নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আপনার সৌন্দর্য্য দিয়ে কখনই কোন ছেলেকে আকর্ষণ করার চেষ্টা করবেন না।

০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:২৫

ডেভিড লেটারম্যান পৃথিবী বিখ্যাত অনুষ্ঠান সঞ্চালক। তাঁর অনুষ্ঠানে একবার ঐশ্বরিয়া রাই অতিথি হিসেবে গিয়েছিলেন। বলিউডে তখন সে সাফল্যের তুঙ্গে, দেবদাস সিনেমা দিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত হয়ে উঠতে শুরু করেছে। হলিউডের সিনেমায়ও সুযোগ পেয়েছে। লোকে তাঁর সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ। কিন্তু যেহেতু সে ভারতীয়, এবং আম জনতা অ্যামেরিকানরা নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের বাইরের জগৎ সম্পর্কে রীতিমতন মূর্খ, কাজেই তাঁকে কেউই তেমন চিনে না। ডেভিড লেটারম্যানের শোর মাধ্যমেই মূলত তাঁর পরিচয় ঘটছে।
তো হাসি মজাক করায় অভ্যস্ত ডেভিড লেটারম্যান ঐশ্বরিয়াকে পঁচানোর জন্য বললো, "আচ্ছা, এইটা কী সত্যি যে তুমি তোমার বাবা মায়ের সাথে থাকো?"
ঐশ্বরিয়া হাসিমুখে বলল, "হ্যা।"
লেটারম্যান ভাই তখন বললেন, "এইটা কী ইন্ডিয়াতে খুবই সাধারণ ঘটনা যে বড় বড় ছেলে মেয়েরা তাঁদের বাবা মায়ের ঘরে থাকে?"
পুরো দর্শককুল এখন হোহো করে হেসে দিল। অ্যামেরিকায় ব্যাপারটি খুবই অপমানজনক। ব্যাপারটা অনেকটা এমন যে আমাদের দেশে যদি কেউ দেখে কলেজে পড়া ছেলেকে এখনও মা জুতার ফিতা বেঁধে দেন, মাথার চুল আঁচড়ে দেন, মুখে তুলে খাইয়ে দেন, এমনকি কলেজে ড্রপ করে দেন এবং কলেজ ছুটি শেষে তাঁকে নিজে আনতে যান - তখন সেই ছেলের ক্লাসের বন্ধুবান্ধবগুলি তাকে নিয়ে যেভাবে হাসি ঠাট্টা করে, অ্যামেরিকায় তেমনি কোন গ্রোনআপ কিড যদি বাবা মায়ের বাড়িতে থাকে - ওরা সেই চোখেই দেখে। (এখন অবশ্য ব্যাপারটির অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। প্রচুর ইমিগ্র্যান্টস এসেছে, ওরা এখন বুঝে আমরা এশিয়ানরা আমাদের পরিবারের সাথেই থাকি। বয়স ১৬ হতেই বাধ্যতামূলক গৃহত্যাগ পুরোপুরি অ্যামেরিকান কালচার।)
একাধিকবার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতা ঐশ্বরিয়া হাসি দিয়ে নিজের অপমান ঢাকার চেষ্টা করলেন, কিন্তু বিশ্বখ্যাত ঘন সবুজ ঐ চোখে ক্ষোভ ফুটে উঠলো। দর্শকের হাসির দমক শেষ হতেই তাঁর জবাব, "It’s fine to live with your parents because…ummm….it’s also common in india that we don’t have to take appointments with the parents to meet for dinner Sir!"
একটু আগেই যারা টিটকারি করেছিল, বিশ্বসুন্দরীর অমন জবাবে তাঁরাই মুগ্ধ হয়ে হাততালি দিল।
এরপরেও ডেভিড লেটারম্যান ভাই হালকা পচানোর চেষ্টা করেছিলেন। এবং ঐশ্বরিয়া সেইভাবেই তাঁকে চাতুরতার সাথেই জবাব দিয়েছিল। ক্রিকেটীয় ভাষায় প্রতিটা বাউন্সারে হুক করে ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কেউ যেই মেয়েটিকে চিনতো না, মাত্র সাত মিনিটের মধ্যেই তাঁর ব্যক্তিত্ব ও বুদ্ধিমত্তায় সবাই মুগ্ধ হয়ে গেল। একটি তথ্য দিয়ে রাখি, ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় ঐশ্বরিয়া রাই পুরো ভারতে মেধা তালিকায় দ্বিতীয় হয়েছিলেন। বিউটি এবং ব্রেন একসাথে যায় না - এমন তথ্য যে আহাম্মক কপচায়, তার নিজের ব্রেন তার সাথে যায় না।
কেউ কী সুস্মিতা সেনের কথাবার্তা শুনেছেন? সাধারণ কথাবার্তাতেই তাঁর শব্দচয়ন, তাঁর বুদ্ধিমত্তা, তাঁর ব্যক্তিত্ব যে কাউকে মুগ্ধ করতে বাধ্য।
প্রিয়াংকা চোপড়ার শুধু সিনেমা না, তাঁর কথাবার্তা লক্ষ্য করবেন। বিশেষ করে বিদেশী ইন্টারভিউভিত্তিক শোগুলোতে তাঁর কথোপকথনগুলো। বুঝবেন ঐ মস্তিষ্ক কতটা তীক্ষ্ণ বুদ্ধি ধারণ করে।
খুব ছোটবেলায় একবার এক আর্টিকেল পড়েছিলাম, ভারতীয়রা কেন বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতায় সবসময়ে এগিয়ে - এই নিয়ে গবেষণাভিত্তিক আর্টিকেল। সেখানে জেনেছিলাম, প্রতিযোগীদের দুইটা জিনিস অবশ্যই নিয়ে আসতে হয়। এক, উচ্চতা। যার উপর কারোর হাত নেই। বিশ্বসুন্দরী হতে হলে অবশ্যই লম্বা হতে হবে। দুই, বুদ্ধিমত্তা। যেটির উপর ৫০% হলেও আমাদের হাত আছে। নিয়মিত বুদ্ধি চর্চার মাধ্যমেই যা কেবল ধারালো হয়।
প্রশ্ন উঠতে পারে, সুন্দরী প্রতিযোগিতায় "সৌন্দর্য্য" প্রাধান্য পায় না তাহলে? উত্তর হচ্ছে, পায়, তবে সেটি মুখ্য নয়, গৌণভাবে। বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতায় একেকটি মেয়ে চোখ ধাঁধানো সুন্দরী হয়ে থাকে সত্য, তবে কেবল সৌন্দর্য্যই তাঁদের বিজয়ী করে না। তাঁদের কথাবার্তা, তাঁদের মনুষ্যত্ব বোধ, বুদ্ধিমত্তা ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে তবেই বিচার করা হয়।
স্রেফ সৌন্দর্য্য হয়তো মডেলিংয়ের জন্য প্রযোজ্য, বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতার জন্য নয়।
সৌন্দর্য্য ব্যাপারটা কী? মানুষের শরীরের ২০৬ টা হাড্ডির গঠন কতটা পারফেক্ট, সেটার উপরই আমাদের সৌন্দর্য্য নির্ভর করে। এখন কোন প্রতিযোগী যখন সৌন্দর্য্য প্রতিযোগিতায় আসেন, তখন দেখা যায় তাঁর নাকটা আরেকটু খাড়া হলে তাঁকে আরও সুন্দর দেখাতো। হয়তো তাঁরা চিবুকটা একটু গোল করে দিলে তাঁকে অনেক সুন্দর দেখাতো। এইরকম মাইনর ব্যাপার স্যাপার যেগুলো মেকাপ দিয়ে ঠিক করা গেলে গেল, নাহলে ওরা সার্জারি করে ঠিক করে ফেলে। কিন্তু বুদ্ধিমত্তার উপরতো এক প্রতিযোগী ছাড়া আর কারোর হাত নেই। আপনাকে বুদ্ধিমতী হতে হলে অবশ্যই পড়ালেখা করতে হবে। এবং বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতায় কোন মূর্খ বুদ্ধিহীন প্রাণী কখনও মুকুট জিতেছে এমন নজির নেই।
আমাদের দেশের প্রতিযোগিতায় ফাইনালিস্ট কোন নারী যখন "উইশ করার" মানে বুঝেনা, তখন সেই প্রতিযোগিতার মান নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। যদি প্রথম রাউন্ডে এমন আহাম্মককে বিদায় করা হতো, তাহলে কোন সমস্যা ছিল না। প্রথম রাউন্ডের একেকজন প্রতিযোগীর পরীক্ষা আসলেই পিওর কমেডি। কিন্তু ফাইনালে গিয়ে এমন আহাম্মকীপনা আসলেই বিরক্ত করে। এর আগেরবার জালিয়াত একজনকে বিজয়ী ঘোষণা করে নানা নাটক এবং এইবার এমন বেকুবকে ফাইনালে তুলে দেয়া - বোঝা যায় আমরা এখনও বাহ্যিক সৌন্দর্য্যকেই স্ট্যান্ডার্ড ধরে সুন্দরী নির্বাচন করে থাকি।
এই মানের প্রতিযোগিতা আসলে নারী সমাজকে এগিয়ে নেয়ার বদলে উল্টো আস্ত সমাজের জন্যই বড় বেশি ক্ষতিকর হয়ে উঠে।
আমাদের দেশের নারীদের এগিয়ে নিতে গেলে কী এইরকম মেয়েদের আদর্শ বানাতে হবে?
উল্টো ড. সুসানে গীতি নামের যে মহিলাটি দেশের সেনাবাহিনীর ইতিহাসে প্রথম নারী মেজর জেনারেল হলেন, তাঁকে কী আদর্শ হিসেবে নেয়া উচিৎ না? আমি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চান্সই পেলাম না, সেখানে এই মহিলা একদম মেজর জেনারেল হয়ে গেলেন! স্যালুট! কে জানে, একদিন হয়তো আমাদের দেশের সেনাবাহিনীতে কোন নারী জেনারেলও হবেন! যেই দেশে গত তিরিশ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রীর পদে দুই নারী গদি অদল বদল করেন, সেই দেশের সেনাবাহিনীর জেনারেল নারী না হওয়াটাইতো অস্বাভাবিক।
কেউ হয়তো বলবেন, নিজে সুন্দরী বিয়ে করে বড় বড় ফাপর নিচ্ছেন। আসলে আমার জীবনে নারীভাগ্য খুব একটা খারাপ কখনই ছিল না। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসগুলো করেছি একের পর এক সুন্দরীর সাথে। কিন্তু যাকে বিয়ে করেছি, তাঁকে "কেবল সৌন্দর্য্যের" জন্য বিয়ে করিনি। তাঁর ব্যক্তিত্ব, এবং চারিত্রিক দৃঢ়তার কারণেই আমি ঐভাবে ঝুলে ছিলাম। কেবল সৌন্দর্য্য স্ট্যান্ডার্ড হলে ট্রাস্ট মি, আরও অনেক মেয়েই আশেপাশে ছিল।
কিভাবে জীবনসঙ্গিনী বাছাই করেছি, সেটি আরেক ইস্যু। অন্য একদিন বলা যাবে।
তবে কথাপ্রসঙ্গে বলে রাখি, ব্যক্তিত্ব মানে এই না যে মানুষের সাথে রূঢ় আচরণ করে বেড়ানো। আমাদের দেশে এইটা একটা বিশাল মিসকনসেপ্শন। লোকজন বেয়াদবি আর ব্যক্তিত্বকে গুলিয়ে ফেলে। সঠিককে সঠিক মানা, তাঁর পক্ষ্যে সবার বিপরীতে গিয়ে হলেও স্ট্যান্ড নেয়া, এবং খারাপকে খারাপ মানাটাই আমার চোখে ব্যক্তিত্বের দৃঢ়তা। এখন কেউ বেঠিক কথা বলছে, তাই তাঁকে শুধরাতে গিয়ে আমি বেয়াদবি (যা একটি বেঠিক আচরণ) করে ফেললাম, এইটা ব্যক্তিত্ব না। আরও ডিটেইলে বলার আছে। আজকে না।
উঠতি বয়সী আপুদের অনুরোধ করছি, একটা ব্যাপার অবশ্যই মাথায় রাখবেন। আপনার সৌন্দর্য্য দিয়ে কখনই কোন ছেলেকে আকর্ষণ করার চেষ্টা করবেন না। ওটা একদিন অবশ্যই নষ্ট হবে। বয়সের স্রোত প্রতিদিন একটু একটু করে আপনার সৌন্দর্য্য ধুয়ে নিয়ে যাবে। বরং নিজের বুদ্ধিমত্তা (পড়ালেখা), নিজের ব্যক্তিত্ব গঠনে সময় ব্যয় করুন। ওসব কবর পর্যন্ত আপনার সাথে থাকবে। যে ওগুলোর প্রেমে পরে আপনাকে ভালবাসবে, আপনি কবরে যাওয়া পর্যন্ত সে আপনার প্রেমে বুদ থাকবে।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:২৯

সনেট কবি বলেছেন: কিছুটা পড়লাম।

২| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:৫১

আরোগ্য বলেছেন: মেকাম করে বুদ্ধি বাড়লে মন্ত্রীর সবাই মেকাপ করতো।

৩| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:০৪

সাগর শরীফ বলেছেন: যাই বলেন আমার কিন্তু লেখাটা পড়ে মজা লাগল !

৪| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৩৮

মেমননীয় বলেছেন: এটা কৌতুক কিনা জানিনা, তবে সুন্দরী নারীরা একটু বেশীই বোকা হয়ঃ

সুন্দরী অভিনেত্রী মেরিলিন মনরো আইনস্টাইনের প্রতি দুর্বল ছিলেন।

তাই এক দিন মনরো আইনস্টাইনকে বিয়ের প্রস্তাব দিলেন এভাবে, 'চলুন না, আমরা বিয়ে করে ফেলি?

তাহলে আমাদের সন্তানেরা হবে সৌন্দর্য ও জ্ঞানে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সন্তান।

ওরা দেখতে আমার মতো আর বুদ্ধিতে আপনার মতো।

আইনস্টাইন তৎক্ষণাৎ বললেন, 'আর যদি উল্টোটা হয়?
দেখতে আমার মতো আর বুদ্ধিতে আপনার মতো!

৫| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৫৩

সূর্যালোক । বলেছেন: আচ্ছা মনে থাকবে ।

৬| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:৩৫

রাজীব নুর বলেছেন: রাজধানীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সপ্তাহব্যাপী গণসংযোগ কর্মসূচি শুরু করেছে আজ।

৭| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৫

কে ত ন বলেছেন: কিন্তু আমাদের মত বুদ্ধিহীন পুরুষেরা তো নারীর সৌন্দর্য ছাড়া অন্য কিছুর মূল্য দিতে শিখিনি। একটা ছেলে একটা মেয়ের প্রেমে পড়ে প্রথমত তার রূপ দেখে। রূপবতী মেয়েরা যত প্রেমের প্রস্তাব পায়, বুদ্ধিমতী বা বিদ্বান মেয়েরা তা পায়না। বিয়েবাড়িতে একটা সুন্দরী মেয়ে সেজেগুজে গেলে তার পরের দিন থেকে ঐ মেয়ের বাবা মায়ের জীবন ওষ্ঠাগত করে ফেলে তার আত্মীয়েরা। পারলে ছিনতাই করে নিয়ে যায় নিজের ছেলে বা ভাইয়ের জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.