নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাকিব আল হাসান - দোষী

২২ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:০৮

ক্যানভাসে মাঝে মাঝে হেল্প পোস্ট প্রকাশ হয়ে থাকে। কারোর চিকিৎসা প্রয়োজন, প্রচুর টাকা লাগবে, সামর্থ্য নেই। সেই টাকা তুলতেই পোস্ট করা।
যদি দেখেন সেই পোস্ট আমি বা অন্য কোন এডমিন বা মডারেটর করেছি, তখন স্বাভাবিকভাবেই লোকে বিশ্বাস করেন, আর যাই হোক, এটি ভুয়া ঘটনা না। কারন এর সাথে ক্যানভাসের মান সম্মান জড়িত। এর মানে, আমরা ভাল মতন খোঁজ খবর নিয়ে, সত্য মিথ্যা যাচাই বাছাই করে, তারপরেই আপনাদের কাছে হাত পেতেছি। আপনারা নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন, যে টাকাটা আপনারা যে উদ্দেশ্যে দিচ্ছেন, সেটি সেই কাজেই খরচ হবে।
আমি ঠিক বলছি না?
এই বিশ্বাস একদিনে আসেনি। বছরের পর বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে স্বচ্ছতা প্রমান দিতে দিতে আজকে আমরা মানুষের এই বিশ্বাস অর্জন করেছি।
তাই, আমরা যখন দেখি, আমাদের পরিচিত কেউ সাহায্য চাইছেন, সে চাচা মামা থেকে শুরু করে পরিচিত মহলের কেউ হতে পারে, যাকে আমরা "সৎ" জেনে অভ্যস্ত, আমরা নিজ উদ্যোগেই তাঁকে সাহায্য করি। কারন আমরা যারা নিজের পরিশ্রমে টাকাপয়সা উপার্জন করি, ভাল করেই জানি এর মূল্য কি। কাজেই অপাত্রে সেই টাকা নষ্ট করতে চাই না।
একইভাবে কোন বড় তারকা, সে সালমান খান থেকে শুরু করে নিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও হতে পারে, হতে পারে আমাদের অনন্ত জলিল, তাঁরা যখন কোন ফান্ড রেইজিং ইভেন্টে অংশ নেন, তখন বন্যার পানির মতন টাকা আসতে থাকে। অনন্তকে নিয়ে যতই ট্রলিং চলুক না কেন, এই লোকটা যে মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসেন, এই কথা তাঁর চরম নিন্দুকেও স্বীকার করতে বাধ্য।
একজন সাধারণ মানুষ যদি কারোর জন্য সাহায্য চায়, আমরা হয়তো কাছের কয়েকজন মানুষ ছাড়া তেমন কেউ এগুবো না, কিন্তু একই ব্যক্তির জন্য শাহরুখ খান সাহায্য চাইলে আমরা সবাই এগিয়ে আসবো। সবই তাঁদের উপর মানুষের বিশ্বাসের ফল, এবং তাঁদের গুড উইল। ঠিক না?
ঠিক যেমনটা সালমান এফ রহমানের মতন প্রতিষ্ঠিত ঋণ খেলাপিরা যদি বলেন, তারা ত্রাণের জন্য তহবিল সংগ্রহ করছেন, স্বার্থ ছাড়া আমরা কেউ সেখানে এক পয়সা দেই না। জানি, আমাদের কষ্টের টাকা থেকে দান করা এই পয়সাও গরিবের পাতে যাবে না, বরং নিজেরাই হাপিশ করে দিবে। একই কারণে সরকারি তহবিলের উপরও মানুষের ভরসা উঠে গেছে সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই। কারন আমাদের ত্রাণের চাল, তেল, ঢেউটিন সব নেতারা ও চ্যালারা চেটে পুটে খায়। এই ভয়বহ পরিস্থিতিতেও আমরা প্রতিদিনই এমন চোরের ধরা খাওয়ার কাহিনী খবরে পড়ছি।

সাকিব আল হাসানকে নিয়ে একটি খবর গতকাল প্রচার হয়েছে।
তাঁর কাঁকড়া খামারে গত চারমাস ধরে দুইশো কর্মচারীর বেতন দেয়া হচ্ছে না। শ্রমিকরা আন্দোলন পর্যন্ত করেছেন। পুলিশ এসে বেতন দেয়ার আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা যার যার বাড়িতে ফেরত যান। সাংবাদিক তাঁর প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারকে ফোন করে পায়নি। যদিও বেতন এখনও দেয়া হয়নি।

স্বাভাবিকভাবেই, পোস্টটি খুবই ভাইরাল হলো। কারন, দেশে ছিদ্রান্বেষীর অভাব নেই। সাকিব আল হাসান একজন বিশ্ববিখ্যাত তারকা, হাতে গোনা কিছু বাংলাদেশীর একজন যাকে বিশ্বের সব প্রান্তের লোকে চিনে। কাজেই ওর এত বড় একটা খুঁত বাঙালি ছাড়বে কেন? তাই গালাগালি করে ভরিয়ে দিল। এর সাথে দুইশ শ্রমিকের বেতন বকেয়া টকেয়ার কোন সম্পর্ক নেই। সাকিব বলেই গালিটা দিতে হবে।
আরেকদল চোখ বন্ধ করে বলে দিলেন, "সাকিব বলেছে ম্যানেজমেন্টের দোষ। ও কিছু জানতো না। ও দ্রুত পরিশোধ করে দিবে। শুধু শুধু কুৎসা রটাবেন না।"
এবং অবশ্যই মধ্যপন্থি কিছু আছেন, যারা বলছেন, "সাকিব কাজটি ঠিক করেন নি। শ্রমিকের বেতন আটকানো উচিৎ হয়নি। সাকিবের পরিবর্তে অন্য যে কেউ হলেও একই কথা বলতাম।"

তাহলে প্রথম দুইটা পয়েন্ট নিয়ে কিছু বলি।
আসলে নিন্দুকদের নিয়ে কিছু বলে সময় নষ্ট করে লাভ নেই। যারা সাকিবকে এমনিতেই গালাগালি করে, তারা "সাকিবের বৌ সুন্দর ক্যান" "সাকিব এত টাকা কামায় ক্যান" "হেলিকপ্টার চড়ে ক্যান" এইসব নিয়েও এদের কমপ্লেন থাকে। এদের ব্রিটিশ কায়দায় গালি দিতে হয়, Bloody losers! নিজের জীবনে কিছু ঘোড়ার আন্ডা করতে পারেনাই, তাই অন্যের পেছনে লেগে থাকে। ওরা পৃথিবী থেকে বিদায় নিলে মানবজাতির বোঝা হালকা হতো।

বরং অন্ধ ফলোয়ারদের নিয়েই কিছু বলা যাক। কেন বলা জরুরি, সেটা এই পোস্টের শেষে বুঝে যাবেন।
শুরুতেই সবাই সাকিবের সাফাইটা চোখ বন্ধ করে মেনে নিলেন। সাকিব বলেছে, সব দোষ ম্যানেজারের, সে কিছুই জানতো না।
ভক্তরা বললেন, "ঠিক ঠিক! আসলেইতো দেশে এইভাবেই চলে। ম্যানেজাররা মালিককে যা তা বুঝায়, মালিকরা জানেও না কি হচ্ছে। সাকিবের ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে।"
কেউ বললেন, "আসলে চার মাস না, দুই মাসের বেতন বাকি পড়েছে। সাংবাদিকদের কাজ হলো বাড়িয়ে বলা।"
এরাই কিছুদিন আগে সাকিবের বিরুদ্ধে জুয়াড়ির যোগাযোগ ঘটনা রিপোর্ট না করার অপরাধের সময় বলেছিলেন সব পাপনের ষড়যন্ত্র।
আচ্ছা, কাজটা যদি সাকিব না করে অন্য কেউ করতো, তাহলেও কি এমন বায়াস্ড হতেন তাঁরা? আচ্ছা ধরেন, পাপনের ফার্মে এমনটা ঘটেছে, তখন? না। তখন এই এরাই পাপনের মুণ্ডুপাত করতেন। লক্ষ্য করুন, ঘটনা কিন্তু বদলায় নাই, কেবল পাত্রপাত্রী পাল্টেছে, এতেই বিচার বদলে গেছে। একে ন্যায় বিচার বলে? না।
কুরআনের ভাষায়, নিজের বিরুদ্ধে যেতে হলেও ন্যায়ের পক্ষে থাকতে হবে।

যাই হোক, আপনি যাই বলেন না কেন, সত্য ঘটনা হলো বেতন বাকি পড়েছে।
এখন "সাকিবভক্ত" না হয়ে কেবল নিজেদেরকে সেইসব মজুরদের স্থানে বসিয়ে কল্পনা করুন। আপনার অফিস যদি আপনাকে চারমাসের বেতন না দেয়, এবং আপনার কোন সেভিংস না থাকে, তাহলে আপনার বাড়ির মালিক মেনে নিবেন যে এটা ম্যানেজমেন্টের দোষ ছিল? তাঁদের কিছু যায় আসেনা আপনি বিল গেটসের কোম্পানিতে কাজ করেন নাকি ডিপজলের খামারে, তাঁদের মাস শেষে বাড়ি ভাড়া পাওয়া নিয়ে কারবার। কারন সেই টাকায় তাঁদের নিজেদের সংসার চলে, অথবা মর্টগেজ পেমেন্ট হয়। আপনার ভাড়া না পেলে ব্যাংক নিলাম করে দিতে পারে বাড়ি। হয়তো তাঁদের বাচ্চাদের স্কুলের বেতন, টিউশন, ইত্যাদি নির্ভর করে আপনার বাড়ি ভাড়ার উপর। পুরোটাই একটি "ইকোনোমিক চেইন" এবং কেবলমাত্র আপনার অফিসের "ম্যানেজমেন্টের ভুলের" কারনে পুরো চেইন এলোমেলো হয়ে যায়। তাই, যেকোন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মূল দায়িত্ব হচ্ছে, কোম্পানির মাল বিক্রি হোক অথবা না হোক, কোম্পানি ডুবে যাক বা ভেসে থাকুক, শ্রমিকের ন্যায্য বেতন সময় মতন পরিশোধ করা। যদি কোম্পানি সেটা না করতে পারে, তাহলে অবিলম্বে শ্রমিকদের সাথে আলোচনায় বসা যে এই মুহূর্তে বেতন দিতে পারছে না, কিন্তু এত দিন পরে দিতে পারবে। এতে উভয়পক্ষ রাজি থাকলে লিখিতাকারে একটি চুক্তিপত্র সই করতে হবে। যদি কোম্পানি তা করতে না চায়, তাহলে শ্রমিকের বকেয়া বেতন পরিশোধ করে শ্রমিককে চাকরি থেকে ছাঁটাই করে দিবে। এতে শ্রমিক অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে কাজ খুঁজতে পারবে, অন্য কোন ব্যবসা করতে পারবে। বা প্রয়োজনে বেকার বসে থাকবে। কিন্তু এক কোম্পানিতে কোন আলোচনা ছাড়া অবৈতনিক কর্মচারী হিসেবে মাসের পর মাস কাজ করে যাওয়া কোন অবস্থাতেই কোন দেশেই বৈধ না। অনেক দেশে এমন ব্যবসায়ীর বিজনেস লাইসেন্স বাতিল হয়ে যায়।
সাকিব যেহেতু ইদানিং ইসলামের দিকে ঝুঁকছেন, হজ্ব, উমরাহ পালন শেষে লম্বা দাড়ি রেখেছেন, তাই বলি, ইসলামের নবী (সঃ) আরও কড়াকড়িভাবে বলে দিয়েছেন, "শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগে তাঁর মজুরি বুঝিয়ে দিতে হবে।" মাসের পর মাস বকেয়া রাখা কোন অবস্থাতেই জাস্টিফায়েড না।
"ম্যানেজমেন্টের দোষ" বলেও পার পাবার উপায় নেই। কারন যেকোন কর্পোরেট হাইয়ারারকিতে সর্বোচ্চ ম্যানেজমেন্টে মালিক স্বয়ং থাকেন, এখানে যেমন সাকিব আছেন। "ম্যানেজমেন্টের দোষ" মানে তাঁর নিজেরও দোষ। তাঁর ম্যানেজার কোন কাজ ঠিক মতন করতে পারে নাই মানে হচ্ছে সে ঐ ম্যানেজারকে ঠিক মতন ম্যানেজ করতে পারে নাই, যে কারনে ম্যানেজার ব্যর্থ হয়েছে।
আমাদের দেশের নিয়ম ও সংস্কৃতি হচ্ছে, আমরা কোন অবস্থাতেই দোষ স্বীকার করতে রাজি হই না। পশ্চিমা দেশের সাথে ঠিক এখানেই আমাদের পার্থক্য। আমরা প্রবাসীরা যখন প্রজেক্টের কোন ডেডলাইন মিস করি, আমাদের বস এসে সরাসরি জিজ্ঞেস করেন, কেন "তুমি" ব্যর্থ হলে। আমরা যদি বলি, "অমুক ডিপার্টমেন্ট এই ডকুমেন্ট সময়মতন পাঠায়নি," সেটা বলা মানে আপনি নিজের কবর নিজে খোদাই করা। এখানে সবার আগে নিজের দায়িত্ব স্বীকার করে নিবেন, তারপরে দুঃখিত বলে চেষ্টা করবেন এক্সপ্লেইন করতে কোথায় কোথায় বাঁধা আসার ফলে আপনি ব্যর্থ হয়েছেন। অমুক ডিপার্টমেন্ট থেকে ডকুমেন্ট আনার দায়িত্ব ছিল আপনার। আপনি আপনার পক্ষে যা সম্ভব তাই করবেন সেই ডকুমেন্ট আদায়ে। না পারলে আগে থেকেই বসকে জানাতে থাকবেন যে ওরা সাহায্য করছে না। বসকে বলবেন তাঁর নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে যেন সেই ডকুমেন্ট হাজির করতে সাহায্য করতে পারবেন কিনা। কারন, আপনার প্রজেক্টের দায়িত্ব আপনার হাতে। এবং এতে বসও খানিকটা দায়বদ্ধ। ব্যর্থ হলে পুরো দায়টাই আপনার। আবার আপনাকে ম্যানেজ করতে না পারায়, বসও দায়ী হবেন। অন্যের কাঁধে দোষ চাপানোর কোনই উপায় নেই এদেশে। যে কারনে শুনবেন এদেশে মানুষের চাকরি নিয়মিত যায়। অথবা নিজে থেকেই পদত্যাগ করে। সেটা কর্পোরেট ম্যানেজার থেকে শুরু করে মন্ত্রী মিনিস্টার পর্যন্ত সবাই। জার্মানির অর্থমন্ত্রী সুইসাইড করে ফেলেছেন করোনায় নিজের দেশের বিপদ দেখে। আর আমাদের দেশে এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ মন্ত্রণালয় দোষ চাপায় ডাক্তারের উপর, ডাক্তার দোষ চাপায় মন্ত্রণালয়ের উপর, সবাই দোষ চাপায় জনগনের উপর, জনগণ দোষ চাপায় পীর ফকির ধর্মব্যবসায়ী হুজুরদের উপর, ধর্ম ব্যবসায়ীরা দোষ চাপায় ইহুদি নাসারাদের উপর, ইহুদি নাসারারা দোষ চাপায় "টেরোরিস্টদের" উপর, টেরোরিস্টরা দোষ চাপায় পশ্চিমা আগ্রাসনের উপর, এইভাবে সবাই দোষ চাপানোতে ব্যস্ত। দিন শেষে আপনি আপনার মাথা চুলকে ভাববেন, দোষ আসলে কারোরই নাই। বাস্তবতা হচ্ছে, দোষ সবারই আছে। কারন সবারই মানসিকতা এক। নিজের দোষ না খুঁজে কিভাবে অন্যের উপরে চাপানো যায়, সেটা খুঁজতেই আমাদের সময় চলে যায়। শুধরাবো কখন?
কাজেই সাকিবের কোম্পানিতে, যদি তাঁর ম্যানেজার তাঁর কর্মচারীদের বেতন না দিয়ে থাকে, তবে দোষটা সাকিবেরও। সাকিব নিজের লাভের অংক বুঝে নিতে এতটা উদাসীন থাকেন? না। তাহলে কর্মচারীদের বেতনের ব্যাপারে আরও বেশি সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
যদি এতই ব্যস্ত থাকে যে সময় দিতে পারেনা, তবে তাঁর ব্যবসায় নামাটাই উচিৎ হয়নি। তাঁর নাম ব্যবহার করে কোম্পানি চলছে, তাঁর একটা গুডউইলের উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। এই যে সে সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশনের জন্য তহবিল সংগ্রহ করছে, লোকজন শুধু তাঁর নাম আর রেপুটেশনের উপর ভরসা করেই কোটি কোটি টাকা দিবে। কিন্তু তাঁর নিজের কোম্পানিরই ম্যানেজেমেন্ট যদি সে সামলাতে না পারে, এই ফাউন্ডেশনে আমি বা অন্যান্যরা কিভাবে তাঁর উপর ভরসা করবো? ধরেন এক কোটি টাকা তাঁর ম্যানেজমেন্ট মেরে দিয়েছে। সেটা পত্রিকাতেও নিউজ হয়েছে। তাঁর ম্যানেজার ফোন ধরছে না। তখনও কী সে বলবে "দুঃখিত, ম্যানেজমেন্ট মেরে দিয়েছে, আমার দোষ না। আমিতো বিদেশে থাকি।"
না, ওর নাম দেখে যেহেতু লোকজন টাকা দিচ্ছে, কাজেই সেই নামের প্রতি তাঁর দায়িত্ববোধ থেকে সবকিছু দেখার দায়িত্বও তাঁর।
তেমনই তাঁর নামে যেহেতু কোম্পানি চলছে, ক্রেতা কর্মচারী সবাই তাঁর নাম ব্র্যান্ড দেখে বিনিয়োগ, কেনাকাটি ও কাজ করছে, কাজেই তাঁকে দায়িত্ব নিতে হবে সেখানে কোন মিসম্যানেজমেন্ট হচ্ছে না।

এই পর্যন্ত সবার ক্লিয়ার?

ঠিক একই কারনে আমাদের দেশে যখন কোন দুর্নীতির ঘটনা ঘটে, তখন এর দায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে উপরে উঠতে উঠতে সেটা এমপি মন্ত্রী হয়ে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত যায়। কারন, তাঁরা আমাদের দেশের ম্যানেজার। তাঁদের অধীনস্থ কোন কর্মকর্তা ব্যর্থ মানে, তারাও সেই প্রজেক্টে ব্যর্থ হয়েছেন। কারন, সেই কর্মকর্তা কর্মচারী যেন চুরি না করে, সেটা দেখার জন্যই তাঁদের রাজগদিতে বসানো হয়েছে।
এবং জনগনের উচিৎ অবিলম্বে, "বায়াস্ড" "আল্লাদিমার্কা" মনোভাব ত্যাগ করা। আমাদের এই আল্লাদিপনার কারণেই আজকে আমাদের জনপ্রতিনিধিরা ত্রাণের চাল চুরি করার দুঃসাহস করে। ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি, দুধওয়ালা দুধে পানি মেশাচ্ছে, আমরা মাফ করে দেই, কারন "গরিব মানুষ, কিছুটা লাভ করছে, ক্ষতি কি?"
অফিসের পিওন, যার কাজই হচ্ছে স্টাফদের জন্য চা সিঙ্গারা নিয়ে আসা, সে বখশিশ না পেলে নড়তে চায় না। দুই টাকার সিঙ্গারা আনতে দুইটাকা বখশিশ দিতেই হবে উনাকে। অথচ ঠিক এই কাজটির জন্যই উনি বেতন পান। কোন কর্মচারী বখশিশ দিবে কি দিবেনা, সেটার উপর ওর কাজ নির্ভর করেনা। কিন্তু, এখানেও আল্লাদিপনা। "গরিব মানুষ, সামান্য বেতনে চলবে কিভাবে?" ব্যাপারটা সামান্য বেতনের না, সামান্য বেতনের কারনে সে রীতিমতন জিম্মি করে ফেলছে, সেটার। সরকারি হসপিটালে চতুর্থশ্রেণীর কর্মচারীদের দৌরাত্মে সবাই জিম্মি। ডাক্তার নার্সরা পর্যন্ত কিছু করতে পারেন না। সরকারি অফিসাররা ঘুষ নিচ্ছে, আমরা দিব্যি মেনে নিচ্ছি। কারন, "সরকারি কাজে বেতন কম। তাঁদেরওতো বৌ বাচ্চা পালতে হয়।" অথচ এই সব ঘুষখোর-চোরগুলির দাপট কী! গ্যাজেটেড অফিসার! দেমাগে মাটিতে পা পড়েনা। মানুষকে মানুষ হিসেবেই গণ্য করে না। এদের স্থান হওয়া উচিৎ ছিল জেলে। কিন্তু হচ্ছেনা, কারন, আমাদের জনগনের বায়াস্ড নীতিবোধ।
আমার পছন্দের দলের লোক চুরি করতে পারে, এই বিষয়টা আমার মাথাতেই ঢুকবে না।
আমার প্রিয় মানুষটার কোন দোষ থাকতে পারে, এই বিষয়টা আমার হজম হয় না।
ওরাও যে দোষে গুনে "মানুষ" এই বিষয়টাই আমরা মানতে পারিনা।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: চার মাসের বেতন বাকি পড়েছে। সেই বেতন দিয়ে দেওয়া হয়েছে। অবশ্য সাকিব এই ব্যবসা করে লস খেয়েছে। এদিকে সে দেশে নেই। তাই বেতন নিয়ে কিছুটা সমস্যা হয়েছে।

২| ২২ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:২৩

গুরুভাঈ বলেছেন: ৩০ তারিখের মধ্যে নিজস্ব তহবিল থেকে দিয়ে দিবে বলছে, এখনো দেয় নাই। ব্যাবসায় লাভ লস থাকবেই, শুধু লাভের ভাগ নিবেন, সুনামের ভাগ নিবেন লসের না কেনো? দুর্নামের না কেনো? সাকিবের স্টেটমেন্ট দোষ স্বীকার না করে উল্টা সাংবাদিকতার দোষ দিছে। কার এখন ঠেকা পরছে ঐলাকার শ্রমিক উস্কায় দিয়া আন্দোলন করবে? ঐ সংবাদ করে কেউ কোটিপতি হবে?

৩| ২২ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৫৩

প্রেক্ষা বলেছেন: "ওরা পৃ্থবী থেকে বিদায় নিলে মানব জাতির বোঝা হালকা হতো" এই লাইন পুরা আমার চিন্তার সাথে মিলে গেছে....দুই একটা আবর্জনা দূর হওয়া দরকার তবে আমার আম্মুর সামনে এই কথা বললে সবসময় বলে এভাবে নাকি বলতে হয় না :(

৪| ২৩ শে এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:৩৭

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: সাকিবের প্রতিষ্ঠানে যদি সত্যিই ২ বা ৪ মাসের বেতন বকেয়া থাকে তবে এই দোষ সাকিব কারও ঘাড়ে চাপাতে পারে না। কারণ সে প্রতিষ্ঠানের মালিক। বিখ্যাত লোকদের সামাজিক দায়বদ্ধতা সাধারণ মানুষের চেয়ে বেশী হওয়া উচিত।

আমাদের দেশে আমরা নৈতিকতার মানদণ্ডকে অনেক ক্ষেত্রে নিম্নমুখী করে ফেলেছি। ঘুষ নিয়ে বলছে আমি তো আপনাদের পরামর্শের বিনিময়ে টাকা নিচ্ছি। প্রাইমারির বাচ্চাকে শিক্ষক বলছে তোমরা PEC পরীক্ষায় পাশের জনেরটা দেখতে পার কিন্তু সিট থেকে উঠে বা অন্নের খাতা নিয়ে লিখবে না।

৫| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৯:৩৭

দজিয়েব বলেছেন: এক্সেলেন্ট লিখেছেন ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.