নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোটা আন্দোলনের তিন শহীদের ঘটনা

০২ রা আগস্ট, ২০২৪ ভোর ৪:০০

১। ছেলে ঘুমাচ্ছিল। তখন বাসা থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে বের হয়েছিলেন ওবায়দুল ইসলাম। রাজধানীর শনির আখড়ায় যাওয়ার পথে সংঘাত দেখে আগেই নেমে যান তাঁর রিকশার যাত্রীরা। তারপর কাজলা এলাকার অনাবিল হাসপাতালের সামনে যান তিনি। একটু পর দুই ব্যক্তি এসে বলেন, এক কিশোরের গুলি লেগেছে, হাসপাতালে নিতে হবে। ওবায়দুল দেখতে পান, সেই কিশোর আর কেউ নয়, তাঁর ছেলে আমিনুল ইসলাম (আমিন)।

এ ঘটনা গত ২১ জুলাইয়ের। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে সেদিন ওই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ চলছিল। গতকাল বুধবার দুপুরে যাত্রাবাড়ীর দক্ষিণ দনিয়ায় এক কক্ষের বাসায় বসে ওবায়দুল ইসলাম বলছিলেন, ‘কাছে গিয়া চাইয়্যা দেখি, এ তো আমারই ছেলে। ছেলেকে দেখে বাবাগো, সোনাগো বলে অজ্ঞানের মতো হয়ে যাই। পরে আরেক সিএনজি করে ছেলেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়া যাই। পাঁচ মিনিট পরেই ডাক্তার জানায়, আমার ছেলে আর নাই। এর আগে প্রথমে ছেলের মারে ফোনে জানাই, ছেলে গুলি খাইছে। পরে আবার জানাই, ছেলে মইরা গেছে।’১। ছেলে ঘুমাচ্ছিল। তখন বাসা থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে বের হয়েছিলেন ওবায়দুল ইসলাম। রাজধানীর শনির আখড়ায় যাওয়ার পথে সংঘাত দেখে আগেই নেমে যান তাঁর রিকশার যাত্রীরা। তারপর কাজলা এলাকার অনাবিল হাসপাতালের সামনে যান তিনি। একটু পর দুই ব্যক্তি এসে বলেন, এক কিশোরের গুলি লেগেছে, হাসপাতালে নিতে হবে। ওবায়দুল দেখতে পান, সেই কিশোর আর কেউ নয়, তাঁর ছেলে আমিনুল ইসলাম (আমিন)।

এ ঘটনা গত ২১ জুলাইয়ের। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে সেদিন ওই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ চলছিল। গতকাল বুধবার দুপুরে যাত্রাবাড়ীর দক্ষিণ দনিয়ায় এক কক্ষের বাসায় বসে ওবায়দুল ইসলাম বলছিলেন, ‘কাছে গিয়া চাইয়্যা দেখি, এ তো আমারই ছেলে। ছেলেকে দেখে বাবাগো, সোনাগো বলে অজ্ঞানের মতো হয়ে যাই। পরে আরেক সিএনজি করে ছেলেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়া যাই। পাঁচ মিনিট পরেই ডাক্তার জানায়, আমার ছেলে আর নাই। এর আগে প্রথমে ছেলের মারে ফোনে জানাই, ছেলে গুলি খাইছে। পরে আবার জানাই, ছেলে মইরা গেছে।’

২। জানালার পাশেই সামিরের পড়ার টেবিল। পড়ার বই, প্লাস্টিকের খেলনা, ঘরের মেঝেতে এখনো ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। গত শুক্রবার জানালা দিয়ে আসা একটি বুলেট সামিরের চোখ দিয়ে ঢুকে মাথার খুলি ভেদ করে বেরিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ১১ বছরের সাফকাত সামির।

ওই দিন (১৯ জুলাই) কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চলাকালে মিরপুরে কাফরুল থানার সামনের সড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়া ঢুকছিল সামিরের ঘরে। জানালা বন্ধ করতে গেলে বাইরে থেকে গুলি এসে বিদ্ধ করে শিশুটিকে। গুলিটি তার চোখ দিয়ে ঢুকে মাথার পেছন দিয়ে বেরিয়ে যায়। ঘরে ছিল তার চাচা মশিউর রহমান (১৭)। তার কাঁধেও গুলি লাগে।

৩। পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হৃদয় চন্দ্র তরুয়া (২২)। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষের সময় গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে ঢাকায় তাঁর মৃত্যু হয়। রাতেই তাঁর লাশ নিয়ে পটুয়াখালীর নিজ বাড়িতে যান মা–বাবা।

হৃদয় চন্দ্র পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার ঘটকের আন্দুয়া গ্রামের রতন চন্দ্র তরুয়া ও অর্চনা রানীর ছেলে। দুই ভাই–বোনের মধ্যে তিনি ছোট ছিলেন। পড়তেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষে। মির্জাগঞ্জে গ্রামের বাড়ি হলেও তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে পটুয়াখালী শহরের মুন্সেফপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। ছেলেকে হারিয়ে শোকে কাতর রতন চন্দ্র তরুয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে হৃদয় লেখাপড়া করছিল। অনেক স্বপ্ন দেখেছি তাকে নিয়ে। লেখাপড়া শেষ করে চাকরি করে দরিদ্র বাবার সংসারের হাল ধরবে—কত স্বপ্ন ছিল। একটি গুলিতে সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল।’

পেশায় কাঠমিস্ত্রি রতন চন্দ্র তরুয়া প্রতিদিনই কাজের সন্ধানে মানুষের বাড়িতে বাড়িতে ঘোরেন। কাঠমিস্ত্রির আয় দিয়ে কোনোমতে সংসার চলে। বড় মেয়ে মিতু রানীকে বিয়ে দিয়েছেন। ছেলে হৃদয় চন্দ্র টিউশনি করে নিজের পড়ালেখার খরচ জোগাতেন।

উপরের সব ঘটনা আজকের প্রথম আলোয় ছাপানো হয়েছে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.