নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মোদির আগমন

২৭ শে মার্চ, ২০২১ ভোর ৪:০০

সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত মত, কারোর আপত্তি থাকলে ইগনোর করতে পারেন।
আমার ধারণা ও বিশ্বাস বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসাম্প্রদায়িক নেতা ছিলেন। তাঁর রাজনীতি ছিল অসাম্প্রদায়িক। এই ধারণার পক্ষে জোরালো কিছু প্রমান আছে, সেটা দেয়ার প্রয়োজন বোধ করছি না। আশা করি, আমার সাথে কারোর দ্বিমত থাকবে না।
আমরা আশা করি, আমাদের দেশও অসাম্প্রদায়িক একটি দেশ হবে। মুক্তিযুদ্ধ অন্তত এই কারণেই হয়েছিল। স্বাধীন বাংলাদেশ মানুষকে মানুষ হিসেবে বিবেচনা করবে। "বাংলাদেশী" সে মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান বৌদ্ধ যাই হোক না কেন, সমমর্যাদা পাবে।
পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে গেছে, আজও আমরা তা অর্জন করতে পারিনি। তবে একদিন হবেই ইন শা আল্লাহ।

নরেন্দ্র মোদী ভারতের একজন নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। এজন্য তার সম্মান প্রাপ্য। কিন্তু এইটাওতো ঠিক যে লোকটা একটা চরম সাম্প্রদায়িক লোক। ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশ, এই তিন দেশের মধ্যে ভারতই এতদিন অসাম্প্রদায়িকতায় এগিয়ে ছিল। সবচেয়ে পিছিয়ে ছিল পাকিস্তান, এখনও আছে। আমরা ওদের পরিণতি নিজের চোখেই দেখতে পারছি।
আর আমরা বরাবরই মধ্যবর্তী ছিলাম। মাঝে মাঝে আমাদের ধর্মীয় মৌলবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠে, কিন্তু তারপরেই অন্যান্যরা ঠিকই একে সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনে।
এখন দেখা যাচ্ছে ভারতও সাম্প্রদায়িক হয়ে গেছে। "গরু খাবার অপরাধে (তাও বেশিরভাগ সময় সন্দেহের বশে) মানুষ হত্যার ঘটনা" সেখানে নিয়মিত ঘটছে। ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাড়া হয়েছে। সামান্য সিনেমার একটি চরিত্রের (পদ্মাবতী) জের ধরে শিশুদের স্কুলবাসে বোমা হামলার মতন ঘটনাও ঘটেছে "মোদীজির" ভারতে। ভারতের অনেক রাজ্যেই ধর্মীয় উগ্রবাদ বেড়েছে। কেন? কারন ওদের প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাসী। যার বিরুদ্ধে গুজরাটে দাঙ্গার অভিযোগ ছিল। যে প্রধানমন্ত্রী হবার আগে আমেরিকার কালো তালিকাভুক্ত "সন্ত্রাসী" ছিল। ওর ভিসা হতো না।

আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবার্ষিকীতে এই ব্যক্তির উপস্থিতি তাই আমাদের "স্পিরিটের" সাথে খুব একটা ফিট করেনা। হতে পারে তিনি আমাদের প্রতিবেশী দেশ এবং স্বাধীনতার সময়ে আমাদের প্রধানতম মিত্র দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, তারপরেও বলবো, না, এই ভদ্রলোকের উপস্থিতি আমাদের স্বাধীনতার, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথেই যায় না। তাছাড়া আমাদের ভাগ্য ভাল যে, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ইন্দিরা গান্ধী, ভারতের লৌহ মানবী। নরেন্দ্র মোদী বা তার দলের কেউ হলে বুঝতাম ঠ্যালা।
রোহিঙ্গারাতো এখনও যাচ্ছেন ভারতে আশ্রয় নিতে, মিয়ানমার সরকারকে দাবানোর ব্যাপারে ভারতের ভূমিকা কি? ভারত কি মিয়ানমারের চেয়ে বহুগুন শক্তিশালী একটি দেশ নয়? ইন্দিরার ভারতের চেয়ে পাকিস্তানতো মিলিটারি শক্তিতে অনেক এগিয়ে ছিল। তারপরেও ইন্দিরা এগিয়েছিলেন। নিয়্যত থাকতে হয়।
ঠিক এই কারণেই আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও যেমন আমাদের জাতীয় অনুষ্ঠানের জন্য আনফিট একটি চরিত্র। কারন সেও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা উস্কে দেয়া চরিত্র।

আবারও বলি, এইটা আমার একান্তই ব্যক্তিগত মন্তব্য। কারোর দ্বিমত থাকতেই পারে।

এখন আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধুর কন্যা নিজেই ওকে দাওয়াত দিয়ে এনেছেন, তিনি তাঁর দেশ ও পিতার ইমেজের ব্যপারে আমার চেয়ে বেশি জানবেন, কনসার্নড থাকবেন, সেটাই স্বাভাবিক। কাজেই এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করার কোন মানে হয়না। নিমন্ত্রিত অতিথির সম্মান রক্ষা করা আমাদের নাগরিক কর্তব্য।
গণতান্ত্রিক দেশের সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমি আমার "অসন্তুষ্টি" জানাতেই পারি। আমি প্লেকার্ড হাতে নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করতে পারি। আমি গণ ও সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করতে পারি। অহিংস যেকোন পথই আমি ব্যবহার করতে পারি। এটা আমার সাংবিধানিক রাষ্ট্রীয় অধিকার।
যা পারিনা তা হচ্ছে, প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিজের দেশের জনগনের সম্পদ নষ্ট করতে। যেকোন পরিস্থিতিতেই হোক, আমি কারোর ক্ষতি করার অধিকার রাখিনা।
তেমনই সরকারও উশৃঙ্খল পাবলিককে ঠান্ডা রাখতে প্রয়োজনে ডান্ডার ব্যবহার করতে পারেন। যা পারেনা তা হচ্ছে নিজের দেশের মানুষকেই পিটিয়ে মেরে ফেলতে।
আর ছাত্রলীগেরতো মাঠেই নামার কথা না। ওরা কারা? ল এনফোর্সমেন্ট অথরিটি ওদের এলো কোত্থেকে? পুলিশের যদি সাহায্যের প্রয়োজন হয়, প্রয়োজনে আনসার, আর্মি, rab আসবে, তোমরা কারা লাঠিসোটা নিয়ে ছাত্র, জনতা, সাংবাদিক পেটাবার? মানুষ খুন করার?

আমরা ছেলের স্কুলের এক ছাত্ররের সাথে ওর খুব ঝগড়া। আমি ওর পরিবারকেই বাড়িতে দাওয়াত দিলাম। আমার ছেলে প্রতিবাদ করতেই পারে। আমি খুব বেশি হলে কি করতে পারি? ওকে ঘরে বন্দি করে রাখতে পারি, অথবা অন্য কোন বন্ধুর বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে পারি। নিজের অন্যান্য ছেলে দিয়ে ওকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিব আমি? অন্য বাড়ির ছেলের জন্য আমার দরদ কতটা বেশি হলে এমন কাজ আমি করবো?

যাই হোক। সুবর্ন জয়ন্তী হবার কথা ছিল বিশেষ উৎসবের। দেশের বাইরে থাকি, এইসব জাতীয় উৎসবগুলো প্রচন্ড মিস করি। ছাব্বিশে মার্চ বাড়ির বাইরে বেরিয়ে লাল সবুজ পতাকা দেখবো না, মাইকে শুনবো না সাবিনা ইয়াসমিনের কন্ঠে জাদুকরী সব দেশাত্মবোধক গান, এই কষ্ট যে কি, তা প্রবাসী ছাড়া কেউ বুঝবে না। অথচ পত্রিকায় এইসব মার দাঙ্গার খবরগুলো মন ভেঙে দেয়। বিশ বছর আগেই হায়দার হোসেন তাই গেয়েছিলেন, "কি দেখার কথা, কি দেখছি!"

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৭:৪৪

জহুরুল কাইয়ুম বলেছেন: আরও অনেক কিছুই দেখার বাকী আছে।

২| ২৭ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৮:২৬

এমেরিকা বলেছেন: স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী দেশের মানুষের জন্য খুব আনন্দের বা উৎসবের ব্যাপার হবার কথা ছিল। নরপিশাচ মোদী এসে সব কিছু নষ্ট করে দিল।

৩| ২৭ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৯:৪৪

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: দেশর কথা যদি বলি,বাংলাদেশ থেকে ভারত অনেক বেশী সেকুলার।আমরা নামেই ধর্ম নিরপেক্ষ কাজে না।

২৮ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৭:১৯

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: অবশ্যই ইন্ডিয়া অনেক সেকুলার ছিল। তবে এখন ধীরে ধীরে সাম্প্রদায়িক হয়ে যাচ্ছে।

৪| ২৭ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:৫০

আমি নই বলেছেন: এই বিষয়ে যত গুলো লেখা পড়লাম তার মাঝে আপনার লেখাটাই সুন্দর হয়েছে।

স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী শুধুমাত্র মোদি কেন্দ্রিক হল এটা মনে করতেই খারাপ লাগছে।

২৮ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৭:২০

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: :( অথচ আমরা নিজেরা নিজেরাই অনেক সুন্দর অনুষ্ঠান করতে পারতাম।

৫| ২৭ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:৫৩

অক্পটে বলেছেন: ভারত অনেক বেশি সেকুলার এর জ্বলন্ত প্রমাণ হল মোদির মুসলিম নিধন। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে মোদি প্রেমে মশগুল হয়ে যে লাশগুলো উপহার দিল আমাদের সরকার তা আমাদের চিরদিন মনে থাকবে।

৬| ২৭ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: মোদি আমাদের দেশে এসে আমাদের গর্বিত করেছে।

২৮ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৭:২১

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: হাহাহা। কতটা নিচু হয়ে গেছি আমরা যে আমাদের "গর্বিত" হতে হয় কোন দেশের প্রধানমন্ত্রীর আগমনে। :/

৭| ২৭ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৩:২৭

নেওয়াজ আলি বলেছেন: সাতক্ষীরায় পুজা করা শেষ হয়েছে এখন :D

৮| ২৭ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৫:২৭

সিগনেচার নসিব বলেছেন: দিন যাচ্ছে আর সামনে দিনের গল্পগুলো জটিল হচ্ছে। ব্যাপারটা আপেক্ষিক

৯| ০১ লা এপ্রিল, ২০২১ রাত ২:২১

সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন: সবখানে উগ্রতা। কেউই নিজ সীমানা সম্পর্কে সচেতন নয়। এই অসচেতনতাই আমাদের দেশের অশান্তি তৈরির মূল কারণ। কেউই কারো অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে না। এর মূলে আমাদের অপরিপক্ক শিক্ষা ব্যবস্থা। যেগুলো নিয়ে আমাদের কাজ করা উচিত না আমরা নিজেরা তা নিয়ে কাজ করতে সরকারকে সহযোগিতা করছি, না সরকার নিজেদের বুদ্ধিজীবীদের মাধ্যমে তা নিয়ে কাজ করছে।


স্রোতে ভেসে ভেসে যাওয়াই আমাদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি হিসেবে ধরে বসে আছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.