নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্পৃহা ফাউন্ডেশন

০৭ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:৫৭

আপনারা কেউ কেউ জানেন, এবং বেশিরভাগই জানেন না যে আমি এবং তারেক (আমার মামাতো ভাই) দেশ বিদেশের বেশ কয়েকটি চ্যারিটি সংগঠনের সাথে যুক্ত আছি। বাংলাদেশের স্পৃহা ফাউন্ডেশনের ডালাস চ্যাপ্টারের দেখভাল আমরা বন্ধুবান্ধবরাই মোটামুটি করে থাকি। অনেকদিন ধরেই চাচ্ছিলাম ক্যানভাসকেও (আমার ফেসবুক গ্রুপ) স্পৃহার কোন কাজে লাগানো যায় কিনা। একবারতো বুক ড্রাইভ করতে গিয়েও করা হয়নি। স্পৃহার লাইব্রেরির জন্য পুরানো এবং নতুন বই সংগ্রহ করা হবে। যে যা পারেন দান করবেন। ইন শা আল্লাহ, আমরা সেটা খুব শীঘ্রই হয়তো করবো। আপাতত অন্য ক্যাম্পেইন নিয়ে আলোচনা করা যাক।
তা কী করে এই স্পৃহা সেটা বলতে গেলে অনেক কিছুই বলতে হবে। সহজ কথায় - রায়েরবাজারের বস্তিতে কাজ করা স্পৃহার প্রাথমিক লক্ষ্য হচ্ছে বস্তির মানুষকে বস্তির জীবন থেকে বের করে উন্নত জীবনের সন্ধান দেয়া। সেই লক্ষ্যে শিক্ষা, চিকিৎসা, কারিগরি শিক্ষা ও কর্মসংস্থানসহ ইত্যাদির ব্যবস্থা করে আসছে এই সংগঠন।
যেকোন ভলান্টিয়ার সংগঠন চালাতে প্রয়োজন হয় টাকাপয়সার। সেই সাথে পরিশ্রমের।
এখন কথা এগুবার আগে কুরআন শরীফ থেকে একটা ঘটনা বলি, দেখেন ইন্সপায়ার্ড হতে পারেন কিনা।
এইটা মুসলিম মাত্রই স্বীকার করতে বাধ্য যে মুসা (আঃ) আল্লাহর শ্রেষ্ঠ তিন নবীর একজন। কেবল চারিত্রিক দৃঢ়তাই নয়, শারীরিক দিক দিয়েও তিনি ছিলেন বিশাল এবং শক্তিশালী। রীতিমত কুস্তিগীর।
তা তাঁর শৈশবের ঘটনা আমরা মোটামুটি সবাই জানি। মিশর সম্রাট ফেরাউন যখন বনি ইসরাইলিদের শিশু পুরুষ সন্তানদের নির্বিচারে হত্যা করছিল, আল্লাহ সেই কঠিন বিরুদ্ধ পরিস্থিতিতেও মুসাকে রক্ষা করলেন। শুধু তাই না, তাঁকে বড় করলেন সেই ফেরাউনেরই প্রাসাদে, তারই পালক সন্তান হিসেবে।
তখনকার বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মানুষ ছিল এই ফেরাউন, সম্রাট দ্বিতীয় রামেসিস। ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয়ে যে নিজেকেই নিজে ঈশ্বর ঘোষণা করেছিল এবং সবাইকে বাধ্য করেছিল তার উপাসনা করতে। তখনকার পৃথিবীর যাবতীয় ঐশ্বর্য্য, যাবতীয় আরাম আয়েশের বিলাসদ্রব্য - সব উপস্থিত ছিল ফেরাউনের প্রাসাদে। মুসা (আঃ) সেই আরাম আয়েশের মধ্যেই বড় হওয়া সন্তান।
একদিন এক লোককে আরেক সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার করতে দেখে মুসা বাঁধা দিতে এগিয়ে যান। অত্যাচারী লোকটা মুসার উপর চড়াও হয়, এবং আত্মরক্ষার জন্য মুসার এক ঘুষিতেই লোকটা পটল তুলে। আগেই বলেছি, মুসার (আঃ) শারীরিক গঠন ছিল কুস্তিগিরদের মতনই।
নিজের হাতে মানুষ হত্যা হতে দেখে মুসা (আঃ) ঘাবড়ে যান। এবং তাঁকে আরও ঘাবড়ে দিতেই লোকেরা বলাবলি করতে থাকেন, "পালাও মুসা! তোমাকে হত্যা করতে শহরের অন্য প্রান্তে লোক জড় হচ্ছে।"
বলে রাখি, ফেরাউনের লোকজন এবং সাধারণ বনি ইসরাইলিরা কিন্তু দুই ভিন্ন জাতের মানুষ। পাকিস্তান আমলে পশ্চিমারা যেভাবে বাঙালিদের আলাদা চোখে দেখতো - তেমন। যেকারনে বনি ইসরাইলি মুসার হাতে ফেরাউনের একজন লোকের হত্যা একটি বড়সর অপরাধ ছিল।
ফেরাউনের পালক পুত্র মুসা (আঃ) তাই প্রাণ বাঁচাতে একদম শূন্য হাতে মিশর ত্যাগ করলেন। যাবতীয় ঐশ্বর্য্য, ধন-দৌলত-বিলাস সামগ্রী সব এক নিমেষে গায়েব হয়ে গেল।
রাস্তায় এক কুয়ার সামনে মুসা (আঃ) দেখলেন দুইজন নারী পানির জন্য অপেক্ষা করছেন, কিন্তু বাকিরা কেউই তাঁদের সুযোগ করে দিচ্ছেন না। সহজ ভাষায় বুলি করছিল।
মুসা (আঃ) তাঁদের সাহায্যে এগিয়ে এলেন। বিশালদেহি মুসার (আঃ) সাথে কেউ ঝামেলা করতে এলো না। তিনি তাঁদের জন্য পানি তুলে দিলেন।
এই একই ঘটনা নানান দেশের সিনেমায় নানানভাবে ব্যবহৃত হয়েছে। মেয়ে মুসার এই ভালমানুষিতে মুগ্ধ হয়ে প্রেমে পরে যায়। নিজের বাবার কাছে মুসার কথা বলেন। ভদ্রলোক বুঝতে পারেন মেয়ে কি চায়। তিনি কর্মহীন-গৃহহীন মুসাকে (আঃ) নিজের ফার্মে কাজ দেন, নিজের মেয়ের সাথে বিয়ে দেন। এক লহমায় সর্বহারা হওয়া মুসা (আঃ) রাতারাতি সবকিছু ফিরে পান।
বাই দ্য ওয়ে - তখনও তিনি জানেন না তিনি একদিন নবী হতে চলেছেন। এসবকিছুই এক সাধারণ মানুষ মুসার (আঃ) ঘটনা।
যে কারনে ঘটনাটি বললাম, সেটি হচ্ছে, একজন অত্যাচারিতকে সাহায্য করতে গিয়ে মুসা (আঃ) সর্বহারা হওয়ার পরেও মানুষের উপকার করার মানসিকতা ত্যাগ করেননি। তাঁর পকেটে একটা কানাকড়িও ছিল না, কয়েকবেলা উপোষ এবং পরেরবেলা খাবার অনিশ্চিত জেনেও মানুষের উপকারের সুযোগ পেয়ে সেটা হাতছাড়া হতে দিলেন না। টাকা পয়সা নেই তো কী হয়েছে, শারীরিক ক্ষমতাতো আছে। তিনি এগিয়ে গেলেন মহিলাদের কাছে, হাত থেকে বালতি টেনে নিলেন, ভিড় ঠেলে কুয়া থেকে পানি তুলে দিলেন। সহজ কথায় - শ্রম "দান" করলেন।
এখন তাহলে স্পৃহায় ফেরা যাক।
এ বছর নারী দিবসে স্পৃহা শুরু করেছে Micro Donation নামের একটি ক্যাম্পেইন। যারা দেশে‌ আছেন, তাঁরা সহজেই বিকাসের সাহায্যে এতে অংশ নিতে পারবেন। এবং আমরা উৎসাহ দেই যাতে সবাই রায়ের বাজারে গিয়ে একবার হলেও স্পৃহা কিভাবে মানুষদের সাহায্য করছে ব্যাপারটি দেখে আসেন। কারন একবার দেখলে কাউকে সাহায্যের জন্য বলা লাগেনা, নিজে থেকেই এগিয়ে এসে বলেন, "কিভাবে আমি কাজে আসতে পারি ভাই?"
কিংবা নিজের আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধবদের স্পৃহার কথা বলেন। তিনি নিজে সাহায্য যদি নাও করেন, তাঁর কথায় আরেকজন ঠিকই সাহায্য করে থাকেন। এই ক্ষেত্রে তাঁর অনুদানও কিন্তু উপেক্ষা করার নয়।
স্পৃহার ভাষায়, "এই নারী দিবসে হাজারো নারীর কাছে পৌছে দেই জরুরী স্বাস্থ্য সেবা। আপনার একটি ছোট্ট অনুদান আনতে পারে অনেক বড় পরিবর্তন। বিকাশ এর মাধ্যমে ১০ টাকা অথবা যে কোনো পরিমাণ অর্থ পাঠিয়ে মা,বোন এবং কন্যার যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করুন।
নিম্নের সহজ ধাপ গুলো অনুসরণ করুন :
1. Dial *247# on bkash menu / go to nearest bkash counter
2. Press “3” to select “Payment”
3. Enter merchant wallet number “01708405999”
4. Enter amount
5. Enter reference “WomensDay”
6. Enter counter number “1”
7. Enter your bkash PIN to confirm
8. Receive confirmation sms
9. Done!
You have just become a changemaker!"
আমার কথা হচ্ছে, আমরা যারা ভাল আছি, তাঁরা ধরেই নেই, ভাল থাকাটা আসলে গ্রান্টেড। বাড়ি আগে, গাড়ি আছে, বৌ আছে, বাচ্চা আছে। মা বাবাও শান্তিতে আছে। আর কী চাই জীবনে?
আসলে তা নয়। আগামী পাঁচ বছর পর কী হতে চলেছে আমরা কেউই বলতে পারিনা। আজকের কোটিপতি, কালকের ভিখারি, আবার আজকের নিম্ন মধ্যবিত্তের সন্তান, কাল কোটি টাকার প্রাসাদে বাস করে - এমন ঘটনাগুলো আমাদের আশেপাশেই ঘটে থাকে। আমরাই কেবল নজর করে দেখিনা। এখন আমরা খুব ভাগ্যবান যে পরেরবেলা কী খেতে হবে তা নিয়ে আমাদের চিন্তাভাবনা করতে হয়না। আমরা খুব ভাগ্যবান যে আমরা যখন ঘুমাতে যাই, মাথার উপর একটা ছাদ থাকে। তাই আমাদের উচিৎ এই ভাগ্যকে স্বীকার করে ভাগ্যহীনদের কাজে এগিয়ে আসা। আমরা একেকজন, যার যা সামর্থ্য আছে, তা নিয়ে যদি এগিয়ে আসি - বাংলাদেশ থেকে দারিদ্র্য দূর করা কোন ব্যাপারই না। স্পৃহায় গিয়ে দেখুন, আপনার দান করা মাত্র দশটি টাকা মানুষের জীবনে কি পরিমান প্রভাব ফেলে!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.