নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাঙালি সংস্কৃতি বনাম বিদেশী অপসংস্কৃতি নিয়ে কিছু সাফ কথা

২১ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১:২৪

এক ভাই এক কমেন্টে জানালেন তিনি আমাদের সংস্কৃতি ভালবাসেন। বিজাতীয় সংস্কৃতির বিরোধী তিনি।
শুধু এই ভাইই নন, অনেককেই অনলাইন ও অফলাইনে "খাঁটি বাঙালি সংস্কৃতি" নিয়ে হায় হায় রব তুলতে দেখি।
"গেল গেল, সব বিজাতি সংস্কৃতির কবলে গেল" বলতে বলতে মুখে ফ্যানা তুলে ফেলেন কেউ কেউ। জিজ্ঞেস করুন, একটা লম্বা তালিকা ধরিয়ে দিবেন হাতে। আপনিও তখন তাঁদের সাথে যুক্ত হবেন হায় হায় মাতমে।

আমার মতে, এই বিষয়ে পক্ষে বিপক্ষে কথা বলার আগে ঠান্ডা মাথায় কিছু চিন্তাভাবনার প্রয়োজন আছে।

কথা এগুনোর আগে একটি কথা স্পষ্টভাবে মেনে নেয়া যাক।
ভাষার মতোই সাংস্কৃতিক বিবর্তনও একটি চলমান প্রক্রিয়া। বিজাতীয় সংস্কৃতির অনেক কিছুই আমাদের সংস্কৃতির মাঝে অতীতে মিশেছে, ভবিষ্যতেও মিশবে। তেমনি আমাদের সংস্কৃতির অনেক কিছুও বিজাতীয় সংস্কৃতির সাথে মিশবে। পৃথিবীর সভ্যতা এভাবেই এগিয়ে চলেছে। যদি তা না হতো, তাহলে আমরা এখনও মেঝেতে মাদুর পেতে খেতাম, ধুতি-গামছা ছাড়া শরীরে কিছু চড়াতাম না, পাথরে পাথর ঠুকে আগুন জ্বালাতাম।

হ্যা, আমাদের সাবধান থাকতে হবে অন্ধ অনুকরণের ব্যাপারে।
যা আমাদের জন্য কল্যাণকর, সেটা গ্রহণ করতে কোনই সমস্যা থাকা উচিৎ না।
যেমন, ওয়েস্টার্ন সিভিলাইজেশনের একটি অতি চমৎকার "সংস্কৃতি" হচ্ছে কাজের প্রতি শ্রদ্ধা।
বিদেশে মিলিওনেয়ারের পুত্রকেও দেখা যায় ম্যাকডোনাল্ডসের মতন ফাস্ট ফুড শপে নিম্নতম আয়ের পদবীতে কাজ করে করে পকেটের পয়সা রুজি করতে। ষোল বছর বয়স থেকে বাবা মা তাঁদের ট্রেনিং দেন নিজের পায়ে দাঁড়ানোর। নিজের উপার্জনে নিজের খরচ নিজে চালানোর ট্রেনিং। নিজের আয় অনুযায়ী এপার্টমেন্ট ভাড়া করে থাকো, খাওয়া দাওয়া ইউটিলিটি বিলস ইত্যাদি দেয়ার পরে পড়াশোনাও করো। এতে তাঁরা কাজকে, কষ্টার্জিত উপার্জনকে সম্মান করতে শিখে।
আমার ডিপার্টমেন্টের অন্য টিমের এক মহিলা ডিরেক্টরের আয় বছরে লাখ ডলারের বেশি। তাঁর স্বামীরও আয় যদি ধরি তাঁর সমান, তাহলে তাঁদের পারিবারিক উপার্জন বছরে দুই লাখ ডলারের উপরে। বেশ অবস্থাপন্ন পয়সাওয়ালা লোকজন, স্বীকার করতেই হবে।
সেই মহিলার ষোল বছরের কন্যাকে তিনি একটি রেডিমেড সস্তা কাপড়ের দোকানে চাকরিতে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। ঘন্টায় সাত ডলার পঁচিশ পয়সা উপার্জন করে মেয়ে। ট্যাক্স এবং অন্যান্য কাটছাঁটের পর হয়তো সাড়ে পাঁচ ডলারের মতন ব্যাংকে আসে। বিনিময়ে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়। কেন? যাতে সে কাজকে সম্মান করতে শিখে। এই কারণেই যখন আমি রিটেইল শপে কাজ করতাম, দেখতাম উঁচু থেকে উঁচু শ্রেণীর বিত্তশালী ভদ্রলোক ও ভদ্রমহিলাগণ আমার সাথে মিষ্টি আচরণ করতেন, সম্মান দিয়ে কথা বলতেন। একটা সময়ে তাঁরাও এই কাজ করে নিজের পকেটমানি উপার্জন করেছেন, একটা সময়ে তাঁদের ছেলে মেয়েরাও এই কাজ করে নিজেদের জীবনের ট্রেনিং নিবে।
আমাদের দেশে দুই পয়সার মালিক হলেই সবাই লাট সাহেব হয়ে যান। বাপের টাকার ফুটানিতে পোলাপানের পা মাটিতে পড়েনা। তারচেয়ে বড় ফাজিল হয়ে থাকে সেই বড়লোক বাচ্চাদের মায়েরা। স্বামীর উপার্জনে যার অবদান শূন্য, অথচ সেই টাকার ফুটানিতে দেমাগে মহিলার পা মাটিতে পড়েনা।
আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে চিনি এমন এক মহিলাকে যারা একটা সময়ে অতি দরিদ্র ছিলেন। স্বামী বুদ্ধি খাটিয়ে পয়সা জমিয়ে গার্মেন্টসের মালিক হয়ে ফুলে ফেঁপে উঠেছেন। এখন তিনি ফাইভ স্টার ছাড়া বাইরে খেতে যান না। গুলশান বনানীর লোকজন ছাড়া মেলামেশা করেননা। প্রথমেই জানতে চাইবে আপনার বাসা কোথায়। যদি বলেন কল্যাণপুর বা শান্তিনগর, আপনার সাথে আর একটা কথাও বলবে না। অথচ নিজেরা একসময়ে ডেমরা, বাড্ডা, শাহ্জাহাদপুর এইরকম স্থানে থাকতেন।
সিঙ্গাপুর ব্যাংকক ছাড়া দেশের "ফকিরা হাসপাতালে" (উনি এই শব্দটাই ব্যবহার করেন) চিকিৎসা করান না। মহিলা কিন্তু আগেও গৃহিনী ছিলেন, এখনও গৃহিণীই আছেন। তাঁর লাইফের সবচেয়ে বড় এচিভমেন্ট হচ্ছে তাঁর স্বামী হঠাৎ বড়লোক হয়েছে। এই মহিলার অহংকার কতটা যৌক্তিক?
এইসব ফাজিলগুলি এদেশে এসেও ইতরামি ছাড়েনা।
একটি বাঙালি গ্রোসারি শপের ফুড কর্নারে খাবার অর্ডার দিতে লাইনে দাঁড়িয়েছি। সামনে এক মহিলা পাকোড়া অর্ডার দিচ্ছেন। কাউন্টারের মেয়েটি জানালো, "স্যরি ম্যাডাম, আজকের জন্য পাকোড়া শেষ হয়ে গেছে।"
মহিলা বেশ রুক্ষ স্বরে বললেন, "তো কী হয়েছে? নতুন করে ভাজতে বলো।"
মেয়েটি আবারও মুখে হাসি ঝুলিয়ে রেখে বললো, "ম্যাম, কিচেন থেকেই জানিয়েছে আজকের জন্য সোল্ড আউট। আমরা এক্সট্রীমলি স্যরি। আপনি অন্য কিছু ট্রাই করুন?"
মহিলা খুবই কর্কশ স্বরে স্পষ্ট বাংলায় বলতে গজরাতে লাগলেন, "অসহ্য! ফাজলামি করার আর জায়গা পায় না।"
বলে তিনি চলে গেলেন।
আমার বৌ নিজের অর্ডার দেয়ার সময়ে মেয়েটিকে বললো, "ঐ মহিলার পক্ষ থেকে স্যরি বলছি। তুমি মন খারাপ করো না।"
মেয়েটি হেসে বললো, "আপনি স্যরি বলছেন কেন? এরকম কত কাস্টমার যে আমরা প্রতিদিন ডিল করি। এখন গা সওয়া হয়ে গেছে।"
কথা হচ্ছে, এইসব বাঙালি গ্রোসারি স্টোর বা রেস্টুরেন্টে কাজ করা ছেলে মেয়েগুলি বেশির ভাগই হয় ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট। ভাল ঘরের সন্তান। পয়সা ওয়ালা যদি নাও হয়ে থাকে, শিক্ষিত মেধাবী ঘরের সন্তান, এই বিষয়ে কোনই দ্বিমত নেই। কারো কারোরতো দেশের অবস্থা এতই ভাল যে এইরকম কাস্টোমারগুলোকে ঘরের চাকর রাখতে পারবে। এখানে পকেটমানি সংগ্রহ করতে সম্মানের সাথে পরিশ্রমের চাকরি করছে। দুই দিনের ধনী ছোটলোকগুলো সেটা বুঝে না।
তাই কাজকে সম্মান করার এই "বিজাতীয় সংস্কৃতি" অবশ্যই আমাদের সমাজে ঢুকা প্রয়োজন।

শুধু একটা উদাহরনে কাজ হবে? নাকি আরও কিছু উদাহরণ দিব?
আচ্ছা, আরেকটা দেই।
আমাদের "বাঙালি সংস্কৃতিতে" যেমন একটি রীতি আছে, "বড়দের সম্মান করতে হবে।"
এখানে একটা বিরাট ফাঁক আছে। বড়দের কেবল "বয়সের কারনে" সম্মান করতে হবে কেন? যদি বয়োজ্যেষ্ঠ লোকটা বদমাইশ হয়? ভিকারুন্নেসার এক শিক্ষক (পরিমল) ছাত্রীদের সাথে শুয়ে পর্ন ভিডিও বানিয়ে ব্ল্যাকমেল করতো। লোকটা শিক্ষক, এবং বয়সে বড়, তাকে সম্মান করতে হবে?
বরং "কাজের কারনে সম্মান করতে হবে" রীতিটা চালু হওয়া প্রয়োজন। সে বয়সে আমার ছোট হলেও আমার তাঁকে সম্মান করতে হবে। জীবন মানে মিলিটারি নিয়ম না যে চেইন অফ কমান্ড মেনে চলতে হবে। যদি এমন পাই, হাইস্কুলেও যাওয়া শুরু করেনি ছেলে, নিজের এলাকার হারিকেন দূর্গতদের জন্য তহবিল সংগ্রহে দেশের এক প্রান্ত থেকে হেঁটে অন্য প্রান্তে গেছে। মানে ফ্লোরিডা থেকে হেঁটে ক্যালিফোর্নিয়া (আড়াই হাজার মাইলের বেশি), এই ছেলেকে কেবল বয়সের দোহাই দিয়ে সম্মান থেকে বিরত থাকবো? অমন মানসিকতার জন্যতো ছেলেটাকে সম্মানে মাথায় তুলে রাখবো।
"সম্মান" থেকে আরেকটা বিষয় মাথায় আসলো। আমাদের দেশের সরকারি অফিসারদের অফিসে যান। আপনাকে মানুষ হিসেবে গণ্যই করবে না। গ্যাজেটেড অফিসার হয়ে একেকজন বিরাট হম্বিতম্বি বনে গেছেন।
বিদেশে আসুন, দেখবেন যে আঙ্গুলের ইশারায় দুনিয়া ওলট পালট করে ফেলা লোকজন কতটা বিনয়ের সাথে সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলেন। "মানুষকে সম্মান করার" এই সংস্কৃতি আমাদের দেশে আশা অত্যাবশ্যক।

এবং বিদেশিদের একটি সংস্কৃতি অবশ্যই যা আমাদের গ্রহণ করতে হবে, তা হচ্ছে অন্যের বিশ্বাসের প্রতি সম্মান।
নিউজিল্যান্ড দেখিয়ে দিয়েছে সে দেশের "সংখ্যালঘু ইমিগ্র্যান্টদের" উপর আক্রমনের পরে কিভাবে একটি দেশের সভ্য মানুষের আচরণ হওয়া উচিৎ। কিছু তালিকা:
১. বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেননি। স্বীকার করেছেন সমস্যা হয়েছে, সেটা সমাধানে ব্যবস্থা নিয়েছে। আমাদের দেশে দোষ অস্বীকার করা বা ধামা চাপা দেয়া বা অন্যের উপর চাপিয়ে দেয়ার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
২. মুসলিমদের নামে "ফুট ওভারব্রিজ" নির্মাণ জাতীয় ফালতু আশ্বাস না দিয়ে আইন সংশোধনের ওয়াদা করেছে। যাতে ভবিষ্যতে এমন কুকর্ম না ঘটে।
৩. প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং ভিক্টিমদের সাথে দেখা করেছেন। সাহস দিয়েছেন। আমাদের মন্ত্রীর মতন হেসে বলেননি যে "আমেরিকার লাস ভেগাসে ৫৮ জন মরেছিল, এখানেতো মাত্র একান্ন মরলো।"
৪. শুধু প্রধানমন্ত্রীর উপর ভরসা না করে জনগণ নিজেরা এগিয়ে এসে মসজিদ পাহারা দিয়েছেন, মুসলিমদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন।
এইরকম দীর্ঘ তালিকা লেখা সম্ভব।
কথা হচ্ছে, আমাদের দেশে যখন ভবিষ্যতে সংখ্যালঘুদের উপর এমন হামলা হবে, আমাদের উচিৎ হবে অবশ্যই তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ানো। বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে উড়িয়ে না দিয়ে পারলে হামলার আগেই মন্দির পাহারা দেয়া, তাঁদের সাহস দেয়া ইত্যাদি।

"হিপোক্রেসি" পরিত্যাগও আরেকটা উপকারী সংস্কৃতি।
বাঙালি সংস্কৃতির মেয়েদের পোশাক হচ্ছে শাড়ি। আপনি চাইছেন মেয়েরা বাঙালি সংস্কৃতি ধরে রাখুক। খুবই উত্তম। একটা সময়ে স্যালোয়ার কামিজ ঢুকে গেল। আপনি মেনে নিলেন। খুবই উত্তম। বোরখা/হিজাব ঢুকতে চাইলো, আপনি হায় হায় রব তুললেন। কিন্তু এরই পাশাপাশি জিন্স টিশার্টও যখন ঢুকতে চাইছে, সেক্ষেত্রে আপনি পুরোপুরি নীরব। কেন? সমস্যাটা কী বিদেশী অনুকরণে, নাকি স্পেসিফিক্যালি বোরখা/হিজাবে? কারোর পোশাকের স্বাধীনতায় যদি আপনি বিশ্বাসী হবার দাবি করেন, তাহলে টু শব্দটিও উচ্চারণ করার কথা না। সেটা না করে স্পেসিফিক এক ধরনের পোশাকেই আপত্তি কেন?
আবার একই সাথে, মেয়েদের পর্দা করতে উঠে পড়ে লাগা ভাইজানেরা নিজেরাই ভিড়ের মধ্যে মেয়েদের শরীর টিপে আনন্দ লাভ করেন।
এই হিপোক্রেসি ওয়েস্টার্ন সিভিলাইজেশনে নেই। সমুদ্র তীরে যান। বিকিনি পড়ে অসংখ্য নারী পানিতে নেমে যেতে দেখবেন। একই সাথে কাউকে কাউকে দেখবেন বোরখা পড়েও হাঁটাহাঁটি করছেন। কেউ কাউকে নিয়ে কটূক্তি করছে না। দেশের পোলাপান হলে বিকিনি ওয়ালিদের শরীরের হাতড়ে কিছু বাকি রাখতো না। সেফুদার মতন গালি দেয়া উচিৎ, ছোটলোক কোথাকার!

এদিকে অকল্যাণকরের লিস্ট অনেক অনেক বড়। অতি সংক্ষেপে দুয়েকটা বিষয়ের উপর আলো ফেলা যাক।
বাঙালি ভ্যালেন্টাইন্স ডেতে ভালবাসা ভালবাসা করে নোংরামি শুরু করে দেয়। বিয়ের আগে "লিভ ইন" রিলেশনশিপ আরেকটা অপসংস্কৃতি। লিটনের ফ্ল্যাট অনেক বেশি জনপ্রিয় কনসেপ্ট। অসভ্য বেহায়ার দল স্থান কাল পাত্র কোন কিছুর পরোয়া করেনা। আমি জাতীয় কবির কবরের উপর এক যুগল দম্পতিকে হাতাহাতি করতে দেখেছি। কতটা ডেসপারেট আর হর্নি হলে লোকজন কবরের সিঁড়িতে বসে মেকআউট করে!
বিয়ের মতন পবিত্র ও গভীর সম্পর্ককে একদম হাল্কা ও ঠুনকো বানিয়ে দিচ্ছে এই জিনিস।
"কেনা ছাড়াই যদি একটি গাড়ি ইচ্ছামতন ড্রাইভ করা যায়, তবে কষ্ট করে পয়সা খরচ করে কিনবো কেন?" এই সহজ যুক্তিটা মেয়েদের মাথায় ঢুকে না। তাঁরা এই আশায় থাকেন যে পুরো দুনিয়া ফেলে একটা ছেলে কেবল তাঁর সাথেই জীবন কাটিয়ে দিবে। ভালবাসার জোর, প্রেমের জোর এতই শক্তিশালী। অবশ্যই ছেলেটা "ফ্রেশ" মেয়ের সন্ধানে তাকে ছ্যাঁকা দেয়। ফলে ধরা খায় এবং মধ্যরাতে বয়ফ্রেন্ডের বাড়িতে গিয়ে হৈহল্লা শুরু হয়, "I need to talk to you."
এখন আর টকাটকি কেন? ওয়েস্টার্ন কায়দায় যখন প্রেম করতে পেরেছো, ওয়েস্টার্ন কায়দায় ব্রেকআপও করতে শিখো। মুভ অন।
জাহাঙ্গীর নগরের মেয়েদের রুমের ট্রাঙ্কে এক নবজাতককে উদ্ধার করা হয়েছে। শিশুটিকে বাঁচানো সম্ভব হয় নাই। এদিকে লোকজন সারাজীবন সাধনা করেও সন্তানের মুখ দেখার সৌভাগ্য পায় না। আহারে। মা বাবার ক্ষনিকের ফূর্তির জন্য নিজের প্রাণটাকে বলি দিতে হলো। আহারে!
একটা ব্যাপার মাথায় গেঁথে রাখুন, বিয়েতে অনেক দায়িত্ব, অনেক এডজাস্টমেন্টের ব্যাপার আছে। লিভিনে সেটা নেই। যখন ইচ্ছা চালিয়ে যাও, যখন ইচ্ছা ছেড়ে দাও। দিনের শেষে এটা ক্ষতি ছাড়া লাভ কিছুই করেনা। কাজেই একবার এই অপসংস্কৃতি জনপ্রিয় হলে আমাদের সংস্কৃতি আর মূল্যবোধে আগুন ধরে যাবে। একে প্রশ্রয় দিবেন না। কোন অবস্থাতেই না।

আরেকটা সহজ উদাহরণ দিতে গেলে বলতে হবে মদ্যপান। পোলাপান এখন ধরে নিচ্ছে মদ্যপান না করলে বুঝিবা আধুনিক হওয়া যাবে না। মদের সাথে যে আধুনিকতার কোনই সম্পর্ক নেই, বরং সভ্যতার সেই আদি থেকেই এটির অস্তিত্ব আছে, সেটা কে না জানে?
"মদ খেয়ে মাতাল হওয়া" বিদেশে চরম রকমের অসভ্যতা হিসেবে গণ্য করা হয়। কিন্তু বাঙালির মাথায় ঢুকে গেছে "মদ খেয়ে মাতাল হলাম না তো খেলাম কেন?" তারপরে যাচ্ছেতাই অসভ্যতা শুরু করে। কর্পোরেট পার্টিতে মদ সার্ভ করা হলে বাঙালি মাগনা মদের লোভে পেট ভরে খাবে। মেয়ে কলিগদের সাথে ইতরামি করবে। তারপরে বমি করে মেঝে ভাসাবে। বিদেশে এটাও অসভ্যতা। নিজের লিমিট সম্পর্কে যার জ্ঞান নেই, তাকে জাহিল হিসেবে গণ্য করে। কিন্তু ঐ যে মডার্ন হওয়ার লোভ! না পারে মডার্ন হতে, না পারে বাঙালি হতে। দুই নৌকায় পা দেয়ার ফলে কোনদিকেই যেতে পারেনা। মাঝবরাবর ছিড়ে যায়।

লেখা অনেক দীর্ঘ হয়ে যাবে বলে আর বাড়াচ্ছি না। মোট কথা, অন্য দেশে যা করে সেটা নকল করার আগে আমাদের নাড়িয়ে চারিয়ে দেখতে হবে, বুঝতে হবে আমাদের জন্য "দীর্ঘ মেয়াদে" সেটা কতটুকু কল্যাণকর। তারপরে সে গ্রহণ বর্জনের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১:৫৩

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: উচিৎ কথা বলছেন। আচ্ছা আমিতো আমার জন্মের পর হতে গত প্রায় ৩৪ বছর ধরে বাড্ডা শাহাজাদপুর আছি কিন্ত কোনও দিন যদি কোটি পতিও হয়ে যাই আমি এই এলাকা আমি ছাড়মু না। আসলে কিছু মানুষ আছেন ছোট লোক থেকে বড় লোক হলে তারা
পিঁছনের ইতিহাস ভুলে যান। :(

২১ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ৮:৫৯

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: আমি থাকতাম মধ্যবাড্ডা। :)

২| ২১ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ২:৫৪

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: যা আমাদের জন্য কল্যাণকর, সেটা গ্রহণ করতে কোনই সমস্যা থাকা উচিৎ না।
এটাই হচ্ছে মূলকথা।

২১ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ৯:০০

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ঠিক ধরেছেন। :)

৩| ২১ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ৭:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন: :):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: উচিৎ কথা বলছেন। আচ্ছা আমিতো আমার জন্মের পর হতে গত প্রায় ৩৪ বছর ধরে বাড্ডা শাহাজাদপুর আছি কিন্ত কোনও দিন যদি কোটি পতিও হয়ে যাই আমি এই এলাকা আমি ছাড়মু না। আসলে কিছু মানুষ আছেন ছোট লোক থেকে বড় লোক হলে তারা
পিঁছনের ইতিহাস ভুলে যান।

৪| ২২ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১২:৪৪

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: ভাইরে ভাই এক ম্যাডাম আছে বসুন্ধরা ডি ব্লকের বড় মসজিদের পাশের দুইটা অ্যপারমেন্ট কিনছে আর একটা ভাড়া নিছে । ওনার
স্বামীও গার্মেন্টস বিজনেস করেন সম্ভবত অল্প কিছুদিন ধরে ছোট লোক থেকে বড় লোক হইছেন । :( তারা মানুষকে মানুষই ভাবেননা। :| এদেরই বলে বড়লোক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.