নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
আজকে সকালেই ক্যানভাসের এক ছোট ভাইর সাথে ফোনে কথা হলো। তাঁর শ্বশুরবাড়ি বেচারাম দেউড়ি, পুরান ঢাকায়। গতবছর এই ফেব্রুয়ারি মাসেই আমি গিয়েছিলাম সেখানে।
ওর কাছ থেকেই জানলাম এই যে মৃতের সংখ্যা ৭০-৮০ বলা হচ্ছে, বাস্তবে সংখ্যা এরচেয়েও বেশি হবে। ওর স্ত্রী, ওর শ্যালিকা, ওর শ্বশুরবাড়ির লোকজন যাকেই জিজ্ঞেস করেন, তাঁরই আপন কেউ সেখানে নিহত হয়েছেন। কেউ খুব কাছের বন্ধু, কেউ অতি নিকট আত্মীয়।
আমরাও অনুমান করতে পারছি মৃত্যুর মিছিল আরও দীর্ঘ হবে। কারন এখন পর্যন্ত স্রেফ "উদ্ধারকৃত" লাশের সংখ্যাই এই - এখনওতো নিখোঁজদের সন্ধান বাকি।
আল্লাহ মাফ করুন। এমন দুর্ঘটনা যেকোন স্থানে যার তার সাথেই হতে পারতো। আজ আমাদের ভাগ্য ভাল, আমরা সেখানে ছিলাম না। তাঁদের ভাগ্য খারাপ, তাঁদের জীবনে মৃত্যুর ফেরেশতা তখনই এসে উপস্থিত হয়েছেন।
এখন আমাদের বিপদগ্রস্তের পাশে দাঁড়ানোর সময়।
এখন অবশ্যই আমাদের হাসপাতালে গিয়ে আহতদের, নিহতদের খোঁজ খবর নিতে হবে। কারও রক্ত লাগবে কিনা। কারোর ওষুধ লাগবে কিনা। কারোর অন্য কিছু লাগবে কিনা। বিপদ যা হবার ঘটে গেছে, ক্ষতি যা হবার সেটাও শেষ। আমরা দল বেঁধে তাঁদের পাশে দাঁড়ালে এখন ক্ষতির পরিমান কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব।
যারা মারা গেছেন, তাঁদের জানাজার জন্য, সৎকারের জন্য কোনভাবে আমরা সাহায্য করতে পারবো কিনা। তাঁদের পরিবারগুলোকে কোনভাবে সাহায্য করতে পারবো কিনা।
মানুষ হয়ে জন্মেছি, এখন সময় সেটা প্রমান করার।
আরও অনেক কিছুই আছে করবার।
ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা যেন আর না ঘটে, সেটার ব্যাপারে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। চৌদ্দ পুরুষের কেমিক্যাল ব্যবসা থাকলেও, আবাসিক এলাকা থেকে এসব সরাতে হবে। টাকা দিয়ে কী হয়? সমস্ত পৃথিবীর সমস্ত ধন দৌলত ঢেলে দিলেও আগুন থেকে রক্ষা পাওয়া যায়? মালাকুল মৌত ঘুষ গ্রহণ করেননা।
আমাদেরই সচেতন হতে হবে। মহল্লাবাসী একত্রিত হয়ে, নিজের নিরাপত্তার জন্য, নিজের পরিবারের নিরাপত্তার জন্য দাহ্য বস্তু নিজের বসত ভিটে থেকে দূরে সরাবার ব্যবস্থা করতে হবে।
তাছাড়া পুরান ঢাকার মানুষেরতো পয়সারও অভাব নেই। আমি নিজেই দেখেছি লুঙ্গির গাঁট থেকে হাজার হাজার টাকা বের করে আনতে। একটা ফায়ার এক্সটিঙ্গুইশার কেনা কী খুব খরচের ব্যাপার? এই যে ছোট ভাইর সাথে কথা বলছিলাম, সে বলছিল, দশটা মানুষ দশ দিক থেকে শুরুতেই ফায়ারএক্সটিঙ্গুইশার নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লেই আগুন এতটা ক্ষতি করতে পারতো না।
সিলিন্ডারগুলো ফাটে কিভাবে? এমনি এমনিতো ফাটে না। সেগুলোর মান নিয়ন্ত্রণ করা হয়? "ফিটনেস চেক" করা হয়? সেদিন অবিশ্বাস্য চোখে একটা ভিডিওতে দেখলাম একজন ট্রাক থেকে আছাড় দিয়ে দিয়ে গ্যাসের সিলিন্ডার ফেলছে। এই সমস্ত উজবুক দিয়ে এত সেনসিটিভ জিনিস হ্যান্ডেল করানো হয়? একটু ট্রেনিং দিতে কত সময়ই বা নষ্ট হয়?
গতরাতে ঘুমাতে পারিনি। একবার তন্দ্রামত এসেছিল, দুঃস্বপ্ন দেখে সেটাও কেটে গেল। আমি নিশ্চিত অনেকেরই মস্তিষ্কে ভাল চাপ ফেলেছে এই দুর্ঘটনা।
মৃতদের রূহের মাগফেরাত কামনা করছি। আমরা যারা জীবিত আছি, তাঁদের কাউকেই যেন এমন কষ্টের মধ্য দিয়ে যেতে না হয়।
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:৫৯
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: পাপ বাপকে ছাড়েনা ভাই। সব একদিন খাবে ধরা.
২| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:০৪
রাজীব নুর বলেছেন: ১০ বছরেও পুরাণ ঢাকার রাসায়নিক গোডাউন সরাতে না পারার সব দায় রাষ্ট্রের। তারপর মেয়র খোকন, এফবিসিসিআই ,শিল্পমন্ত্রণালয় ও বিসিকের।
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:৫৮
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: খুবই দুঃখজনক।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১০:৩৭
নয়া পাঠক বলেছেন: ভাই সকল দূর্ঘটনাতেই দেখেছি সরকারি হিসাব আর বাস্তবতা এ দুয়ের মাঝে অনেক অনেক তফাৎ থাকে। আর আরও একটি বিষয় যা আপনি বলেছেনে আগুন যেকোন যায়গায় লাগতে পারে আমি আপনি যে কেউ এমন বা এর চেয়েও ভয়ঙ্কর দূর্ঘটনার স্বীকার হতে পারি। এটা আমাদের নিয়তি, কারণ আমরা বাংলাদেশে বাস করি। কিন্তু এটা আমি গ্যরান্টি দিয়ে বলতে পারি আর যেখানেই লাগুল কোন মন্ত্রী বা এমপি'রা কখনো এমন দূর্ঘটনায় পড়বেন না!