিয়ে রাখে। ব্লা ব্লা ব্লা।
হ্যাং অন মাই মাদার্স এন্ড সিস্টার্স ইন ইসলাম। চিন্তা ভাবনা না করে মন্তব্য করা তাসলিমা নাসরিনের কাজ। আপনাকে বুঝতে হবে কথাটার গভীরতা কী।
ইসলামে কেন আল্লাহকে সিজদাহ করতে বলে জানেন? কারন তিনি আমাদের “রব।”
"রব" শব্দের অর্থ হচ্ছে যিনি একই সাথে আমার সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা, লালনকর্তা, রক্ষাকর্তা ইত্যাদি, মোটকথা আমার পুরো অস্তিত্বের মালিক। মানে হচ্ছে তিনি হচ্ছেন আমার "আলটিমেট অথরিটি।"
যাঁর প্রতি জেনুইন শ্রদ্ধায়, কৃতজ্ঞতায়, ভালবাসায় আমি আমার মাথা মাটিতে নত করি।
তাহলে বুঝতে পারছেন প্রতিটা স্বামীকে তাঁর স্ত্রীর প্রতি কোন লেভেলের দায়িত্ব পালন করতে হবে যাতে তাঁর স্ত্রী (নবীর অনুমতি থাকলে) "জেনুইন" শ্রদ্ধায়-ভালবাসায়-কৃতজ্ঞতায় মাথা নত করে দিত?
কাজটা ভয়ংকর কঠিনরে ময়না। বৌয়ের "জেনুইন শ্রদ্ধা" পাওয়ার তুলনায় এভারেস্ট জয় করা নিতান্তই ডাল ভাত।
কাজেই যেসমস্ত মহিলারা হাদিসটা শুনে কপালটা কুঁচকে গালাগালি শুরু করে দিয়েছিলেন, তাঁরা এখন দয়া করে কপালটা ইস্ত্রী করে ফেলুন।
এবং যে সমস্ত পুরুষেগণ হাদিসটার ভুল ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়ে এতদিন ফায়দা লুটে এসেছেন - তাঁরা তওবা করে আবারও কলিমা পরে মুসলমান হন। হাদিস বিকৃতি করাটাও ভয়াবহ শির্ক।
কথা যখন উঠলোই, তখন আরেকটা হাদিস বলে নেই।
আমাদের দেশে একদল পারভার্ট বউ পিটিয়ে বিমলানন্দ লাভ করে। তাদের যখন বলা হয়, "ওহে জানোয়ার, তুই বউ পেটাস কেন?"
উত্তরে নপুংশকটা জবাব দেয় - "আল্লাহ কুরআনে অনুমতি দিয়েছে - তোমার কী?"
বদমাইশটাকে যখন আরেকটা হাদিস (সহিহ)"হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর দাসীদের গায়ে হাত তুলো না" শুনিয়ে বলা হয় "নবীজি (সঃ) জীবনেও তাঁর স্ত্রীদের গায়ে হাত তোলেননি, তাহলে কী তিনি আল্লাহর নির্দেশ মানেন না?"
তারপরেও ফকিরনিরা একই কথাই আওড়ায়, কুরআন শরীফের সুরাহ নিসায় আল্লাহ পাক বলেছেন, "বৌদের গায়ে হাত তোলা জায়েজ।"
বৌকে যদি ভালবাসতে না পারেন, তাহলে বিয়ে করবেন না। আর যদি কাউকে মারধর করতেই হয়, তবে বক্সিং ক্লাবে ভর্তি হন। মেয়ে মানুষ কোন বালির বস্তা না যে সেখানে আপনি বক্সিং প্র্যাকটিস করবেন।
কথা বাড়াবার আগে নবীজির (সঃ) হাদিসটা ব্যাখ্যা করি। বুঝবেন কেন এই ভদ্রলোক বিশ্বের সর্বকালের সর্বসেরা মানব। যাঁর প্রতিটা কথার গভীরতা অতল।
তিনি কিন্তু বলতে পারতেন, "তোমরা মেয়েদের/নারীদের গায়ে হাত তুলো না।" তিনি কেন বললেন "আল্লাহর দাসী?"
ব্যাখ্যাটা সহজ।
ধরুন আপনি একটি পার্কে গেলেন। পার্কের একটি বেঞ্চ খুঁজে বের করে হুদাই লাথি দিয়ে বেঞ্চটাকে ভেঙ্গে ফেললেন।
বেঞ্চটা যেহেতু সরকারী সম্পত্তি, শেখ হাসিনা নিশ্চই আপনার সাথে বেঞ্চ ভাঙ্গা নিয়ে ঝগড়া করতে আসবেন না।
কিন্তু আপনি যদি আমার ড্রয়িংরুমে এসে হুদাই আমার সোফা ভাঙ্গেন, তাহলে আমিও নিশ্চিত করবো যে আপনি আমার সদর দরজা দিয়ে হুইল চেয়ারে বসে বের হবেন।
"আল্লাহর দাসী" সম্বোধনের মধ্য দিয়ে নবীজি (সঃ) মানুষদের সাবধান করে দিয়েছেন যে এদের ঘাটাঘাটি করলে আল্লাহ নিজে ইনভল্ভড হবেন। এখন আল্লাহর বিরুদ্ধে যাবার সাহস তোমার আছে?
নিজের চোখে দেখা একটা কেস বলি। আপনিও আশেপাশে তাকান, এমন হাজারো কেস দেখতে পাবেন।
এক মহিলাকে তার বর শুধুশুধু পেটাতো। কারন he is the man! Cowboy!
একটা সময়ে ব্যাটা স্ট্রোক হয়ে বিছানায় পরে গেল। পনেরো বছর হয়ে গেছে - এখনও সে বিছানায় পরে পরে প্রতিমুহূর্তে মৃত্যুযন্ত্রণা ভোগ করছে। তার দেখাশোনা করছে কে? সেই মার খাওয়া বউটা। আল্লাহর দাসী!
বউ পিটিয়ে কেউ জীবনে উন্নতি করতে পারেনা, সুখী হবারতো প্রশ্নই উঠেনা। চ্যালেঞ্জ দিলাম, পারলে ভুল প্রমান করে দেখান।
এখন আসি, কোরআনের সেই সর্বদা বিকৃতি ঘটানো আয়াতটিতে। যে আয়াতটি ভাঙিয়ে তসলিমা নাসরিন, আসিফ মহিউদ্দিনরা এখনও তাদের পেট পালে। তাদের কথা বিশ্বাস করে একদল লোক বেহুদা ফাল পাড়ে। আবার তাদের ফালাফালির প্রতিবাদ করতে গিয়ে আরেকদল দল জলকে আরও বেশি ঘোলা করে।
কথা হচ্ছে, বাংলাদেশে জন্মে, বাংলাদেশে বড় হয়ে, বাংলায় কথা বলে কোন সাধারন ছেলেকে যদি আমি মেঘনাদ বধ মহাকাব্য ধরিয়ে বলি "পড়ে শোনা," ছেলেটা মহাকাব্যের শক্তিশালী শব্দ ঝংকারে মুগ্ধ হতে হতে একেবারে কুপোকাত হয়ে বলতে বাধ্য হবে, "কী ভাষায় লিখছে ভাই? এইটা কী বাংলা?"
সেখানে ক্লাসিক্যাল আরবির (বর্তমান আরবদেরও পক্ষে সেই ভাষা কঠিন) অতি দূর্বল তর্জমা পড়ে কেউ যদি কুরআন শরীফের সমালোচনা করতে বসে - তাহাকে আহাম্মক না বলিয়া আর কী নামে ডাকা যায় তাহা আমার বোধগম্য নয়।
কথা না বাড়িয়ে পুরো আয়াতটা পড়া যাক।
"পুরুষেরা নারীদের উপর কর্তৃত্বশীল (Protectors and maintainers of women) এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য (শারীরিক শক্তি) দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় (support them from their means) করে। সে মতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগতা এবং আল্লাহ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোক চক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে। আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং "প্রহার" কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সবার উপর শ্রেষ্ঠ।"
পুরো আয়াতটি পড়লেই কিন্তু কোন কিছু ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয়না। এত সুন্দরভাবে ব্যাখা করা হয়েছে যে না বুঝার কোন উপায়ই নেই।
তারপরেও পোলাপান যেহেতু বুঝতে পারেনা, কাজেই আরও সহজভাবে ব্যাখ্যা করছি।
প্রথম অংশে বুঝাই যাচ্ছে, আল্লাহ পুরুষদের দায়িত্ব দিয়েছেন তাঁর স্ত্রীদের জন্য খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করতে।
এখন মেয়েরা যারা ঘরে থাকে, তাঁদেরকে আল্লাহ বলেছেন, "তাঁরাই ভাল, যারা লোকচক্ষুর আড়ালেও নিজেদের হেফাজত করেন।"
ঐশ্বরিয়ার স্বামী বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলে তাঁর বাড়িতে কী ঘটে সেই খবর মানুষের জানার কথা না। এখন ঐশ্বরিয়া তখনই একজন আদর্শ নারী হবে যখন সে তাঁর স্বামীর অবর্তমানে আমাকে চুপি চুপি তাঁর ঘরে ডাকবে না।
এই পর্যন্ত ঠিক আছে? আশা করি সবাই একমত।
যদি কেউ বলতে চান যে "প্রাপ্তবয়স্ক নারীপুরুষ পরষ্পরের সম্মতিতে ইয়ে করতেই পারে।" - তাঁদের বলছি, নিজেদের ঐশ্বরিয়ার স্বামীর অবস্থানে ফেলে কল্পনা করুন। ব্যপারটা যে অনৈতিক সেটা বুঝতে পারছেন?
না বুঝলে এইটা ভাবুন, ঠিক যে কারনে আপনি নিজের মাকে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের বাড়িতে একলা ছেড়ে আসবেন না। হু.ম.এরশাদ প্রাপ্তবয়ষ্ক, আপনার মাও প্রাপ্তবয়ষ্কা - কিন্তু তারপরেও কিছু সম্পর্কের বর্ডারে কাঁটা তারের বেড়া থাকতে হয়।
যাই হোক, ঐশ্বরিয়ার স্বামী দেখলো আমার সাথে রাতের পর রাত জেগে তাঁর স্ত্রী গল্প করে - টেক্সট ম্যাসেজ পাঠায় - শপিংয়ে ঘুরতে বেরোয়, এবং সবচেয়ে ভয়াবহ এবং বিরক্তিকর যা তা হলো সে প্রায়ই বাড়িতে এসে দেখে আমি বেরিয়ে যাচ্ছি।
আপনি হলে কী করতেন?
আমি বলি, এভারেজ অ্যামেরিকান দম্পতিদের ডমেস্টিক ভায়োলেশনের প্রধান কারনই গার্ল ফ্রেন্ড/ওয়াইফদের "চিটিং।"
একজন সুস্থ মাথার পুরুষ জীবনেও, কোন অবস্থাতেই মেনে নিতে পারবে না তাঁর জীবন সঙ্গিনী তাঁকে ফেলে আরেকজনের সাথে কেলিয়ে বেড়াচ্ছে।
এইসব কোন্দল অনায়াসে খুন খারাবি পর্যন্ত গড়ায়।
জ্বী, আমি অ্যামেরিকান পুরুষদের কথা বলছি। পৃথিবীর সবচেয়ে মডার্ন, শিক্ষিত, সেকুলার, মুক্তমনা পুরুষদের জাত।
সেখানে কুরআন কী নির্দেশ দিয়েছে? প্রথমে "সদুপদেশ দাও।"
মানে যখন আপনি দেখবেন আপনার স্ত্রী আমার সাথে একটু বেশি বেশিই করছে, তখন প্রথমেই ঝগড়া টগরা না করে আপনি অতি মধুর কন্ঠে, ভদ্রতার সাথে বলবেন, "ডার্লিং, তুমি প্লিজ ঐ মঞ্জুর ছেলেটার সাথে এইভাবে মেলামেশা করো না। এই কাজটা ভাল না।"
কথা হচ্ছে, আপনি যখন আপনার স্ত্রীকে আমার সাথে এইভাবে ঘনিষ্ট মেলামেশা করতে দেখবেন, তখন কী বাস্তবে এমন ঠান্ডা মাথায় কথা বলতে পারবেন? কিন্তু কুরআন ঠিক এই নির্দেশটাই দিয়েছে। কাকে অধিকার বেশি দিল তাহলে?
তারপরেও যখন দেখবেন বউ আমার সাথে মেলামেশা বন্ধ করছেন না, তখন বলা হয়েছে - "শয্যা ত্যাগ কর।"
মানে বালিশ নিয়ে আলাদা শোয়া শুরু করুন। দেখুন মাঝরাতে অ্যাশ আপনাকে মানাতে আসেন কিনা।
যদি দেখেন আপনার সাথে শোয়া না শোয়ায় তাঁর কিছুই যায় আসে না, অন্য অর্থে অন্যের সাথে সে শোয়ায় অভ্যস্ত হয়ে গেছে - ঠিক তখনই আপনাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তাঁকে "প্রহার" করতে। তবে এখানেও একটু ইন্টারেস্টিং ব্যপার লক্ষ্যনীয়। বাক্যটিতে যে verb (দারাবা) ব্যবহার করা হয়েছে - সেই একই verb তায়াম্মুমের (পানির সংকট থাকলে মাটি ঘসে পবিত্র হওয়ার যে সিস্টেম আমাদের ধর্মে চালু আছে) নির্দেশনামায় ব্যবহার করা হয়েছে। "ওয়াদরিবুহুন্না।" যার আক্ষরিক অনুবাদ করলে হবে 'তাদের প্রহার কর' বা 'strike them.' এর কোনটাই কিন্তু বাক্যটিতে ঠিকমতন ফিট করেনা। কারণ এটা যদি ফিট করে তাহলে বলতে হবে তায়াম্মুমের সময়ে নির্দেশ দেয়া হয়েছে মাটিকে পেটাতে। তার মানে ওদের প্রহার করলেও এমনভাবে করতে হবে যেভাবে আপনি তায়াম্মুম করেন। মানে হাল্কা হাত ঘষাঘষি। স্কলাররা বলেন মেসওয়াক (নিম ডালের টুথব্রাশ) দিয়ে আঘাত। তাও এমনভাবে যে শরীরে দাগ বসতে পারবেনা - মুখেতো মারতেই পারবেন না।আরও অনেক নিয়ম কানুন আছে।
এবং সবার আগে মাথায় রাখতে হবে হাদিসটির কথা - "আল্লাহর দাসীদের গায়ে হাত তুলো না।"
চিন্তা করে দেখেন, কোন লেভেলের এক্সট্রিম অপরাধ করলে মেয়েদের গায়ে মেসওয়াক দিয়ে আঘাতের কথা বলা হয়েছে, আর আমাদের দেশ বিদেশের মূর্খ্য পুরুষ মানুষ ডালে সামান্য লবণ কম বেশি হলে মেয়েদের গায়ে হাত তোলে!
এখন মেয়েরা, আপনারা বুঝতে পারছেন যে কুরআন আসলে আপনাদের প্রাণ রক্ষা করেছে? কারন যেকোন পুরুষ যদি দেখে তাঁর প্রেয়সী অন্যের সাথে ইটিশপিটিশ করছে - প্রথম চিন্তাটা যা তাঁর মাথায় আসবে তা হচ্ছে আপনাকে খুন করে ফেলতে হবে। সেখানে আল্লাহ বলেছেন খুব বেশি হলে মেসওয়াক দিয়ে আঘাত করতে!
তাও আবার আয়াতের শেষে আল্লাহ বলেছেন যদি কেউ ভুল বুঝতে পারে, এবং অনুতপ্ত হয় তাহলে তাঁকে ক্ষমা করে দিতে।
বাবারে! এত বড় কলিজা কোন পুরুষের আছে? কিন্তু আল্লাহর নির্দেশ বলে কথা!
এবং পুরুষেরা, যারা পুরো আয়াত না পড়ে শুধুমাত্র একটা শব্দ ধরে নিয়ে বউদের গায়ে হাত তুলে এসেছেন, তাঁরা এখন কানে ধরে সেই বউদের সামনে উঠবস করে ক্ষমা চান। কারন তাঁরা ক্ষমা না করলে তাঁদের মালিক ব্যপারটাকে পার্সোনালি নিবেন - এবং তাহলেই আপনার খবর আছে। You have news. কারন আল্লাহ আয়াতটা শেষ করেছেন কিভাবে দেখেছেন? "নিশ্চয় আল্লাহ সবার উপর শ্রেষ্ঠ।" তুমি যতই বৌয়ের উপর কর্তৃত্ব ফলাও না কেন, তোমার উপরে একজন আছেন যিনি কারও পরোয়া করেন না।

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ২:৩৪

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনার লেখা ব্লগে প্রকাশ হওয়ার পর, বউ পেটানো বন্ধ হয়ে যাবে; বস্তির সবাই আপনার লেখা নিয়ে আলাপ করছে!

০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ২:৪১

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: বউ শুধু বস্তির মানুষেরাই পেটায় না, ভদ্রঘরের লোকেরাও পেটায়। আমার লেখা ব্লগে প্রকাশ হওয়ার পর বউ পেটানো বন্ধ হোক কি না হোক সেটা পরের ব্যপার, আমার দায়িত্ব বলা, আমি বলেছি। আপনি এখন আপনার দায়িত্ব পালন করুন, ফালতু বকবক বন্ধ করুন।

২| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৩:০৪

আকদেনিজ বলেছেন: একটি জটিল বিষয়ের চমৎকার ব্যাখ্যা। ভাল লাগল।


আপনার ব্লগে সামাজিক সচেতনতা মূলক লেখা আরো চাই।

৩| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৩:২৩

সিদ্ধার্থ. বলেছেন: পুরুষেরা নারীদের উপর কর্তৃত্বশীল (Protectors and maintainers of women) এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য (শারীরিক শক্তি) দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় (support them from their means) করে। সে মতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগতা এবং আল্লাহ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোক চক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে। আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং "প্রহার" কর


এর বাংলা মানে হলো - যেহেতু তোমার শক্তি তোমার বৌএর থেকে বেশি ,এবং তুমি যেহেতু টাকা রোজগার কারো ,তাই তোমার যদি সন্দেহ হয়,তবে প্রথমে ওয়ার্নিং ,তারপর যৌন ধর্মঘট ,এবং তারপর ক্যালাতে পারো ।


এবার আমাকে ইসলাম বিদ্বেষী ইত্যাদি ইত্যাদি বলবার আগে ঠিক এই লাইনটাই (আপনার হাদিস ভাষ্য ) আপনার দশ জন নন মুসলিম এবং এটা যে হাদিস জানেন না এমন কাউকে দেখান সবাই একই উত্তর দেবে ।

৪| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:০৪

মাহিরাহি বলেছেন: Ibn Abbas, a companion of Muhammad (সা), wrote the earliest commentary on the Quran, and to this part he himself said this is only a light tap.[5] When asked about the light hitting, he said it refers to using a siwak (toothbrush). There are sources that say that Muhammad himself never hit a woman and forbade it.[6] Furthermore, Muhammad (সা) commented on this verse, where he said “a light tap that leaves no mark.”[7]

https://en.wikipedia.org/wiki/An-Nisa,_34

উইকি থেকে নেয়া, সত্যতা যাচাইয়ের জন্য অন্য হাদিসের সোর্স দেখে নিতে পারেন।

৫| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:০৮

মাহিরাহি বলেছেন: Victimization due to violent assault in general is common in the U.S. among both sexes, with an estimated 1.9 million women and 3.2 million men physically assaulted annually, and domestic violence is a large part of that problem, with 22.1% of women and 7.4% of men having been physically assaulted by a current or former spouse, cohabiting partner, boyfriend, girlfriend or date in their lifetime (the preceding data is according to a 2000 U.S. Department of Justice Report).[1]

https://en.wikipedia.org/wiki/Domestic_violence_in_the_United_States

আমেরিকার যদি এই চিত্র হয় গরীব দেশের চিত্রটা আরো ভয়ংকর হওয়ার কথা।

৬| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:৩২

বিজন রয় বলেছেন: ভাল লেখা।
+++

৭| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১:১১

মনসুর-উল-হাকিম বলেছেন: মাশা-আল্লাহ,. . . আলহামদুলিল্লাহ, . . . চমৎকার সুন্দর লিখেছেন শুভেচ্ছান্তে ধন্যবাদ, . . . . !!

৮| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১:২৪

বিজন শররমা বলেছেন: কুরআন শরীফের সুরাহ নিসায় আল্লাহ পাক বলেছেন, "বৌদের গায়ে হাত তোলা জায়েজ।"
হাদিস (সহিহ)"হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর দাসীদের গায়ে হাত তুলো না" ।
কুরআন হাদিস কুরআন কুরআন -ইসলামি কুরআন মতেই পেটা ।

৯| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১:২৮

অপূর্ব আফজাল বলেছেন: লম্বা লিখা পড়লাম।
অনেক ভাল লিখেছেন।

১০| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:৪৪

পুলহ বলেছেন: আমার স্বল্প জ্ঞানে লেখার ব্যাপারে মন্তব্য করা ঠিক হবে না, শুধু এটুকু বলি- আল্লাহ আপনার সৎ ইচ্ছা কবুল করুন এবং আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন।
তবে ভাই- হাদীস বিকৃত করা শিরক- আপনার লেখায় এ কথাটা পেয়ে অবাক হলাম। এর কোন স্ট্রং রেফারেন্স আছে কি? অনুগ্রহ করে উল্লেখ করলে বাধিত থাকতাম।
আমার একটা সাজেশন- হাদীস যেগুলো দিয়েছেন- সেগুলোর রেফারেন্সের ব্যাপারে আরেকটু স্পেসিফিক হলে লেখাটা পাঠকদের কাছে আরো গ্রহণযোগ্য হবার কথা।
বিনীতভাবে বলি- হুমু এরশাদের এনালজিটা ভালো লাগে নি আমার কাছে !

ভালো থাকবেন এবং আমার আন্তরিক শুভকামনা জানবেন ।

১১| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৮

আব্দুল্যাহ বলেছেন: "বউ পেটাবি? ইসলামি শরিয়ত মতেই পেটা।"
হুম পেটান। অনেক সুন্দর ও গুছানো লেখা

১২| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:৩৭

বিষাদ সময় বলেছেন: ভাল লাগলো হাদিস এবং কোরআনের আয়াতের আপনার মন গড়া ব্যখ্যা পড়ে। আপনার এই ব্যখ্যা কোন আলেম পড়লে হাসবেন না রাগবেন ঠিক বুঝতে পারছিনা। ইসলাম সম্পর্কে খুব ভালভাবে না জেনে ইসলামী কোন বিষয়ে মনগড়া ব্যখ্যা প্রদানও গুনাহর কাজ।

"পুরুষেরা নারীদের উপর কর্তৃত্বশীল (Protectors and maintainers of women) এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য (শারীরিক শক্তি) দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় (support them from their means) করে। সে মতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগতা এবং আল্লাহ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোক চক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে। আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং "প্রহার" কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সবার উপর শ্রেষ্ঠ।"

আমি যতটুকু জানি এই নির্দেশনা যখন স্ত্রী স্বামীর কথার অবাধ্য হবে বা ধর্মীয় কজে অবহেলা করবে সে ক্ষেত্র প্রযোজ্য।

"যদি দেখেন আপনার সাথে শোয়া না শোয়ায় তাঁর কিছুই যায় আসে না, অন্য অর্থে অন্যের সাথে সে শোয়ায় অভ্যস্ত হয়ে গেছে - ঠিক তখনই আপনাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তাঁকে "প্রহার" করতে।"

কিন্তু আপনার উপরোক্ত বক্তব্য এবং আরও অন্যান্য বক্তব্য থেকে বোঝা যাচ্ছে যে স্ত্রী যখন ব্যভিচারে অভ্যস্ত হয়ে যাবে তখন উপরোক্ত আয়াতের আলোকে স্ত্রী কে প্রথমে বোঝাতে হবে তারপর সজ্জা আলাদা করতে হবে তারপর মৃদু প্রহার করতে হবে। আসলে এ রকম বক্তব্য এই প্রথম শুনলাম।
কোন ব্যভিচারি ব্যক্তি অবিবাহিত হলে তার শাস্তি ১০০ ঘা দোররা আর সে বিবাহিত হলে তার শাস্তি প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যা। তাছাড়া কোন চরিত্রহীন স্ত্রীর সাথে ঘর সংসার করা কোন মুমিনের জন্য বৈধ নয়।

কাজেই আপনার এ মনগড়া ব্যখ্যার সাথে একমত হতে পারলাম না বলে দুঃখিত।

১৩| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:৪৮

আইএমওয়াচিং বলেছেন: ১২ নাম্বারে বিষাদ সময় ভাইয়ের ব্যাখ্যাটা অধিক যুক্তিযুক্ত লাগল ।

১৪| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৩

এ আর ১৫ বলেছেন: (“ইসলামে কোনো স্ত্রী-প্রহার নেই, ওটা আয়াতের ভুল অনুবাদ ”− শারিয়া-তত্তবগুরু শাহ্ আব্দুল হানড়বান − খবর আলোচনা ফোরাম − ২রা মে, ৩৮ মুক্তিসন (২০০৮)।

২২শে সেপ্টেম্বর ২০০৪ সালের খবর, ইরাণের শারিয়া কোর্টে স্ত্রী মরিয়ম আবেদন করেছেন শারিয়া কোর্ট যেন তাঁর স্বামীকে আদেশ দেন মরিয়মকে প্রত্যেকদিন না মেরে সপ্তাহে একদিন মারে।

আর কোনো ধর্মগ্রন্থের আর কোনো আয়াত নিয়ে এত দীর্ঘ সময় ধরে এত তর্ক- বিতর্ক হয়নি যা সুরা নিসা আয়াত ৩৪ নিয়ে হয়েছে, এবং হচ্ছে। আয়াতটার অনুবাদ এইভাবে করা হয়েছে − “পুরুষরা নারীদের উপর কর্তৃত্বশীল (কাওয়াম)। কারণ আলাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং কারণ তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে। সেই মতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগতা, এবং আলাহ যা হেফাজতযোগ্য করে দিয়েছেন লোকচক্ষুর অন্ত রালেও তার হেফাজত করে। আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার (নাসুজ) আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর (‘ওয়াজ্রেবুহুনড়বা’ বা ‘ইদ্রুবুহুনড়বা’)। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না।” কোরাণের অনেক অনুবাদক ‘প্রহার কর’ এর পরে ব্র্যাকেটে (অল্প করিয়া) ঢুকিয়ে ব্যাপারটাকে হালকা করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু নিজের কথা কোরাণে না ঢুকিয়ে ব্যাখ্যায় দেয়া উচিত।

যাহোক, বিধানটা সুস্পষ্ট। ওসব শর্তে তাই শারিয়া আইনে স্ত্রী-প্রহার বৈধ (শাফি’ই আইন m.10.12, o.17.4) । সমস্যাটি হলো, স্ত্রী অবাধ্য কি না তা ওই স্বামীই ঠিক করবে, এবং সে কখন কি-কারণে কিভাবে কতটা মারপিট করছে তা দেখার কেউ নেই। বেশির ভাগ মুসলিম স্ত্রী-প্রহার করেন না সত্যি, কিন্তু কথাটা আসলে নীতির, নারী-অধিকারের ও সম্মানের। মুসলিম-সমাজে এ-সব আইনের প্রভাব সুগভীর। বহু মুসলিম দেশের টেলিভিশনে মিষ্টি হাসির সাথে বিভিনড়ব কারণ দেখিয়ে স্ত্রী-প্রহারকে সমর্থন করা হয়। কিভাবে মারলে স্ত্রীর গায়ে দাগ পড়বে না সেই ‘বৈজ্ঞানিক’ পদ্ধতির ওপর নামকরা মওলানার লেখা কেতাবও আছে। ২০০৫ সালে বিবিসি’র খবরে দুনিয়া শিউরে উঠেছিল যখন ইরাণের কোর্টে স্ত্রী আবেদন করেছিল তার স্বামীকে আদেশ দিতে যাতে সে তাকে প্রতিদিন না মেরে সপ্তাহে একদিন মারে, স্বামী দাবি করেছিল এ তার ইসলামি অধিকার। ইসলামে বৌ- পেটানোর ওপরে কাজ করেছেন অনেক ইসলামি বিশেষজ্ঞ। এঁরা বলেন :

যে-ধর্মে আলাহ- রসুলের প্রতি বাধ্যতায় জোর-জবরদস্তি নেই সে-ধর্মে স্বামীর বাধ্য হবার ব্যাপারে মারপিট হতে পারে না।
স্বামীও মানুষ, তারও ভুল হতে পারে। সে হতে পারে গাধার চেয়েও হাবা, সাপের চেয়েও বিষাক্ত, এবং নারী হতে পারেন মোমেনা ও বিশেষজ্ঞ।
বিশ্ব-মুসলিমের আজ এই করুণ দশার জন্য দায়ীই হলো পুরুষ, নারী নয়। সেই পুরুষের হাতে স্ত্রী-প্রহারের অধিকার, তা সে যতোই শর্তসাপেক্ষে হোক না কেন, ইসলাম দিতে পারে না।
বাচ্চাদের সামনে বাবা তাদের মা’কে ধরে পেটানোর দৃশ্য অত্যন্ত কুৎসিৎ এবং বাচ্চাদের মানসিক স্বাস্থ্যের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর। এ হিংস্রতা ও নোংরামিকে ইসলাম বৈধ করতে পারে না।
আয়াতে এ-কথা বলা হয়নি যে স্ত্রীর ওপর স্বামী কর্তৃত্বশীল। বলা হয়েছে রেজাল (পুরুষ জাতি) নিসা (নারীজাতি)-র ওপর কর্তৃত্বশীল। কাজেই আয়াতটা পারিবারিক নয়, সামাজিক।
কাউয়াম অর্থাৎ উপার্জনকারী বা নিয়ন্ত্রক। তখন সাধারণভাবে পুরুষজাতি আয় করতো এবং নারীজাতি তা থেকে ব্যয় করতো। কোরাণ সেই সামাজিক চিত্রটা বর্ণনা করেছে মাত্র, চিরকালের জন্য বৈধ করেনি। বৈধ করলে কোরাণের সাথে বাস্তব মিলছে না কারণ বর্তমান বিশ্বে কোটি কোটি নারী কাউয়াম অর্থাৎ উপার্জনকারী এবং তার পরিবার তা থেকে খরচ করে। তারা কি স্বামী পেটাবে ? কেউ কেউ বলেন “কাউয়াম” শব্দের শেকড় থেকে আরেকটা শব্দ আসে, “কানাত মিনাল ক্বানেতীন” − এটা কোরাণ ব্যবহার করেছে হজরত ঈসা’র মা মেরীর ব্যাপারে অথচ তাঁর স্বামীই ছিল না। কাজেই “কাউয়াম” হলেই স্বামী বুঝতে হবে এটা মতলবি ব্যাখ্যা (সুরা আত্ তাহরীম, আয়াত ১২)।
আয়াতে আছে − “নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগতা।” কার অনুগতা ? শারিয়াপন্থীরা দাবি করেন এ-আনুগত্য স্বামীর প্রতি। প্রগতিশীল বিশেষজ্ঞরা বলেন এটা শুধুমাত্র আলাহ’র প্রতিই। কেননা ইসলামে শর্তহীন পূর্ণ আনুগত্য শুধু আলাহ ও নবীরসুল ছাড়া আর কারো প্রতি হতে পারে না।
দাম্পত্য জীবনে স্বামী-স্ত্রী দু’জনে দু’জনের কথা কাটাকাটি হবেই। কথা না শুনলেই যদি মারপিট হয় তবে ঘন ঘন হুলুস্থুল তাণ্ডবে পাড়ার কাক-চিল উড়ে পালাবে এবং সংসার শিকেয় উঠবে। ইসলামে তাই মারপিট বৈধ হতে পারে না।
আয়াতে আছে − “আলাহ যা হেফাজতযোগ্য করে দিয়েছেন লোকচক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাজত করে।” যেহেতু অবাধ্যতা লোকচক্ষুর অন্তরালে নাও হতে পারে তাই আয়াতটা নিশ্চয় অবাধ্যতার কথা বলেনি, বলেছে শীলতার কথা, সতীত্বের কথা।।
ঠিক পরের আয়াতটা, নিসা আয়াত ৩৫-এ আছে : পরিবার ভাঙ্গার অবস্থা হলে স্বামীর ও স্ত্রীর পক্ষ থেকে মুরুব্বীদের দিয়ে সালিশের চেষ্টা করতে হবে। গায়ে হাত তুলে মারপিটের পরে সালিশ করাটা তামাশা মাত্র, ও-সালিশে লাভ হয় না। তাই আয়াতটা নিশ্চয় মারপিটের কথা বলেনি।
কোনো কারণেই কারো গায়ে হাত তোলার অধিকার সাধারণ মানুষকে দেয়া যায় না, দিলে তার অপব্যবহার হবেই। কথাটা অত্যন্ত সত্যি।
অর্থাৎ তাঁদের দাবি হলো আয়াতটার অনুবাদে স্ত্রী-প্রহার থাকতে পারে না। মূল শব্দগুলো হলোঃ
(১) রেজাল অর্থা ৎ পুরুষ,
(২) নিসা অর্থা ৎ নারী,
(৩) কাউয়াম অর্থাঁৎ উপার্জনকারী বা নিয়ন্ত্রক ইত্যাদি,
(৪) নাসুজ অর্থাৎ প্রকাশ্য অশীলতা, ও
(৫) দারাবা − শব্দটার বিভিনড়ব মানে আছে। বাংলায় যেমন ধৃ থেকে ধর্ম, অর্থাৎ ধারণ করা, ভৃ থেকে ভার্যা ও ভৃত্য যাকে ভরণপোষণ করতে হয়, তেমনি ‘ইদ্রুবুহুন্না’ শব্দের মূল হলো ‘দারাবা’। ডঃ আব্দুল হামিদ আবু সুলায়মান মালয়েশিয়া’র আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন রেক্টর এবং আমেরিকার (ভার্জিনিয়া) ইণ্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব্ ইসলামিক থট-এর প্রেসিডেণ্ট। কোরাণে ‘দারাবা’ থেকে উদ্ভুত শব্দাবলী নিয়ে তাঁর নিবন্ধ ২৪শে জানয়ু ারি ২০০৮ (মুক্তিসন ৩৮) ইণ্টারনেটে বাংলার নারী আলোচনা-ফোরামে দিয়েছিলেন শাহ্ আব্দুল হানড়বান। বহু বছর আগে ডঃ এডিপ ইউকসেল এবং অন্যান্যরাও একই যুক্তি দিয়েছেন − সুরা ও আয়াত থেকে অত্যন্ত সংক্ষেপে দেখাচ্ছি :

(ক) ভ্রমণ করা − ৪:১০১, ২:২৭৩

(খ) বাহির হইয়া যাওয়া − ৩:১৫৬, ৭৩:২০ ও অন্যান্য

(গ) প্রহার করা − ৮:৫০, ৪৭:২৭

(ঘ) আঘাত করা − ২:৬০ ও ৭৩, ৭:১৬০, ৮:১২, ২০:৭৭, ২৪:৩১, ২৬:৬৩, ৩৭:৯৩, ৪৭:৪

(ঙ) সংস্থাপন করা − ৪৩:৫৮, ৫৭:১৩

(চ) প্রদান করা − ১৪:২৪ ও ৪৫, ১৬:৭৫, ৭৬ ও ১১২, ১৮:৩২ ও ৪৫, ২৪:৩৫, ৩০:২৮ ও ৫৮, ৩৬:৭৮ ; ৩৯:২৭ ও ২৯, ৪৩:১৭, ৫৯:২১ ও অন্যান্য

(ছ) উপেক্ষা করা − ৪৩:৫

(জ) নিন্দা করা − ২:৬১

(ঝ) বন্ধ করা, উপর দিয়া নিয়া যাওয়া − ১৮:১১

(ঞ) ঢাকিয়া দেওয়া − ২৪:৩১

(ত) ব্যাখ্যা করা − ১৩:১৭

(থ) অত্যাচার বা অসদাচরণ করা −৪:১২৮

আরেকটা শক্তিশালী যুক্তি দেখান তাঁরা। পিকথল-এর অনুবাদের সুরা রা’দ আয়াত ১৭ হলো − “এভাবেই আলাহ সত্য অসত্যের দৃষ্টান্ত প্রদান করেন।” এখানে ‘মারপিট’ শব্দটা লাগালে এটা দাঁড়াবে : ‘এভাবেই আলাহ সত্য ও অসত্যের মারপিট করেন।’ এটি উদ্ভট কথা, তাই ‘ইদ্রুবুহুনড়বা’-র “দৃষ্টান্ত প্রদান” অর্থ ধরতে হবে।

বাংলায় ‘খাওয়া’ শব্দের ১৫৫টি ভিনড়ব অর্থ দেখুন :

১। ভাত খাওয়া
২। বিড়ি-সিগারেট খাওয়া
৩। পানি খাওয়া
৪। বিষম খাওয়া
৫। নুন খাওয়া (কৃতজ্ঞতা)
৬। মাথায় বাড়ি খাওয়া (আশ্চর্য হওয়া)
৭। কামড় খাওয়া
৮। ল্যাং খাওয়া
৯। গোল খাওয়া
১০। গোলা খাওয়া (বোকাটা অঙ্কে গোলা খেয়েছে)
১১। লাল-হলুদ কার্ড খাওয়া (ফুটবল খেলায়)
১২। ডিম খাওয়া (গায়কটা গতকাল শ্রোতাদের ডিম খেয়েছে)
১৩। চিমটি খাওয়া
১৪। গুঁতো খাওয়া
১৫। কানমলা খাওয়া
১৬। চড়-থাপ্পড় খাওয়া (খোলা হাত দিয়ে আঘাত)
১৭। ঘুষি খাওয়া (মুষ্ঠিবদ্ধ হাত দিয়ে আঘাত)
১৮। লাথি খাওয়া (পা দিয়ে আঘাত)
১৯। রাম-ধোলাই খাওয়া
২০। জুতা খাওয়া (জুতার প্রহার খাওয়া)
২১। প্যাঁদানি খাওয়া
২২। ঝাঁটা খাওয়া
২৩। গণ-পিটুনি খাওয়া
২৪। চাবুক খাওয়া
২৫। লাঠির বা ডাণ্ডার বাড়ি খাওয়া
২৬। ঢিল খাওয়া
২৭। ঠোকর খাওয়া
২৮। ধাক্কা খাওয়া
২৯। বেত খাওয়া
৩০। সুর খাওয়া (গান গাইবার সময় সুরে ভুল করা)
৩১। গালি খাওয়া
৩২। ধমক খাওয়া
৩৩। বকুনি খাওয়া
৩৪। দাবড়ি খাওয়া
৩৫। আছাড় খাওয়া
৩৬। হোঁচট খাওয়া
৩৭। “উষ্টা” খাওয়া (হোঁচট-এর ভিনড়ব প্রকাশ)
৩৮। হুমড়ি খাওয়া
৩৯। ঝাঁকি বা ঝাঁকুনি খাওয়া
৪০। চক্কর খাওয়া
৪১। ডিগবাজি খাওয়া
৪২। গোত্তা খাওয়া
৪৩। কানিড়ব খাওয়া (কাটা ঘুড়ি কানিড়ব খায়)
৪৪। ঘুরপাক খাওয়া
৪৫। দোল খাওয়া
৪৬। ঝুলু খাওয়া (জোরে জোরে দোল খাওয়া)
৪৭। মোচড় খাওয়া
৪৮। বাকি খাওয়া
৪৯। ভালোমন্দ খাওয়া
৫০। মাল খাওয়া (মদ্যপান করা)
৫১। চুমু খাওয়া
৫২। পুলিশের টিকিট খাওয়া
৫৩। ঘুষ খাওয়া
৫৪। টাকা খাওয়া
৫৫। থতমত খাওয়া
৫৬। খাবি খাওয়া
৫৭। ভিরমি খাওয়া
৫৮। ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া
৫৯। হিমশিম খাওয়া
৬০। লুটোপুটি খাওয়া
৬১। গড়াগড়ি খাওয়া
৬২। চোখের মাথা খাওয়া
৬৩। ধরা খাওয়া
৬৪। ধোঁকা খাওয়া
৬৫। কাঁচকলা খাওয়া (ব্যর্থ অর্থে)
৬৬। খাপ খাওয়া
৬৭। ভয় খাওয়া
৬৮। বিয়ে খাওয়া
৬৯। দাওয়াত খাওয়া
৭০। সিনিড়ব খাওয়া
৭১। প্রসাদ খাওয়া
৭২। জামাই খাওয়ানো
৭৩। মিসকিন খাওয়ানো
৭৪। বৈদ্যুতিক শক খাওয়া
৭৫। গুলি খাওয়া
৭৬। ঘাস খাওয়া (জনগণ ঘাস খায় না, সবই বোঝে)
৭৭। ধাওয়া খাওয়া
৭৮। টাস্কি খাওয়া (চমকে যাওয়া)
৭৯। কসম খাওয়া
৮০। হালাল-হারাম খাওয়া
৮১। প্রেমে ছ্যাঁক খাওয়া
৮২। তপ্ত কিছুতে ছ্যাঁক খাওয়া
৮৩। ঘোল খাওয়ানো (বোকা বানানো)
৮৪। তেল খাওয়া (গাড়ি পুরানো হলেই তেল বেশি খায়, কথাটা সত্যি নয়)
৮৫। পাঠকের চটুল সংবাদ, উপন্যাস বা সংবাদ খাওয়া
৮৬। শ্রোতাদের গান খাওয়া
৮৭। নাকানিচোবানি খাওয়া (আক্ষরিক অর্থে − পানিতে)
৮৮। নাকানিচোবানি খাওয়ানো (প্রতীকী অর্থে − সমস্যায়)
৮৯। হাওয়া খাওয়া (বেড়ানো অর্থে)
৯০। হাওয়া খাওয়া (অনাহার অর্থে)
৯১। হাবুডুবু খাওয়া (আক্ষরিক অর্থে − পানিতে)
৯২। হাবুডুবু খাওয়া (প্রতীকী অর্থে − সমস্যায়)
৯৩। যাঁতা খাওয়া (দুই বস্তুর চাপ)
৯৪। যাঁতা খাওয়া (শক্তিশালী প্রতিপক্ষের চাপ)
৯৫। মার খাওয়া (দৈহিক প্রহার)
৯৬। মার খাওয়া (পরাজিত হওয়া − “জগৎ জুড়িয়া এমনি করিয়া মার খাবে দুর্বল ?”− নজরুল)
৯৭। মার খাওয়া (ব্যবসায়ে ব্যর্থ হওয়া)
৯৮। ঠাণ্ডা খাওয়া (ঠাণ্ডা খেয়ে গায়কের গলা বসে গেছে)
৯৯। ঠ্যালা খাওয়া (নেতারা জনগণের ঠ্যালা খেলে বুঝবে)
১০০। পাল্টি খাওয়া (নেতারা এত দলবদলের পাল্টি খায় কেন ?)
১০১। ঝাড়ি খাওয়া (অফিসে বস্-এর বা বাড়িতে বৌয়ের…)
১০২। চাক্কু খাওয়া (গুণ্ডাদের বাধা দিতে গিয়ে সে চাক্কু খেয়েছে)
১০৩। দিব্যি খাওয়া (দিব্যি খেয়ে বলো, সিগ্রেট ছেড়ে দেবে ?)
১০৪। ধুলো খাওয়া (বই মেলা’র…)
১০৫। ঝাল খাওয়া (ছেলেটা ঝাল খেতে পছন্দ করে)
১০৬। কচু খাওয়া (“কাঠবেড়ালী, তুমি মরো, তুমি কচু খাও!” − নজরুল)
১০৭। গুলে খাওয়া (মাস্টার এত করে পড়ালো, ছাত্রটা পরীক্ষা হলে সব গুলে খেয়েছে)
১০৮। ছ্যাঁচা খাওয়া (দরজার ছ্যাঁচা খেয়ে ওর আঙুল থেঁতলে গেছে)
১০৯। পোকায় খাওয়া (বাজার থেকে পোকায় খাওয়া আম নিয়ে এলে)
১১০। সম্পত্তি খাওয়া (এতিম ভাস্তি’টার সব সম্পত্তি ওর চাচা খেয়ে ফেলেছে)
১১১। চাকরি খাওয়া (বেশি বাড়াবাড়ি বরলে বস্ তোমার চাকরি খেয়ে ফেলবে)
১১২। কলা খাওয়া (কোলকাতার সাংসদ অভিধান − চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়া)
১১৩। মুখ খাওয়া (সমাজে অপদস্থ হওয়া)
১১৪। বাতাস খাওয়া (গরমে অতিষ্ঠ হয়ে ছেলেটা পাখার সামনে বসে বাতাস খাচ্ছে)
১১৫। ঝাপটা খাওয়া (বাতাসের ঝাপটা খেয়ে ফুলদানিটা উল্টে গেছে)
১১৬। ড্রাগ-এ খাওয়া (ছেলেটা এত ভালো গাইতো, ড্রাগই ওকে খেলো)
১১৭। ছাই খাওয়া (“ছাই খা” − নাকচ বা গালি অর্থে)
১১৮। মাথা খাওয়া (মাথা খাও − দোহাই অর্থে)
১১৯। মাথা খাওয়া (নষ্ট করা − বেশি আদর দিয়ে ছেলেটার মাথা খাওয়া হচ্ছে)
১২০। লজ্জাশরমের মাথা খাওয়া − (নির্লজ্জ অর্থে)
১২১। পিট্টি খাওয়া (আদরের)
১২২। চাপড় খাওয়া
১২৩। চিড় খাওয়া
১২৪। বেড়ার বাগান খাওয়া (রক্ষক যখন ভক্ষক)
১২৫। দিলী কা লাড্ডু খাওয়া
১২৬। দিন এনে দিন খাওয়া
১২৭। লাভের গুড় পিঁপড়ে খাওয়া
১২৮। ঠাকুর ঘরে কে রে − আমি কলা খাই না (সাফাই গাওয়া)
১২৯। ডুবে ডুবে পানি খাওয়া (গোপনে কিছু করা)
১৩০। হিসেবের কড়ি বাঘে খায় না (লিখিত দলিল ব্যর্থ হয় না)
১৩১। ঘ্রানেন অর্ধম্ ভোজনম্ (খাবারের সুগন্ধে অর্ধেক খাওয়া হয়ে যায)
১৩২। ডুডুও খাব টামাক-ও খাব (দুই দিকেই লাভবান হবার চেষ্টা)
১৩৩। গাছেরও খাব তলারও কুড়াব (দুই দিকেই লাভবান হবার চেষ্টা)
১৩৪। কাঠমিস্ত্রিরা বলে কাঠ ঘুণ খেয়েছে
১৩৫। কাঠমিস্ত্রিরা বলে কোন কাঠ কোন রং ভালো খাবে
১৩৬। “বাবা’য় খাবে’নে” (বাবা ধরে পেটাবে − বরিশালের ভাষা)
১৩৭। ধরে খাওয়া (বেশি করে খাওয়া − মাগুরা’র ভাষা ?)
১৩৮। খেয়ে না খেয়ে কিছু করা (একাগ্রতার সাথে)
১৩৯। ভাত দে হারামজাদা নইলে মানচিত্র খাবো (কবি রফিক আজাদ)
১৪০। বুলবুলিতে ধান খেয়েছে (বিদেশিরা দেশের সম্পদ লুণ্ঠনে প্রাচীন কবির অভিব্যক্তি)
১৪১। নদীটা অমুক গ্রাম খেয়ে ফেলেছে
১৪২। সিনেমার নাম “খাইছি ত’রে” (বিপদে ফেলা অর্থে)
১৪৩। “খাইছে আমারে” (বিপদে পড়া অর্থে)
১৪৪। মধু খাওয়া (লাম্পট্য অর্থে)
১৪৫। ত্যালানি খাওয়া (স্তুতিবাক্য পছন্দ করা − আমার বস্ ত্যালানি খেতে খুব পছন্দ করে)
১৪৬। আবৃত্তিতে ব্যাকগ্রাউণ্ড মিউজিক আবৃত্তিকারের কণ্ঠ খেয়ে ফেলেছে
১৪৭। ফ্রিজ খাওয়া (নাটকে)
১৪৮। ডায়ালগ খাওয়া (নাটকে)
১৪৯। ইজ্জত খাওয়া
১৫০। বাউন্স খাওয়া (পালটক-এর রুমগুলোতে অনেকে বাউন্স খায়)
১৫১। রেড ডট খাওয়া (পালটক-র রুমগুলোতে অনেকে রেড ডট খায়)
১৫২। ডি-সি খাওয়া (ডিস্কানেক্ট − পালটক-এর রুমগুলোতে অনেকে ডি-সি খায়)
১৫৩। লাড্ডু খাওয়া (পরীক্ষায় ছেলেটা লাড্ডু খেয়েছে অর্থাৎ ফেল করেছে)
১৫৪। “লোকটা মরতে মরতেও মরছে না, ওর এখনো খাওয়া বাকি আছে” (পশ্চিম বঙ্গের ভাষা)
১৫৫। লম্পট-টার খাই-খাই ভাব দেখলে গা জ্বলে যায়

(কিছু শব্দে অর্থ ও শব্দ-প্রয়োগের সীমাবদ্ধতা ও মতান্তর থাকতে পারে)

হাদিসে আছে নবীজী মেসওয়াক করার সময় লোকেরা তাঁকে বৌ-পেটানোর পদ্ধতি জিজ্ঞেস করলে তিনি নাকি মেসওয়াকটা ঠুস করে গায়ে লাগিয়ে বলেছিলেন − ‘এভাবে।’ এ-সব হাদিস তাঁর মর্যাদার খেলাফ কারণ বিষয়টা টুব্রাশেরও নয় ডাণ্ডারও নয়, বিষয়টা নীতির। টুব্রাশ দিয়ে খোঁচানো যায় কিন্তু পেটানো অসম্ভব। অন্যান্য চেষ্টায় যাকে মানানো যায় না তাকে টুব্রাশ দিয়ে খুঁচিয়ে মানানো যাবে ? ডঃ সুলায়মান বলেছেন নবীজী বৌ-পেটানোর বিরুদ্ধে এতই ক্রুদ্ধ ছিলেন যে তিনি ঘোষণা করেছিলেন কেউ বৌ পেটালে যেন তাঁর সামনেই সে না আসে, অর্থাৎ তিনি তার মুখই দেখতে চান না। ফাতিমা মার্নিসি তাঁর বইতে জানাচ্ছেন বৌ-পেটানোতে শতাব্দী ধরে অভ্যস্ত সেই সমাজ এ-ঘোষণায় একেবারে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। ভক্ত মুসলমানদের জন্য এ ছিল যেন ফাঁসির আদেশ।

বরং স্ত্রী-প্রহারের সুস্পষ্ট আয়াত আছে সুরা ছোয়াদ ৪৪-এ। এতে হজরত আয়ুবকে (আঃ) বলা হয়েছে গাছের কাঁচা ডাল দিয়ে স্ত্রীকে প্রহার করতে (কেউ কেউ অনুবাদ করেছেন ‘তৃণশলাকা’ − এটা ঠিক নয়), কিন্তু এ আয়াতের নির্দিষ্ট শর্ত ও পটভূমি আছে যা নবীর জন্যই, সাধারণ মুসলমানের জন্য নয়। স্ত্রী-প্রহার মানবজাতির চিরন্তন ইতিহাস কিন্তু একে ধর্মের নামে বৈধ করা মারাত্মক অপরাধ। এতে আত্মবিশ্বাসী নারী তৈরি হয় না, সুসন্তান গড়ে ওঠে না, এবং ফলে আত্মবিশ্বাসী মুসলিম-জাতি তৈরি হয়নি। তাই নিজেদের সমস্ত ব্যর্থতার জন্য অন্যের ষড়যন্ত্রের বাহানা করি আমরা।

‘অনুবাদে ভুল’ এ-তত্ত্ব ছাড়া নবীজী ও কোরাণের নখ্স্ দিয়েও স্ত্রী-প্রহারকে ইসলামি পদ্ধতিতেই বাতিল করতে পারেন আমাদের আলেমরা : দেখুন “নারীর উত্তরাধিকার ও সুস্পষ্ট নির্দেশ” নিবন্ধে। তবে যে কোনো পদ্ধতিতেই হোক, স্ত্রী-প্রহার বাতিল করতে গেলে বহু জাল হাদিসে টান পড়বে। যেমন, নবীজী নাকি বলেছেন, “যেমনভাবে দাস- দাসীদের প্রহার কর তেমনভাবে কখনো স্ত্রীদের মারবে না। তারপর রাতে তাদের সাথে শোবে” (সহি বুখারি হাফেজ আব্দুল জলিলের অনুবাদ হাদিস নং ২৪৬৮), এ একটা কথা হল ? কিংবা “রোজ হাশরে কোন স্বামীকে জিজ্ঞেস করা হবে না কেন সে স্ত্রীকে মেরেছিল” (হাদিস নং ২১৪২ ইণ্টারনেটে সহি আবু দাউদ), আপনারাই বলুন, এটা কোনো নবী-রসুলের কথা হল ? ধর্মের নামে কেলেঙ্কারি নয় এটা ?

ডঃ সুলায়মান বলছেন, “যদি আমরা (১) পারস্পরিক সমঝোতা, (২) ইসলামে মানুষের সম্মান ও অধিকার, (৩) প্রত্যেকের নিজের সিদ্ধান্ত লইবার অধিকার, (৪) দম্পতির পারস্পরিক সম্পর্ক, (৫) স্বামী ও স্ত্রীর সম্মানের সহিত বিবাহবন্ধন ছিনড়ব করার অধিকারের বিষয়গুলি মানিয়া চলি তবে সুরা নিসা আয়াত ৩৪-এ ‘দারাবা’ শব্দটি আঘাত, ব্যথা বা অসম্মান বুঝায় না। সবচাইতে যুক্তিযুক্ত হইবে ছাড়িয়ে দেওয়া, তালাক দেওয়া বা আলাদা হইয়া যাওয়া।”

আমরা জানি নাসুজ শব্দের প্রধান অর্থ হলো অশীল কর্ম। নাসুজ ছাড়া অন্য কোনো কারণে স্ত্রীকে তালাক দিলে তা হবে আলাহ’র দেয়া সীমা অতিক্রম : “যদি তারা কোনো সুস্পষ্ট নির্লজ্জ কাজে লিপ্ত না হয় তবে তাদেরকে তাদের গৃহ থেকে বহিষ্কার করো না (অর্থাৎ তালাক দিয়ো না − লেখক) এবং তারাও যেন বের না হয়, − এগুলো আলাহ’র নির্ধারিত সীমা” (সুরা ত্বালাক ১)।

এ তো গেল কোরাণের কথা। নবীজী কি বলেন ? নিশ্চয়ই তিনিও কোরাণের মূল্যবোধের কথাই বলেন − “স্ত্রী কেবল অশীল কর্মে লিপ্ত হইলেই তাহাকে হাল্কাভাবে প্রহার করা যাইবে” − বিধিবদ্ধ ইসলামি আইন ৩য় খণ্ড পৃষ্ঠা ৮৫২, তারিখ আল্ তাবারি ৯ম খণ্ড পৃষ্ঠা ১১৩ এবং সহি ইবনে মাজাহ ৪র্থ খণ্ড হাদিস ৩০৭৪ অর্থাৎ স্ত্রী অশীল কর্মে লিপ্ত না হওয়া পর্যন্ত অন্য কোনো কারণ বা বাহানায় স্ত্রী-প্রহার করিলে তাহা স্বয়ং রসুলের বিরুদ্ধে যাইবে।

কেউ যদি প্রশড়ব করে কোরাণ-রসুল তাহলে স্ত্রী-প্রহারের অনুমতি দিয়েছে, তাকে আমি বলবো বৌ অন্যের সাথে শারীরিক সংসর্গ করলে কোনো স্বামী কি কেতাব খুলে দেখতে যাবে কি লেখা আছে সেখানে ? মোটেই যাবে না, বরং তার মাথায় রক্ত চড়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। সে-অবস্থায় পেটানো হতেই পারে, বরং খুন করাও বিরল নয়। এই স্বাভাবিকতাকে অস্বীকার করেননি কোরাণ-রসুল ; কথায় কথায় স্বামীর ইচ্ছে হলেই বা রাগের মাথায় স্ত্রী-প্রহারকে কঠিনভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছেন সুস্পষ্ট ভাষায় পরকীয়ার শর্ত দিয়ে।

এবারে চলুন দেখা যাক একটা হিসেবের কড়ি যা কিনা বাঘেও খেতে পারে না। অর্থাৎ যত ধূর্তই হোক না কেন ঐ কড়ি নিয়ে খেল্ খেলবার সাধ্য কোনো খেলোয়াড়ের নেই। এ থেকে পরিষ্কার হয়ে যাবে কিভাবে একটা ন্যায়ের ধর্মকে পেঁচিয়ে নারী-বিরোধী অপধর্ম ক’রে তোলা হয়েছে, এবং ক’রে তোলা হয়েছে ঐ নবীজীর নামেই। খেলোয়াড়রা ভালো ক’রেই জানত তাদের কথা নবীজী’র মুখে তুলে না দিলে জনগণ গ্রহণ করবে না। সহি হাদিস সুনান আবু দাউদ থেকে উদ্ধৃতি দিচ্ছি, এটা আছে এম. এ. এস. অর্থাৎ আমেরিকা-ক্যানাডাভিত্তিক বিশাল শারিয়াপন্থী সংগঠন মুসলিম স্টুডেণ্ট্স্ অ্যাসোসিয়েশনের ওয়োসাইটে।

হাদিস নং ২১৩৯ ঃ সাহাবী মাবিয়া আল্ কুসাইরী নবীজী’র কাছে গিয়ে স্ত্রীদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলেন। নবীজী বললেন, নিজেরা যা খাও পরো তাদের সেইরকম খাওয়াবে পরাবে। আর, তাদের প্রহার করবে না বা অপমান করবে না।

সুস্পষ্ট হুকুম। হ্যাঁ, নবী-রসুলের মুখে এ-কথাই শোভা পায়, এই হলেন আমাদের নবীজী। স্ত্রীদের দল তখন ইসলামে তাঁদের সম্মান রক্ষা দেখে স্বভাবতই খুশি হলেন। বাংলায় একটা কথা আছে “শতচক্রে ভগবান ভূত”, এবারে দেখুন রসুলের এই চমৎকার হুকুমটা ষড়যন্ত্রের দুইচক্রে কিভাবে ধাপে ধাপে পেঁচিয়ে গিয়ে নারী-বিরোধীতায় রূপ নিচ্ছে।

হাদিস নং ২১৪১ : সাহাবীরা তাঁর কাছে এসে অভিযোগ করলেন, পিটুনির অভাবে বৌগুলোকে নাকি স্বামীদের বিরুদ্ধে উৎসাহিত (বসনড়ষফবহবফ) করা হচ্ছে। এই অভিযোগের ফলে তিনি নাকি বৌ-পিটানোর অনুমতি দিলেন। স্ত্রীর দল তাতে আপত্তি জানালে তিনি নাকি বললেন যারা আপত্তি করছে তারা নাকি সর্বোত্তম স্ত্রী নয়।

দেখলেন ? স্পষ্টই এটা পুরুষতন্ত্রের বানানো হাজার হাজার মারাত্মক জাল হাদিসের একটা। সমাজ বা শাসনকার্য চালানোর ব্যাপারে সাহাবীদের পরামর্শ নিতেন নবীজী, এটা তা নয়। এটা হল কেয়ামত পর্যন্ত সমস্ত মুসলিম নারীর সম্মান ও অধিকার যা তিনি রেখেছেন প্র ম হাদিসটায়। আলাহ’র রসুল হয়ে নিজেরই এমন একটা ন্যাপরায়ণ হুকুম তিনি বদলে নারী-বিরোধী করবেন সাধারণ মানুষের চাপে ? হতেই পারে না। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নবী-রসুলেরা কখনো মানুষের কথায় নিজের নির্দেশ বদল করেন না। মানবাধিকার রক্ষায় তাঁরা মানুষের কথামতো চলেন না, মানুষকেই তাঁদের কথামতো চলতে হয় নইলে তাঁরা নবী কিসের ! এর পরে দেখুন সে অধিকার কি হিংস্রভাবে পদদলিত করা হয়েছে ঐ নবীজীর নামেই।

হাদিস নং ২১৪২ : নবীজী নাকি বলেছেন পরকালে কোনো স্বামীকে জিজ্ঞেস করা হবে না দুনিয়াতে সে কেন বৌকে পিটিয়েছিল। অর্থাৎ স্বামীকে বৌ-পেটানোর ফ্রী লাইসেন্স দেয়া হল, রাষ্ট্র বা আইন তো দূরের কথা, আলাহ- রসুলের কাছেও তার কোনো জবাবদিহিতা থাকল না।

এই হলো হিসেবের কড়ি। ঐ “নবীজী বলেছেন, নবীজী বলেছেন” ক’রে ক’রে মুসলিম নারীদের সর্বনাশ করা হয়েছে, ইসলামের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়ে বদনাম হয়েছে। ওদিকে ইণ্টারনেটে সহি হাদিস সুনান আবু দাউদের বেশকিছু হাদিস উধাও হয়ে গেছে, যেমন ২০৪০-এর পরেই ২০৪৪ ; ২২৩৬-এর পরে ২২৪৭, ইত্যাদি। এভাবেই বহু নারী-বিরোধী তথ্য গোপনে মুছে ফেলা হচ্ছে। যেমন ইমাম গাজ্জালীর ৯ খণ্ডের এহ্হিয়া উলুমিদ্দীন কেতাবের ২য় খণ্ডে প্রচণ্ড নারী-বিরোধী কথাবার্তা আছে। ইণ্টারনেটে তার বেশকিছু মুছে ফেলা হয়েছে। কিন্তু আমাদের কাছে তো বইগুলো আছে, আমরা তো দেখাতে পারব। গোপনে মুছে ফেলাটা অপরাধী মনের লক্ষণ। কাজটা খোলাখুলি করলেই তো হয়, বললেই তো হয় : যা হবার হয়েছে, এখন আমরা এগুলো বাদ দিচ্ছি। এগুলোর বিরুদ্ধে মুসলমানদের প্রতিবাদ তো চিরকালই ছিল, যেমন ৯ম শতাব্দীতে লেখা “দ্য তকদিমা অফ্ ইব্নে আবি হাতিম আল্ রাজী” থেকে শুরু ক’রে সাম্প্রতিককালের হাদিস-বিরোধী মুসলিম বিশেষজ্ঞদের বইগুলো। একই প্রতিবাদে আমাদের মওলানা আকরম খান থেকে শুরু ক’রে সাম্প্রতিক মোহাম্মদ সা’দউলাহর লেখা বই আছে, আনিসুর রহমানের মতো মুসলিম লেখকরাও আছেন। তুর্কী সরকার সহি হাদিসগুলো থেকে হাস্যকর, নোংরা, অবৈজ্ঞানিক ও মানবতা-বিরোধী হাদিস বাদ দিয়ে সহি হাদিসের নূতন সঙ্কলন বের করার প্রোজেক্ট নিয়েছেন, এটা শুভ লক্ষণ। ঐ হাদিসগুলো বাদ হলে শত শত নারী-বিরোধী শারিয়া আইনের পায়ের নীচ থেকে মাটি সরে যাবে কারণ ওগুলো দিয়েই ঐ ইসলাম-বিরোধী আইনগুলো বানানো হয়েছে।

পুরুষতান্ত্রিক ষড়যন্ত্রের এই কারাগার ভেঙে আমাদের প্রতিষ্ঠা করতেই হবে সেই হারানো নারী-অধিকার যা ইসলাম আমাদের দিয়েছিল চোদ্দশো বছর আগে, যা ডাকাতি হয়ে গেছে তথাকথিত আলা’র আইনের নারী-বিরোধী হিংস্রতায়

**** লেখক পরিচিতি*********
হাসান মাহমুদ

[email protected]
http://www.hasanmahmud.com/

In SHARIAKIBOLE.COM it is written as:-

সদস্য – ওয়ার্ল্ড মুসলিম কংগ্রেস উপদেষ্টা বোর্ড
সাধারণ সম্পাদক- মুসলিমস ফেসিং টুমরো- ক্যানাডা
রিসার্চ এসোসিয়েট- দ্বীন রিসার্চ সেন্টার, – হল্যান্ড
প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, আমেরিকান ইসলামিক লিডারশীপ কোয়ালিশন
ক্যানাডা প্রতিনিধি, ফ্রি মুসলিমস কোয়ালিশন
প্রাক্তন ডিরেক্টর অফ শারিয়া ল’ ও প্রেসিডেন্ট, মুসলিম ক্যানাডিয়ান কংগ্রেস

১৫| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:৩১

মারুফ তারেক বলেছেন: একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে আনার জন্য ধন্যবাদ।

১৬| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:৪৪

লা-তাহ্‌যান বলেছেন: আমরা নিজেদের সুবিধার্থে 'প্রহার' থেকে 'বেদম প্রহারের' অনুমিত বানিয়ে নিয়েছি। আরো কিভাবে বাড়ানো যায় সেই রাস্তা খুজছি ভাই।

রাসুলস্নাহ (সাঃ) বলেছেন, তোমাদের নিকট সেই ব্যক্তি উত্তম, যে তার স্ত্রীর নিকট উত্তম’ (তিরমিজী)
এখন কিভাবে উত্তম হবেন সেই পথ খুঁজুন। :)

সুন্দর গোছানো লেখা।

১৭| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:৩৭

রোহিঙ্গা বলেছেন: ইসলাম ধর্মে মৃত পশুর মাংস ও রক্ত হারাম সুতরাং মাছ কেনো হারাম না? কেউ জানালে খুশি হবো কারন মাছ তো প্রানী প্রায়ই তো আমারা মৃত খেয়ে থাকি। কেউ জানলে জানাবেন যুক্তি সহকারে দাদা প্লিজ জানাবেন যদি জানেন

১৮| ০৩ রা মে, ২০১৬ দুপুর ১২:০৫

কাজী শাহ এমরান বলেছেন: চমৎকার

১৯| ০৩ রা মে, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৩

আহলান বলেছেন: বড়ই জটিল বিষয় দেখি ..!

২০| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৩৩

চাডেরনুর বলেছেন: বিষাদ সময় বলেছেন: ভাল লাগলো হাদিস এবং কোরআনের আয়াতের আপনার মন গড়া ব্যখ্যা পড়ে। আপনার এই ব্যখ্যা কোন আলেম পড়লে হাসবেন না রাগবেন ঠিক বুঝতে পারছিনা। ইসলাম সম্পর্কে খুব ভালভাবে না জেনে ইসলামী কোন বিষয়ে মনগড়া ব্যখ্যা প্রদানও গুনাহর কাজ।

"পুরুষেরা নারীদের উপর কর্তৃত্বশীল (Protectors and maintainers of women) এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য (শারীরিক শক্তি) দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় (support them from their means) করে। সে মতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগতা এবং আল্লাহ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোক চক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে। আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং "প্রহার" কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সবার উপর শ্রেষ্ঠ।"

আমি যতটুকু জানি এই নির্দেশনা যখন স্ত্রী স্বামীর কথার অবাধ্য হবে বা ধর্মীয় কজে অবহেলা করবে সে ক্ষেত্র প্রযোজ্য।

"যদি দেখেন আপনার সাথে শোয়া না শোয়ায় তাঁর কিছুই যায় আসে না, অন্য অর্থে অন্যের সাথে সে শোয়ায় অভ্যস্ত হয়ে গেছে - ঠিক তখনই আপনাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তাঁকে "প্রহার" করতে।"

কিন্তু আপনার উপরোক্ত বক্তব্য এবং আরও অন্যান্য বক্তব্য থেকে বোঝা যাচ্ছে যে স্ত্রী যখন ব্যভিচারে অভ্যস্ত হয়ে যাবে তখন উপরোক্ত আয়াতের আলোকে স্ত্রী কে প্রথমে বোঝাতে হবে তারপর সজ্জা আলাদা করতে হবে তারপর মৃদু প্রহার করতে হবে। আসলে এ রকম বক্তব্য এই প্রথম শুনলাম।
কোন ব্যভিচারি ব্যক্তি অবিবাহিত হলে তার শাস্তি ১০০ ঘা দোররা আর সে বিবাহিত হলে তার শাস্তি প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যা। তাছাড়া কোন চরিত্রহীন স্ত্রীর সাথে ঘর সংসার করা কোন মুমিনের জন্য বৈধ নয়।

কাজেই আপনার এ মনগড়া ব্যখ্যার সাথে একমত হতে পারলাম না বলে দুঃখিত।

+++++++++

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:১৫

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: কেউ "ব্যভিচারী" এই বিষয়টা প্রমান করতে হলে আপনাকে ৪ জন চাক্ষুষ সাক্ষী জোগাড় করতে হবে, না হলে আপনি কাউকে ব্যভিচারী বলতে পারবেন না। আপনার মন যতই সন্দেহ করুক, বা নিশ্চিত হোক।
হজরত আয়েশার (রাঃ) নামে যখন রটনা রটতে শুরু করেছিল, তখন রাসূল (সঃ) পর্যন্ত বলেছিলেন, "যদি তুমি অপরাধ করে থাকো, তাহলে আল্লাহর কাছে মাফ চাও - তিনি ক্ষমা করে দিবেন। আর যদি নির্দোষ হয়ে থাকো, তাহলে চিন্তা করো না, আল্লাহ তোমাকে সাহায্য করবেন।"
এই ছিল রাসূলুল্লাহর আচরণ তাঁর স্ত্রীর প্রতি।
আল্লাহ কুরআনের আয়াত নাজেল করে আয়েশাকে (রাঃ) সাহায্য করেছিলেন, নির্দোষ বলেছিলেন।
এখন শুনি আপনার মন্তব্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.