নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাল্যবিবাহ এবং নবীর সুন্নত

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ ভোর ৪:৩১

ফেসবুকের হোমপেজের সমস্যা হচ্ছে মাঝেমধ্যে কিছু ডিস্টার্বিং ইমেজ চোখে পড়ে, এবং তারপরে মাথা কাজ করা বন্ধ করে দেয়। আজকে যেমন দেখলাম, আওয়ামী ওলামা লীগের এক যুবক হাতে ব্যানার ধরে দাঁড়িয়ে আছে, সেখানে লেখা, "সুন্নতি বাল্যবিবাহের বিরোধিতা, নবীজি উনারই বিরোধিতা।"
সাথে আরেকজন দাঁড়িয়ে গেছেন, তার ব্যানারে লেখা, "নির্বাচনে উগ্র সন্ত্রাসী হিন্দুদের মনোনয়ন বাতিল করতে হবে।"
দ্বিতীয় পয়েন্টটা অস্বাভাবিক না। বাংলাদেশের জন্মেরও বহু আগে থেকে এইদেশে বহু উগ্রবাদী ধর্মান্ধ বাস করে আসছে। এরা কখনও এই ব্যানারের অধীনে, অথবা কোনদিন অন্য কোন ব্যানারের অধীনে ম্যা ম্যা রব তুলবে। এই দাবি না জানালে অবাক হতাম।
সমস্যা হচ্ছে, কিছুদিন আগেই যখন সড়ক পথে নিরাপত্তার যৌক্তিক দাবি নিয়ে ছাত্ররা রাজপথে নেমেছিল, তখন পুলিশের সাথে হেলমেট বাহিনী ঝাঁপিয়ে পরে ওদের মারধর করেছিল। এইবার কোন হেলমেট বাহিনী, কোন পুলিশের বাঁধা এরা পায়নি। কারন দলের নাম আওয়ামী ওলামা লীগ। অথচ এগুলিকেই সবার আগে পেটানো উচিৎ। ওরা আমার নবীকে মিথ্যাভাবে উপস্থাপন করেছে। তাঁর বদনাম করেছে। তাদের বেত দিয়ে পেটানো উচিৎ।
ব্যাখ্যা করি।
বদের বাচ্চাগুলি বলতে চাইছে বাল্যবিবাহ করা নবীর (সঃ) সুন্নত। অথচ তাঁর একজন বাদে অন্য কোন স্ত্রীই বালিকা ছিলেন না। কুমারীও ছিলেন না। সবাই ছিলেন বিধবা, অথবা তালাকপ্রাপ্তা।
হ্যা, হজরত আয়েশার বয়স কম ছিল। এবং তাঁকে নিয়ে লম্বা একটি লেখা আমি বহু আগেই লিখেছিলাম। যা আমি নিশ্চিত, কেউই পড়েননি। তাই এখানে অতি সংক্ষেপে বর্ণনা করি।
যে সময়ে নবীর সাথে আয়েশার (রাঃ) বিয়ে হয়, তখনকার সামাজিক নিয়মই ছিল বাল্যবিবাহের। এখানে সবচেয়ে বড় ব্যাপার যা লক্ষ্যণীয়, গত একশো বছর আগেও আয়েশার (রাঃ) বয়স নিয়ে কেউ টু শব্দটি পর্যন্ত করেনি। এইটা অতি সাম্প্রতিক ফেনোমেনা। ত্যানাবাজেরা দারুন টপিক পেয়েছে ত্যানা প্যাচানোর। কে জানে, হয়তো ভবিষ্যতে "বিয়ে" নামের ইনস্টিটিউশনটাই লুপ্ত হবে, এবং লোকে তাঁর দিকে আঙ্গুল তুলে বলবে, তিনি কেন বিয়ে করেছিলেন!
বাল্য বিবাহের ব্যাপারটা আমাদের দেশেও মাত্র এক দুই জেনারেশন আগেও অতি স্বাভাবিক ঘটনা ছিল। আমাদের দাদি নানীদের বিয়ে বয়স আঠারো হবার বহু আগেই হয়েছে। যারা প্রশ্ন তুলেন, তাঁরা নিজেদের দাদি নানীদের খোঁজ নিন আগে। নাহলে তারও এক জেনারেশন আগে। অভিযোগ এবং প্রতিবাদ নিজের পরিবার থেকেই না হয় শুরু হোক।
যাই হোক, সেই যুগে আঠারো বয়ষ্ক কোন অবিবাহিতা কন্যাকে বিবাহের বাজারে বাতিল বলে গণ্য করা হতো।
আমাদের জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানেরই তাঁর চাচাতো বোনের সাথে বিয়ে হয়েছিল তেরো বছর বয়সে যখন বেগম মুজিবের বয়স ছিল মাত্র তিন বছর। তাঁর পিতা মাতা গত হওয়ায় শেখ সাহেবের দাদাজান তাঁদের মধ্যে বিয়ে দিয়ে দেন। এর নয় বছর পরে তাঁরা সংসার শুরু করেন। বেগম মুজিবের বয়স যখন মাত্র ১২ বছর। শেখ হাসিনা নিজের ইন্টারভিউতে বলেন, "মায়ের সাথে আমার বয়সের পার্থক্য খুব বেশি ছিল না। আমরা বান্ধবীর মতন ছিলাম।"
ধরে নেয়া যাতে পারে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর জন্মের সময়ে বেগম মুজিবের বয়স তেরো চৌদ্দ বছর ছিল। তখনকার হিসেবে খুব একটা বিরল ঘটনা না।
গেল আমাদের জাতির পিতার কথা।
ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীরও বিয়ে হয়েছিল তেরো/চৌদ্দ বছর বয়সে কস্তুরী বাইর সাথে, যিনি নিজেও ছিলেন চৌদ্দ বছরের বালিকা।
পাকিস্তানের জাতির জনকেরও স্ত্রীর বয়স ছিল চৌদ্দ বছর যখন তাঁদের বিয়ে হয়।
এছাড়া ওয়েস্টার্ন কালচারেও বাল্য বিবাহের চল ছিল। গথিক সাহিত্যের পিতা এডগার এলেন পোর স্ত্রীর বয়স ছিল বারো বছর।
এখন কার বৌয়ের বয়স কত ছিল এই লিস্ট দিতে আমি লেখা শুরু করিনাই। নামগুলো উল্লেখ করার কারন একটাই, এইটা বুঝাতে যে সেই যুগে এইটা এমন কোন অস্বাভাবিক কিছু ছিল না। সবাই করতেন। না করাটাই বরং ছিল অস্বাভাবিক আচরণ।
এখন আসা যাক ইসলামিক দৃষ্টিকোণে।
বিয়ের ব্যাপারে ইসলাম বলে যখন ছেলে এবং মেয়ে ফিজিক্যালি এবং মেন্টালি বিয়ের জন্য "ফিট" হয়ে যাবে, তখন তাঁদের বিয়ে দিয়ে দাও।
কিছু মানুষ আমরা দেখতে পাই যাদের মেন্টাল গ্রোথ বয়সের সাথে বাড়েনা। একুশ বছরের যুবক, কিন্তু মেন্টাল গ্রোথ আট নয় বছরের শিশুর। সেই যুবকের কিন্তু বিয়ে ফরজ না।
শুধু ফিজিক্যাল এবং মেন্টাল ফিটনেসের সাথে সাথেও আরও অনেক শর্তও প্রযোজ্য। বিয়ে করে বৌকে খাওয়ানোর ক্ষমতা না থাকলে সেটা হয়ে যাবে গুনাহ। বিয়েতে মেয়ের মত না থাকলে বিয়ের কন্ট্রাক্ট null and void. এইরকম আরও বহু কিছু।
একটি মহাগুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হচ্ছে, ইসলাম কী কোথাও শর্ত দিয়ে দিয়েছে যে কুমারী, কম বয়ষ্ক মেয়ে বিয়ে না করলে মুসলিম হওয়া যাবেনা? বা সহজ ভাষায়, বাল্য বিবাহ করা ফরজ? না। একটি হাদিস, একটি কুরআনিক আয়াত, কিচ্ছু দেখাতে পারবেনা কেউ। আমি ইচ্ছা করলেই বয়ষ্ক নারী বিয়ে করতে পারবো, এবং তারপরেও আমি মুসলিম থাকবো। আমাদের নবীও (সঃ) নিজের চেয়ে বয়সে বড় এক মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন। পঁচিশ বছর সংসারও করেছিলেন সেই নারীর সাথে। তিনি মারা যাবারও বহুবছর পর পর্যন্ত তাঁকে ভালবেসে গিয়েছিলেন। হজরত খাদিজার (রাঃ) প্রতি তাঁর ভালবাসার গভীরতা অনুভব করলে নিজেকে অপরাধী মনে হবে। আমরা আমাদের বৌদের প্রতি কতটাই না অন্যায় করি!
ইসলামে তাই বিধবা নারী, তালাকপ্রাপ্তা নারীদের বিয়ের ব্যাপারে উৎসাহ দেয়া হয়েছে। এই বিষয়ে এইসমস্ত আওয়ামী ওলামাগণ নিশ্চুপ। কখনও দেখবেন না নবীর "সুন্নত" আদায়ের জন্য বিধবা না তালাকপ্রাপ্তা কন্যা খুঁজে বের করে অবিবাহিত ছেলেরা বিয়ে করে।
ইসলামিক নিয়ম হচ্ছে, যতক্ষণ না পর্যন্ত কোন দেশের আইন ইসলামের আইনের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক হচ্ছে, ততক্ষন পর্যন্ত সেই দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং অনুগত থাকতে হবে। না থাকাটা বরং অনৈসলামিক।
বাস্তব উদাহরণ দেই।
বিশ্বখ্যাত বক্সার মোহাম্মদ আলীকে সবাই চিনেন। তিনি প্রথম জীবনে খ্রিষ্টান ছিলেন, তারপর মুসলিম হয়ে নাম পরিবর্তন করে মোহাম্মদ আলী হন। ক্যারিয়ারে সাফল্যের তুঙ্গে থাকাবস্থায় অ্যামেরিকা ভিয়েতনামের সাথে যুদ্ধে জড়ায়। অ্যামেরিকার নিয়ম হলো, যুদ্ধ বাঁধলে সরকার লটারির মাধ্যমে সিভিলিয়ানদের থেকে কিছু মানুষকে ফৌজে যোগ দিতে নির্দেশ পাঠায়। অ্যামেরিকান সিটিজেনশিপের প্রধান শর্তই এটি, দেশ যুদ্ধে জড়ালে আমাকে-আপনাকেও অস্ত্র তুলে নিতে হবে। আমরা যেই হই না কেন। পঙ্গু-উন্মাদ বা এইরকম কোন কারন থাকলে অবশ্য ভিন্ন কথা। এটাই আইন।
মোহাম্মদ আলী সরকারের বিরুদ্ধে গেলেন। তিনি বললেন, "আমার ধর্ম আমাকে গরিব কৃষক হত্যার অনুমতি দেয় না। দুঃখিত। আমি সেনাবাহিনীতে যাব না।"
ব্যাপারটি আংকেল স্যামের জন্য খুবই ইনসাল্টিং। সমস্ত দুনিয়ায় তাঁরা তখন বলে বেড়াচ্ছে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে তাঁরা ভিয়েতনামবাসীদের সাহায্য করছে। এদিকে নিজের দেশেরই সবচেয়ে বড় সেলিব্রেটি তাঁদের মুখোশ উন্মোচন করে দিচ্ছে!
তাঁরা হুমকি দিলেন তাঁর বক্সিং লাইসেন্স কেড়ে নেয়া হবে। তাঁর চ্যাম্পিয়নশিপ কেড়ে নেয়া হবে।
মোহাম্মদ আলীর ইন্টারভিউ যদি জীবনে একবারও শুনে থাকেন, তাহলেই বুঝবেন তাঁর ঘাড়ের দিকের রগটা কতটা ত্যাড়া।
তিনি বললেন, "নিলে নাও। আমি পরোয়া করিনা। তবু আমার হাতে নির্দোষ কেউ মরবে না।"
কিছুদিন আগেও বিশ্বের হেভিওয়েট বক্সিং চ্যাম্পিয়ন পিৎজার দোকানে কাজ করে নিজের সংসার চালিয়েছেন। তবুও নতি স্বীকার করেননি।
গেল মোহাম্মদ আলীর উদাহরণ। দেশের আইনের বিরুদ্ধে গেছেন কারন ইসলাম ধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক ছিল।
তাহলে দেখা যাচ্ছে, যেহেতু আঠারো বছরের নিচের কোন মেয়েকে বিয়ে করা ইসলামে বাধ্যতামূলক নয়, এবং দেশের আইনও বলছে বাল্য বিবাহ দন্ডনীয় অপরাধ, কাজেই এই আইনটি ইসলামের সাথে মোটেও সাংঘর্ষিক নয়। এতে এত হৈচৈ করার কিছু নেই। চোখ বন্ধ করে ফলো করতে হবে।
শেষ করা যাক "নবীর সুন্নত" বিষয়ে কিছু কথা বলে।
আমার নবী (সাঃ) যাই করতেন, তাই ছিল সুন্নত। তাঁকে ভালবাসলে সেটা পালন করলে সোয়াব মেলে। তবে অতি অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে, সব সুন্নত পালন করা সম্ভব না বলেই সেসবকে সুন্নত বলা হয়ে থাকে। নাহলে ফরজ বলা হতো।
এখন নিচে কিছু উদাহরণ দেই তাঁর সুন্নতের, দেখি কয়জন ভাইব্রাদার সেসব নিষ্ঠার সাথে পালন করেন।
১. তাঁর সময়ে কুরআন লিখিত ছিল না। সবাই মাথায় রাখতেন। বই আকারে কুরআন পড়া তাই সুন্নতের বরখেলাপ। শিক্ষকের মুখ থেকে শুনে আওড়ে আওড়ে মুখস্ত করতে হবে।
২. তাঁর সময়ে কুরআনে কোন নোকতা, যতি চিহ্ন ছিল না। খাঁটি আরব না হলে সেই হরফ পড়া অনারবদের জন্য অসম্ভব ব্যাপার তখন ছিল। বর্তমানে খাঁটি আরবরাও পড়তে পারবেনা। আমরা তাহলে বর্তমানে যে কুরআন পড়ছি, সেটাও সুন্নতের বরখেলাপ।
৩. নবীর (সঃ) সময়ে চেয়ার টেবিল ছিল না। সেখানে বসা সুন্নতের বরখেলাপ। গাড়ি ছিল না। উট, ঘোড়া, গাধা বা খচ্চর ছাড়া অন্য কোন বাহন ব্যবহার করা সুন্নতের বরখেলাপ।
৪. তাঁর সময়ে ইলটেকট্রিসিটি ছিল না। মসজিদে মাইকের ব্যবহার, এসি, ফ্যান ইত্যাদি তাইলে সুন্নতের বরখেলাপ। মসজিদে দামি টাইলস বসানোও সুন্নতের বিরুদ্ধে যাওয়া। কারন তিনি যেদিন মারা যান, সেদিনও মসজিদে নববীর মেঝে ছিল মাটির, বৃষ্টি হলে কাদা জমে যেত।
৫. তিনি খেজুর পাতার বিছানায় ঘুমাতেন। কোন বিছানা, তোষক গদি ছিল না। তিনি জীবনেও ভাত খাননি। কারন তাঁর সময়ে আরবে ধান চাষ হতো না। বর্তমানে আরবরাই বিরানি খায়। আমাদের কথাতো বাদই দিলাম।
এতসব পরিবর্তন কেন এসেছে? কারন যুগ পাল্টেছে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আমরাও এগিয়েছি। এগুলো কোন অবস্থাতেই ইসলামের মূল ভিত্তির সাথে সাংঘর্ষিক নয়। বাল্যবিবাহ রোধ আইনও নয়।
যে ছাগল ম্যা ম্যা করবে, সে যেন আগে উপরে উল্লেখ করা সুন্নতগুলো পালন করে। নাহলে তাকে হিপোক্রেট ডাকা হবে। এবং হিপোক্রেটদের স্থান আমাদের ধর্মে নেই।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ ভোর ৬:০৬

তার ছিড়া আমি বলেছেন: ধন্যবাদ, সঠিক তথ্য সঠিকভাবে উপস্থাপন করার জন্য।

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:২৫

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ। :)

২| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ ভোর ৬:৩৩

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: অনেক ভাবনার খোরাক আছে আপনার অনেক যুক্তিপূর্ণ এই লেখাটিতে | ধর্মকে আমরা যে যার মতো কাস্টমাইজ করে ফেলি যা আসলে হিপোক্রেসির পর্যায়েই পড়ে |

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:২৫

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: এখানেই সমস্যা। :(

৩| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:১০

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো লিখেছেন।
আপনার পোষ্ট আমার ভালো লাগে।
খুব মন দিয়ে পড়ি।
আপনি আমার একজন প্রিয় ব্লগার।

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:২৫

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই। আপনার মন্তব্য নিয়মিত পাই। আপনিও আমার প্রিয়দের একজন। :)

৪| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:১৫

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: অনেক ভাল লিখেছেন ভাইয়া।
যারা কম জানে তারাই বেশি ম্যাউ প‌্যাউ করে।

৫| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৩৭

এ আর ১৫ বলেছেন: ইসলামে বাল্য-বিবাহ ??

দেশে বাল্যবিবাহের দড়ি-টানাটানি চলছে তো চলছেই। একদিকে এর বিরুদ্ধে মানবাধিকার-কর্মীদের আন্দোলন, আইন ও তার প্রয়োগ, অন্যদিকে এর পক্ষে কিছু আলেমদের অবস্থান। তাঁদের প্রধান যুক্তি সহি বুখারীর হাদিস, নবীজি(স) আয়েশা(র)-কে বিয়ে করেছিলেন ৬ বছর বয়সে, নিজের ঘরে নিয়ে গিয়েছিলেন ৯ বছর বয়সে- বুখারী ৭ম খণ্ড-৬৪, ৫ম খণ্ড-২৩৪, ২৩৬। এর ভিত্তিতে ইসলাম-বিরোধী অনেকেই আবার নবীজি(স)কে শিশু- ধর্ষক বলে।এই "ছয় বছর-নয় বছর" দলিলের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দলিলগুলো দেখা দরকার যাতে জাতি সিদ্ধান্ত নিতে পারে। বলা দরকার, আয়েশা (র)-এর জন্মসাল নিয়ে বিতর্ক থাকার ফলে বিয়ে সহ বিয়ে সহ বাকি সবকিছুর সময়/সাল প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে আছে।(বদর যুদ্ধ হয়েছিল ৬২৪ সালে)।

1. “শিশু¬ ধর্ষক” মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তি (সাধারণত: পুরুষ) কম বয়সের বালিকাদের সাথে সংসর্গ করতে সর্বক্ষণ ব্যাকুল হয়ে থাকে। সমাজে ওটা চিরকালই ছিল, আছে এবং থাকবে।কিন্তু নবীজীর জীবন খুঁটিয়ে দেখলে আমরা সংযমের চিত্রই পাই। পঁচিশ বছরের দুরন্ত যৌবনে তাঁর প্রথম বিয়েই ছিল ৪০ বছরের বিধবা বিবি খাদিজার সাথে। মনে রাখতে হবে মানুষের ইতিহাসে সমাজ, পরিবার, অর্থনীতি, রাজনীতি, যুদ্ধনীতি এমনকি প্রতিটি মানুষের মনোজগতের ওপর এমন সার্বিক ও সর্বগ্রাসী রাজত্ব আর কেউই করেনি। যাঁর অনুসারীরা তাঁর জন্য অকাতরে প্রাণ দিয়েছেন ও নিয়েছেন, যাঁর জন্য সর্বক্ষণ নিজেদের "পিতামাতা উৎসর্গ" বলতেন, তিনি চাইলে অবশ্যই অনায়াসে শত শত নয় বরং হাজার হাজার বালিকা-সংসর্গ করতে পারতেন। অথচ তাঁর স্ত্রীদের মধ্যে একমাত্র আয়েশা (র) ছিলেন কুমারী, বাকিরা বিধবা বা তালাক-প্রাপ্তা, কেউ কেউ আবার তেমন সুন্দরীও ছিলেন না। কাজেই “শিশু¬ ধর্ষক” তত্বটা তাঁর বেলায় একেবারেই খাটেনা।

2. বয়স ১৪ থাকার জন্য ইবনে ওমরকে রাসুল (স) ওহুদ যুদ্ধে যোগ দিতে দেননি কিন্তু খন্দক যুদ্ধে যোগ দিতে দিয়েছিলেন কারণ তখন তাঁর বয়স ১৫। সহি বুখারী ও মুসলিমে আমরা দেখি বিবি আয়েশা (রাঃ) বদর যুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন। সে হিসেবে ৬২৪ সালে তাঁর বয়স কমপক্ষে ১৫ বছর হবার কথা।

3. কিছু সুত্রে আয়েশা (রাঃ)-এর জন্ম ৬১৩ সালে পাওয়া যায় কিন্তু ইবনে হিশাম/ইসহাক এর বিখ্যাত সিরাত কেতাব বলছে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন ৬১০ সালে। ধর্মান্তরিত হবার জন্য ভালোমন্দ বোঝার কিছুটা ক্ষমতা থাকবে বলেই আশা করা যায়। ৬১০ সালে যদি তাঁর বয়স তিন বছরও (খুব সম্ভব তার চাইতে বেশি) হয়ে থাকে তবে ৬২২ সালে তিনি ছিলেন অন্তত পনের বছরের।

4. অতীতে অনেক দেশে এবং অনেক সম্প্রদায়ের লোকেদের মধ্যে (এমনকি বর্তমানেও কিছু কিছু অনুন্নত এলাকায়), সময় এবং বয়স মনে রাখার কোনো বৈজ্ঞানিক প্রথা চালু ছিল না। তখন তারা কোনো বিশেষ ঘটনার সাহায্যে, যেমন যুদ্ধ, খরা, অথবা অন্য কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বয়স অথবা সময় মনে রাখত। এমনকি ইতিহাসের পাতায় সভ্যতার শীর্ষে যে রোমান জাতি, তাদের মাঝেও এই প্রথা চালু ছিল। নবী(সাঃ)-এর জন্মের বছরে আবরাহা তার হাতির বহর নিয়ে মক্কা আক্রমন করে। তাই সেই বছরকে বোঝাতে মক্কার লোকেরা "হস্তীর বৎসর” উল্লেখ করত। এই প্রথা স্মৃতির ওপরে নির্ভরশীল, তাই বয়সের এবং সময়ের হিসেবে অনিচ্ছাকৃত ভুল ইতিহাসে ধরা পড়ে।

5. ১৪০০ বছর আগে নয় বছরের বালিকার বিয়ে স্বাভাবিকই ধরা হত। বাইবেলেও এর ইঙ্গিত আমরা পাই। ইসলামের শত্রুপক্ষের লোকেরা রাসুল (সাঃ)এর অনেক সমালোচনা করেছে কিনতু এ বিষয়ে কখনো কোনো কটু মন্তব্য অথবা আলোচনা করেনি। তখনকার সামাজিক ব্যবস্থা, জীবন যাপন প্রণালী, প্রাকৃতিক অবস্থা এবং রূঢ় আবহাওয়া এর কারণ হতে পারে।

6. ৬১৫ সালে হজরত আবু বকর (রাঃ) মুত'আম এর পুত্রের সাথে আয়েশার (রাঃ) বিবাহের চিন্তা করেছিলেন। মুত'আম তার পুত্রের এই বিবাহে রাজি হয়নি কারণ তখন হজরত আবু বকর (রাঃ) ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। তখন অবশ্যই বিবি আয়েশার (রাঃ) দুই এর বেশি ছিল । সেই হিসেবে ৬২২ সালে তাঁর বয়স অবশ্যই নয়ের অধিক ছিল।

7. হজরত আবু বকর (রাঃ) এর চারজন সন্তানেরই জন্ম হয়েছিল আইয়ামে জাহেলিয়ার যুগে, যখন ইসলাম প্রচার শুরু হয়নি। এই যুগের পরিসমাপ্তি হয় ৬১০ সালে। সেই সূত্রে, ৬২২ সিইতে বিবি আয়েশার (রাঃ) বয়স ন্যুনতম বারো বৎসর ছিল।

8. বিবি ফাতেমা (রাঃ) বিবি আয়েশার (রাঃ) পাঁচ বছরের বড় ছিলেন। মুহাম্মদ (সাঃ) এর বয়স যখন পয়ত্রিশ বৎসর তখন ফাতেমা (রাঃ) এর জন্ম হয়। সেই হিসেব অনুযায়ী বিবি আয়েশা (রাঃ) রাসুলাল্লার (সাঃ) চাইতে চল্লিশ বছরের ছোট ছিলেন অর্থাৎ বিয়ের সময় তাঁর বয়স ছিল বারো।

9. বিবি আয়েশার বড় বোন, বিবি আসমা ছিলেন তাঁর চেয়ে দশ বছরের বড়। যে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর মদিনায় হিজরতের তিহাত্তরতম বছরে বিবি আসমার মৃত্যু হয় আনুমানিক একশ’ বছর বয়সে। খুব সম্ভবত, হিজরতের বছর বিবি আসমার বয়স ছিল ছাব্বিশ/সাতাশ এবং বিবি আয়েশার (রাঃ) ষোলো-সতের। ইবনে সা'দ এর তাবাকাত এবং আনসাব আল-আশরাফে কিছু কিছু বর্ণনায় আমরা পাই, হিজরতের দুই থেকে তিন বছর পরে বিবি আয়েশার (রাঃ) সাথে রাহুলুল্লাহ (সাঃ) এর বিবাহ সম্পন্ন হয়েছিল। সুতরাং সেই হিসেবে বিবাহ কালে তাঁর বয়স ছিল আঠার-উনিশ বছর।

10. বিখ্যাত ইমাম ড: সাব্বির আলী, ইমাম শেখ ইমরান হোসেন, শেখ ইয়াসির আল হাবিব সহ অজস্র ইসলামী বিশেষজ্ঞ এটা বলেন, অনেক সূত্র পাবে এখানে:- https://www.google.ca/…

11. পৃথিবীর বৃহত্তম মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়াতে নারীরদের ১৯ বছরের আগে বিয়ে বেআইনী - ভিডিও - ড: জাকির নায়েক। মুসলিম প্রধান দেশ মরক্কো আলজিরিয়া তো আছেই, ওখানকার মাওলানারা নিশ্চয় কোরান হাদিস কম জানেন না ! তাঁরা তো বাল্য বিবাহ বাতিল করেছেন!
12. দলিল আরো অনেক আছে, কখনো পরস্পর বিরোধী, তাই তা থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া কঠিন। তবে এবারে কোরান। সুরা নিসা আয়াত ৬:-“এতীমদের প্রতি বিশেষ নজর রাখবে যে পর্যন্ত না তারা বিয়ের বয়সে পৌঁছে। যদি তাদের মধ্যে বুদ্ধি-বিবেচনার উন্মেষ আঁচ করতে পার, তবে তাদের সম্পদ তাদের হাতে অর্পন করতে পার”।

কি মনে হয়?

"যে পর্যন্ত না তারা বিয়ের বয়সে পৌঁছে......তাদের মধ্যে বুদ্ধি-বিবেচনার উন্মেষ আঁচ করতে পার" - এর অর্থ বিয়ের বয়স তখনি হবে যখন তাদের মধ্যে বুদ্ধি-বিবেচনার উন্মেষ হবে। কথাটা নাবালিকাদের ক্ষেত্রে খাটে? না, খাটে না। বাল্য-বিবাহ ওখানেই সুস্পষ্ট ভাষায় নাকচ করেছে কোরান !!

এবারে বাস্তবতা। যাঁরা বাল্যবিবাহ সমর্থন করেন, তাঁরা কি ওই কচি মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়েছেন একবার? বিশ-পঁচিশ বছরের তরুণের দেহে দুর্দান্ত প্রচণ্ড যৌবন খেলা করে, আর ওদিকে ওই বাচ্চা মেয়েটার না শরীর তৈরী, না মন। সেখানে প্রতিদিন ওই বাচ্চাটাকে কি দোজখের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, তার শরীরের ওপর কি মর্মান্তিক অত্যাচার হয় তা কি বাল্যবিবাহ সমর্থনকারীরা ভেবেছেন একবারও? ইসলাম-পালনের, নবীজীকে "অনুসরণ" করার উদগ্র বাসনা এভাবেই জীবন ধ্বংস করে, ইসলামের বদনাম হয়। এর ওপরে আছে ওই কচি শরীরে সময়ের আগেই মাতৃত্বের চাপ।

আরো বলতে হবে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.