নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
বাংলাদেশে যেমন মূর্খ মৌলবাদীগোষ্ঠী একটা বড় যন্ত্রণার নাম, অ্যামেরিকার সবচেয়ে বড় যন্ত্রণার নাম হচ্ছে হোয়াইট সুপ্রিমিস্টদের সংগঠনগুলো।
হোয়াইট সুপ্রিমিস্টদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এরা চরম বর্ণবাদী। এই কিছুদিন আগেও এরা কালো মানুষদের ধরে ধরে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আনন্দ পেত। বাদামি চামড়ার মানুষদেরতো দেখতেই পারেনা। “White Power” নামে একটা ক্যাম্পেইন চালায়, যার মর্মার্থ হলো দেশটা ভাগ করে ওদেরকে আলাদা একটা রাষ্ট্র দিয়ে দিতে হবে। সেখানে শুধু সাদা চামড়ার লোকেরা থাকবে। এমনকি মাথামোটা ছাগলগুলি সিভিল ওয়ারের জন্যও প্রস্তুত। বেকুবদের দাবি এরা লড়াই করে আরামসে ইউএস আর্মিকে হারিয়ে দিতে পারবে। কারন ওদের প্রত্যেকের বাড়িতে অনেক অনেক অস্ত্র আছে।
আসলেই তাই। একেকটা বেকুব ঘরভর্তি করে রেখেছে এসল্ট রাইফেলে। দুইদিন পরপর শুনবেন স্কুলে, রেস্টুরেন্টে, সিনেমা হলে ইত্যাদি জায়গায় এরা গিয়ে মানুষ মেরে নিজেরাও মরে যাচ্ছে। এদের চাপেই অ্যামেরিকান সরকার কঠিন অস্ত্র আইন করতে পারছে না। লোকাল ভাষায় এই সমস্ত চতুষ্পদকে "হোয়াইট ট্র্যাশও" বলা হয়ে থাকে।
বেত্রাঘাতে আপাতত কোণঠাসা হলেও এখনও শহর থেকে একটু দূরে নিরিবিলি পরিবেশগুলোয় এরা নিজেদের কমিউনিটি নিয়ে থাকে। এখনও মাঝেমাঝেই KKK বা এইরকম কুখ্যাত হোয়াইট সুপ্রিমিস্ট দলগুলোর মিটিং মিছিল হতে দেখা যায়। ওবামা যখন প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন তখন এদের মাথা নষ্ট হয়ে যাবার মতন অবস্থা হয়েছিল। একটা ছেলেতো টিভি ইন্টারভিউতে হাসিমুখে স্বীকার করেছে সে প্রতিদিন হোয়াইট হাউজে চিঠি লিখতো, যেখানে নিগার প্রেসিডেন্টকে গালাগালি করা হতো। কত ধৈর্য্য মানুষের!
এরা প্রচলিত সরকার ব্যবস্থার সমর্থক নয়। এদের বিশ্বাস এইসব ইহুদি ষড়যন্ত্র। জ্বি, বাঙালি একপাল গবেট যেমন সবকিছুতেই ইহুদি নাসারা ষড়যন্ত্র খুঁজে পায়, এবং এক্ষেত্রে এরা যেহেতু নিজেরাই নাসারা, তাই কেবল ইহুদি ষড়যন্ত্র খুঁজে পায়। কালোদেরতো ওরা মানুষই গণ্য করেনা, বুদ্ধিমান, যারা তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবে, এমন মনে করাতো বহুদূর।
এবং এই কয়েক বছরে বাদামি (আমরা) হলুদ (চীনা) চামড়ার লোকেদেরও দেখতে পারেনা। এরা তাদের সব চাকরি নিয়ে যাচ্ছে।
এখন এইসমস্ত গাধা গর্ধবগুলি (হোয়াইট ট্র্যাশগুলির কথা বলছি, সাধারণ সাদা চামড়াগুলোর কথা নয়) হাইস্কুলও পাশ করেনা, এদিকে চিংকু বা ব্রাউনরা সব বিএ এমএ করা পোলাপান। ওদের ফেলে তোদের নিবে কোন গাধা? এই সহজ যুক্তিটাই এই সমস্ত গর্ধবদের মাথায় ঢুকে না। এদের একটাই দাবি, এইদেশ সোনার দেশ ছিল, ইমিগ্র্যান্টগুলিই এসে সব নষ্ট করে ফেলেছে। এদের পূর্বপুরুষেরাও যে ইমিগ্র্যান্ট, এই বোধশক্তিও বলদগুলির নেই।
তো যা বলছিলাম, এদের রাজনৈতিক আদর্শ হচ্ছে কনজার্ভেটিভ, ওরফে রিপাবলিকান, ওরফে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দল।
তাই ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন ক্ষমতায় এসেই সাতটি মুসলিমপ্রধান দেশকে নিষিদ্ধ ঘোষণা দিল, তখন মুসলিমদের পাশাপাশি হোয়াইট সুপ্রিমিস্টরা ছাড়া আর বাকি সবাই মোটামুটি প্রতিবাদ করে উঠলো। ভারতীয় কয়েকজন প্রথমদিকে ইনবিন করছিল, বিশেষ করে যারা মোদি সমর্থক, পরে যখন ক্যানসাসে হোয়াইট ট্র্যাশের গুলিতে ওদের আপনা আদমি মারা পড়লেন, এবং ট্রাম্প ভাই কর্মী ভিসায় কড়াকড়ি আরোপ করলেন, অমনি সবাই কাতারে শরিক হলেন।
এখনও মনে আছে, এয়ারপোর্টে যখন ঐ সাত দেশের মানুষদের আটকে রাখা হয়েছিল, বাইরে তখন সব চামড়ার লোকেদের তীব্র প্রতিবাদ চলছে। মুসলিমদের পাশাপাশি এসে দাঁড়িয়েছিল সাধারণ অ্যামেরিকান খ্রিষ্টান এমনকি ইহুদিরাও। খ্রিষ্টান মেয়েরা হিজাব করে মুসলিম নারীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। এয়ারপোর্টে আজান দিয়ে জামাতে নামাজ পড়া হয়েছিল, এবং পাশে দাঁড়ানো লোকেরা চিয়ার করছিলেন। অথচ কয়েকদিন আগেও প্লেনে ওঠার আগে এক যাত্রী নামাজ পড়ায় সেই প্লেনে উঠতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল এক শ্বেতাঙ্গ।
তো যা বলছিলাম, মূল পয়েন্ট হচ্ছে, হোয়াইট সুপ্রিমিস্টরা একেকজন একেক লেভেলের এক্সট্রিমিস্ট। কোন কোন অঞ্চলে এরা নিজেদের ছাড়া অন্যান্য অঞ্চলের সাদাদেরও দেখতে পারেনা। টেক্সাসেরই কিছু অঞ্চলের রেড নেক নিউইয়র্কের সাদাদের সহ্য করতে পারেনা। সেখানে ইহুদিদের পছন্দ করারতো প্রশ্নই উঠে না।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ইজরায়েলের সাথে আলগা পিরিতি দেখাতে এখন জেরুসালেমে অ্যাম্বেসী সরিয়ে এনেছে। সে ভাল করেই জানতো এতে ফিলিস্তিনিরা ক্ষুব্ধ হবে। সহজ উদাহরণই দেই। এই যে আমাদের দেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে, কাল যদি এরা আস্ত চিটাগং দখল করে রোহিঙ্গাস্তান বানিয়ে বসে, তারপর আগ্রাবাদকে রাজধানী ঘোষণা দেয়, এবং পাকিস্তান এদের ব্যাকাপ দিতে সেখানে নিজেদের একটি অ্যাম্বেসী খুলে বসে, সাধারণ চিটাগংবাসী বাঙালি সেদিন কী করবে? ফিলিস্তিনিদের পরিস্থিতি একদম exactly এটাই। মাতৃভূমি রক্ষার্থে তাঁরা প্রতিবাদ করছে, বিনিময়ে গুলি খেয়ে মরছে। গতকালই পঞ্চাশজন পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন, পুরো রমজান মাস জুড়ে চলবে এই হত্যাযজ্ঞ, এবং বাকি পৃথিবী বিশেষ করে সৌদি আরব তামাশা দেখে হাততালি বাজাবে।
ট্রাম্পের মাথায় কী চলছে বুঝা খুব কঠিন। উত্তর কোরিয়ার সাথে মাঝে রিক্সাওয়ালারমতোন ঝগড়া করলো, মিত্রদের নিষেধাজ্ঞা সত্বেও এই ব্যাটা ইরানের সাথে পারমানবিক চুক্তি থেকে সরে এসেছে, সিরিয়া সঙ্কটে রাশিয়ার সাথে প্যাঁচ লাগিয়ে ফেলছে, এবং এখন ইচ্ছা করেই ইজরায়েলের সাথে এই আলগা প্রেম (যেখানে ট্রাম্পরা (হোয়াইট সুপ্রিমিস্ট) নিজেরাও কিন্তু ইহুদিবিরোধী) স্বাভাবিকভাবেই ফিলিস্তিনিদের ক্ষুব্ধ করে তুলবে। তারপর জঙ্গি আহাম্মকগুলো এখানে ওখানে ঝামেলা পাকাবে। মুসলিমদের মধ্যে ইহুদি বিদ্বেষ চরমে নিয়ে যাবে। কে বিশ্বাস করবে যে ইজরায়েলি জায়নিস্ট ইহুদিরা আসলে আমাদের আইসিস মুসলিমদের মতোই। সাধারণ ইহুদিরাও এইসমস্ত কট্টরপন্থীদের পছন্দ করেনা। এই ব্যাটা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ না লাগিয়ে শান্ত হবেনা। বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর আসনটি এক অবিবেচকের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে, যেমনটা বাংলাদেশের বস্তিবাসীর হাতে ইন্টারনেট। এবিউজ ছাড়া আর কিছুই যে করতে পারবেনা।
তবু আশা রাখি কোরিয়ায় যেমন হঠাৎ করেই শান্তি এসে গেছে, তেমনই কোন মিরাকেল এক্ষেত্রেও ঘটবে। মরে যাওয়া প্রতিটা প্রাণ কারো না কারো শিশু, কারো বাবা, মা, ভাই, বোন। যার যায়, সেই বুঝে তাঁরা কী হারাচ্ছে।
আল্টিমেট ক্ষমতাধরতো উপরে বসে সবই দেখছেন। তিনিই মঙ্গোলদের দিয়ে খিলাফত সাম্রাজ্য ধ্বংস করিয়ে মুসলিমদের কচুকাটা করে সেই মোঙ্গলদেরই মুসলিম বানিয়েছিলেন। তাঁর প্ল্যান যে কী, সেটা যদি মানুষ বুঝতো, তাহলেতো হতোই।
২| ১৬ ই মে, ২০১৮ রাত ১:০৫
অর্ক বলেছেন: ওরা চোরাগোপ্তা হামলার বাইরে কিছু করতে পারবে না! অত্যন্ত ক্ষীণ একটা অংশ। ইউরোপেও আছে। তবে অভিবাসীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ওখানকার সাধারণ মানুষরাও ক্রমেই অভিবাসন ও অভিবাসী বিরোধী হয়ে পড়ছে, তবে তারা মোটেই সহিংস হবে না। কিন্তু অভিবাসীদের শুভাকাঙ্ক্ষী উদার রাজনৈতিক দলগুলোকে তারা সমর্থন করবে না! আমাদের মতো দরিদ্র দেশগুলোর উচিৎ অন্য দেশের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে নিজেরা স্বাবলম্বী হওয়া! আপনার পোস্ট গুরুত্বপূর্ণ, তথ্যবহুল। সচেতনতা গড়ে উঠুক। রাষ্ট্র তার সমস্ত নাগরিকের জন্য নিরাপদ সুখী জীবনের বন্দোবস্ত করুক।
ধন্যবাদ।
৩| ১৬ ই মে, ২০১৮ ভোর ৫:০৮
সোহানী বলেছেন: হাঁ এ পাগল ট্রাম্প কোথা পর্যন্ত যায় সেটার অপেক্ষা। যে চাপা ক্ষোভ ছিল হোয়াইট ট্রাশদের মাঝে তা এখন প্রকাশ্যে। এবং তা বেড়েই চলছে। এভাবে চলতে থাকলেতো মনে হয় চোরাগুপ্তা হামলা বা সাধারন স্কুলে হামলা বেড়েই চলবে। জানি না এ পাগল এর কিভাবে বোধদয় হবে।
৪| ১৬ ই মে, ২০১৮ সকাল ৯:০০
কানিজ রিনা বলেছেন: ট্যাম্পু শক্তের ভক্ত নরমের জম এই জমদূতের
মাথায় সাদা বিষক্ত বিচ্ছু কামড়ায়। তার
তেলেছ মাতি হোল মুসলিমদের দেশের ক্ষমতা
দেখা। ওআইসির সদস্যরা কি বুঝতে পারছে।
ডাবল বুশ পাকিস্তানের হাত করে আফগান
ইরাক দেশ বিদ্ধস্ত করেছে এখন ট্যাম্পু সৌদী
রাস্ট্র হাত করে ইরান শিরিয়া কাতার আরও
মুললিম দেশ গুলকে বিদ্ধস্ত করতে মাথার
বিচ্ছু কামড়াচ্ছে। এই কামর হোল অস্ত্র
ব্যবসার চাইল। শক্তের ভক্ত ট্যম্পু কি সুন্দর
কিমজংউনকে শান্ত রেখেছে। আবার রাশিয়ার
কাছে নম্রতার ভান দেখাচ্ছে। তলে তলে
মুসলিম দেশের বিরুদ্ধে মুসলিমদের লাগিয়ে
অস্ত্র ব্যবসা চালাচ্ছে।
ট্যাম্পু জানে জেরুজালেম অস্থির করে তুললে
মুসলিম রাস্ট্রগুল ক্ষেপবে সে দৌড় দেখার
জন্য জেরু জালেম দখলদারীত্ব জোরদার
করেছে। অনেক ধন্যবাদ।
৫| ১৬ ই মে, ২০১৮ সকাল ১১:০২
রাজীব নুর বলেছেন: সহমত।
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই মে, ২০১৮ রাত ১১:২২
অর্থনীতিবিদ বলেছেন: ইলেকটোরাল কলেজের মারপ্যাচে ট্রাম্পই তো প্রেসিডেন্ট হলো। আমেরিকানরা জেনেশুনেই তাদের স্টেটগুলোতে ট্রাম্পের পার্টিকে বিজয়ী করেছে যাতে ট্রাম্প ক্ষমতায় আসতে পারে। বারাকের নমনীয় নীতি দেখতে দেখতে মার্কিনীরা অতিষ্ঠ হয়ে গেছিলো। এরপর একই দলের হিলারী যখন একই গান গাওয়া শুরু করলো, তখন মার্কিনীরা ভাবলো, সর্বনাশ! দুনিয়ার উপর থেকে তাদের কর্তৃত্ব বুঝি খর্ব হয়ে যায়। ব্যাস, নির্বাচিত করা হলো ট্রাম্পকে। তাই অবিবেচক শুধু ট্রাম্প না, মার্কিনী জনগণ আরো বেশি অবিবেচক।