নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

একবার মানুষের চোখে যদি বিশ্বাস হারান, ভবিষ্যতে মাথা কুটে মরলেও সেই বিশ্বাস অর্জন করতে পারবেন না।

১৯ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ২:০৩

ফেসবুকে সবধরনের মানুষ আছে। তাই বিনোদনের অভাব হয়না।
কিছুদিন আগে প্রশ্নপত্র বিক্রি করা ড্রাইভার চাচা যেমন ধরা খেলেন, উনার ফেসবুক পেজ ভর্তি নামাজের ছবি। গাড়িতে নামাজ, মাঠে নামাজ, নদীতে নামাজ, পারলে মন্দির গির্জাতেও নামাজ আদায় করেন আমাদের চাচামিয়া। তখনই বুঝা যাচ্ছিল এই ব্যাটার ঘাপলা আছে। প্রকৃত ধার্মিক কখনই, কোনদিনও এমনটা করবে না। আমাদেরকে মাঠে ঘাটে নদীতে প্লেনে সব জায়গাতেই নামাজ আদায় করতে হয়, কিন্তু ওটা এমন কোন বিগডিল না যে প্রচার করতে হবে। ওটা স্রেফ দায়িত্ব পালন, ভাত খাবার মতই সাধারণ ঘটনা।
তেমনই ফেসবুকে দেখবেন মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধ বলে যেগুলি মুখে ফ্যানা তুলে ফেলে, একে ওকে রাজাকার ট্যাগ দিয়ে বেড়ায়, এদেরও একই অবস্থা।
যেমন ঢাকা যখন উত্তপ্ত আগ্নেয়গিরি, তখনও অনেককেই দেখবেন "বিটিভির বাতাবি লেবুর বাম্পার ফলনের" নিউজের মতন পোস্ট করতে যে ঢাকার পরিস্থিতি এখন শান্ত। কোথাও কোন ঝামেলা নাই। অমুকের ফেসবুক পোস্ট, তমুকের ফেসবুক পোস্ট শেয়ার করে মোটামুটি প্রমানের চেষ্টা করবে যে আমরা যা দেখছি, যা শুনছি পুরোটাই গুজব।
মজার কথা হচ্ছে এরাই প্রতিটা কথায় মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধ বলে।

তাহলে এদের মুখোশ উন্মোচনে মুক্তিযুদ্ধের রেফারেন্সই দেই।
২৫সে মার্চ ঢাকা শহরে যখন ক্র্যাকডাউন ঘটে, তখন চারদিক থেকে কেবল গুলির আওয়াজ আসছিল। অন্ধকার রাত। জনতা রাস্তায় বেরিকেড দিয়েছিল যাতে রাস্তায় মিলিটারি নামলেও ওসবে খানিকটা হলেও বাধাপ্রাপ্ত হয়, মানুষ পালানোর সুযোগ পায়।
তা কিসের কি? ট্যাংকের এক ধাক্কাতেই ওসব বেরিকেড কোথায় গায়েব হয়ে গেল!
শুরু হলো গোলাগুলি। মানুষের আর্তনাদ। সাথে আলোক বোমা। কিছুক্ষনের জন্য আকাশ দিনের আলোর মতন উজ্জ্বল পরিষ্কার হয়ে যায়। কেরোসিনের টিন হাতে মিলিটারি ঢুকে গিয়েছিল পুরান ঢাকার শাখারিপট্টিতে। গুলি করে মানুষ মারা হলো, আগুনে পোড়ানো হলো বাড়িঘর সম্পদ সম্পত্তি।
রাত যত বাড়ে, গোলাগুলির আওয়াজও ততই বাড়ে। এক ঝটকায় শেষ করে দেয়া হলো দেশের বহু সূর্যসন্তানদের।
জেনারেল টিক্কাখানের প্ল্যান ছিল বাঙালির মেরুদন্ড ভেঙে দেয়া। বাংলাদেশ অঞ্চলটা দেহ হলে ঢাকা শহর এর মাথা, মাথা গুড়িয়ে দিতে পারলে দেশ আপনাতেই কাবু হয়ে যাবে।
রাজারবাগ পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ হত্যা দিয়ে অপারেশন শুরু হয়েছিল, পিলখানার ইপিআর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল হয়ে ঢাকা শহরের চিহ্নিত বহু স্থান সেদিন নরককুন্ডে পরিণত হয়েছিল। রোকেয়া হলে আতঙ্কিত মেয়েরা দুরুদুরু বুকে শুনছিল মিলিটারির বুটের আওয়াজ, সারিবদ্ধভাবে, সুশৃঙ্খলভাবে ওদের জন্যই এগিয়ে আসছিল।
এত হত্যাযজ্ঞের পরেও সকালে রেডিওতে শোনা যাচ্ছিল অবাঙালি কেউ বলছে "গোজবে কান ডিবেন না।"
পাকিস্তান সরকার নিজ এলাকায় প্রচার চালায় "ভারতপন্থী দুষ্কৃতিকারীদের দমন করা হয়েছে, পাকিস্তান রক্ষা পেয়েছে।"
যুগটা ১৯৭১, সোশ্যাল মিডিয়া ছিল না। নিউজ মিডিয়াই ছিল একমাত্র মাধ্যম। সরকারের হুকুম ছাড়া যাদের একটা মাছি মারারও ক্ষমতা ছিল না। যারা সরকারের কথায় লেজ নাড়তো না, যেমন দৈনিক ইত্তেফাক, ওদের অফিস আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল। সেই অফিসেই পুড়ে শহীদ হয়েছিলেন ওদের আদর্শবান সাংবাদিক। পরের কয়েকদিনের সংবাদ মাধ্যমগুলোতে এ বিষয়ে কোন সংবাদ নেই। মিডিয়ার গলা টিপে সত্যকে চেপে রাখার চেষ্টা।
এখন সোশ্যাল মিডিয়া আছে। উপরে বর্ণিত কিউট পাবলিক যতই প্রচার করুক যে "ঢাবি শান্ত আছে, শূন্যে বইছে বসন্তের বুনোঘ্রান, এলালতার কুঞ্জে নেশাকর গন্ধ জমে উঠেছে, চারিদিকে ফুটছে নাগকেশরের ফুল।" - পাবলিক ঠিকই পোস্ট করছে মিরপুর দশে আগুনের দৃশ্য, গুলিবিদ্ধ ছাত্রের আর্তনাদ, মাথা ফেটে গলগলিয়ে রক্ত ঝরা এক কিশোরের সরল প্রশ্ন "আমি কি মারা যাবো?"

এখন যারা কিউট ফুটফুটে বাবু হয়ে দাবি করছে দেশের পরিস্থিতি শান্ত, "গুজবে কান ডিবেন না," ওরা যদি ভবিষ্যতে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলতে আসে, কাঁনশা বরাবর চটকানা দিয়ে বলবেন অফ যেতে। ট্রাস্ট মি, এই ইতরগুলি তখন জন্মালে শান্তিবাহিনীতে সবার আগে নাম লেখাতো। এরাই বকধার্মিকের মতন মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধ করে। চেতনাকে এরা নিজ স্বার্থে ব্যবহার করে।
জীবনে একটা বিষয় মনে রাখবেন। কখনই, কোনদিনও, কোন পরিস্থিতিতেই অন্যায়ের পক্ষে দালালি করবেন না। অন্যায়কারী নিজের আপন বাপ হলেও না।
অন্যায় হতে দেখলে প্রতিবাদ করতে পারলে ভাল, না পারলে সরাসরি বলবেন এইটা অন্যায়।
যদি সেই সাহস না থাকে, তাহলে চুপ থাকবেন, তারপরেও অন্যায়ের পক্ষে সাফাই গাইবেন না।
একবার মানুষের চোখে যদি বিশ্বাস হারান, ভবিষ্যতে মাথা কুটে মরলেও সেই বিশ্বাস অর্জন করতে পারবেন না।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৩:০৪

রবিন_২০২০ বলেছেন: এদের কাছে সাধারণ মানুষের জীবন কত সস্তা। মহামূল্যবান শুধু চোর গুলো আর তাদের পোষ্যদের জীবন। আজীবন আওয়ামী লীগ করা আত্মীয়দের কাছেও শুনতে পাচ্ছি ভয়ংকর পরিস্থিতির খবর কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া সয়লাব ছাগলের ৩ নম্বর বাচ্চাদের লাদানোর পোস্টে। edited ছবি পোস্ট করে এরা সবাইকে সবক দিচ্ছে।

১৯ শে জুলাই, ২০২৪ ভোর ৪:০৭

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: :(

২| ১৯ শে জুলাই, ২০২৪ ভোর ৫:২০

রিফাত হোসেন বলেছেন: :(

৩| ১৯ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ৮:১৭

কামাল১৮ বলেছেন: ন্যায় অন্যায় ধারণা জনে জনে আলাদা।

৪| ১৯ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১১

নতুন বলেছেন: এরপরে যারা চেতনা বিক্রি করতে আসবে তাদের বন চটকানা দিতে হবে।

নুন্যতম মানবিক বোধ যাদের নাই তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ঠিকাদারি নিয়ে বসে আছে।

৫| ১৯ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ২:০৮

রাসেল বলেছেন: আপনি একটা উদাহরণ দিয়েছেন পুরো সমাজের।

দেশ স্বাধীনের সুবিধা আমিও ভোগ করছি। তাই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি মহান মুক্তিযোদ্দাদের প্রতি। কিন্তু যে দেশের এক স্বনামধন্য মুক্তিযোদ্দা দেশ স্বাধীনের পরদিন থেকেই নিয়োগ বানিজ্য করে, সেসব মুক্তিযোদ্ধার দেশ স্বাধীনের লক্ষ্য কি তা সহজেই বোঝা যায়।

আমাদের ভিতর নৈতিকতা বলে কিছু নাই, যে কারণে আমরা অন্যায়ের পক্ষে কথা বলতে পারি। আমরা ভাবি না, মারা গেলে অর্থ সম্পদ কিছুই নিয়ে যেতে পারবো না। সেই অর্থ সম্পদের জন্যই মিথ্যা বলি, অন্যায় আধিপত্য করি, চেহারা পরিবর্তন ইত্যাদি ইত্যাদি করি এবং অবশেষে নিজেকে নিষ্পাপ প্রচার করি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.