নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
একজন খুব বিখ্যাত ইসলামিক স্কলার, কিংবদন্তিতুল্য, একবার পথ ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন। তাঁরা দেখলেন একদল মঙ্গোল সেনা মদ্যপান করে নেশায় চুর হয়ে ঝিমুচ্ছে।
স্কলারের শিষ্যরা তিরষ্কার করে বললেন, "ধিক তাদের! আল্লাহর নাম না নিয়ে অ্যালকোহল নিয়ে পরে আছে।"
স্কলার বললেন, "ওদের নেশায় চুর থাকতে দাও। কিছু বলো না(বাঁধা দিও না)।"
এ থেকে একেকজন একেক অর্থ বের করে ফেলতে পারেন।
একদল বলবেন, স্কলার সাহেব আসলে মুনাফেক, যেখানে আল্লাহ এবং নবীজি (সঃ) সরাসরি মদ্যপান হারাম ঘোষণা করেছেন, সেখানে তিনি কিভাবে কাউকে এলাউ করেন?
আরেকদল বলবেন, "নিশ্চই ইসলামে মদ্যপানে কোন নিষেধ নেই। নাহলে তাঁর মতন স্কলার কেন বাঁধা দিতে নিষেধ করবেন? তারমানে আমরাও খেতে পারবো।"
এবং বুদ্ধিমানেরা তখন আরেকটু পড়ে বুঝবে যে আসলে তিনি ওদের নেশায় বুদ্ থাকতে দিয়েছিলেন এই কারনে যে তারা যদি স্বজ্ঞানে থাকে, তাহলে হত্যা, লুটপাট ও নারী ধর্ষণ করবে। ইতিহাসে মঙ্গোল সেনাদের রেপুটেশন খুব একটা ভাল নয় কিনা।
ইসলাম একটা অপশন দেয় - যখন কেউ এমন পরিস্থিতিতে পরে যে তাঁকে যেকোন একটা অন্যায়কে বেছে নিতে হবে - তখন সে দুইটার মধ্যে ছোটটা বেছে নিতে পারবে।
ধরা যাক কেউ ক্ষুধার যন্ত্রনায় মারা যাচ্ছে। সামনে শূকর (বা অন্য কোন হারাম খাদ্য) ছাড়া খাবার মতন আর কিছুই নেই। সে তখন নিজের প্রাণ বাঁচাতে শূকরের মাংস খেতে পারবে।
গতকাল মাস্টারবেশন নিয়ে লেখা একটি পোস্টে আমি কমেন্ট করায় কেউ কেউ বলতে পারেন, ঘটনা কী! আমি কী তাহলে বলতে চাইছি ইসলামে মাস্টারবেশন নিষিদ্ধ নয়? উদাহরণ, রেফারেন্স আছে? কাজেই এই লেখাটি লিখে ক্লিয়ার করে দেই।
তবে তার আগে ডিসক্লেইমার, আমি কোন ইসলামিক স্কলার নই - হালাল হারাম ফতোয়া দেয়ার যোগ্যতাতো অবশ্যই রাখিনা। আমি কেবল আমার নিজের অপিনিয়ন দিচ্ছি। সিরিয়াসলি নিতেই হবে - এমন কোন শর্ত নেই।
আমাদের দেশে ছেলেদের বিয়ের বয়স একুশ। কেন একুশ I have no idea. এই বিষয়ে আমি পড়াশোনা করিনি, কাজেই জানিনা। মেয়েদের কেন আঠারো - সেটা অবশ্য জানি। এরচেয়ে কম বয়সে গর্ভধারণ করলে মায়ের শারীরিক সমস্যা হতে পারে - কাজেই বয়স আঠারো করে দেয়া হয়েছে।
অনেকে "মেন্টাল ম্যাচুরিটিকে" টেনে আনবেন। আমি কনভিন্সড না। আমি জানি, দেখেছি এবং বিশ্বাস করি, একেকজন মানুষের ম্যাচুরিটি একেক বয়সে আসে। কেউ নয় দশ বছর বয়স থেকেই ম্যাচিউরড আচরণ করতে শুরু করে। কেউ চল্লিশ বছর বয়সেও ছেলেমানুষি করে। আঠারো বছর বা একুশ বছর হলেই আমি ম্যাচিউরড হয়ে যাবো, এর আগদিন পর্যন্ত আমি ইম্যাচিউরড থাকবো - এটি খুবই ফালতু যুক্তি।
তো যা বলছিলাম, আমাদের ছেলেদের বা মেয়েদের বয়ঃসন্ধির সময় থেকেই শরীরে নানা পরিবর্তন আসতে থাকে। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আবেগ ভিন্নদিকে প্রবাহিত হতে থাকে। শরীর নিজের অস্তিত্বের জানান দিকে থাকে। জেগে উঠতে শুরু করে জন্মের পর থেকে ঘুমিয়ে থাকা পুরুষ ও নারী। ঠিক এই সময়েই ছেলেমেয়েরা নানান আকাম কুকাম করে বেড়ায়। মন-সমাজ-নীতি কোন কিছুই মাথায় থাকেনা - শরীর তখন সব কিছুর উর্দ্ধে।
একর্ডিং টু ইসলাম, এই সময়ে ছেলেমেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেয়া ভাল। শরীরের দ্বারাই যেহেতু পরিচালিত হচ্ছ - কাজেই শরীরকে সঠিক গন্তব্যেই পৌঁছে দাও।
গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট, বিয়ে "দিয়ে দেয়া ভাল", কিন্তু "দিতেই হবে" এমন কোন শর্ত না। এই নিয়ে অনেককে ত্যানা প্যাঁচাতে দেখি - ব্যাপারটা খুবই বিরক্তিকর পর্যায়ে গিয়ে ঠেকে। এমন ভাব, যেন ইসলামই পৃথিবীতে "বাল্য বিবাহের" প্রবর্তক। এর আগে বা পরে কেউই বাল্যবিবাহ করেনি। এডগার এলেন পো বিয়ে করেছিলেন ১২ বছর বয়সী নারীকে, মহাত্মা গান্ধী বিয়ে করেছিলেন ১৩/১৪ বছর বয়সে - তাঁরা কোথাকার ইসলামিক আলেম ছিলেন বড্ড জানতে ইচ্ছে করে। যতদূর মনে হয়, আমাদের বঙ্গবন্ধুর বিয়ের সময়ে তাঁর স্ত্রীর বয়সও বারো-তেরো ছিল। রবীন্দ্রনাথ বা শরতের সব নায়িকার বয়সই "বাল্য।" অবিবাহিতা হৈমন্তীর বয়স ষোল হয়ে যাওয়ায় হায় হায় রব উঠেছিল। রোমিও জুলিয়েটও টিনেজ প্রেমের গল্প। এটিই সামাজিক রীতি ছিল সেসময়ে। সব বাদ দিয়ে শুধুশুধু ইসলাম টেনে আনাটা হাস্যকর ও বিরক্তিকর।
তো যাই হোক - যেহেতু দেশের বর্তমান সংবিধান মতে - একুশ এবং আঠারোর নিচে বিয়ে করা নিষেধ, এবং যেহেতু ইসলামও ব্যাপারটিকে "ফরজ" করেনা - কাজেই "অফিসিয়ালি প্রাপ্ত বয়স" হওয়া পর্যন্ত ছেলেমেয়েদের অপেক্ষা করাই উচিৎ।
সমস্যা বাঁধে এখানেই। অনেক প্রেমিক প্রেমিকা এসব ওয়েটিং টোয়েটিংয়ের ধার ধারেনা। তারা রুম ডেটিং শুরু করে দেয়। টিনেজ প্রেগন্যান্সি - এবং গর্ভপাতের ঘটনাও ঘটে এইসময়ে প্রচুর। সেটা বিদেশেতো ওয়ান টু ঘটনা, দেশেও ঘটছে প্রচুর।
আমি অ্যাবর্শনের ক্ষেত্রে অনেক বেশি কনজার্ভেটিভ। যে যাই বলুক, আমার চোখে এটি হত্যা। একটি শিশু ভ্রূণের হার্ট বিট করা শুরু করেছে মানেই হলো তাঁর মধ্যে প্রাণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমার এখনও মনে আছে যেদিন আমরা প্রথম আল্ট্রা সনোতে আমাদের ছেলেকে দেখেছিলাম। সেই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশের ক্ষমতা কোন লেখকের নেই। ওকে পৃথিবীতে আনার জন্য আমি দায়ী এবং ওকে হত্যা করার কোনই অধিকার আমার নেই। যদি আমাকে সমাজ, পরিবার এবং লোকলজ্জার ভয়ে বাধ্য হয়ে সেটি করতে হয় - তাহলে অনেক আগেই আমি সেটা নিয়ে চিন্তা করবো যাতে আমাকে এই ড্রাস্টিক পদক্ষেপ না নিতে হয়। আমার ক্ষণিকের ফূর্তির শাস্তি আমার নিরপরাধ শিশুকে কেন পেতে হবে?
পরকীয়ার ক্ষেত্রেও এই একই বিষয় অনেকক্ষেত্রে দায়ী। মানুষ বিবাহিত জীবনের একটি বিশেষ অংশে পরিতৃপ্ত নয় - কাজেই সে ছোকছোক করে অন্য কোথাও থেকে এই সুখ পেতে। এতে নিজের ও অন্যের সংসারের ক্ষতি হয়ে যায়, কিন্তু তাতে তার কিছুই যায় আসেনা।
চরিত্রহীনদের কথা ভিন্ন - ওরা ভিন্ন ক্যাটাগরির। ওদের জন্য সমস্ত পৃথিবীর নারী/পুরুষকুল এনে দিলেও ছ্যাচড়ামি স্বভাব যাবেনা।
তা এইসব ক্ষেত্রে সবচেয়ে সহজ সমাধান হচ্ছে মাস্টারবেশন।
একটি ছেলে/মেয়ে কামোত্তেজিত হয়ে গেছে - পরষ্পর সামাজিক/ধার্মিক/বৈবাহিক দৃষ্টিকোণ অবৈধ কিছু করার চেয়ে এটা better যে তাঁরা best among the two evils বাছাই করে নিবে। নিজেও সুখে থাকলো - অন্যকেও সুখে রাখলো।
এখন যারা স্পিরিচুয়ালি অনেক স্ট্রং, যারা নিজের মনকে শরীরের উপর কন্ট্রোল রাখতে পারেন, তাঁরা বলতেই পারেন "এটা যেহেতু হারাম, কাজেই আমি এটা করবোনা।" তাঁদের হয়তো কোন অসুবিধাও হয়না।
কিন্তু যারা দূর্বল মনের মানুষ? শরীরের কাছে যাদের মন নিয়মিত হার মানে, তাঁরা? তাঁরা অবৈধ কারও কাছে যায়, কিংবা পতিতালয়ে। এরচেয়ে কী বিকল্প সমাধানটা ভাল না? এতে গুনাহ হচ্ছে, অবশ্যই হচ্ছে, কিন্তু বড় গুনাহর হাত থেকেও হয়তো মুক্তি পাচ্ছে। এবং দিনশেষে অনুতপ্ত হয়ে তওবা করলে ক্ষমার আশাতো আছেই।
আরও সহজ উদাহরণ দেই।
একটি ক্লাসের শুরুতে বছরের সিলেবাস দেখলে সামান্য গুটিকয়েক ছাত্রছাত্রী ছাড়া সবার চোখ কপালে উঠে যায়। এত পড়া কিভাবে সম্ভব? পাশ হবেতো?
কিছু ছাত্রছাত্রী বছরের শুরু থেকেই সিরিয়াস থাকে। স্কুলের আসার আগে থেকেই এক দুই চ্যাপ্টার বাসায় শেষ করে আসে। ওরা ফার্স্ট সেকেন্ড হওয়া নিয়ে চিন্তা করে।
কিছু ছাত্রছাত্রী নিয়মিত পড়াশোনা করে - কিন্তু অনেকক্ষেত্রেই এটা ওটা ছাড় দেয়। "একশোতে একশো পেতেই হবে" - টার্গেট না হলেও সত্তুর আশি পেয়েই তাঁরা খুশিতে পাশ করে।
এবং কিছু ছাত্রছাত্রী থাকে, কোনরকমে পঞ্চাশের উপরে মার্ক্স্ নিয়ে পরের ক্লাসে উত্তীর্ন হলেই তাঁরা জীবনকে স্বার্থক মনে করে।
দিনের শেষে সবাই পাশ করা ছাত্রছাত্রী। রেজাল্ট অনুযায়ী তাঁদের ranking হবে, কিন্তু পরের ক্লাসেতো তাঁরা উত্তীর্ন হয়েছে - এইবা কম কিসের?
যারা ফেল করে - তাঁদের নিয়ে বলার কিছু নেই। সিলেবাস ছিল, সময় ছিল, টিচার ছিল, তারা নিজেদের ইচ্ছাতেই ফেল করেছে।
এখন আপনার উপর নির্ভর করে - আপনি যদি মনে করেন ইসলামের সিলেবাসের সবকিছু ঠিকঠাকমতন ফলো করতে পারবেন, খুবই ভাল কথা। জান্নাতে আপনার ranking অনেক উপরে হবে।
কিন্তু সেই সাথে আপনাকে এও স্বীকার করে নিতে হবে, সমাজে কিছু ছাত্রছাত্রী আছে - যারা টেনেটুনে পাশ করতে পারলেই খুশি। ওরা চেষ্টা করে পরীক্ষা পাশের জন্য এটা ওটা ছাড় দিয়ে অমুক তমুকের উপর বেশি ফোকাস করতে। পাশ করতে পেরেছে - এতেই তাঁরা খুশি। Let the almighty judge them, যিনি পরমকরুণাময়, অসীম দয়ালু। ওদের নিয়ে কটূক্তি না করাটাই বরং আপনার জন্য বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
আবারও ডিসক্লেইমার - এই লেখা পড়েই মহাউৎসাহে ক্লাসে ফাঁকিবাজি (মাস্টারবেশন) শুরু করে দিবেন না যেন। চেষ্টা করুন যতক্ষণ সম্ভব, সিলেবাস ফলো করে ফার্স্ট সেকেন্ড হতে।
০৫ ই মে, ২০১৭ রাত ১:০৯
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ঠিক।
২| ০৫ ই মে, ২০১৭ রাত ৩:৫১
সৌমিক আহমেদ খান বলেছেন: দুনিয়ার ৯৫% পুরুষ এই পাপাচারে লিপ্ত
তওবা তওবা
৩| ০৫ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৫:২২
ফকির জসীম উদ্দীন বলেছেন: ভালো লিখেছেন।
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা মে, ২০১৭ রাত ১১:৪৬
জল্লু ঘোড়া বলেছেন: আপনার বক্তব্য আমি সমর্থন করি। তবে আমাদের চেষ্টা করা উচিত যাতে পাপ থেকে বাঁচতে পারি।