নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

যতদিন বুকের ভিতর ঐ হৃদপিন্ড দৌড়াবে, ততক্ষন আপনার থামার কোন উপায় নেই।

২৪ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:৩২

এসএসসি এইচএসসি পরীক্ষার রেজাল্টের পর দেশজুড়ে মাতম উঠে। যারা জিপিএ ফাইভ পায়নি, এমনকি ৪.৮৮ বা ৪.৯৩ (জানিনা এই গ্রেড আছে কিনা) পেয়েছে, তাঁদের চেহারা দেখলে পর্যন্ত মনে হয় ফেল করেছে। পত্রিকার সাংবাদিক খুবই আগ্রহভরে তাঁদের ছবি পত্রিকায় প্রকাশ করে। দেশের সবাই জেনে যায় এই মেয়ে (ছেলেদের ছবি তোলা সাংবাদিক ভাইদের জন্য হারাম। তাঁদের ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে।) ফেল করেছে। ফেলটুশ ছাত্রী! আগামী কয়েক মাস মেয়েটির এইটাই ক্লিয়ার করতে কেটে যায় যে সে ফেল করেনি, শুধু জিপিএ ফাইভ পায়নি বলেই মন খারাপ ছিল।
আত্মীয়স্বজন সামনা সামনি তাঁর কথা বিশ্বাস করার অভিনয় করবে। এবং আড়াল হতেই বলবে, "এখনতো কত কিছুই শোনাবে। আসলে ঠিকই ফেল করেছে। পত্রিকায় কী হুদাই ছবি আসছে?"
মা বাবা থেকে শুরু করে আত্মীয়স্বজন, ভাই ব্রাদার, প্রতিবেশী এমনকি উৎসুক জনতা পর্যন্ত তাঁদের তিরস্কার করে। সম্মিলিতভাবে জনগণ যদি এই তিরষ্কার কোন দুর্নীতিগ্রস্থ সরকারি অফিসে (যেমন সচিবালয় বা সিটিকর্পোরেশন) গিয়ে করতো, তাহলে বাংলাদেশ আজকে বিশ্বের একনম্বর দুর্নীতিমুক্ত দেশ হতো। সবচেয়ে মজার ব্যাপার, এইসব হাসি মশকরা বা তিরষ্কার যারা করেন, তাঁদের ৯০%-ই এসএসসি বা এইচএসসিতে আহামরি কিছু করতে পারেননি। তাঁদের জিজ্ঞেস করুন তাঁদের রেজাল্ট সম্পর্কে - উত্তরে বলবে, "আমাদের সময়ে সিস্টেম ভিন্ন ছিল।"
ভাই, এই যুগেও আগামী যুগের তুলনায় সিস্টেম ভিন্নই হবে। সর্বযুগেই একই এক্সকিউজ। কাজেই অফ যান! কমপ্লিট অফ!
তো যাই হোক, তিরষ্কার ধ্বনি শুনতে শুনতে এই সমস্ত কিশোর কিশোরীরা মনে করে একটি পরীক্ষায় আশানুরূপ রেজাল্ট না করায় তাঁদের জীবন ব্যর্থ হয়ে গেল। এখন তাঁদের বেঁচে থাকার কোন মানে হয়না। এরচেয়ে মরে যাওয়াই উত্তম।
অনেকেই তখন আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
কিংবা ড্রাগস ধরেন। অথবা পড়ালেখা ছেড়ে দেন।
এই ছিল পাশ করা কিন্তু জিপিএ ফাইভ না পাওয়াদের কথা।
এখন যারা ফেল করেছে, তাঁদের কথা না হয় বাদই দিলাম।
আমার বক্তব্য খুবই সহজ। জীবনে যা ঘটার ঘটে গেছে। ওটা নিয়ে হাহুতাশ করলে ক্ষতির বদলে লাভের লাভ কিছুই হবেনা। মানুষই ভুল করে। আল্লাহর বান্দা আদম (আঃ) ভুল করেছিলেন বলেই আজকে আমরা পৃথিবীতে জন্ম নিয়েছি। আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেনই ভুল করার জন্য, এবং সেইসব ভুল থেকে শিক্ষা নেবার জন্য। নাহলে ফেরেস্তাদের মতন রোবটিক জীবন যাপন করতে হতো। ফেরেশতারা আদমকে সিজদাহ করেছিলেন, আদম (আঃ) নয়। সবাইকে এই বিষয়টাই বুঝতে হবে।
একটা ক্ষতি হয়ে গেছে বলে ব্যবসা বন্ধ করে ঘরে বসে থাকলে চলে? বরং এমনভাবে ব্যবসাকে গুছাতে হয়, যাতে এই ক্ষতিটা সহজেই পুষিয়ে ওঠা যায়।
জীবনটাও তেমনই। দ্বিগুন, তিনগুন উৎসাহ নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। তারপরেও কিছু না হলে আমাকে খুঁজে বের করতে আমার আর কোথায় প্রতিভা আছে। শুনতে খারাপ শোনালেও এইটা সত্য, সবাইকে দিয়ে পড়ালেখা হয়না। কিন্তু তাই বলে তাঁদের যে অন্য বিষয়ে প্রতিভা নেই, তেমন কিন্তু হয়। এখন আমাকেই খুঁজে বের করতে হবে, ছাইয়ের গাদার নিচে কোন রত্ন লুকানো আছে। সেটাকে তুলে এনে ঘষা মাজা করে যদি কিছু একটা করা যায়।
উদাহরণ দিলে লাখ খানেক উদাহরণ দেয়া যাবে। সেই তালিকায় আর গেলাম না।
তবে আমি এখন যাকে নিয়ে কথা বলবো, তাঁকে নিয়ে কিছু লিখতে পারায় গর্বে আমার বুক আধ হাত ফুলে যাচ্ছে, ক্যানভাস গ্রূপটি (আমার ফেসবুক গ্রুপ) গর্বিত তাঁর মতন একজন সদস্যকে নিজেদের মধ্যে পেয়ে। সে হচ্ছে ফায়সাল মোহাম্মদ ইব্রাহিম। একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী।
জন্মের সময়ে যার চোখের দৃষ্টি স্বাভাবিক ছিল। তিনমাস বয়সে চিকেন পক্সের ভুল চিকিৎসায় যার চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তারপরও তীব্র মানসিক শক্তিকে কাজে লাগিয়ে যে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে, যে জয় করে চলেছে বিতর্ক, কুইজ, গান, এমনকি দাবা প্রতিযোগিতা - যেখানে তাঁর লড়াই হয় দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন প্রতিযোগীদের সাথেই।
এই তথ্যগুলো কোথায় পেয়েছি জানেন? সে নিজেই জানিয়েছে। টাইপ করে। এবং তাও আবার টাচ স্ক্রিন ফোনে!
একটা সময়ে তাঁর পরিবারের লোকজন তাঁর হাতে টাচস্ক্রিন ফোন তুলে দিতে অস্বস্তি বোধ করতো, এখন সেই তাঁর পরিবারের টেক এক্সপার্ট!
ছেলেটির দৃষ্টিশক্তি নেই। কিন্তু তাঁর যা আছে, তাই কাজে লাগিয়ে সে এগিয়ে চলেছে। এবং এই ইচ্ছাশক্তিই তাঁকে একদিন আরও অনেকের চেয়ে অনেক বেশিই সফল করে দেখাবে ইন শা আল্লাহ।
এদের হিরো না বললে কাদের হিরো বলবেন? এদের পাশে সেলফি না তুললে কাদের পাশে তুলবেন?
আপনার কী এক্সকিউজ? একটা রেজাল্টইতো খারাপ হয়েছে। হাত, পা, চোখ এবং তারচেয়ে বড় কথা মস্তিষ্কতো ঠিকঠাকই আছে। ওগুলোকে কাজে লাগান।
যতদিন বুকের ভিতর ঐ হৃদপিন্ড দৌড়াবে, ততক্ষন আপনার থামার কোন উপায় নেই। আপনাকে চলতেই হবে। যা আছে, তাই নিয়ে চলতে হবে। তারপরে একদিন মুহাম্মদ জাফর ইকবাল স্যার বা তাঁর মতোই গুণী ব্যক্তিত্ব কোন পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে পুরষ্কার দিতে আসবেন, এবং তাঁদের কাছ থেকে সেই পুরষ্কার গ্রহণ করবেন আপনি।
দর্শকসারিতে তখন কারা তালি বাজাবেন জানেন? আপনাকে দুয়োধ্বনি দেয়া সেই মা বাবা ভাই ব্রাদার প্রতিবেশী এবং আত্মীয়স্বজন। তাঁরাই তখন যেচে পরে আপনার পরিচয় দিয়ে গর্ব বোধ করবেন। সেদিন তাঁদের ক্ষমা করে দিয়েন। মানুষ মাত্রই ভুল করে, এবং তাঁরাও ভুল করেছিল।
সেদিন যেন ক্যানভাসে আপনার সেই সফলতার কাহিনী প্রকাশ করতে ভুলবেন না। সেদিন অবশ্যই হেসে বলবেন, "আমি কিন্তু এসএসসি এইচএসসিতে জিপিএ ফাইভ পাইনি।"
দেশে গেলে ফয়সালের মতন আপনারও পাশে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলবো ইন শা আল্লাহ। এবং আপনার গর্বে গর্ব করবোতো অবশ্যই।
আপনার সেইদিনের সফলতার প্রতীক্ষায় রইলাম। আমাকে বেশিদিন যেন অপেক্ষা করতে না হয় সেই দায়িত্ব আপনার।
অনেক শুভ কামনা।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:৩২

আহমেদ জী এস বলেছেন: মঞ্জুর চৌধুরী ,





অনুপ্রেরণামূলক পোস্ট । ধন্যবাদ এমন করে ভাবতে শেখালেন বলে । কাজে আসতে পারে অনেকেরই ।

২| ২৫ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:৪২

মিস্ত্রি সর্দার উরফে বিরাট বিশাল ইঞ্জিনিয়ার কবির আহমেদ মাধব বলেছেন: আমার বালডা লেখছ।

৩| ২৫ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১:০০

নামহীন কাব্যের হিমু বলেছেন: অসাধারণ হয়েছে ভাইয়া

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.