নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফালতু বাত - ১

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:২২

প্রতিদিন এমন কিছু ঘটনা ঘটে যা নিয়ে দশ হাত লম্বা লেখার কোন মানে হয় না। আবার ইগনোর করলেও সেগুলি ভুলে যাব দ্রুত। অথচ ব্যাপারগুলি মজার। তাই ভাবছি, ওসব নিয়েই একটা সিরিজ লিখবো। যেহেতু এগুলো সব ফালতু ঘটনা, তাই এর নাম দিলাম #ফালতু_বাত। ইচ্ছা করলে পড়তে পারেন, ইচ্ছা করলে "ফালতু বাত মাত কারো" বলে ইগনোরও করতে পারেন।

গতকাল ছেলেকে মন্টিসরি থেকে আনতে গেলাম। এখন ডে লাইট সেভিংয়ের জন্য ঘড়ির কাঁটা এক ঘন্টা পিছিয়ে গেছে। মানে সন্ধ্যা এখন আগে আগে হয়ে যাচ্ছে। তো, পুত্র বেচারা তাঁর আউটডোর একটিভিটি শেষে বন্ধুবান্ধবের সাথে টিভি দেখছিল। "Wheels on the bus go round and round...."
আমি যেতেই পুত্র চাক্কা ঘুরানো থামায় আমার দিকে হাসিমুখে দৌড়ে এলো।
যেহেতু "আউটডোর একটিভিটি" ছিল, তাই তাঁর সারা হাত, জামা, প্যান্ট সব মাটিতে মাখামাখি। টিচাররা বেচারার হাত পানি দিয়ে কতটুকু ধুয়েছেন জানিনা, আমার কাছে বেশ নোংরা লাগলো। তাই তাঁকে নিয়ে বাথরুমে হাত ধোঁয়াতে নিয়ে গেলাম।
ভাল মতন সাবান দিয়ে রগড়ে রগড়ে ধোয়ার পর হাত মুছতে বেরোতেই একটি মেয়ে তাঁর বাবাকে বললো, "বাবা! এই ছেলে আমাকে আজকে মেরেছে!"
আফ্রিকান অ্যামেরিকান মেয়েটা সাইজে আমার ছেলের চেয়ে ছোট। কিন্তু তাঁর আফ্রিকান অ্যামেরিকান পিতা দৈর্ঘ্যে প্রস্থে আমার চেয়ে কমসেকম আড়াই থেকে তিনগুন বড় হবেন। একে দেখেলেই যে কারোর মনে হবে লোকটার জীবনের প্রথম লক্ষ্য ছিল ডব্লিউ ডব্লিউ ইর রেসলার হয়ে আন্ডারটেকারের বিরুদ্ধে রেসলম্যানিয়ায় হেল ইন আ সেল লড়বে। পরিবারের বড় ছেলে হওয়ায় নিজের সেই স্বপ্নের বিসর্জন দিয়ে বর্তমান জীবন বেছে নিয়েছে। এখন মেয়েকে মন্টেসরিতে আনা নেয়া ছাড়াও কিছু একটা করে খায়।
পুত্রের উপর মেজাজ খারাপ হলো। এক হচ্ছে, যেকোন বয়সে মারামারি করা খুবই খারাপ। এই নিয়ে তাঁকে নিয়মিত ধমকানো হয়, তারপরেও দেখা যায় খেলার সময়ে মাঝেমধ্যে অমুক তমুককে মেরে দিয়েছে।
তবে তারচেয়ে বেশি মেজাজ খারাপ হলো এই কারনে যে পিটাবিই যখন, ভিকটিমের বাপ দেখে পিটাবি না? এই ব্যাটা ফুঁ দিলেই তোর বাপের মতন দশটা ছেলে বাতাসে উড়ে যাবে।
যাই হোক - আমি পুরোপুরি না শোনার ভঙ্গি করলাম। পেপার ন্যাপকিন নিয়ে এমন ব্যস্ত হয়ে গেলাম যেন আমি এবং আমার ছেলের এই পেপার ন্যাপকিনে হাত মোছা ছাড়া ত্রিভুবনে আর কোন কাজ কর্ম নাই।
হলেও হতে পারতেন কুস্তিগীর ভদ্রলোক কন্যার অভিযোগ শুনে বললেন, "ও কি স্যরি বলেছে?"
মেয়েটি সাথে সাথে বলল, "না।"
তাঁর বলার ভঙ্গিতেই বুঝা যাচ্ছে সে অ্যাকশনের মুডে আছে। ও চাইছে তাঁর বাপ কোন অ্যাকশন নিক। ভিলেন এবং ভিলেনের বাপকে পিটিয়ে ছাতু বানিয়ে দিক।
আমি আবারও পুত্রের উপর মেজাজ খারাপ করলাম। মারধর করলি, স্যরিও বললি না! অসভ্য কোথাকার!
কুস্তিগীর (হলেও হতে পারতেন) তখন দরাজ স্বরে বললেন, "ইট্স ওকে। খেলাধুলায় একটু আধটু ব্যথা লাগেই।"
অাহ্! কলিজা ঠান্ডা হয়ে গেল। এই নাহলে কুস্তিগীর! মনে মনে পুত্রের দ্বিতীয় অপরাধ মাফ করে দিলাম। প্রথমটি ছিল মারামারির - যার কোন মাফ নেই। কঠিন শাস্তি পেতে হবে। আরেকটু বড় হয়ে নিক।
দ্বিতীয়টি ছিল কুস্তিগীরের কন্যাকে মারধর। আজকে যদি নরমাল কোন বাপ মায়ের সন্তানকে পিটাতো, সাথে সাথে প্রিন্সিপালের কাছে বিচার যেত। কুস্তিগীর বলেই বলছেন, ইট্স ওকে। ওরকম কত মাইর খাইলাম, দিলাম!
গুড চয়েজ! হাই ফাইভ!
ফেরার সময়ে পার্কিং লটে আবার তাঁদের সাথে দেখা। এইবার আমি আমার পুত্রকে বললাম, "বল, বাই ফ্রেন্ডস!"
পুত্র তখন ছুটি শেষে বাড়ি যাবার উত্তেজনায় আনন্দিত। সে চোখমুখ উজ্জ্বল করে মিষ্টি হেসে মেয়েটি ও তাঁর বড় বোনকে বলল, "বাই ফ্রেন্ডস!"
মেয়েগুলি এতক্ষন তাঁকে ঘৃণা করছিল। এই এক হাসিতেই পটে গেল। তাঁরাও খিলখিল করে হাসতে হাসতে বললো, "বাই ফ্রেন্ড!"
ওদের জবাব শুনে ছেলে আরও খুশি মনে বলে, "বাই!"
এই "বাই" "বাই" চলল বেশ কিছুক্ষন। দুই পার্টিরই কার সিটে বসে সিটবেল্ট বেঁধে দরজা লাগানো পর্যন্ত। হলেও হতে পারতেন কুস্তিগীর ভদ্রলোক হাসিমুখে বললেন, "কিউট বয়। হেহেহে।"
আমার যেন ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়লো। চোরের মতন মনে খোঁচা দিচ্ছিল, এই না ভদ্রলোক বিচার দেয় পোলা সামলাও!
গাড়িতে উঠতে উঠতে একটি ব্যাপার উপলব্ধি করলাম। রূপবান বা রূপবতীরা খুব সহজেই নানান অপরাধ করে পার পেয়ে যায়। এই যেমন আমার পুত্র পেয়ে গেল। যেমন আমার বৌও পেয়ে যায়। ধোয়ার সময়ে সমানে কাঁচের গ্লাস থালা বাটি ভেঙে সাফ হয়ে যাচ্ছে। কিছু জিজ্ঞেস করলে একটা হাসি দেয় - আমিও উল্টো মনে করি what's the big deal! একটা বাটিইতো। সপ্তাহে এইটা তৃতীয়, তারপরেও, একটা বাটিইতো।
অথচ আমি সময়মতোন ময়লা গার্বেজে না ফেললেও এক হাজারটা কথা শুনি।
"সারাদিন শুয়ে শুয়ে আশায় থাকো বুয়া কাজটা করবে। বিয়ে করেতো দেশ থেকে বৌ না, বুয়া এনেছো।....."
তখন হাসি দিলে উল্টা কেয়ামত নেমে যায়।
আফসোস!

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ ভোর ৫:১৭

ঢাকার লোক বলেছেন: বেশ সুন্দর লেখা ! আমেরিকায় আফ্রিকান আমেরিকান রা নাকি সবাই বাস্কেট বল খেলোয়াড়, কোথায় যেন পড়েছিলাম তাদের মাঝে যত বাস্কেট বল খেলোয়াড় তার চেয়ে বেশী লাইসেন্সড্ ডাক্তার আছে!
কাজেই আপনার কথিত 'কুস্তিগীরের' মত দেখায় বড়সড় বলেও অমায়িক ভদ্রলোকের সংখ্যাও নিশ্চয় অনেক।

২| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ ভোর ৫:২০

ঢাকার লোক বলেছেন: .... বড়সড় হলেও অমায়িক ভদ্রলোকের সংখ্যাও নিশ্চয় অনেক।

৩| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:২৩

সনেট কবি বলেছেন: কিছুটা পড়লাম।

৪| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৩৫

রাজীব নুর বলেছেন: শুভ সকাল।
লেখাটি পড়ে ভালো লাগলো।

ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।

৫| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৫২

কিশোর মাইনু বলেছেন: দুনিয়া সুন্দরের পুজারী।

যাই হোক, মজার কাহিনী।

৬| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০১

ঢাকার লোক বলেছেন: কালো সে যতই কালো হোক
তাদের মাঝেও আছে ভালো লোক !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.