নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
আমাদের দেশের মানুষের একটি চরম সমস্যার কথা স্পষ্ট করে বলি, দেখেন মিলে কিনা।
আমাদের মুসলিম ধার্মিকদের কাছে আলেমরা ধর্ম নির্ভর না, বরং ধর্মটা আলেম নির্ভর হয়ে গেছে। দুইটার পার্থক্য ব্যাখ্যা করি, তাহলে বুঝবেন কি বুঝাচ্ছি।
ইসলাম ধর্মের মূল কথা হচ্ছে আল্লাহ সর্বশক্তিমান, পরম করুনাময়, অসীম দয়ালু, সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা, লালনকর্তা ইত্যাদি ইত্যাদি, মোট কথা আমার জন্মের আগে থেকে মৃত্যুর পর পর্যন্ত আমার এবং আমার আশেপাশের সবার, জীব ও জড় সবকিছুরই স্রষ্টা ও নিখুঁত নিয়ন্ত্রক আমার আল্লাহ। তাঁর দ্বারা কখনই বিন্দু পরিমান ভুল হওয়া সম্ভব না।
তিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষ। এবং মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত জ্ঞান করা হয় কেবলমাত্র এই কারণেই যে আমাদেরই একমাত্র ক্ষমতা আছে "সঠিক" ও "ভুল" নির্ধারণ করার। একটি পশু যতই শক্তিশালী হোক, তার এই ভালমন্দের পার্থক্য করার ক্ষমতা নেই। ফেরেশতারা যতই পবিত্র হোক, তাঁদের ক্ষমতা নেই "পাপ" করার। মানুষই পারে ক্ষমতা থাকার পরেও পাপ এড়িয়ে পুন্য বেছে নিতে। যে কারনে আদমকে (আঃ) সিজদাহ করেছিল ফেরেশতারা, আদম (আঃ) করেননি ফেরেশতাদের।
কাজেই আমাদের কাছে ইসলাম মানেই আল্লাহ এবং তাঁর নির্দেশ। এই নির্দেশের কারণেই নবী (সঃ) এবং অন্যান্য পয়গম্বররা চলে আসেন। কারন তাঁরা আল্লাহর নির্দেশের বাইরে এক চুল পরিমান নড়ার ক্ষমতা রাখতেন না। এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা আমার নবীজি (সঃ) সিরিজে করেছি। দেখিয়ে দিয়েছি কোথায় কোথায় নবীজিকে (সঃ) আল্লাহ শুধরে দিয়েছেন, কোথায় কোথায় তিনি মহাবিপদে থাকা সত্বেও আল্লাহর অনুমতি ছাড়া নিজ সিদ্ধান্তে স্থান ত্যাগ করতে পারেননি। কিছু কিছু ঘটনা এখন বলা যেতে পারে।
যেমন আমরা জানি, হুদাইবিয়া সন্ধির সময়ে কুরাইশরা নবীজি (সঃ) এবং মুসলিমদের চরম অপমান করেছিল। এতটাই যে প্রতিটা সাহাবী রাগে থরথর করে কাঁপছিলেন, কিন্তু নবীজির অনুমতি না থাকায় কিছু করতে পারছিলেন না। এরপরে যখন সবাইকে বিস্মিত করে নবী (সঃ) ওদের সব শর্ত মেনে নিলেন, তখন উমার (রাঃ) তাঁর এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তাঁকে প্রশ্ন করে উঠেন।
এই পর্যন্ত আমরা সবাই জানি, ঠিকতো? কিন্তু কখনও কি ভেবেছি যে উমার (রাঃ) কেন প্রশ্ন করেছিলেন?
কারন তিনি এইটা জানতে চেয়েছিলেন যে সিদ্ধান্তটা কি নবীজির নিজের, নাকি আল্লাহর। খুবই গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। কারন বদর থেকে শুরু করে ওহুদ, খন্দক হয়ে আরও বহু যুদ্ধ ও নানান জটিলতায় আমরা দেখেছি নবীজি (সঃ) তাঁর সাহাবীদের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতেন। সবাই নবীজির সিদ্ধান্তকে সম্মান করতেন, কিন্তু একই সাথে তাঁরা মানতেন, তিনি "মানুষ।" যে কারনে বদরের যুদ্ধে যুদ্ধবন্দীদের গ্রেফতারের সমালোচনা করে আল্লাহর আয়াত নাজেল হওয়া ঘটনা ঘটেছিল। ইব্ন উম্মে মাখতুমের উপর সামান্যতম বিরক্ত হওয়ায় আল্লাহর সূরা নাজেল করা। আরও বহু ঘটনা আছে যেখানে আল্লাহ নবীজিকে শুধরেছেন। উমারের (রাঃ) ধারণা ছিল এই যে, হয়তো নবীজি (সঃ) কোন ভুল সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন।
মুনাফেক সর্দারের জানাজায় ইমামতি করতে দেখে উমার (রাঃ) আবারও ভ্যারিফাই করেন, "ইয়া রাসূলাল্লাহ, আল্লাহ কি আপনাকে নিষেধ করেননি এদের জানাজায় শরিক হতে?"
এমন ঘটনা অনেক আছে। হাদিস গ্রন্থে, সীরাত গ্রন্থে পাবেন। সাহাবীগণ সরাসরি প্রশ্ন করেছেন, "এটি কি আপনার নিজস্ব সিদ্ধান্ত, নাকি আল্লাহর?"
বারিরাহ নামের এক সদ্য মুক্তি পাওয়া দাসী তাঁর স্বামীকে ত্যাগ করায় নবী (সঃ) তাঁকে পরামর্শ দেন, "তুমি ওকে ফিরিয়ে নিচ্ছ না কেন?"
নবীজি (সঃ) তখন মদিনার সম্রাট, মুসলিম বিশ্বের সম্রাট, মানব জাতির সম্রাট, আর বারিরাহ একজন দাসী, তারপরেও তিনি বলেন, "ইয়া রাসূলাল্লাহ! এটা কি আপনার পরামর্শ নাকি হুকুম?"
নবীজী (সঃ) বলেন, "এটি কেবল পরামর্শ।"
মহিলার উত্তর, "তাহলে জেনে রাখুন, ওকে আমার প্রয়োজন নেই।"
বুখারী শরীফের হাদিস বলছি। ডিভোর্স চ্যাপ্টার খুললেই পাবেন। মিলিয়ে নিন।
তা এই ছিল এবং হবার কথা আমাদের ধর্ম ইসলাম। আল্লাহর হুকুম, তাঁর অনুমোদন প্রাপ্ত নবীদের কর্মকান্ড, এবং ব্যস, এইটুকুই। এর বেশি নয়, এর কম এক চুল পরিমান নয়।
আমাদের সমস্যা হয়ে গেছে, আমরা আলেম / পীর / শেখ / আল্লামা / ধর্মগুরু / হুজুর যেই নামেই ডাকিনা কেন, আমাদের "ঈমান" হয়ে গেছে ওগুলো নির্ভর। ওরা যে মানুষ, আমরা জানি, কিন্তু মানি না। যেখানে হজরত আদম (আঃ) নবী হয়েও আল্লাহর নিষেধ অমান্য করেছিলেন, সেখানে আমরা ধরে নেই আমাদের কুরআন মুখস্ত করা হাফেজ এবং হাদিস মুখস্ত করা আলেমরা কোন পাপ করতে পারবেন না। যেখানে সাহাবীগণ নবীজিকে প্রশ্ন করতেন, সেখানে এইসব আলেম উলামাদের কোন কর্মকান্ড নিয়ে প্রশ্ন করা যাবেনা। অন্ধভাবে বিশ্বাস করে যেতে হবে। নাহলে উনাদের বিশ্বাস, এতে ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে!
হাস্যকর কিনা বলেন? আল্লাহ বলেছেন তাঁকে ছাড়া এই ধর্মে কাউকে শরিক না করতে। তিনি বলেছেন ন্যায়ের জন্য নিজের বাবা মা আত্মীয় এমনকি নিজের বিরুদ্ধে হলেও যেতে। তিনি বলেছেন, তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে ঈমানের পরীক্ষা নিবেন, এবং সেটা আমার আপনার সবার জন্যই প্রযোজ্য। তারপরেও আমরা ধরে নেই আমাদের প্রিয় আলেম উলামারা, দেশ-জগৎখ্যাত স্কলাররা পাপের উর্দ্ধে বাস করেন।
"উনি কোন পাপ করতে পারেন, এ আমি বিশ্বাস করিনা!"
কত হাস্যকর যুক্তি! আমার আপনার বিশ্বাসের উপর কারোর পাপ পুন্য নির্ভর করে? আমি নিশ্চিত, আমি কোন পাপ করতে পারি এ এমন অনেকেই বিশ্বাস করেন না (বেশিরভাগই অবশ্য মনে করেন উল্টা, আমি মুখোশধারী মুনাফেক!), কিন্তু তাই বলে আমার পাপ কর্ম থেমে আছে? আমার বাম কান্ধের ফেরেশতা কি বই বন্ধ করে ভ্যাকেশনে চলে গেছেন? (যাদের বিশ্বাস আমি মুনাফেক, তাঁদের মুখে মুচকি হাসি ফুটছে। আমি নিজ মুখে পাপ স্বীকার করছি।) কিন্তু আলেমপূজারীদের বিশ্বাস, উনাদের আলেমদের বামকান্ধে খাতা হাতে কোন ফেরেস্তাই নাই। অন্ততঃ কাজ কর্ম সেটাই ইঙ্গিত দেয়।
ইসলামিক নিয়মানুযায়ীও কি সেটা সম্ভব? না। নবীজির কাছে ইসলাম গ্রহণ করে কয়েকজন মুরতাদ (আমাদের মা উম্মে সালামার (রাঃ) প্রথম স্বামী ছিলেন প্রথম মুরতাদ) ছিলেন, কয়েকজন মুনাফেক ছিল। সাহাবীদের অনেকেই অনেক সময়ে অনেক ছোট বড় অন্যায়, ভুল, পাপ করেছেন। এক সাহাবী জেনাহ করে নিজের বিরুদ্ধেই সাক্ষ দিয়ে শাস্তি নিয়েছিলেন। এক সাহাবী আরেক নারীকে চুমু খেয়ে তওবা করেছিলেন। নবীর নির্দোষ স্ত্রীর নামে গুজব রটিয়েছেন একাধিক সাহাবী। এগুলিও সহীহ হাদিস গ্রন্থের হাদিস। আমরা সবাই জানি। ওদেরও সবার দাড়ি ছিল, ইসলামী লেবাস ছিল। নবীর সহচর একেকজন সাহাবীর মূল্য আজকের জমানার কোটি কোটি আলেমের চেয়ে বহুগুন বেশি। এইটাও আমরা জানি। তারপরেও মানি না। সমস্যাটা কোথায়?
শুধু মুসলিমদেরই না, সমস্যাটা রাজনৈতিক দলগুলোরও। সেখানেও "দেশের জন্য নেতা" না, বরং "নেতার জন্য দেশ।" নেতা দেশ লুটে খেয়ে ফেললে কোন সমস্যা নাই। নেতার পোলাপান দেশ লুটে খেয়ে ফেললেও সমস্যা নাই। আমার দিকে মাঝে মাঝে যে হাড্ডি ছুড়ে মারে, এতেই আনন্দে আমি লেজ নাড়ি। যখন কাউকে কামড়াতে বলে, অমনি ঘেউ ঘেউ করে কামড়ে আসি। সমস্যাটা কি?
ইসলামপূর্ব আরব সমাজ সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। তারপরেও আবারও বলি, কারন ঐ যে বললাম, আমরা জানি কিন্তু মানিনা। তা ইসলামপূর্ব আরব সমাজ, যাকে আমরা আইয়ামে জাহেলিয়াত বা অন্ধকারের যুগ বলা হতো, সে যুগে আরবরা নানান গোত্রে বিভক্ত ছিল। সবাই ছিলেন কুরাইশ বংশের সন্তান, কিন্তু কেউ ছিলেন হাশেমী পরিবারের তো কেউ ছিলেন মাখযুম পরিবারের, তো কেউ আব্দে শামস পরিবারের। আমাদের যেমন অবস্থা এখন, সবাই বাংলাদেশী, কিন্তু কেউ আওয়ামীলীগ, কেউ বিএনপি, কেউ জামাত, কেউ হেফাজত, কেউ কমিউনিস্ট।
তা আরবদের এক গোত্র আরেক গোত্রের সাথে রেষারেষি লেগেই থাকতো। এবং এই রেষারেষিতে সেই গোত্রের প্রতিটা সদস্যের নিজ গোত্রের হয়ে লড়া ব্যতীত আর কোন অপশন ছিল না। নিজ গোত্র অন্যায় করলেও, অন্য গোত্র সঠিক হলেও।
"আমার চাচাতো ভাই, অমুকের মেয়ে তুলে এনেছে? ভাল করেছে। কি করবে দেখে নেব!"
"আমার চাচা অমুকের জমি লুটে ফেলেছে? খুব ভাল! প্রয়োজনে চাচার জন্য জীবন দিয়ে দিব!"
"আমার বাপ কারোর পয়সা মেরে দিয়েছে? অবশ্যই আমি বাপকেই ডিফেন্ড করবো।"
এই ছিল "জাহেলী" আরবদের স্বভাব চরিত্র। বর্তমানের উদাহরণ দেয়ার প্রয়োজন আছে? আমরা কি সেটাই করছি না? প্রগতিশীল, শিক্ষিত, স্বাধীন ও মুক্তচিন্তার মানুষরাও গোত্রভিত্তিক দাসত্ব থেকে বেরিয়ে আসতে পারিনি এখনও। মাদ্রাসায় মাওলানা শিশু ধর্ষণ করে ফেলেছে, হলুদ মিডিয়ার অপপ্রচার না, শিশুটির জবানবন্দি এবং প্রমাণিত সত্য, তারপরেও আমরা চুপ করে থাকি। কারন লোকের বিশ্বাস যে মাওলানা মানুষের বিরুদ্ধে গেলে যদি আল্লাহ গজব নাজেল করেন? আরে বেকুব, ঐ অসহায় শিশুর পক্ষে আওয়াজ না তোলার জন্য আল্লাহ গজব নাজেল করবেন, কুরআনের ওয়াদা, তারপরেও আমরা চুপ করে থাকি! যদি আমরা বুঝতাম!
হ্যা, কারোর বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ উঠে বলাৎকারের, এবং তিনি না করে থাকেন, তবে অবশ্যই আমাদের উচিৎ সেটার বিরুদ্ধেও জোরালো আওয়াজ তোলা। মিটু মুভমেন্টের সময়ে বিদেশে এমন প্রচুর ঘটনা ঘটেছে। টিনেজ মেয়ে বয়ফ্রেন্ড/ক্রাশকে ফাঁসাতে #মিটু লিখে যা তা অভিযোগ করে দিয়েছে। মাঝে দিয়ে ছেলের জীবন বরবাদ! এইসব ব্যাপারেও সচেতন থাকতে হবে। এই কারণেই কোন ঘটনা শোনার সাথে সাথে ফেসবুকে ঝাঁপিয়ে পড়বেন না। সময় নিন। নিশ্চিত হন। তারপরে কিছু একটা লিখুন। অবশ্যই অনুমানভিত্তিক কিছু লিখবেন না। নেতাকে ডিফেন্ড করতে গিয়ে এমন কিছু করবেন না যা আপনাকে আল্লাহর বিরুদ্ধে নিয়ে যায়। মনে রাখবেন, সত্য মানেই আল্লাহ, এবং সত্যের বিরুদ্ধে যাওয়া মানে তাঁর বিরুদ্ধে যাওয়া। নিজের দিক থেকে যেন পরিষ্কার থাকেন। ও শত্রু গোত্রের, শত্রু দলের, শত্রু দেশের প্রতিনিধি হলেও আমার বিচার যেন ন্যায়ের পক্ষে থাকে। এটাই আল্লাহর হুকুম। কুরআন খুলে পড়ে নিন। আল্লাহ আমাকে আপনাকে এই হুকুম দিয়েছেন, অন্য কাউকে নয়।
তা আরবদের যখন এই গোত্রপ্রীতি, আমাদের নবীজি (সঃ) ইসলাম প্রচারেরও আগে থেকে কি করলেন? একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করলেন যারা মিলে এইটা নিশ্চিত করবেন যে জুলুম করে কেউ পার পাবে না। জুলুমকারী সমাজের সর্বোচ্চ নেতা হলেও না, মজলুম সমাজের সর্বনিম্ন শ্রেণীর সদস্য হলেও না।
ইসলাম এসে গোত্র মাত্র জাত বিভেদ সব ধুয়ে মুছে একদম সাফ করে দেয়। রাজা ফকির সবাইকে এক কাতারে নামায় ফেলে। বিলালের (রাঃ) মতন কৃষ্ণাঙ্গ "গোলাম" কাবার ছাদে উঠে আজান দেয়ার অধিকার পায়! চুরির অপরাধে হাত কাটা যায় মখযুম পরিবারের এক অপরাধীর। সব আমরা জানি।
আর আমরা কি করছি?
আমরা কি মুসলিম? আমরা কি নবীজির (সঃ) অনুসারী? নাকি আবু জাহেল, আবু লাহাবদের?
আপনার ধারণা হতে পারে, নিজের দোষ স্বীকার করে ফেললে শত্রুদলের কাছে আমরা বুঝিবা ছোট হয়ে যাব!
মাথায় রাখুন, নিজের দোষ স্বীকার করে ন্যায়ের পক্ষ নিলে শত্রুদলের কাছে ছোট না, শত্রুদলকেই জয় করা সম্ভব। কেবল একবার চিন্তা করুন, ঠিক কোন জাদুবলে, কি কর্মগুণে মাত্র তেইশ বছর ব্যবধানে পৌত্তলিকতায় নিমজ্জিত আরব সমাজ ইসলামের পতাকাধীনে এসে স্থান নিয়েছিল। কিভাবে, মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে ওরা বিশ্বের সুপার পাওয়ারে পরিণত হয়। আমরা উমারের (রাঃ) ঘটনা বর্ণনা করে ওয়াজ মাহফিল গরম করি! বলি হজরত উমার (রাঃ) এতটাই ন্যায় বিচারক ছিলেন যে নিজের সন্তানদের বিরুদ্ধে কঠোর থেকে কঠোরতম বিচার করতেও দ্বিধা করতেন না। কারন তাঁর ছিল তাকওয়া।
আর এই আমরাই, নিজেদের বেলায় জাহিলী কুরাইশ হয়ে যাই।
এখানে কমেন্ট করার প্রয়োজন নেই। লেখাটি পড়ুন। তারপরে কুরআন খুলে পড়ুন। নবীজির সীরাত গ্রন্থ পাঠ করুন। হাদিস বইগুলো পড়ুন। যদি আমার লেখায় একটিও ভুল পান, তখন আমাকে গালাগালি করুন। বেশি বেশি করে প্রচার করুন যে "আমি ইসলামবিরোধীদের এজেন্ট", "আমি নাস্তিকদের প্রোপাগান্ডা প্রচার করি" বা ইত্যাদি ইত্যাদি যা ওসব ছাগমস্তিষ্কে প্রসব হয় আর কি।
আর তারও আগে, একান্তে নিজের মনের গভীরে গিয়ে ভাবুন, এ আপনি কি করছেন? যে আল্লাহ আপনাকে মুক্ত স্বাধীনভাবে জন্ম দিলেন, যে ইসলাম আপনাকে মানুষের দাসত্ব থেকে মুক্তি দিয়ে এক আল্লাহর সামনে ব্যতীত অন্য কারোর সামনে মাথা নত করতে নিষেধ করেছে, আপনি কিনা স্বেচ্ছায় অন্যকে খোদার আসন দিয়ে দিচ্ছেন?
আপনার আলেম ইসলাম নির্ভর না হয়ে আপনার ইসলাম হয়ে যাচ্ছে আলেম নির্ভর?
২| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:০৭
অধীতি বলেছেন: আলোচনার প্রসঙ্গটা খুবই সময়োপযোগী। ছোটবেলা থেকেই আমাদেরকে বই থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। আমাদেরকে বলা হয়েছে। দর্শন হচ্ছে শয়তানের বিষ্ঠা যত নাড়বে ততই নাস্তিক হবে। তারপর আমরা দর্শন থেকে দূরে রইলাম। আমাদের চিন্তাশক্তি লোপ পেয়ে গেলো। তারপর তারা বোঝাল তারা আলেম তাদের সম্মান করতে হবে। আমরা সম্মনে বোবা হয়ে রইলাম।
৩| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:৩৭
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: সর্বশক্তিমান কথাটা স্ববিরোধী।পরম দয়ালু হলে কিভাব অনন্তকাল আগুনে পোড়াবে।
০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:৩৭
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: আপনার জন্য
https://www.youtube.com/watch?v=PA4JYRsFGj4
৪| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:০৪
নতুন বলেছেন: হিন্দু ধর্মে পুরহিতই সংস্কৃত মন্ত্র জানে
খৃস্টানেরা রবিরাব চার্চে যায়, তারা বাইবেল তেমন একটা পড়েনা, পাদ্রিদের বক্তিতা শোনে
আমাদের দেশে ৫ ওয়াক্ত ওয়াজ শোনে কিন্তু ৫ ওয়াক্ত নামাজ পরেনা তেমন একটা প্রযন্ম তৌরি হচ্ছে।
আরেকটা ভন্ড দল যারা ধর্মের লেবাস ধারন করে নামে ধামিক কিন্তু নিজের সুবিধার জন্য সবকিছুই করে।
৫| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:১৭
রাজীব নুর বলেছেন: আলেম সমাজ আজ জালিম এ রুপান্তরিত হয়েছে। আলেমদের কারনে আজ ধর্ম আফিমে রুপান্তরিত হয়েছে।
ধর্ম থেকে দূরে সরে থাকতে পারলে লাভ আছে। যেমন দুবাই তারা ধর্মকে একপাশে সরিয়ে রেখেছে। তাই তারা আজ উন্নত। অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যদেশ গুলোর অবস্থা ভালো না। কারন তারা ধর্মকে আকড়ে ধরে রেখেছে।
কাজেই সুন্দর ভাবে বাঁচতে হলে ধর্ম থেকে দূরে থাকাই মঙ্গল।
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:০৪
চাঁদগাজী বলেছেন:
ব্লগ মোল্লায় ভরে গেলো?