নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
প্রতিদিন আমরা অনেক মানুষের সাথে মেলামেশা করি। এদের কাউকে কাউকে আমরা একেবারে গুরুতুল্য মনে করি, বেশিরভাগকেই ফালতু ক্যাটাগরিতে ফেলে দেই। কখনও কী গভীরভাবে চিন্তা করে দেখি যে যাদের পছন্দ করি, কেন করি? উত্তর হচ্ছে, তাঁদের পার্সোনালিটি আমাদের আকর্ষণ করে। পার্সোনালিটি এমন একটি ব্যাপার, যা ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। সমস্যা হচ্ছে, একেকজনের কাছে একেক ধরণের পার্সোনালিটি আকর্ষণীয় হয়ে থাকে। যে সন্ত্রাসী হতে চায়, তার হিরো হয় কালা জাহাঙ্গীর, সুইডেন আসলাম, এরশাদ শিকদারের মতন লোকজন। ডিপজল এদের প্রিয় অভিনেতা। গালাগালি, কাটাকাটি, মারামারি, মেয়েদের শরীর নিয়ে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি ইত্যাদি এদের প্রিয়। নেগেটিভ পার্সোনালিটির লোকজন ছাড়া এরা বাকিদের গণাতেই ধরে না।
আবার যে ভালমানুষ হতে চায়, সত্যবাদী, নিরহংকার, সৎ মানুষদের বা সহজ কথায় পজিটিভ পার্সোনালিটির লোকজনকে সে ভালবাসে।
যেহেতু আমরা বেশিরভাগই চেষ্টা করি ভাল মানুষ হতে, তাই ভাল মানুষের ব্যক্তিত্বের কিছু বৈশিষ্ট্যে আলোকপাত করবো। এবং দেখবেন, কত সহজে এসব গুন চর্চার মাধ্যমে আপনার নিজের ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন এবং উন্নতি হবে।
১. সবার আগে নিজেকে ইউনিক ভাবুন। আপনি যা, তাতে স্থির থাকুন, একটি নীতিতে কনসিস্ট্যান্ট থাকুন। হিপোক্রেসি করতে যাবেন না যেন। ডাবল স্ট্যান্ডার্ড নীতি নেয়ার চেষ্টা করবেন না। অমুক আমার শত্রু তাই তার জন্য এক নীতি, আর তমুক আমার বন্ধু, তাই তাঁর জন্য আরেক রীতি - আপনার এমন অভ্যাস থাকলে বাস্তবে নিজেকে ফালতু বানানো ছাড়া আর কিছু করতে পারবেন না।
সবাইকে খুশি করে চলতেই হবে এমন কোন শর্ত নেই। যদি সেটা করতে যান, তাহলে নিজেকেই হারিয়ে ফেলবেন। এই কাজটা অবশ্যই করতে যাবেন না।
কারোর সাথে ঝামেলা করতে চান না? খুবই ভাল। যদি খারাপ লাগে কোন কিছু, তবে সেটা এড়িয়ে চলুন। তাহলেই দেখবেন ঝামেলাও এড়িয়ে ফেলেছেন। কিন্তু নিজের সাথে কন্ট্রাডিক্ট করে এমন কিছুর সাথে তাল মেলাতে গেলে আপনি নিজেই হারিয়ে যাবেন।
উদাহরণ দিই। ধরুন শফিক এবং রফিক আপনার বন্ধু। শফিক সুপার ধার্মিক, রফিক সুপার নাস্তিক। আপনি মধ্যবর্তী। এখন দুইজনকে মন জুগিয়ে চলতে গেলে আপনি ধরা খাবেন। আজকে আপনি শফিকের সাথে তাল মিলালেন, কালকে রফিকের সাথে, মাঝে দিয়ে রফিক শফিক যার যার অবস্থানে স্থির থাকবে, আপনি হয়ে যাবেন জলে ভাসা পদ্ম।
আপনি যদি দুই বন্ধুর সাথে ঝামেলা এড়াতে চান, তাহলে আপনার উচিৎ ওদের সাথে পুরো ধর্মীয় টপিকটাই এড়িয়ে ভিন্ন টপিক নিয়ে বন্ধুত্ব এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। যখন এই টপিক উঠবে, আপনি স্পষ্ট করে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করবেন, এছাড়া নিজে থেকে এই টপিক কখনই তুলবেন না।
সবাইকে তেল দিয়ে চলতে গেলে নিজে সস্তা হয়ে যাবেন। দেশের রাজনীতিবিদদের দেখেন। নেতাদের দেখেন। কেন তাদের বেশিরভাগকে সম্মান করতে ইচ্ছা করেনা? যাদের সম্মান করেন, কেন করেন? এই পয়েন্টের কারণেই।
২. সবাইকে সম্মান দিতে শিখুন। বিনয়ী হন। সবাই যেন আপনাকে আপন মনে করে এমন কমফোর্ট দিন তাঁদের। হয়তো আপনি অনেক শিক্ষিত হয়ে গেছেন, হয়তো আপনি অনেক বড় চাকরি করেন, বিশাল টাকা পয়সার মালিক হয়েছেন, কিন্তু তাই বলে রেস্টুরেন্টের ওয়েটার, বা আপনার বাড়ির দারোয়ানকে অসম্মান করবেন না। এমনকি পথের ভিখিরিকেও আপনি যখন ভিক্ষা দিবেন না, তখনও হাসিমুখে বলুন আপনাকে মাফ করতে। আপনি ভিক্ষায় বিশ্বাসী না হলে সেটাও প্রয়োজনে বলুন। কিন্তু "যা ভাগ" বা "গেলি" বলে গালাগালি করলে আপনি নিজেকে ওর চেয়েও নিচে নামিয়ে আনবেন। গতকালকে বৃষ্টি নামের এক আট নয় বছর বয়সী ফুলওয়ালী মেয়ের ইন্টারভিউ শুনে চোখ জ্বলে উঠেছিল। মেয়েটি ফুল বিক্রি করে সংসার চালায়। এক হারামজাদা "ভদ্রলোক" নিজের প্রেয়সীকে নিয়ে ফুল নিতে এসে দাম না দিয়ে চলে যাচ্ছিল। মেয়েটি ফুলের দাম চাইলে দামতো দিলই না, উল্টো থাপ্পড় দিয়ে গেল। আরেকবার আরেক জানোয়ার স্ত্রী, শ্যালিকা ইত্যাদি নিয়ে এসে তাঁর কাছ প্রচুর ফুল নিয়ে মাত্র পাঁচ টাকা দিয়ে ধমক দিয়ে চলে গিয়েছিল। এইসমস্ত তথাকথিত ভদ্রলোক আসলে একেকটা শূকর ছানা। এদের খোঁয়াড়ে থাকা উচিৎ ছিল। ছাড়া পেয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে।
যখন আপনি অন্যকে সম্মান করতে শুরু করবেন, তখন লোকে আপনাকেও সম্মান করবে। যখন আলগা ভাব নেয়ার চেষ্টা করবেন, তখন লোকেও আপনাকে গালাগালি করবেন।
এর চর্চা করতে হলে সবার আগে আপনাকে একজন ভাল শ্রোতা হতে হবে। যখন কেউ আপনার সাথে কথা বলবে, খুব মনোযোগ দিয়ে তাঁর কথাবার্তা শুনুন। কেউ কথা বলছে, আপনি মোবাইলে ফেসবুকিং করছেন, আর হু হা শব্দ করছেন, এমন শ্রোতা না। এমনভাবে কথা শুনবেন যেন শ্রোতা বিশ্বাস করে তাঁকে আপনি যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন। কখনই তাঁর কথার মাঝখানে বাঁধা দিবেন না। তাঁর কথা পুরোপুরি শোনার পরে তারপরে নিজের পয়েন্ট তুলুন।
যদি আপনার ইন্টারেস্টের টপিক না হয়ে থাকে, তাহলে আগেই বলে দিন আপনার অন্য কোন কাজ আছে। সম্মানের সাথে, বিনয়ের সাথে সরে পড়ুন। তবু বাজে আচরণ করবেন না।
তাঁর কথায়/মতবাদে আপনি সহমত না হলেও তাঁর বিশ্বাসকে সম্মান করুন। যদিও আপনি ১০০% নিশ্চিত তিনি ভুল, তারপরেও কখনই কোন অবস্থাতেই আপনি তাঁকে আঘাত দিয়ে অসম্মান করে নিজের চেয়ে অনেক নিচু লেভেলে নেমে গিয়ে ঝামেলা বাড়াবার চেষ্টা নিবেন না।
হ্যা, এখানে একটি ব্যাপার অবশ্যই মাথায় রাখবেন। বাঙালি বিনয়কে দুর্বলতা মনে করে। মাথায় উঠে বসার চেষ্টা করবে কেউ কেউ। এদের ক্ষেত্রে চেষ্টা করবেন জিরো টলারেন্স রুল এপ্লাই করতে।
"আপনার বৌয়ের/মেয়ের চেহারা এমন কেন?" এই টাইপ প্রশ্ন করতে আসলে নিজের ১১০% সামর্থ্য নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ুন এদের ঝেটিয়ে বিদায়ের ব্যাপারে। আপনাকে অপমান করে পার হয়ে যেতে দিবেন না। জীবন থেকে ওদের চ্যাপ্টার মুছে ফেলার আগে নিজের ক্ষোভ মিটিয়ে নিবেন।
৩. গসিপ করবেন না। গীবত গাইবেন না। যার যার ব্যক্তি জীবনে যা ঘটছে, সেটা তাঁদের প্রাইভেট ব্যাপার। আপনার কী? আপনি আপনাকে নিয়ে ব্যস্ত থাকুন। হ্যা, যদি সে এগিয়ে এসে আপনার সাথে আলোচনায় অংশ নেয়, আপনি পূর্ণ সততার সাথে তাঁকে সাহায্য করুন। একই সাথে তাঁর বিশ্বাসের মানটিও রাখতে শিখুন। তিনি আপনাকে বিশ্বাস করেছেন, আপনি সবাইকে রসিয়ে রসিয়ে তাঁর সিক্রেট বলে বেড়ালেন, তাতেই নিজেকে ব্যক্তিত্বহীন করে ফেলবেন।
৪. সবসময়ে নেগেটিভ মনোভাব নিয়ে থাকবেন না। লোকজন সম্পর্কে পজিটিভলি চিন্তা করতে শিখুন, দেখবেন আপনি নিজেও পজিটিভ কাজ করছেন। ও এইটা করেছে, কারন ওর মনে এই ছিল, ঐ ছিল এবং তারপর দশ বিশ হাত লম্বা গবেষণাপত্র জমা না দিয়ে পজিটিভলি ভাবতে শিখুন। বেনিফিট অফ ডাউট দিন। চেষ্টা করুন যতক্ষণ না ১০০% নিশ্চিত হচ্ছেন, ততক্ষন তাঁর সম্পর্কে কোন রকম নেগেটিভ চিন্তা মনে না আনতে।
সালমান সুস্মিতা দুইজন বন্ধু। মাঝেমাঝে তাঁদের কথাবার্তা হয়। এর বেশি আপনি কিছুই দেখেননি। এখন আপনি ধরেই নিয়েছেন ওদের মাঝে "লাইন" আছে, ওরা রুম ডেটিং করে বেড়ায়। শুধু ধারণাই করেননি, আপনি সেটা সবাইকে বলেও বেড়াচ্ছেন। তাহলেই আপনি সস্তা পার্সোনালিটির ব্যক্তি হয়ে যাবেন। যদি তাঁদের মধ্যে এমন সম্পর্ক না থাকে, তাহলে মাঝে দিয়ে আপনি সালমান ক্যাটরিনার সম্পর্কের মধ্যে ঝামেলা সৃষ্টি করবেন।
আর যদি আসলেই তাঁদের মধ্যে রুম ডেটিং হয়ে থাকে, সেটাও তাঁদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। যতক্ষণ না ক্যাটরিনা আপনার নিজের বোন, ততক্ষন আপনার নাক গলানোর কিছু নেই। আপনি আপনার জীবন নিয়ে ব্যস্ত থাকুন।
৫. নিজের সমালোচনা করতে শিখুন। অন্যের দোষ না খুঁজে নিজের দোষ খুজুন। এইটা সবচেয়ে বেশি উপকারী। আপনাকে অবশ্যই নিজের দোষগুলোকে খুঁজে বের করে পয়েন্ট আউট করতে হবে। তারপর সেটার উপর কাজ করতে হবে। যদি মনে করেন আপনি পারফেক্ট, তাইলেই ধরা খাবেন।
নিজের উদাহরণ দেই। একটা সময়ে বন্ধুদের আড্ডায় গসিপ উঠতো। এবং গসিপ এমন এক মশলা, যা জিভে জল আনে। একদিন দেখি আমার নিজেরও সেই অভ্যাস হয়ে গেছে। বহু বছর আগে গত হয়েছে এমন এক বান্ধবীকে নিয়ে আলতু ফালতু রসিকতা করছি এবং শুনছি। হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছি। মেয়েটা এখন স্বামী সংসার নিয়ে সুখে আছে। আমার কী? আমাদের কথায় তাঁর কি আসে যায়? হ্যা, খুব বিশ্বাস করেছিলাম এক সময়ে, যেই আঘাত পেয়েছিলাম, সেটা আমাদের সব বন্ধুদের জীবন তছনছ করে দিতে পারতো। কিন্তু লেট্স মুভ অন। তাই প্রথম কাজ যেটা করলাম তা হচ্ছে, নিজের জিহ্বাকে কন্ট্রোল। নো মোর গসিপ। সেটা যাকে নিয়েই হোক। ফুলস্টপ!
আরেকটা দোষের কথা বলি, খুব ছোটবেলায় বয়স আট নয় বছর, তখন বাড়ির কাজের লোককে মারধর করতাম। কেন করতাম জানি না। হয়তো ঐ বয়সে সাইকো ছিলাম। বয়স হবার পর যেই ব্যাপারটা উপলব্ধি করেছি, অমনি পূর্বজন্মের পাপের প্রায়শ্চিত্ত শুরু করে দিলাম। এখন এমনও হয় যে আমার নিজের বোঝা আমি নিজে তুলি। কাজের লোক লজ্জায় জিভ কামড়ে ধরে বলে, "আমাকে দেন।"
কিন্তু কেয়ামতের দিনে আমার পাপের বোঝাতো আর সেই লোকটা বহন করবে না।
এখনও অনেক দোষ আছে। যেমন আলসেমি। না পারতে আমি কোন কাজ করতে চাই না। এই দোষটা জন্ম থেকেই আছে, এখনও আছে, ভবিষ্যতেও দূর হবে বলে মনে হচ্ছে না। তবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বাকিগুলো নিয়েও কাজ চলছে।
৬. লেট্স মুভ অন। অতীতে কারোর সাথে তিক্ত সম্পর্ক ছিল? এখন মুখ দেখাদেখি বন্ধ? খুবই ভাল কথা। আপনাকে বলছি না সব ভুলে গিয়ে মাফ করে দিয়ে গলাগলি করতে। একজন বুদ্ধিমান মানুষ ছোবল খাবার পরেও দ্বিতীয়বার সাপের গর্তে হাত ঢুকায় না। আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে অতীত অভিজ্ঞতা। কিন্তু তাই বলে আজীবন শত্রুর পেছনে লেগে থাকারও কোন মানে হয় না। আপনার নিজের সময়ের যেমন অপচয়, তেমনি শত্রুকে এত পাত্তা দিয়ে আপনি বুঝিয়ে দিচ্ছেন যে ওর গুরুত্ব আসলেই অনেক যে আপনি আপনার বহুমূল্যবান সময় তার পেছনে ব্যয় করছেন।
এই কোয়ালিটি আপনার থাকতেই হবে। অনেকেরই নাই। ফেসবুকেই দেখি এমন। উদাহরণ দেয়া যেতে পারে সাবেক প্রেমিকা থেকে শুরু করে এক কালের বন্ধু হয়ে পাকিস্তান রাষ্ট্র পর্যন্ত। সাবেক প্রেমিকা বা পুরানো বন্ধু এখন শত্রুর উদাহরণ আশা করি ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই। তবে পাকিস্তানের ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করা যাক।
পাকিস্তানের সাথে আমাদের সম্পর্ক ভেঙেছে ১৯৭১ সালে। তিরিশ লাখ প্রাণের বিনিময়ে। সাতচল্লিশ বছর হয়ে গেল। আমাদের বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, "তোমাদের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। তোমরা সুখে থাকো, আমাদের সুখে থাকতে দাও।"
তারপরেও আমাদের অনেকে অবসেস্ড হয়ে থাকে তাদের ব্যাপারে। হু কেয়ার্স ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী হয়েছে নাকি নাওয়াজ শরীফ? আমার সাথে তাদের কোনই সম্পর্ক থাকার কথা না, আমি কেন ওদের রাজনীতি, ওদের সমাজনীতি, ওদের টক শো ইত্যাদি নিয়ে রীতিমতন গবেষণা করবো? আমরা কী ওদের কম্পিটিটর হিসেবে নিচ্ছি? তাহলে কেন এত গবেষণা? সরকার যদি ওদের সাথে আমাদের কূটনীতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে চায়, স্বাগতম। আমি যদি ব্যক্তিপর্যায়ে ওদের পণ্য কিনতে না চাই, স্বাগতম। এইগুলোতে আমার ব্যক্তিত্ব বরং শক্তিশালী হবে। তিরিশ লক্ষ প্রাণকে ভোলার প্রশ্নই উঠেনা। কিন্তু জোঁকের মতন ওদের পিছনে লেগে থাকলে নিজেকেই সস্তা করা হবে। আমার গবেষণায় কী লাভটা হবে? ওদের ঘৃণা? সেটা যে করার সে করবেই, ওদের তিরিশ লক্ষ কারন আছে, আপনার গবেষণা তাতে যোগ বিয়োগ কিছু হবেনা।
আর যারা দালালি করার তারা দালালি করবেই। পাকিস্তান ওদের পাছায় লাথি দিলেও ওরা মুচকি মুচকি হাসবে। আপনার গবেষণায় ওদের কিছুই যাবে আসবে না। তাইলে কেন শুধুশুধু সময়ের অপব্যয় করে ওদের এত গুরুত্ব দেয়া?
৭. নিজেকে দামি ভাবতে শিখুন। নিজেকে সম্মান করুন। হতে পারে আপনি খুব বড় চাকরি করেন না, হতে পারে আপনার বিদ্যার দৌড় বেশি না, টাকা পয়সাও কম। কিন্তু নিজেকে নিজের চারিত্রিক দৃঢ়তার জন্য, নিজের সত্যবাদিতার জন্য সম্মান করতে শিখুন। নিজের চোখে নিজেকে কখনও নামতে দিবেন না।
কোন যুবক এসে আইলাভ ইউ বলে আপনার নগ্ন ছবি চাইলো, অথবা আপনাকে রুমে ডাকলো। অমনি আপনি ধেই ধেই করা নাচতে নাচতে "ট্রু লাভ" মনে করে সব চাহিদা পূরণ করলেন। তাহলেই আপনি নিজেকে সস্তা বানিয়ে ফেললেন। ছেলেটি আপনাকে ভালবাসলে আপনাকে বিয়ে করবে। পুরো দুনিয়ার সাথে লড়ে হলেও আপনার গলায় মালা দিবে। যদি আগেই শরীরের স্বাদ পেয়ে যায়, তাহলে ৯০% চান্স আছে সে সঠিক সময়ে সটকে পড়বে। নিজের আশেপাশের লোকজনের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। বিশ্বাস না হলে একদিন ঠিকই মিলিয়ে নিবেন।
গার্লফ্রেন্ডকে খুশি করতে বাপ মায়ের পকেট মেরে দিলেন। "বেবি" ডাক শোনার জন্য দামি রেস্টুরেন্টে নিয়ে গিয়ে ধরা খেলেন। এবং সময় মতন দেখবেন বেবি হাওয়া হয়ে গেছে। সেটা আপনার ব্যক্তিত্বের দুর্বলতার জন্যই। বরং আপনার গার্লফ্রেন্ডকে দেখান আপনার আসল রূপ। আপনার সামর্থ্য নেই ফাইভস্টারে খাওয়ানোর, আপনি খাওয়াবেন না। আপনার ব্যক্তিত্বের প্রেমে ফেলার চেষ্টা করুন, টাকা পয়সার নয়। ওটা করতে গেলে আপনার চেয়ে মোটা মানিব্যাগওয়ালা কারোর সাথে বেবি চলে যাবে। আপনি তখন বন্ধুবান্ধবের হাসি মজাকের পাত্র হবেন।
আমার দাদা ছিলেন কাস্টমস সুপারিন্টেন্ডেন্ট। লাখ লাখ টাকা ঘুষ খাওয়া যেত। দুই পাঞ্জাবি এবং দুই লুঙ্গির বেশি কখনও পরিধান করতেন না, বাড়িতে মেহমান আসলে বেলা বিস্কুটের বেশি কিছু দিতে পারতেন না। জমিদার পূর্বপুরুষের জমি বিক্রি করে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করিয়েছেন, তবু ঘুষের টাকায় নিজেকে বিক্রি করেন নি। কত টাকায় নিজেকে বিক্রি করবেন? সেই টাকাতো একদিন ফুরাবেই। কবরেতো শূন্য হাতেই যেতে হবে। কিন্তু প্রতিদিন আয়নায় নিজের চোখে গর্বভরে চোখ দিয়ে তাকাতেতো আর পারবেন না। নিজের সম্মান, নিজের গর্ব, নিজের ঈমানকে কখনই সস্তা বানাবেন না। তাহলেই দেখবেন আপনার ব্যক্তিত্বের সামনে কেউ দাঁড়াতে পারবে না। আপনার মৃত্যুর তিরিশ বছর পরেও আপনার নাতি গর্বভরে আপনার গল্প সবাইকে শোনাবে।
৮. নিজের কনফিডেন্স বাড়াতে যা দরকার তা করুন। পড়াশোনা করুন, লোকের সাথে কথা বলুন, তাঁদের কথাবার্তা, আচার ব্যবহার থেকে ভাল দিকগুলো শিখুন। যত জানবেন, তত আপনার কনফিডেন্স বাড়বে। আর যত আত্মবিশ্বাসী হবেন, সেটা আপনার ব্যক্তিত্বে ফুটে উঠবে। কখনই মনে করবেন না আমি বুয়েটের ছাত্র, সে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হয়ে আমাকে শেখাতে এসেছে? তাহলেই আপনি ফালতু মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলবেন। বরং এইটা মাথায় রাখুন, আপনার থেকে জন্ম নেয়া সন্তানের কাছেও আপনার শেখার অনেক কিছু আছে।
৯. আরও অনেক কিছু বলার আছে। কিন্তু লেখা অনেক বেশি লম্বা হয়ে যাবে। সব শেষে এই পয়েন্টটা বলি, সবসময়ে ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াবেন। দুনিয়া ওলট পালট হয়ে গেলেও, নিজের আত্মীয়স্বজন, বন্ধু বান্ধব এমনকি নিজের বিরুদ্ধেও যদি ন্যায়ের জন্য যেতে হয়, যান। আমার নিজের প্রিয় রাজনৈতিক দল অন্যায় করছে, আমি নিরপেক্ষ ভং ধরে নিলাম, তাহলে ধরেই নিতে হবে আমি হিপোক্রেট। আমার কওমি মাদ্রাসায় শিক্ষক ছাত্রদের ধর্ষণ করছে, আমি না শোনার ভান করলাম, আমি হিপোক্রেট। আমাকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে যেতেই হবে।
ন্যায় বিচার অনেক সময়েই আপনি করতে পারবেন না। কিন্তু আপনি আপনার পক্ষ থেকে যেটুকু সম্ভব সেটুকু করুন। তাহলেই দেখবেন লোকজন আপনাকে পছন্দ করবে। আপনাকে সম্মান করবে। হয়তো গালাগালিও করবে কেউ কেউ, নোংরা মানসিকতার লোকজনেরতো আর অভাব নেই। কিন্তু দিনের শেষে আপনি নিজে সুখী থাকবেন। আপনার বিশ্বাস থাকবে, আপনি পজিটিভ ব্যক্তিত্বের একজন মানুষ বলে।
২| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ২:৫৪
আরোগ্য বলেছেন: অর্থবহ ও শিক্ষণীয় একটি পোস্ট। তবে বিশ্লেষণ একটু ছোট করে কয়েকটা পয়েন্ট বাড়ালে আরও ভালো হত ভালো লিখেছেন।
০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৩:৫১
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: বিশ্লেষণ না করলে লোকে আবার উল্টো বুঝে ভুল শিক্ষা নিয়ে থাকে।
৩| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৮:১৬
সনেট কবি বলেছেন: কিছুটা পড়লাম।
৪| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:০৫
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ পোষ্টের জন্য।
আচ্ছা, আপনি এগুলো মেনে চলেন তো?
০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৫৪
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: পুরোটাই। আমার ফিলোসফি হচ্ছে কাউকে কিছু শেখানোর আগে বিদ্যাটা নিজে এপ্লাই করে দেখা। যদি আমি পারি, তাহলেই অন্যকেও করতে বলি। যা আমি পারিনা, সেটা অন্যের চেয়েও এক্সপেক্ট করিনা।
৫| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:৩৬
আরজু পনি বলেছেন: খুবই ভালো পোস্ট। তবে পড়তে একটু কষ্ট হয়েছে।
পয়েন্টগুলোর মাঝে একটু ফাকা রাখলে পড়তে আরাম লাগতো।
৬| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:০৮
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: অনেক ভাল লিখেছেন।পড়ে ভাল লাগল।
৭| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪২
আহমেদ জী এস বলেছেন: মঞ্জুর চৌধুরী,
নিজেকে সবার কাছে গ্রহনযোগ্য করে তোলা আর পার্সোনালিটি ডেভেলপমেন্ট মনে হয় এক কথা নয় । বেশ কিছু তফাৎ আছে মনে হয় । জানলে ভালো লাগতো ।
০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৫৭
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: লেখাটি নিজেকে "সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য" নয়। ভাল করে পড়ুন। প্রথমেই বলা হয়েছে যে সবাইকে খুশি করে চলার চেষ্টা করা যাবেনা। নিজের বিশ্বাসে স্থির থাকতে হবে। কিছু লোক এতে অসন্তুষ্ট হলে হোক, নিজেকে আলাদা করে ভাবতে হবে। সেটাই পার্সোনালিটি ডেভেলপমেন্ট। ধন্যবাদ।
৮| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:১৬
শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: সমাজে নিজেকে উন্নয়নের জন্য আত্মু উন্নয়ন জরুরী।
পোষ্টে প্লাস।।
০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৫৭
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ।
৯| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩০
আতোয়ার রহমান বাংলা বলেছেন: অনেক ভালো লিখেছেন। ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ২:৪৯
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: সবাইকে সম্মান দিতে শিখুন। বিনয়ী হন।
এটুকু হলেই পৃথীবিতে অর্ধেক সমস্যা শেষ হয়ে যেত ।