নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

চকবাজারের ঘটনায় ফেসবুকে অতি আস্তিক ও অতি নাস্তিক কিছু উজবুকিও কমেন্ট

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:৩৬

চকবাজারের ঘটনায় ফেসবুকে অতি আস্তিক ও অতি নাস্তিক কিছু উজবুকিও কমেন্ট পড়ে পড়ে মুখ তিতা হয়ে যাচ্ছে। এটি সেই তিতা মন থেকে লেখা স্ট্যাটাস। কেউ মাইন্ড খাইলে খান। আপনার কথায় আমিও মাইন্ড খেয়েছি জেনে রাখুন।

কিছু উদাহরণ দেই।
১. আল্লাহ/ঈশ্বর ভগবান যদি এতই দয়ালু হতেন, তাহলে আগুন লাগলো কিভাবে?
২. আগুন যখন লাগলোই নিভলো না কেন?
৩. সব পুড়ে গেছে, মসজিদ/কুরআন পুড়ে নাই। সুবহানাল্লাহ!
৪. আগুন নেভানোর সময়ে মসজিদ থেকে পানি সরবরাহ করা হয়নি। (কেউ বলছেন এটি মিথ্যা অভিযোগ। যদি মিথ্যা রটনা হয়ে থাকে, তবে এই নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত হওয়া জরুরি। দোষী ব্যক্তির অবশ্যই শাস্তি হওয়া জরুরি।)

প্রথম ও দ্বিতীয় পয়েন্ট পয়েন্ট নিয়ে বলতে গেলে খুব বেশি মাথা খাটানোর নেই। ফায়ার ইনভেস্টিগেটররা তদন্তে নামার প্রথম ধাপেই ওয়াহেদ ম্যানশনে ঢুকার সময়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা তাঁদের বাঁধা দেন। তারপরেও যখন তাঁরা জোর করে ঢুকেন, দেখেন সেই বাড়ির নিচে কেমিক্যালের গুদাম। যেখানে কোনরকমে আগুন পৌঁছালে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান কয়েকগুন হতো নিশ্চিত। ফায়ার ব্রিগেডের কর্মচারীরা বরং দোয়া করেছেন আল্লাহ রক্ষা করেছেন, এখানে আগুন লাগার আগেই তাঁরা আগুন থামাতে পেরেছেন।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট এখানেই, আগুন লেগে এত ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পরেও স্থানীয় লোকজন এবং ব্যবসায়ীরা চাচ্ছেন না কেমিক্যালের মজুদ আবাসিক এলাকা থেকে সরুক। টাকা পয়সার লোভ এতই মোহনীয়।
নিমতলীর দুর্ঘটনার পরেও আমাদের শিক্ষা হয়নি। চকবাজারের পরেও আমাদের শিক্ষা হয়নি। আমরা কেমিক্যাল সরাবো না। পয়সা কামাবার ধান্দা করবো। আর আগুনে মানুষ পুড়লে আল্লাহ/খোদা/ভগবানের উপর দোষ চাপিয়ে ফেসবুকে আহ্লাদীপনা করবো। বাহ্ বাহ্ বাঙালি! ব্রাভো!
আরে, সত্য কথা হচ্ছে, এত অপরিকল্পিত নগরীতে আমরা যে বেঁচে আছি, সেজন্য, প্রতিটা সেকেন্ডের জন্য আমাদের উচিৎ উপরওয়ালার শুকরিয়া আদায় করা। মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে দৌড় ঝাঁপ করবা, আগুনের জন্য ন্যূনতম সতর্কতা অবলম্বন করবা না, টাকা পয়সা কামানোর ধান্দায় জান মালের বাজি ধরবা, তারপরে বলবা "পরম করুণাময়কে মানিনা" - বাবাজি, তোমার মানা না মানায় কিচ্ছু যায় আসে না। বরং কামের কাম যদি কিছু করতে চাও - তাহলে নিহত আহতদের পাশে দাঁড়াও। সরকারের কাছে পিটিশন কর যে এইসব কেমিক্যাল গুদাম আবাসিক এলাকা থেকে দূর করতে। আমি বরং উপরওয়ালাকে ধন্যবাদ দেই, ওয়াহেদ মেনশনে আগুন লাগার আগেই সেটা নেভানোর জন্য।
নাহলে মোটামুটি সব বন্দোবস্ত করাই ছিল আগুন না নেভানোর। সরু গলি, পাইপের উপরে উৎসুক জনতার পায়ের চাপ ইত্যাদি। উপরওয়ালা না থাকলে লাশের সংখ্যা কয়েক হাজার হতো।
এখন দেখা যাক এই বিষয়ে আল্লাহ কুরআনে কী বলেছেন। সূরা আশ শুরার ৩০ নম্বর আয়াতে তিনি বলেছেন, "তোমাদের উপর যেসব বিপদ-আপদ পতিত হয়, তা তোমাদের কর্মেরই ফল এবং তিনি তোমাদের অনেক গোনাহ ক্ষমা করে দেন।"
একই ব্যাপার তিনি একটু ঘুরিয়ে সূরা নিসার ৭৯ নম্বর আয়াতে বলেছেন, "আপনার যে কল্যাণ হয়, তা হয় আল্লাহর পক্ষ থেকে আর আপনার যে অকল্যাণ হয়, সেটা হয় আপনার নিজের কারণে।"
এছাড়া সূরা কাহফের খিদির এবং মুসার (আঃ) বিখ্যাত গল্পে বলা আছে, একটি নৌকায় ফুটো করে বাস্তবে মাঝির ভালই করা হয়েছিল। কারন রাজা যুদ্ধের জন্য সব ভাল ভাল নৌকা জব্দ করছিল। এই মাঝির নৌকা ফুটা বলে রাজা ছিনিয়ে নিবে না। আর এই ফুটা মেরামত করতে মাঝির খুব পরিশ্রমও লাগবেনা।
আজকের এই একশোজনের মৃত্যু কালকের হাজারজনের মৃত্যু ঠেকিয়ে দিল কিনা কে জানে। আমরা যদি সাবধান না হই, তাহলে অবশ্যই সামনে আরও বড় দুর্যোগ আসবে। আর যদি সাবধান হই - তবে হাজারটা প্রাণ রক্ষা পাবে।
আমরা যে ভয়াবহ ভূমিকম্প অঞ্চলে বাস করি, এইটা এখন বিশ্বের যেকোন মানুষ জানেন। আমাদের মাটির নিচে বিশাল ফাটল আছে। যেকোন মুহূর্তে শক্তিশালী ভূমিকম্প ঘটার সুযোগ আছে। এখন ভয়ংকর রকম অপরিকল্পিত ঢাকা শহরে একটা শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানলে কী প্রলয়টা ঘটবে কারোর কোন ধারণা আছে? তারপরেও আমরা বলি উপরওয়ালা করুনাময় নন?

তিন নম্বর পয়েন্ট নিয়ে অতিশয় মূর্খ, গাধা গর্ধব ছাড়া কেউ চিল্লাবে না।
যেকোন মুসলিমের জানা থাকার কথা মক্কার আলামিনের নবী হবার আগে একটি ঘটনা ঘটেছিল। সেটি হচ্ছে, আগুনে পুড়ে কাবাঘর ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। তারপরে সেটা পুনঃনির্মান করে পবিত্র পাথরটি কে বসাবে তা নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দিলে নবী (সঃ) চমৎকার সমাধান দেন।
পয়েন্ট এটাই, আগুন লাগলে কাবা ঘরও নষ্ট হতে পারে। সেখানে চকবাজারের মসজিদ কিছুই না।
ইসলামের মিরাকেল "ফিজিক্যাল" জিনিসপত্রে নারে ছাগল, ইসলামের মিরাকেল অন্তরে। আগুনে পুড়ে যাচ্ছে মানুষ, তারপরেও মুখে বলছে আল্লাহু আকবার, সে জানে, তাঁর রব তাঁকে মৃত্যুর মধ্য দিয়েই অনন্ত জীবন দান করবেন। এই বিশ্বাসের নামই ইসলাম। মুসলিম মাত্রই জানার কথা দুনিয়ার কোন কিছুই স্থায়ী নয়, এবং সেটা পবিত্র কাবা ঘর হলেও।

চতুর্থ পয়েন্টটা খুবই সেনসিটিভ। এবং এর বিস্তারিত তদন্ত হওয়া জরুরি।
পাশের আগুনে পুড়ে মানুষ মরছে, মসজিদ যদি ফজরের নামাজের ওযুর জন্য পানি না দিয়ে থাকে, তবে যারা দেয়নি, তাদের কঠোর বিচার হওয়া জরুরি। ইসলামে পানি না থাকলে তায়াম্মুম করেও নামাজ আদায়ের বিধান আছে, কিন্তু অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের জন্য ফরজ। সেক্ষেত্রে ফাজলামি করে পানি না নিয়ে সেকেন্ড ডিগ্রি মার্ডারের অপরাধ করেছে ঐ লোকেরা। কঠোর শাস্তি দাবি করি।
আর যদি এইটা গুজব হয়ে থাকে। তাহলে এই ধরণের উষ্কানীমূলক গুজব ছড়ানোর অপরাধেও রটনাকারীর কঠোর শাস্তি দাবি করি। এমন সেনসিটিভ বিষয়কে ব্যবহার করে মানুষের ইমোশনের সাথে খেলা লোক কোন অবস্থাতেই সুস্থ মাথার লোক হতে পারেনা। ক্রিমিনাল মেন্টালিটির এইসব লোকদের পুলিশি রিমান্ডে নিয়ে ডলা দেয়া অত্যন্ত জরুরি। সাথে মোটা অংকের আর্থিক জরিমানা। টাকায় টান পড়লে বাঙালির আক্কেল ঠিকানায় ফিরে।
চকবাজারের মসজিদের মাইকে ঈমামের কান্নার শব্দটা শুনেছি বলেই মনে হচ্ছে কোন ফাজিল গুজব রটানোর চেষ্টা করলেও করতে পারে।

সবশেষে বলি, একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে, এখন আপনার পক্ষে যদি ভালকিছু করা সম্ভব না হয় তবে সেটা নিয়ে ফেসবুকে দুর্গন্ধ ছড়ানো বন্ধ করুন। এখন দুর্গন্ধ ছড়ানোর সময় না। এখন সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। এমন দুর্ঘটনা যেন ভবিষ্যতে না ঘটে, সেটার সমাধান বের করার।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:১১

রাজীব নুর বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছেন।
সহজ সরল ভাষায় সুন্দর আলোচনা করেছেন।
কিন্তু দুষ্টলোক থাকবেই তারা নানান পদের কথা বার্তা বলবেই। সব যুগেই এরকম লোক ছিল, আছে এবং থাকবেই।

২| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:২৬

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
মসজিদ ইচ্ছে করলেও পানি দিতে পারতো না,
কারন নামাজের সময় ছাড়া সময় ছাড়া মসজিদের গেটে তালা,
বারান্দার গ্রীলে শক্ত তালা, বাতরুমে যাওয়ার করিডোরে তো ইয়া মোস্তবড় তালা।
বাতরূমের দরজায়ও একটি ছোট তালা।

৩| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:৪১

লীনা জািম্বল বলেছেন: দারুন বলেছেন--যথাযথ

৪| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:০৩

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: কিছু ননসেন্স আছে।

৫| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:০৫

করুণাধারা বলেছেন: যারা জানে কোরআন শরীফে কি বলা আছে, তাদের অনেকেই লিখতে জানে না। আবার যারা লিখতে জানে, তারা অনেকেই জানে না কোরআন শরীফে কি বলা আছে। আপনি কোরআন শরীফ থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে চমৎকার ভাবে লিখেছেন, ধন্যবাদ জানাই সে জন্য।

৬| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:৪০

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: আল্লাহ সবাইকে হেদায়েত দান করুন। আমীন।

৭| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ভোর ৬:১৮

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: আসলেই উজবুকি কমেন্টস ! এসব মানুষ ধর্মকর্ম করে বটে কিন্তু ধর্মের আসল থিম কখনোই এদের অন্তরে প্রবেশ করে নাই, এদের চক্ষু, কর্ণ এবং অন্তর সিল বা বন্ধ হয়ে আছে | টাকা পয়সার লোভে সম্পূর্ণ বশীভূত হয়ে পড়লে মানুষের মধ্যে বিন্দুমাত্র মানবিকতা থাকে না কখনই | পানি না দেয়ার ঘটনা সত্যি হলে দোষীদের কঠোর শাস্তি দেয়া অপরিহার্য |

৮| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৭:২৯

অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: সরবরাহ ব্যয় বেশি হবে বলে ব্যবসায়ীরা পশুর মতো আচরণ করছেন।

৯| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:৫৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মানুষেরে ঘৃণা করি
ও’ কারা কোরান, বেদ, বাইবেল চুম্বিছে মরি মরি
ও মুখ হইতে কেতাব-গ্রন্থ নাও জোর করে কেড়ে
যাহারা আনিল গ্রন্থ-কেতাব সেই মানুষেরে মেরে ।
পুজিছে গ্রন্থ ভন্ডের দল !
–মুর্খরা সব শোনো
মানুষ এনেছে গ্রন্থ,–গ্রন্থ আনেনি মানুষ কোনো ।

শত বছর আগে্ একই কান্না কেঁদেছেন কবি নজরুল। হায় মানুষের ঘুম ভাংল কই?

পোষ্টে +++

১০| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:৫৫

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: দারুন বলেছেন। যথাযথ পয়েন্টগুলো তোলে ধরে তার ব্যাখাও নিপুণ করেছেন।

১১| ০২ রা মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৪

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: চমৎকার বলেছেন। সরকারের উচিত পরিকল্পনা করে পুরাতন ঢাকা হতে সকল বৈধ অবৈধ কারখানা এবং গোডাউন আবাসিক ভবন হতে অন্যত্র সরিয়ে নিতে বাধ্য করা। কিন্তু অবাক হলাম ২১ তারিখ আগুন নেভার পর এক সপ্তাহ সময় দিয়ে গত ২৮ তারিখ থেকে কারখানা গুদাম উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আসলেই কি সরকার এ ব্যাপারে ইচ্ছুক নাকি সাময়িক আইওয়াশ!! তিন মাসের নোটিশ দিয়ে সকল কারখানা এবং গুদাম পূর্ণাংগরূপে উচ্ছেদ করতে হবে। কেননা উচ্ছেদযোগ্য ভাড়াটিয়া চুক্তিপত্রে ০১-০৩ মাসের নোটিশ থাকে; সেই সাথে ভারাটিয়ার কাছ থেকে নেয়া অগ্রিম টাকা পরিশোধ করারও ব্যাপার আছে। আছে নতুন জায়গায় কারখানা-গুদাম সরিয়ে নেয়ার ব্যাপার। তাই বাস্তবসম্মত উচ্ছেদ দেখতে চাই আমরা, আইওয়াশ নয়।

ধন্যবাদ আপনাকে, চমৎকার এই পোস্টের জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.