নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
জনপ্রিয় গুণী লেখিকা ইশরাত জয়া আপুর ফেসবুকে দেখলাম বুয়েটের বর্তমান ছাত্রছাত্রী ও এলামনাইদের মাঝে অনুষ্ঠিত একটি অনলাইন পোলে জানা গেছে যে ৯৯% ছাত্রছাত্রী বুয়েটকে রাজনীতিমুক্ত রাখতে চাইছে।
আপু নিজেও বুয়েট এলামনাই।
তো আমি নিজেও নীতিগত দিক থেকে রাজনৈতিক নাস্তিক এক মানুষ। কারন থিওরি অনুযায়ী রাজনীতি জনগনের মঙ্গলের জন্য হলেও, খুব কম ক্ষেত্রে তা আমরা দেখতে পাই। সেটা বিএনপি, আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, জামাত শিবির যাই হোক না কেন।
উদাহরণ দেই।
আমার গ্রামে জনতার জন্য ফ্রি চোখের চিকিৎসা করাবো। আমি ঢাকা থেকে বিখ্যাত ডাক্তার ম্যানেজ করেছি। এমন ডাক্তারের ভিজিট সিরিয়াল ইত্যাদি গ্রামবাসী জীবনেও এফর্ড করতে পারবে না। এলাকায় ঘোষণা করলাম, অমুক দিনে যাদের চোখের চিকিৎসা প্রয়োজন, তাঁরা যেন এসে হাজির হন।
দেখা যাবে প্রথমেই গ্রামের চেয়ারম্যান এসে বলবেন ঘোষণা দিতে হবে যে চেয়ারম্যানের সৌজন্যে এই অনুষ্ঠান হতে চলেছে। নাহলে অনুষ্ঠানের অনুমতি পাবেন না।
তারপরে দেখা যাবে বিরোধী নেতা এসে বাগড়া দিচ্ছে। আগামী নির্বাচনে সেও চেয়ারম্যান হতে পারে, কাজেই ওর বিপক্ষে যাওয়া যে বুদ্ধিমানের কাজ না, এইটা সে বুঝিয়ে দিবে।
তারপরে ওদের দুইজনের মাথাতেই আসবে, আমি নিজে নির্বাচনে দাঁড়াবো নাতো? নাহলে বেহুদা ফ্রি চিকিৎসা করাবো কেন? নিশ্চই ভোট কিনছি। দেখবেন দুই দুশমন দুই ভাই হয়ে আমার পেছনে লাগবে।
ওদের সাথে থাকবে বিশাল চামচাকূল। কোন কিছু চিন্তা ভাবনা না করেই জিভ বের করে মালিকের হুকুম পালন করবে।
কাজেই আমার জন্যই মঙ্গল হবে যে আমি গ্রামের অনুষ্ঠানটা বাতিল ঘোষণা করবো।
আমার কোন লস হয়নি, ডাক্তারেরও না, আল্টিমেট লুজারটা কে? গরিব গ্রামবাসী।
এইটাই হয় গোটা দেশে। ছোট অথবা বড় স্কেলে। কেউ ধর্মকে ব্যবহার করে, কেউ চেতনাকে। মরে কে? আমি আর আপনি।
টাকলা মুরাদ রীতিমতন ৱ্যাব আর অন্যান্য সরকারি বাহিনীর হুমকি দেখিয়ে সিনেমার নায়িকাকে হোটেল রুমে নিয়ে আসে। পাবলিক ফেসবুক ট্রলিং ছাড়া কিছুই করতে পারেনা।
এই মুরাদই এককালে ছাত্রনেতা ছিল।
তাহলে বুঝেন কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ে সে কোন সাধুটা ছিল!
তো যা বলছিলাম, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে "রাজনীতি বন্ধ" মানে কিন্তু শুধু ছাত্রলীগই না, শিবির, ছাত্রদল, কমিউনিস্ট, নাকশালিস্ট, খেলাফতি, জঙ্গি, চলার সাথী, বসার সাথী ইত্যাদি সব ধরনের রাজনীতিই নিষেধ। কিন্তু ছাত্রলীগ এমনভাবে হাউকাউ করছে যেন ওদেরই নিষেধ করা হচ্ছে, এবং বাকিদের গ্রিন কার্ড দেয়া হচ্ছে।
ওদের কিছু ইন্টারেস্টিং লজিক শুনলাম। ইন্টারেস্টিং বলছি কারন কোন সভ্য দেশে সুস্থ মাথার মানুষের মাথা থেকে এমন লজিক আসার কথা না। তার দুয়েকটা বলি।
১. ছাত্রলীগ না থাকলে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে জঙ্গিবাদ বেড়ে যাবে।
তা পৃথিবীর কোন দেশে জঙ্গিবাদ, সহিংসতা, সন্ত্রাসবাদ ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব কোন ছাত্র সংগঠনের থাকে? সেটাতো পুলিশের কাজ। যতদূর জানি, আমাদের দেশেও পুলিশ আছে, ৱ্যাব আছে, বিভিন্ন ইন্টেলিজেন্স আছে, যদি লোক শর্ট পড়ে আনসার-ভিডিপি আছে, দরকার হলে মিলিটারি আনো, যৌথ বাহিনী নামাও - কেউ কিচ্ছু বলবে না। এমনও যদি পরিস্থিতি হয় যে বুয়েট হয়ে গেছে জঙ্গিবাদের আঁতুরঘর, তাহলে "বাংলাদেশ কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স - বুয়েট অফিস" খোলো, মাসুদ রানা, জেমস বন্ড, ইথেন হান্ট ইত্যাদি সবাইকে নিয়োগ করো। কিন্তু স্কুল কলেজ পড়ুয়া আদুভাইদের কেন এই দায়িত্ব নিতে হবে? ওরা হেলমেট পরে লাঠি হাতে বীর পুরুষের মতন স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের উপর ঝাপায় পড়বে। পৃথিবীর কোন সভ্য দেশে এমনটা ঘটে? একটা উদাহরণ দিন।
২. "বুয়েটে এতদিন ছাত্রলীগ না থাকায় শিবিরের কর্মীদের (অথবা যেকোন জঙ্গি সংগঠনের) গোপন তৎপরতার ভিডিও আছে এখন লীগের হাতে। এতেই প্রমান হয় বুয়েট জঙ্গি আস্তানা হয়ে গেছে।"
তা এত গুরুত্বপূর্ণ "গোপন ভিডিও" তোমরা গোপনে রেখে দিয়েছো কেন? বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দাও, দিয়ে বলো দোষী ছাত্রদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। ওদেরকে সাসপেন্ড করুক, ঘাড় ধরে বের করে দিক। না পারলে পুলিশ ডাকুক। আদালতে উঠুক। বিচার হোক। জেল হোক, ফাঁসি হোক। কেউ একটা টু শব্দ পর্যন্ত করবে না। তোমরা ভিডিও দিয়ে করবেটা কি? তোমাদের মতলব কি?
৩. "যে ছাত্রলীগের বিরোধিতা করে, সে জঙ্গি/জামাত/শিবির।"
যেমন কালকেই আমার পোস্টের পরে একাধিক ছাগুলীগ আমাকে জামাত শিবির ট্যাগ দিয়ে দিয়েছে। একে আমি রাজনীতির বিরুদ্ধে বলেছি, তারপরে দেখে কুরআনের আয়াত শেয়ার করি, একটু খোঁজ নিলে জানবে নবীজির আস্ত জীবনীও রচনা করে ফেলেছি! হায় হায়! আমি জঙ্গি না হয়ে পারি?
এদের চর্বিওয়ালা টুসটুসে গালের জন্য আমার রূপসা চপ্পল আছে, এই ক্ষেত্রে আমি নারীপুরুষ কোন ভেদাভেদ করিনা; কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, আসলেই যখন কোন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সাধারণ কাউকে জঙ্গি ট্যাগ দিয়ে মারধর করবে (যেটা ওদের স্ট্র্যাটেজি), তখন পাবলিক রিয়েকশন কি হবে? আবরারকে হত্যার পরেও কিছু নরাধম মিনমিন করে "শিবির" ট্যাগ দিয়ে খুন জাস্টিফাই করার চেষ্টা করছিল। এগুলি আবার শুরু হবে। লীগ কাউকে খুন করলে বলবে জঙ্গি, এবং লীগের কাউকে কেউ খুন করলে বলবে "নাস্তিক।" লীগ প্রচার করে বেড়াবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় চেতিত, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার অকুতোভয় সৈনিক শহীদ হলো। আর বিএনপি/জামাত/খুনি পার্টি প্রচার করবে নিহত ছেলেটা কত বড় লম্পট, বদমায়েশ আর নাস্তিক ছিল।
লাশ নিয়ে রাজনীতি আমাদের দেশে নতুন না। মাঝে দিয়ে মরবে "বাংলাদেশের একটি ছেলে" যার মাঝে কোন সম্ভাবনা থাকুক অথবা না থাকুক, অধিকার ছিল বড় হয়ে কিছু একটা করে বৌ বাচ্চা নিয়ে সাধারণ জীবন যাপন করার।
এদিকে ক্যানভাসে আমার পোস্টেই একজন ছাত্রলীগ কর্মীর সাথে তর্কে যখন আমি বললাম হেফাজতকে কেন আওয়ামীলীগ প্রশ্রয় দিয়ে মাথায় তুলেছে, তখন সে খুব দম্ভভরে মন্তব্য করলো হেফাজতের এক নেতার এম্বুলেন্স আটকে অক্সিজেন নল খুলে মৃত্যু নিশ্চিত করেছে ছাত্রলীগ। আঃ! মার্ডারকেও এরা কত গ্লোরিফাই করে ফেলে! তাহলে বুঝেন ওর হাতেই কয়টা মার্ডার হওয়া সম্ভব!
এইটা বন্ধের একমাত্র উপায়ই হচ্ছে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ। তুই পড়তে যা, খুব বেশি হলে প্রেম কর, কিন্তু মার্ডার কেন?
৪. ছাত্র রাজনীতি না থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলো নাকি সব বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ে।
এই মন্তব্য পড়ে আমি হাসতে হাসতে অল্পের জন্য প্যান্ট নষ্ট করতে যাচ্ছিলাম। গত চার বছর বুয়েট রাজনীতিমুক্ত ছিল, কয়টা মারামারির ঘটনা মানুষের কানে এসেছে? ক্যান্টনমেন্ট স্কুল/কলেজগুলো, ক্যাডেট কলেজগুলো কোথায় কবে পরিবেশ বিশৃঙ্খল হওয়ার খবর পেয়েছেন? বাংলাদেশের সব কলেজ ইউনিভার্সিটিতে খোঁজ নিন, সব মারামারি কামড়াকামড়ির পেছনে পলিটিক্স দায়ী। অমুকের সাথে তমুকের গ্যাঞ্জাম, লেগে যায় গিট্টু। ক্যাম্পাসে ধর্ষণের ঘটনা কয়টা সাধারণ ছাত্র ঘটায়?
৫. এদিকে আজকে খবরে দেখি ছাত্রলীগের কিছু ছাত্র প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছে ওদেরকে নাকি শিবির মারার প্ল্যান করছে। "বা*লের কেল্লা" নামের এক ফেসবুক পেজ থেকে ওদের খোঁজ খবর করা হচ্ছে। এই অবস্থায় ওরা রাজনীতি করার অনুমতি চায়।
ওরে আমার আল্লাদি আবদাররে! থানা, পুলিশ, জিডি, আইন, আদালত সব তাহলে বুড়িগঙ্গায় ভাসায় দেই? ওদের কি কাম তাইলে? থ্রেড দিলে স্ক্রিনশট দাও, দেখো পোস্ট ভাইরাল হয় কিনা। পুলিশে জমা দাও, তারপরে অ্যাকশন দেখো।
৬. ছাত্রলীগ নেতার কঠিন যুক্তি শুনে আমি পাগলায় গেছিলাম। সে বলেছে "আবরারকে হত্যা করেছে যারা ওদের একটি পরিচয় ওরা ছাত্রলীগের কর্মী। কিন্তু ওদের আরেকটি পরিচয় হচ্ছে ওরা বুয়েটের ছাত্র। তা বুয়েট নিষিদ্ধ না হলে লীগ কেন নিষিদ্ধ হলো?" - পড়ালেখা না করে আমার ভাই তোমার ভাই করলে এই ধরনের মূর্খই পয়দা হয়, এইটাই চাক্ষুস প্রমান।
৭. এবং সবচেয়ে গ্র্যান্ড ব্যাপার হচ্ছে, বুয়েট এলামনাইরা বলছে ওরা ছাত্ররাজনীতি চাক্ষুস প্রত্যক্ষ করেছে, শুধু লীগ না, দল/শিবির যার দখলেই যখন ক্যাম্পাস ছিল, ওরা সেসব দেখেছে বলেই দাবি করছে ওরা কোন রকমেরই পলিটিক্স চায় না। কিন্তু বুয়েটে পড়ে নাই এমন লোকজন জীবন দিয়ে দিচ্ছে বুঝাতে যে ওরা ভুল। বুয়েটে পড়লেই কি ওরা সব সত্য জেনে ফেলবে? জীবনেও যেই মদন ক্যাম্পাস মাড়ায় নাই, সে বেশি বুঝে। এরপরে "লজিক" হতাশ হয়ে আমার দিকে ফিরে বলল, "শান্তি পাইছিস? নাকি আমাকে আরও বেইজ্জত করাবি? এখন আমাকে মুক্তি দে, আমি এদেশ থেকে বিদায় নেই!"
যাই হোক, বেহুদা আলাপ করে লাভ নাই। পাবলিক চাক অথবা না চাক, বুয়েট ক্যাম্পাসে রাজনীতি ফিরবে নিশ্চিত। আবার মারধর ৱ্যাগিং চালু হবে। মাঝের চার বছরের স্মৃতি মনে করে ছাত্রছাত্রীরা ভবিষ্যতে দীর্ঘশ্বাস চাপবে।
২| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৩০
অধীতি বলেছেন: বিষয়গুলো এতটাই স্পর্শ্বকাতর অবস্থায় গিয়েছে যে শেষ পর্যন্ত কি থেকে না কি হয়ে যায় সেটাই দেখার বিষয়।
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৩
মোঃআশরাফ উদ্দিন খান বলেছেন: ভালো বলেছেন।বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি চাই না- এটাই গণতান্ত্রিক দেশের গণমত।
আপনাকে একটু আমন্ত্রণ জানাতে চাই(এটা স্প্যামিং নয়,স্প্যামিং মনে হলো বলিয়েন ডিলিট করে দিবো)-
বিভিন্ন সোর্সে লেখালেখি বা পোষ্ট করার পাশাপাশি আপনার লেখাটি শুরুতেই ই-নলেজ আইডিয়ায় সংরক্ষণ করতে পারেন, যে কেউ আলোচনায় যুক্ত হতে পারে সেখানে।এছাড়া লেখনীয় ক্রেডিট হিসেবে ই-নলেজ আইডিয়াকে মেনশন করা যাবে,লেখনীর নির্দিষ্ট আইডি তৈরি হয়,ফান ফ্যাক্ট হিসেবে পয়েন্ট,ব্যাজ এবং আরও মজাদার টুলস তো রয়েছেই।
পাশাপাশি উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার গড়ে তোলার কাজ আরও অগ্রসর হবে।যুক্ত হোন, ইতিমধ্যে পুরো ই-নলেজ ডেটাবেজ এ ৪০হাজার+ কন্টেন্ট যুক্ত আছে।
যুক্ত হোন-
https://enolej.com/register
আশা করি ই-নলেজ আইডিয়া নামক উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হবেন।