নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

হেফাজত-লীগ-মামুনুল

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:০৯

হেফাজতের ইস্যু নিয়ে কিছু কথা বলি। তার আগে বলে নেই, কারোর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আমার নাক গলানোর বদভ্যাস নাই। কে দুই বিয়া, কে চার বিয়া, কে বহুগামী, কে সমকামী এসবে আমার কিছুই যায় আসেনা। আমি আজকে বলবো বাঙালির "থট প্রসেস" নিয়ে। লেখা বড় হলেও মন দিয়ে পড়েন, প্র্যাকটিস করেন, জীবন পাল্টে যাবে নিশ্চিত।
শুরু করা যাক ছাত্রলীগকে গালাগাল দিয়ে। ওরা নিজেদের এখন কি মনে করে? দেশের সবকিছুতেই ওরা মাতবরি শুরু করেছে। কে কার সাথে কোন হোটেলে গেল, সেখানে ওরা আক্রমন করে শারীরিক, সামাজিক, মৌখিক ইত্যাদিভাবে লাঞ্চিত করার অধিকার পায় কই? আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার অধিকার কে দিয়েছে? তারা সিভিলিয়ান এবং একটা ছাত্র সংগঠন, ছাত্রদের অধিকার নিয়ে চিন্তিত থাকা উচিৎ। পথে নেমে জংগিবাজী করা, ভাংচুর করা, খুনাখুনি করা, এইসব কি? কেউ নিজের দাবির আন্দোলনে নামলে এরা লাঠিসোটা হেলমেট নিয়ে নেমে ইচ্ছামতন মানুষ পেটানো শুরু করে। পুলিশ তখন চোখ বুজে তামাশা দেখে। পৃথিবীর আর কোন সভ্য দেশে সিভিলিয়ানদের এমন অধিকার দেয়া হয়? এদের লাগামহীন হতে দিয়ে সরকার নিজেই বিপদে পড়ে, অতীতে এমন ঘটনা ঘটেছে, ভবিষ্যতেও ঘটবে। এইটা লিখে রাখলাম।
এইবার আসা যাক হেফাজতে।
কয়েক বছর ধরেই লোকজন হেফাজতের উপর ক্ষেপা। কেন? কারন ওরা কিছু হলেই জনগনেরই সম্পদ ভাংচুর করছে। তারপরে নির্লজ্জের মতন বাহানাও দিচ্ছে, "আমাদের এতজনকে শহীদ করেছে, তখন আপনারা কোথায় থাকেন? একটা গাড়ি মূল্য মানুষের জীবনের চেয়ে বেশি হয়ে গেল?"
দেখেন ভাই, আপনার ভাইকে মেরেছে, জনতা অবশ্যই ক্ষুব্ধ। জনতা নানান কারণেই পুলিশ এবং ছাত্রলীগের উপর ক্ষুব্ধ। কিন্তু যখন আপনি সেই জনতারই সম্পদ ক্ষতি করবেন, তাঁকে অসুবিধায় ফেলবেন, তখন জনতা দেখবে আপনি তাঁর পার্সোনাল ক্ষতি করেছেন। তখন স্বাভাবিকভাবেই আপনার ভাইয়ের মৃত্যুর বদলে নিজের কষ্টের উপার্জনে কেনা গাড়ির প্রতি বেশি দরদ দেখাবে। চিটাগংয়ে সাতজন শহীদ হয়েছেন বলে আপনারা ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া শহর ও স্টেশনে ভাংচুর করলেন, সেখানে কারা দায়ী ছিল সেই সাত খুনের ঘটনার সাথে? এইসব কোন ধরনের জাহেলী কর্মকান্ড? আবার ইসলামী লেবাজ পরানোর দুঃসাহস করা হয়! বলি, মুসলিমদের বুদ্ধিশুদ্ধি কোন পর্যায়ে নেমেছে যে নিজের ধর্মের এমন চরম অপমান চুপচাপ মেনে নিচ্ছে!
আরেকটা উদাহরণ দেই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে হিটলার সমানে ইহুদি মারলো। ছয় সাত মিলিয়ন ইহুদি শেষ। বাকিদের উপর অমানুষিক নির্যাতন! যুদ্ধ শেষে স্বাভাবিকভাবেই গোটা পৃথিবী তাঁদের প্রতি সমব্যথী ছিল। মুসলিমরাও ছিল। তেরশো বছর ধরে ইহুদিরা মুসলিম দেশগুলোতেই শান্তিতে আর নিরাপদে বাস করে আসছিল। আমাদের ধর্মে ওরাই "আহলে কিতাব।" আমাদের "কাজিন ব্রাদার!" আল্লাহ স্বয়ং ওদের অধিকার সংরক্ষন করেছেন।
এই সময়ে জায়নিস্টরা ফিলিস্তিন ভূখন্ড দখল করে উল্টো মুসলিমদের ক্ষতি করলো। এরপরের ঘটনা আমরা সবাই জানি। মুসলিমরা ভুলে গেল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ওদের প্রতি কি অন্যায় হয়েছে। তোরা আমার মসজিদ আকসা দখল করলি কেন? তোরা আমার গাজা উপত্যকায় বোমা ফেলিস কেন? তোরা আমার ফিলিস্তিনি ভাইবোনদের হত্যা করিস কেন?
তাহলে বুঝতে পারছেন? আপনার প্রতি যত বড় অন্যায়ই হোক, ইসলাম আপনাকে নিষেধ করেছে নির্দোষের ক্ষতি না করতে। যারা দাবি করে তারা "হেফাজতে ইসলাম" তারাই কিনা ইসলামের বিরুদ্ধে যায়!
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে সবাই স্কুল কলেজের বাচ্চাদের পাশে কেন ছিল? কারন ওদের দুইটা প্রাণ নিয়ে নেয়ার পরেও ওরা রাস্তায় নেমে উশৃঙ্খলা করেনি। ওরা কারোর ক্ষতি করেনি। উল্টো শিখিয়েছে কিভাবে ইচ্ছা করলেই নিয়ম মেনে সুন্দরভাবে চলা সম্ভব।
ইসলামও exactly এই শিক্ষাটাই শেখায়। হেফাজত মানে? একটা উদাহরণ দিন।
কেউ বলবেন, নিরাপদ সড়ক দাবি আন্দোলন একটি ব্যর্থ আন্দোলন। তা আপনাদের আন্দোলনই বা কোন দিক দিয়ে সফল? মোদী ঠিকই আসলো, ঘুরে বেড়ালো, চলেও গেল। মাঝে দিয়ে নিজের দেশের ক্ষতি হলো, নিজেদের দলের কয়েকজনের প্রাণ গেল। এইটাকে আন্দোলন বলে?

হেফাজতের নেতার কাহিনীতে আসা যাক।
ভদ্রলোক নাকি খান্দানি বড়লোক। তাই দুই তিন ঘন্টার জন্য আট থেকে আঠারো হাজার টাকা রুম ভাড়া নেয়া ওনার কাছে কোন ব্যাপারই না। হতেই পারে। হালাল টাকা যদি উপার্জন করে থাকেন, তাহলে হালাল উপায়ে খরচের অধিকার তাঁর আছে। তিনি আঠারো কোটি টাকা দুই ঘন্টার বিশ্রামের জন্য খরচ করলেও কারোর বলার কোন অধিকার নেই। সেটা ইস্যু না। ইস্যু এই যে বিবাহিতা স্ত্রীকে বাড়ি থেকে নিয়ে কেউ কেন শুধু শুধু কয়েক মিনিট দূরের হোটেলে গিয়ে এত টাকা ব্যয় করবে? আমার যদি বিশ্রামের প্রয়োজনই হয়, আমি বাড়িতেই কি সময় কাটাবো না? অবশ্য উনি খানদানি বড়লোক, আমরা হয়তো খান্দানি ফকির। ব্রোলকি কাজকারবার আমার মাথায় ঢুকার কথা না।
এইবার কথা উঠে তাঁর সাথে যে মহিলা ছিলেন তাঁকে নিয়ে।
ভদ্রলোকের দাবি, মহিলা তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী।
এখন পয়েন্টাকারে ঘটনার বিশ্লেষণ শুরু করা যাক।

১. মহিলা প্রাপ্তবয়স্কা হলে "সেকুলার" বাংলাদেশে পুলিশ বা জনতা তাঁর কিছুই করতে পারবেনা। তিনি বিবাহিত, নাকি অবিবাহিত, তাঁরা কি পরকীয়ায় লিপ্ত, নাকি এমনিতেই "জাস্ট ফ্রেন্ডস" এতে রাষ্ট্রের কিছু যায় আসেনা। কাজেই, কিছু হেফাজতি সাপোর্টার, যারা বলছেন, "দোষী হলে পুলিশ কেন ছেড়ে দিল?" - তাঁদের জ্ঞাতার্থে, পুলিশ ছাড়তেই বাধ্য। ভদ্রলোক যে দাবি করছেন, "স্থানীয় পুলিশ অফিসার আমার তথ্য প্রমানে সন্তুষ্ট হয়ে ছেড়েছেন" - সন্তুষ্ট না হলেও পুলিশ ছাড়তে বাধ্য। পতিতা সহ কিংবা শিশু সহ ধরা খেলে কাহিনী ভিন্ন হতো।
হ্যা, যদি বাংলাদেশ ইসলামী রাষ্ট্র হতো, এবং তিনি ধরা খেতেন, তাহলে আদালতের মাধ্যমে প্রমান করতে হতো তাঁরা স্বামী-স্ত্রী, নাহলে ভয়াবহ দন্ড হতো।
এখানে ছাত্রলীগ অনুপ্রবেশ করে যে ইতরামি করেছে, সেটা কোন যুক্তিতেই গ্রহণীয় না। কারন, কালকে এই ইতরগুলি আমার সাথেও এমন করতে পারে। আমি আমার কোন ছেলে বন্ধুর সাথে হোটেলে রুম শেয়ার করলে (খান্দানি ব্রলোক না বলে পয়সা বাঁচাই) এরা প্রচার করবে আমি সমকামী। কোন মেয়ের কথা কথা বলতে দেখলে প্রচার করবে পরকীয়া করছি। তাই এই ইত্রামীতে দাঁত ক্যালানোর কিছু নেই। এদেরকে সাইজে না আনলে আমাদের ভবিষ্যতে খবর আছে।

২. ভদ্রলোকের একটা কল ভাইরাল হয়েছে, যেখানে তিনি বলছেন, ভদ্রমহিলা "শহিদুল ইসলাম" ভাইয়ের ওয়াইফ।
ভক্তকুল কিছু যাচাই বাছাই না করেই প্রচার শুরু করলেন এইটা এডিট করা ভিডিও। কেউ কেউ সফটওয়্যার লিংকও দিয়ে দিলেন। তা ভদ্রলোক এই ঘটনার বহু সময় পরে যখন নিজের ফেসবুকে পোস্ট দিলেন, সেখানেও তিনি নাম লিখলেন ভদ্রমহিলার সাবেক স্বামীর নাম "শহিদুল ইসলাম।"
হেফাজতের ভক্তদের তুলনায় আমার বুদ্ধিশুদ্ধি কম, নেই বললেই চলে। উনারা সবাই শার্লক হোম্স আর মিসির আলী, তাঁরা শুনেই বুঝে ফেলেন অডিওটি এডিট করা। তা আমার সাধারণ বুদ্ধির লজিক বলে, এডিট যারা করেছে, তাদের জানার কথা না ভদ্রমহিলার সাবেক স্বামীর নাম কি। ভদ্রলোক নিজেই নিজের পোস্টে নামটি উল্লেখ করায় কেন যেন মনে হচ্ছে অডিওটি নকল না। কেউ ভবিষ্যতে গিয়ে উনার পোস্ট পড়ে আবার বর্তমানে এসে ফেক অডিও ভাইরাল করে দিবে, কোন ইহুদি নাসারা এখনও এমন যন্ত্র আবিষ্কার করেনি। তাছাড়া তাঁর স্বীকারোক্তি থেকেও সহজে অনুমিত যে দ্বিতীয় স্ত্রীর কথা প্রথম স্ত্রী জানতেন না। অডিও ফেক হবার সম্ভাবনা তাই কম।

৩. তিনি বারবার বলেছেন তিনি তথ্য প্রমান দিবেন। আমি সেই আশায় বসে ছিলাম। প্রমান হিসেবে তিনি কোন "লিখিত কাবিন" "বিয়ের রেজিস্ট্রি" ইত্যাদি পেশ করেননি। বলেছেন, একান্তই পারিবারিকভাবে তাঁর বিয়ে হয়েছে। অতি ঘনিষ্ঠ লোকজনকে নিয়ে। ইসলামিক মতে বিয়ে বৈধ, তবে কিছু টেকনিক্যাল ডিফিকাল্টি থাকে।
যেমন, প্রথম স্ত্রীর সাথে বিয়ের কাবিননামা দেখতে চান, দেখবেন দেখাতে পারবেন। কিন্তু দ্বিতীয় স্ত্রীর বেলায় সেটা নাই। যদি তিনি মারা যান, তাহলে উত্তরাধিকার নির্ধারণের মামলায় দলিলের অভাবে দ্বিতীয় স্ত্রী আপনাতেই বাতিল হয়ে যাবেন। তাছাড়া বিয়ের তথ্য তিনি সাধারনের কাছে গোপনও করেছেন। মানে দ্বিতীয় স্ত্রী প্রথম স্ত্রীর সমমর্যাদা পেল না। সামাজিক মর্যাদা পেল না। একজন "আলেম" এই কাজ করতে পারেন? কেন করবেন?

৪. তিনি সাক্ষী হিসেবে হাজির করেছেন নিজের পরিবারের লোকজন। যারা আবার ভিডিওতে মৌখিক স্বীকারোক্তি দেননি যে তাঁরা সাক্ষী ছিলেন। তিনি বলে গেছেন এরা জানেন, তাঁরা হ্যা না কিছুই বলেন নি।
ইসলামে একটি অতি বিখ্যাত ঘটনা আছে, যেখানে খলিফা আলী (রাঃ) এক ইহুদীর কাছে একটি মামলা হেরে যান, যেখানে মুসলিম কাজী খলিফার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছিলেন এই কারণেই যে খলিফার নিজের দুই পুত্র ছাড়া আর কোন "নিরপেক্ষ" সাক্ষ্যি ছিল না। আমরা এই ঘটনা পড়ে, শুনিয়ে ইসলামের ন্যায় বিচার নিয়ে গর্ব করি, অথচ আজকে যখন এই ঘটনার এপ্লিকেশনের সময় এলো, অমনি নির্লজ্জের মতন জাহেলী যুগের কুরাইশী সমাজে ফিরে গেছি, যেখানে গোত্রের বিরুদ্ধে কথা বলাটাই ছিল অন্যায়। তা গোত্র যত বড় অপরাধই করুক না কেন।

৫. স্বাভাবিকভাবেই লোকজন হজরত আয়েশার (রাঃ) ঘটনা টেনে আনার চেষ্টা করছে। কুরআনের আয়াত দেখিয়ে বলছে, একজন সম্মানী ব্যক্তির সম্মানহানি হচ্ছে। এমনটা অন্যায়, নিশ্চই অন্যায়।
তা সেই ঘটনারই বিস্তারিততে যাওয়া যাক।
মুনাফেক ও কিছু বিপথগামী মুসলিম যখন মদিনায় গুজব রটাতে শুরু করেছে, নবী (সঃ) কিন্তু নিজের স্ত্রীর পক্ষ নিয়ে গলাবাজি করেননি। না হজরত আবু বকর (রাঃ) নিজের কন্যার জন্য লড়েছেন। তাঁরা মর্মাহত হয়েছেন, ভিতরে ভিতরে ভেঙ্গে পড়েছেন, কিন্তু "প্রমানের" অভাবে তাঁরা দোষী বা নির্দোষ এই সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি।
এক মাস পরে, যখন মা আয়েশা (রাঃ) তাঁর পিতার ঘরে একাকী শুয়ে কাঁদছিলেন, কারন তিনি দেখেন তাঁর পিতামাতাও তাঁর পক্ষে নেই, তখন নবী (সঃ) বলেন, "যদি তুমি নির্দোষ হয়ে থাকো, তাহলে আল্লাহ নিশ্চই প্রমান করবেন। আর "যদি" অপরাধী হয়ে থাকো, তবে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও, তিনি নিশ্চই মাফ করে দিবেন।"
লক্ষ্য করুন। নবীজির (সঃ) সবচেয়ে প্রিয়তমা স্ত্রী, তাঁর আদর্শ জীবনসঙ্গিনী, যাকে তিনি এত আপন করে জানেন চেনেন যে পৃথিবীর আর কেউই সেভাবে চিনেনা, সেই স্ত্রীর বিরুদ্ধে যখন মুনাফেকরা রটনা রটালো, তিনি রাসূলুল্লাহ হয়েও উম্মুল মুমিনীনের পক্ষে অন্ধভাবে অবস্থান নেননি।
এছাড়া কুরআনেও আরেকটা ঘটনায় আমরা দেখতে পাই আল্লাহ হজরত দাউদকে (আঃ) শুধরে দিচ্ছেন যে বিচারের ক্ষেত্রে অবশ্যই তথ্য প্রমান যাচাই বাছাই করে তবেই বিচার করতে, তাড়াহুড়া না করতে।
মানে কারোর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠার সাথে সাথেই আমি দোষী যেমন বলবো না, আবার ১০০% নির্দোষ সেটাও বলতে পারবো না। আমাকে অবশ্যই তথ্য প্রমান যাচাই বাছাই করতে হবে।
তা আমাদের দেশে আমরা করলাম কি? যারা হেফাজতপন্থী, তারা চোখ বন্ধ করে "আলেমকে ফাঁসানো হয়েছে, সব কুত্তালীগের ষড়যন্ত্র!" আর যারা আওয়ামীলীগ, তারা নিজের দলের গুন্ডামি, বদমাইশি সব বাদ দিয়ে ঘটনার মজা নিতে লাগলেন।

আমাকে কয়েকজন গালাগালি করলেন। "আপনি নবীজির (সঃ) সীরাত লিখেছিলেন, আর আজ আপনার এই অধঃপতন? ছিঃ!"
আরে ভাই, নবীজির (সঃ) সীরাত লিখেছি বলেই জানি, ইসলাম ধর্ম মানে কেবলই আল্লাহ এবং নবী, রাসূল। এর বাইরে কেউ না। আবু বকর, উমার, উসমান, আলী প্রমুখ সাহাবীগণ গন্যমান্য হলেও ইসলাম তাঁদের কর্মকান্ডের উপর নির্ভরশীল না। হাদিসের গ্রন্থ পড়েছি বলেই জানি নবীর সঙ্গী, কলিমা পড়া মুসলমান জেনাহ করে ফেলেছিলেন। আরেকজন সাহাবী অন্য এক নারীকে চুমু খেয়ে এসে অনুতপ্ত হয়ে নবীর কাছে দোষ স্বীকার করেছিলেন। এই ছিল সাহাবীগণের অবস্থা। আমাদের হাদিস গ্রন্থে এইসব তথ্য লেখা আছে কারন আমাদের "আসল" আলেমদের, ইমাম বুখারী, ইমাম মুসলিম, তিরমিযী, আবু দাউদ প্রমুখদের এই বিশ্বাস ছিল যে আসল মুসলিমের ঈমান কোন আলেম উলামা নির্ভর নয়।
অধঃপতন আমার নাকি আপনার সেটা বিচার করার দায়িত্ব আল্লাহর। নাকি নিজেকে শেষ বিচারের মালিক ভেবে বসেছেন?

আপনি যদি ইসলাম গ্রহণ করে থাকেন, ধর্ম মেনে থাকেন, তবে আপনাকে অবশ্যই মানতে হবে আল্লাহর কোন ভুল হয় না, রাসূল (সঃ) আল্লাহর প্রতিনিধি এবং নিষ্পাপ, আর বাকি সব আদম সন্তান, ভুল, পাপ, অপরাধ করতেই জন্ম নিয়েছে।
বাংলার মুমিনরা যদি মনে করেন ঢাকার আলেম সব পাপকর্মের উর্দ্ধে, ওর দ্বারা কোন পাপ বা দুষ্কর্ম হলে ইসলামের ভিত্তি নড়ে যাবে, তাহলে ভাই ও বোনেরা, আপনাদের উচিৎ কেবলামুখী হয়ে তওবা করে পুনরায় কলিমা পাঠ করা।

কালকে আমার সিরাতুন্নবী পড়ে যদি আপনার ঈমান চাঙ্গা হয়, সেটা হওয়া উচিৎ কেবলই নবীজির (সঃ) কারণেই, আমার জন্য হলে সেটা কার্যকর কিছু না। যাতে আমি যদি ভবিষ্যতে কোন দুষ্কর্ম করতে গিয়ে ধরা খাই (আল্লাহ মাফ করুক), তাহলেও যেন আপনাদের ঈমানে সমস্যা না হয়। কারন, আবারও বলি, ইসলাম মানে আল্লাহ এবং তাঁর নবী রাসূল। বহু আলেম উলামা অতীতেও ছোট বড় পাপ করেছেন, ভবিষ্যতেও করবেন, কাজেই অন্ধভাবে কাউকে ফলো করার আগে, জান প্রাণ দিয়ে ওদের পক্ষ নিয়ে ঝগড়া করার আগে চিন্তা করে নিবেন, আপনারা না আবার ন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। সেটা করা মানে আল্লাহর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া। হেফাজতের প্রতি অতিপ্রেম দেখাতে গিয়ে আল্লাহর বিরুদ্ধে যাওয়াটা কতটা যৌক্তিক, সেটা মাথা খাটায় বের করেন।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:৩৪

রানার ব্লগ বলেছেন: তিনি আল্লহের নামে বিবাহ করেছেন ;)

তাদের কোন সাক্ষ প্রমান লাগে না

এখন আমার কথা এই কাজ যদি কোন সাধারন মানুষ করতে তারে এরা কি বলতো ??

এই সেই মামুনুল যার বাবা শায়খুল হাদিস (স্বঘোষিত) , সেই লোক একজন ক্রিমীনাল ও খুনী ।

২| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:৫১

দ্বিতীয় প্রহর বলেছেন: ছাত্রলীগের যে স্বভাব চরিত্র তাতে মামুনুল হকের সাথে কমই করেছে। একদম ছাত্রলীগ সুলভ কাজ হত যদি রেজার দিয়ে দাঁড়ি কামিয়ে সেখানে কালি মাখিয়ে দিত বা জামা কাপড় খুলে খোলা রাস্তায় নিয়ে দৌড়ানি দিত। সেরকম কিছু যে করেনি, তাতে ছাত্রলীগকে আমার খুব ভদ্র মনে হচ্ছে।

৩| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:০১

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ঐ মহিলা তার দ্বিতীয় স্ত্রী হতে পারে। তবে সম্ভবত ওনার প্রথম স্ত্রী বিয়ের কথা জানে না। এই কারনেই হয়তো উনি ফোনে স্ত্রীকে মিথ্যা বলেছেন। আর ওনার দ্বিতীয় বিয়ে ইসলামী নিয়মে হলেও রেজিস্ট্রি হয়নি বলে মনে হচ্ছে। ওনার পরিচিতরা ব্যাপারটা জানে। ওনার দ্বিতীয় স্ত্রী যদি স্বেচ্ছায় তার কিছু অধিকার ছেড়ে দিয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে ধর্মীয় কোনও বাধা থাকার কথা না। আমরা সব কিছু যেহেতু জানিনা তাই কোন নারীকে আগেই অপবাদ দেয়া যাবে না। আমাদের দেশে প্রচলিত ইসলামী আইন অনেক ক্ষেত্রে মূল শরিয়া আইনের সাথে সংঘর্ষপূর্ণ। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে শরিয়া আইনই মুখ্য।

৪| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:৫৭

অক্পটে বলেছেন: সাদা কাপড়ে ময়লা লাগলে এটা সবার চোখোই পড়ে।

আপনার লেখাটি খুব ভাল লেগেছে এবং একই সাথে দারুণ যুক্তিসঙ্গত। কিছু গার্বেজ মগজধারীরা এটা নিয়ে মজা করবে জানি।

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:৩৭

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ঠিক বলেছেন।

৫| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:১৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: শেষ পর্যন্ত হেফাজত আর লীগের লাভ হবে, হারবে নিরহ জনগণ ও দেশ

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:৩৭

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: এটাই আমাদের নিয়তি। :(

৬| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:৫১

আমি নই বলেছেন: এরকম একটা বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসার আগে আমার মনে হয় কিছুটা সময় নেয়া উচিৎ, আমরা যা দেখি বা যা দেখানো হয় তা সব সময় সত্যি হয় না। তবে মামুনুল সাহেবের দোষ প্রমান হলে শরিয়া আইনে শাস্তি কামনা করি।

কালেরকন্ঠে একটা নিউজ এসেছে, সেখান থেকে কিছু লাইন

জান্নাত আরা ঝর্ণার বাবা অলিয়ার রহমান বলেন, 'আমার মেয়ের সাথে জামাতা শহিদুল ইসলামের পারিবারিক কলহের কারণে প্রায় তিন বছর আগে তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। তারপর থেকে দুই বছর আগে আমরা পাত্র দেখে মেয়েকে বিবাহ করার কথা বললে, মেয়ে বলতো আমার বিয়ে হয়েছে। এ জন্য আমরা আর কোনো পাত্র দেখিনি। তবে কার সঙ্গে মেয়ে ঝর্ণার দ্বিতীয় বিয়ে হয়েছে সে ব্যাপারে পরিবার জানে না।'

ঝর্ণার মা শিরীনা বেগম বলেন, 'শুধু একবার ভিডিও কলিং এর মাধ্যমে স্বামী মামুনুল হককে দেখিয়েছিলো কিন্তু আমরা বুঝতে পারিনি তিনি মাওলানা মামুনুল হক ছিলেন।'


নিউজের লিংক
https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2021/04/04/1020668

৭| ০৫ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:২৮

রাজীব নুর বলেছেন: আমি মনে মনে আপনার কাছ থেকে এই বিষয়টা নিয়ে একটা পোষ্টের অপেক্ষায় ছিলাম।

৮| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৫

আলাপচারী প্রহর বলেছেন: অভিনন্দন। বেশ বলেছেন। ভালো বলেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.