নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বুদ্ধিজীবী দিবস

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ ভোর ৫:৫০

পদ্মা সেতুর অস্বাভাবিক ও অবিশ্বাস্য খরচ নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুললে তাকে দেশদ্রোহী, রাজাকার, পাকিপ্রেমী, বিম্পি জামাত ট্যাগ দেয়ার কিছু নেই। সে যেহেতু দেশের নাগরিক, ট্যাক্স দেয়, তাঁর অধিকার আছে জানার যে কোথায় কোথায় কেমন খরচ হলো। এসব জানতে চাওয়া হয়না বলেই সরকারি প্রতিষ্ঠানের মামুলি গাড়ির ড্রাইভার আজকে রাজপ্রাসাদে বাস করে। হাজার হাজার কোটি কাটা সরকারি দলের আতি পাতি নেতার পকেটে চলে যায়।
পদ্মা সেতু নির্মাণে আনন্দ প্রকাশ করার মানে এই না যে কেউ সরকারের তেলতেলে চাটুকার হয়ে গেল। আগাগোড়া পঁচে যাওয়া সিস্টেমের দেশের একটি সাফল্যে সে গর্বিত। সরকারকে সেজন্য সে তাঁদের প্রাপ্য অভিনন্দন জানাচ্ছে।
নির্মিয়মান ভাষ্কর্য, যা মূলত "রাষ্ট্রীয় সম্পদ", ভাংচুরের ঘটনায় নিন্দা জ্ঞাপন মানে এই না যে "কাফির" হয়ে গেছে। ভ্যান্ডালিজম বা ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করা যে কোন সুনাগরিক মুসলিমের দায়িত্ব। অন্যের মালিকানাধীন সম্পত্তিতে হাত দেয়ার অধিকার পর্যন্ত ইসলাম কাউকে দেয়না, ভাংচুরতো দূরের কথা। কেউ যদি আমার এই দাবির বিরুদ্ধে কোন দালিলিক প্রমান পেশ করতে পারে, কানে ধরে উঠবস করবো। ঠিক এই কারণেই, এই কর্মকান্ডের পক্ষে দেশের কোন "আলেম" কথা বলেনি।
সরকারি টাকায় ভাষ্কর্য নির্মাণে শান্তিপূর্ণ আপত্তি জানানো রাজাকারের লক্ষণ নয়, এটা গণতন্ত্র। মত প্রকাশের অধিকার। কেউ যদি দাবি করে এই টাকায় টোস্ট বিস্কিট কিনে জনতার মধ্যে বিলিয়ে দেয়া হোক, সেটাও তার নিজস্ব মতবাদ, এবং সেটা প্রকাশ করা তার নাগরিক অধিকার। মানা না মানা সেটা সরকারের বিবেচনা। পৃথিবীর সব দেশেই গণতন্ত্র এভাবেই চলে।
সমস্যাটা হচ্ছে, আমাদের দেশে এইরকম সহজ স্বাভাবিক চিন্তা করার মানুষের সংখ্যা আশঙ্কাজনকহারে কমে গেছে। অর্ধশিক্ষিত, অশিক্ষিতের কথা বাদই দিলাম, শিক্ষিত লোকজনকেও এমনসব কথাবার্তা বলতে শুনি যা শুনলে দেশের শিক্ষাব্যবস্থার উপর থেকে বিশ্বাস উঠে যাবে। সেদিন এক ছাগল দাবি করলো, নিজেকে মুসলিম দাবি করলে আমি নাকি "বাংলাদেশী" দাবি করতে পারবো না। এর লজিক কি বুঝলাম না। মুসলিমরা কি "বাঙালি" নয়? একই লজিকে তাহলে হিন্দু/বৌদ্ধ/খ্রিষ্টান মানে কোন ধর্মের অনুসারীই বাঙালি হবার কথা নয়। তাহলে বাঙালি কারা? এই হচ্ছে কোন শিক্ষিত লোকের যুক্তি?
বুয়েটে ছাত্র পিটিয়ে হত্যা করা হলো, আদালতে শিক্ষককে জিজ্ঞেস করা হলো, আপনারা জানেন ছাত্রদের পেটানো হয়, তাহলে বাঁধা দেন না কেন?
উনি সহজ সরল স্বীকারোক্তি দিলেন। বাঁধা দিলে তাঁরাও মার খেতেন। তার মানে ধরে নেয়া যায়, পরীক্ষার খাতা, এসাইনমেন্ট ইত্যাদিতেও এইসব দলীয় ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা গুণ্ডাশ্রেণীর পোলাপান পার পেয়ে যায়। একটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট সাথে থাকলে চাকরি পেতে সমস্যা হবার কথা না। এবং একবার চাকরিতে ঢুকে গেলে, একই কাজ মাসের পর মাস করতে করতে সেটা শিখে ফেলাও কোন কঠিন কাজ না। মাঝে দিয়ে যে গুনগত শিক্ষার মান, সেটার কবর হয়ে যায়। এই জন্য টিভি ইন্টারভিউতে আমাদের জিপিএ পাঁচ প্রাপ্ত ছেলে কনফিডেন্সের সাথে বলে, "I am GPA five." এই কারনে আমাদের তথাকথিত শিক্ষিত মানুষ দাবি করে মুসলিম হলে বাঙালি হওয়া যাবেনা।
বুয়েটের ঘটনায় আমার নানার একটি ঘটনা মনে পড়ে গেল।
স্বাধীনতার পরের ঘটনা। নানা চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক।
কিছু ছাত্র নিজেদের সময়মতন পরীক্ষা দিতে এলো, পরীক্ষার সময় শেষ হবার পরেও খাতা জমা দিল না, পরীক্ষা দিতে লাগলো, ইচ্ছা মতন নকল করলো এবং রাত দশটার সময়ে নানার বাসায় এসে হুমকি ধামকি সহ খাতা জমা দিয়ে গেল।
তা আমার দাদার গল্প সবসময়েই করি যে তিনি কতটা তার ছিড়া সৎ মানুষ ছিলেন। আজকে নানার কথা বলি। উনারও মাথায় সমস্যা ছিল। যাদের মাথায় এই সমস্যা থাকে, তাদেরকে এইসব হুমকি ধামকি বা টাকার লোভ দেখিয়ে লাভ হয়না। তাঁদের কাছে নিজেদের ঈমানের মূল্য অসীম। নানা ঠিকই রিপোর্ট করলেন অমুক তমুক এইভাবে পরীক্ষা দিয়েছে, এবং এইভাবে হুমকি ধামকি দিয়েছে।
কথা হচ্ছে, নানার সাথে পুরো সিস্টেম যদি সৎ হতো, তাহলে কোনই সমস্যা ছিল না। কিন্তু আমরা কবে সেটা ছিলাম?
যে গুন্ডার বিরুদ্ধে নানা কমপ্লেন করেছিলেন, তার বাপ ছিল ক্ষমতাসীন সরকারের বড় সর নেতার পুত্র। তা এই গুন্ডা মোটামুটি ঠিক করে ফেলেছিল নানাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিবে।
ভাগ্য ভাল, ক্ষমতাসীন সরকারের আরেক নেতার পুত্র তখন নানার পাশে এসে দাঁড়ায়। নানাকে অফিসে যাওয়া এবং বাড়িতে ফেরার সময়ে প্রটেকশন দেয় কয়েকদিন এবং এরই মাঝে নিজের পার্টির অন্যান্য লোকজনের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি সামলে ফেলতে সক্ষম হয়। নাহলে আমার মা মামা খালাদের জীবন অন্যদিকে প্রবাহিত হতো।
আমি এবং আমার পরিবার যে ছাত্র রাজনীতি দুই চোখে দেখতে পারিনা, এইসব ঘটনাই এর মূল কারন।
যাই হোক, অন্য প্রসঙ্গে চলে যাচ্ছি।
মূল কথা হচ্ছে, দাদা নানার মতন ঘাড় ত্যাড়া সরকারি কর্মচারী এখনও আছেন নিশ্চই, কিন্তু সংখ্যাটি অতিরিক্ত কম।
সমাজে সৎ যোগ্য দিকপালের সংখ্যাও আশংকাজনকহারে কম। যে কারনে মূর্খের এত ছড়াছড়ি। যে কারনে জাতিগতভাবেই আজকে সুস্থ সুন্দরভাবে চিন্তা করার শক্তি ও ক্ষমতা আমরা হারিয়ে ফেলছি।
কেন?
কারন একাত্তুরের মুক্তিযুদ্ধ।
জেনারেল রাও ফরমান আলীর মাস্টার প্ল্যান।
বাঙালি জাতির মাথাকে ধীরে ধীরে গুড়িয়ে দেয়া।
পঁচিশে মার্চ থেকে শুরু করে ডিসেম্বরের তের-চৌদ্দ-পনেরো তারিখ পর্যন্ত যা চলে।
যে কারনে দেশ স্বাধীনের পর মূর্খ ও চাটুকারেরা এগিয়ে এসে তাঁদের স্থান দখল করে নেয়। মাইকে তারাই গলাবাজি করে বেড়ায়। কেউ যুক্তির কথা বলতে এলে, কেউ সৎ সুন্দরের দিকে ডাকতে এলে তাঁদের দাবিয়ে ফেলা হলো। কথা বলতে গেলেই মানুষ আতঙ্কিত হয়, এই না সাঁড়াশি আক্রমন ধেয়ে আসে!
প্লেটোর সেই উক্তিটি দিয়েই শেষ করি, “Wise men speak because they have something to say; fools because they have to say something.”
বুদ্ধিজীবী দিবসের সবচেয়ে বড় ট্রাজেডি হচ্ছে, কিছু বাঙালি একে অপরকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের "শুভেচ্ছা" দিয়ে বেড়াচ্ছে।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ ভোর ৬:২২

কালো যাদুকর বলেছেন: ভাল লিখেছেন। এই সমস্ত 'মুর্খ' শিক্ষিতদের যন্ত্রনায় সবাই ক্ষতিগস্থ হচ্ছে।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ২:৪২

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: সেটাই আফসোস। :(

২| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ ভোর ৬:৩৯

আমি সাজিদ বলেছেন: ভালো লিখেছেন।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ২:৪২

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ৭:০৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনি তো ভেঁড়ার চামড়া পরে নিজকে লুকিয়ে ফেলেছেন।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ২:৪১

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: আপনারটা দেখা যাচ্ছে। অনেক চেষ্টা করেও যেটা সোজা করা যায় নাই।

৪| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:১০

চাঁদগাজী বলেছেন:



লেজ ভাঁজ করে রাখার মতো প্যান্ট পাওয়া যায় ঢাকায়, একটা কিনে নিয়েন।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ২:৪০

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: আপনার আব্বু বুঝি সেই প্যান্ট পরেন?

৫| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: যতই ভালো লিখেন, কিন্তু আপনি একজন ভালো ব্লগার নন। আপনি যা করছেন সেটা ব্লগিং না।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ২:৩৯

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: তাহলে কি?

৬| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৫৪

নেওয়াজ আলি বলেছেন: শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা শহীদেরকে

৭| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১:৩৯

পাউডার বলেছেন: একবারে মনের কথা বলছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.