নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

এই ধরনের ন্যারো মেন্টালিটি থেকে বের করে আনাটা প্রথম কাজ হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

১২ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ৯:৩৮

১. রাস্তার ট্রাফিক কন্ট্রোল করছে বাচ্চারা। আসছে নানান জনের নানা কমপ্লেন। প্রথম কমপ্লেনই হচ্ছে ওদের মধ্যে কোন কোঅর্ডিনেশন নাই। কিছুক্ষন পরপর একই গাড়ি থামিয়ে একই কাগজ দেখতে চাইছে। কেউ জানে না কাগজে ভুল পেলে কি করতে হবে। কেউ রাস্তায় দাঁড় করিয়ে ট্রাফিক কন্ট্রোল করাচ্ছে, একটা নতুন জামাইকে দেখলাম ট্রাফিক কন্ট্রোল করতে। কেউ মসজিদে দান করাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে ছোট এক গলিতে ৩০০ ছাত্রছাত্রী নেমে গেছে রাস্তা কন্ট্রোল করতে। ফলে যেখানে কখনই জ্যাম হয়না, সেখানেও জ্যাম সৃষ্টি হয়েছে।
এই সমালোচনা আসলে ফিডব্যাক হিসেবে নেয়া উচিত। তাহলে কাজটা গুছিয়ে করা সম্ভব হবে। ওরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঠিক করবে কোন অপরাধের কি শাস্তি হতে পারে, কোথায় কতজন লোক হলেই হয়ে যাবে ইত্যাদি।
কাউকে কাউকে বেহুদা সমালোচনা করতেও দেখলাম। এক বাচ্চা মেয়েকে শাড়ি আর কপালে টিপ পরে আসতে দেখে কেউ লিখছে "এই দেখেন, সেজেগুজে ট্রাফিক কন্ট্রোল করতে আসছে।" বা আরেকটা মেয়ে নাচতে নাচতে ট্রাফিক কন্ট্রোল করছে দেখে কেউ বললেন, "এই যে ফাইজলামি শুরু হয়ে গেছে।" কেউ কোন মাওলানার বাণী যুক্ত করে দিচ্ছেন যেখানে মাওলানা বয়ান করেছেন মেয়েদের বাসাবাড়িতে পর্দা করে থাকতে হবে।
কথা হচ্ছে, এই যে বাচ্চাগুলি ট্রাফিক কন্ট্রোল করছে, পুরোটাই স্বেচ্ছায় করছে। ওদেরকে বেতন ভাতা ইত্যাদি কিছু দেয়া হচ্ছে না। লোকজন স্বেচ্ছায় যদি ওদেরকে খাওয়ায়, তখন খাচ্ছে, নাহয় নিজেদের কিনে খেতে হচ্ছে। এখন এই কাজটা করার মধ্যে ওরা যদি কিছুটা বিনোদন খুঁজে পায়, সমস্যা কি?
হ্যা, রাস্তা বন্ধ করে গাড়ি, রিকশা আটকে রেখে রাস্তায় লালবউ সেজে বসে টিকটক ভিডিও বানানো টিকটিকিকে অবিলম্বে জরিমানা করা উচিত। হারুনকে ডিবি অফিস দেয়া হয়েছিল, সে ওটাকে ভাতের হোটেল বানিয়ে ফেলেছিল। এদেরকে ট্রাফিক কন্ট্রোল করতে দেয়া হয়েছে, ওরা যদি টিকটক ষ্টুডিও বানিয়ে ফেলে, তাহলে পার্থক্য কোথায়?
শুনেছি ঢাকায় এরই মধ্যে ট্রাকের চাপায় এক ছাত্র নিহতও হয়েছে। ব্যাপারটা দুঃখজনক। বাচ্চারা যেন বুঝে সড়ক কতটা ভয়ংকর জায়গা। নিজের জানের হেফাজত নিজেকেই করতে হবে। সড়কে শুয়ে থাকা, বসে থাকা এবং সবচেয়ে বড় কথা, নিজের দিকে এগিয়ে আসা কোন গাড়ি ব্রেক কষবে, এমন বিশ্বাস করাটা কোন কাজের কাজ না। আনফিট গাড়ি বা লাইসেন্সহীন ড্রাইভার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বা ইচ্ছা করেই যেকোন সময়েই প্রাণঘাতী হয়ে যেতে পারে।

২. ডাকাতদের নিয়ে হাসিতামাশা একদম ভাইরাল পর্যায়ে চলে গেছে। The Boys লেখা গেঞ্জির ডাকাতটা সারারাত "দুষ্ট কোকিল" থেকে শুরু করে অন্যান্য আরও অনেক গানে নাচতে নাচতে দেখি সকালেও নাচছে। এত ননস্টপ ডান্স কোন পেইড প্রফেশনাল শিল্পীও নাচতে পারেনা। আশা করি নাচতে নাচতেই ব্যাটার ডাকাতি করার সাধ মিটে গেছে।
এই নাচ গানের ভাইরাস সেনাবাহিনীর মাঝেও ছড়িয়ে গেছে। দেখলাম সেনাবাহিনীর গাড়িতে বন্দি এক লোক গলা ছেড়ে গেয়ে গেয়ে সেনাসদস্যদের বিনোদন দিচ্ছে।
নাচ গানেই যদি শাস্তি হয়ে যায়, তাহলে মাইরের দরকারটা কি?

৩. দেশের নানা প্রান্তে এরাবিক ক্যালিওগ্রাফি দেখে বিস্মিত হয়ে গেলাম। নিঃসন্দেহে এইসব পোলাপান বিশ্বমানের আর্টিস্ট। ওদের রংয়ের ব্যবহার, ডিজাইন ইত্যাদি সবই মুগ্ধ করার মতন। এদেরকে সঠিক প্ল্যাটফর্ম দিলে এরা বিশ্বদরবারে সুনাম কামাতে পারবে। লোকে আয়া সোফিয়া, দুবাই ইত্যাদি অঞ্চলে গিয়ে ইসলামিক ক্যালিওগ্রাফি দেখে মুগ্ধ হয়, এদিকে আমাদের দেশেও এমন বহু প্রতিভাবান শিল্পী পড়ে আছে!
শহীদ মিনার, মন্দির, গির্জা বা এমন কোন স্পেসিফিক স্থান ছাড়া ওদেরকে যদি বিভিন্ন দেয়াল নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়, যেমন পাড়ার বিভিন্ন মসজিদ, সাধারণ বাড়ির দেয়াল ইত্যাদি - এরা নিজেদের শিল্প চর্চার সুযোগ পাবে। আমি ওদেরকে পেলে আমার বাড়ির পূর্ব কোণের আস্ত দেয়ালটা দিয়ে বলতাম আঁকাআঁকি করতে।

৪. সবচেয়ে দুঃখজনক যা দেখলাম তা হচ্ছে, কিছু লোকে এর মাঝেও বিভক্তি টানার চেষ্টা করছে। "শাহবাগিদের দেখিয়ে দিতে হবে ইসলামের জোর কতখানি" - এইসব কি ভাই? "শাহবাগী" বলতে কি শুধুই নাস্তিক বুঝানো হয়? কেন? শাহবাগ আন্দোলনতো নাস্তিকতার দাবিতে আন্দোলন হয়নি, হয়েছিল একাত্তরের ঘাতক, রাজাকারদের ফাঁসির দাবিতে। ওখানে নাস্তিক যেমন ছিল, আস্তিকও ছিল। তাহলে এরা কি বলতে চায়, আস্তিক হলে গণহত্যাকারী রাজাকারের বিচার চাওয়া যাবেনা? অথচ কুরআনতো ন্যায়ের পক্ষ নিতে বলে। এইসব কি ধরনের ফাত্রামি? নতুনভাবে যে দেশটা গঠন করার পরিকল্পনা চলছে, সেখানে এইধরনের ভেদাভেদ যে টানার চেষ্টা করবে, সাথে সাথে দমানোর চেষ্টা করবে। সেটা যেই পক্ষেরই হোক। যদি নাস্তিক কেউ ধর্মের অবমাননা করে, সেখানে যেমন বাধা দিতে হবে, তেমনই মোল্লা কেউ "শাহবাগী"দের অবমাননা করলেও তিরস্কার করতে হবে। নতুন বাংলাদেশে কেউ যেমন গিটার হাতে কনসার্ট করার অধিকার রাখবে, তেমনই যেন কুরআন পাঠেরও অধিকার রাখে। নতুন জেনারেশনকে "নামাজ পড়লেই শিবির, কুরআন পড়লেই হেফাজত, গান বা নাটক করলেই নাস্তিক" - এই ধরনের ন্যারো মেন্টালিটি থেকে বের করে আনাটা প্রথম কাজ হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ১২:০৩

কিশোর মাইনু বলেছেন: Thanks for speaking about this important topic. I can't agree with u more. We really really need to get rid of this narrow mentality. We can not forget what matters the most.
1/ Those who r complaining, what are they doing or did for the country??? other than not following rules?
2/ We also caught a hijacker last night. Boys made him dance with "Yeh Garmi". :D
3/ Oh my days!!! Not just calligraphy, have u seen some of the drawings??? Absolute genius are they.
4/ This is one of the most sensitive matter right now. We need to be careful about this. Otherwise, almighty help us.

Sorry for the English comment, Bengali keyboard isn't working, lazy to use the online keyboard.

১৩ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ২:০২

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ।

২| ১৩ ই আগস্ট, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

বাকপ্রবাস বলেছেন: সুন্দর এবং ভাল বলেছেন, আমার কাছে অবাক লাগল ওদের গাইড করেছে কে বা কারা? ওরা এতো সুন্দর করে দায়িত্বটা কিভাবে পালন করল, এমন কি রাত হয়ে গেলেও রাস্তা ছাড়েনি, স্বতস্ফুর্তভাবে দায়িত্ব পালন করে গেছে। তাদের মাঝে দেশ প্রেমের যে তৃষ্ণা দেখেছি, ১০ বছর কন্টিনিও হলে এমন স্পিপিরিট দেশটা অনেক উচ্চতায় উঠে যাবে। বিশেষ করে , ঘুষ, দুর্নিতি, জুলুম এসব বন্ধ হলেও দেশটা বিশ্বে অন্যতম শান্তির দেশ হবে

৩| ১৩ ই আগস্ট, ২০২৪ সকাল ১১:১১

আহলান বলেছেন: এদেরকে এখন শিক্ষামূখী করাটা বড় চ্যালেঞ্জ। ভালো না লাগলেই কথায় কথায় যদি সবার পদত্যাগ এর দাবী করতে থাকে , তাহলে সমাজে অনেক বড় বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে।

৪| ১৩ ই আগস্ট, ২০২৪ সকাল ১১:৩২

ধুলো মেঘ বলেছেন: আমি একটা ছেলেকে এক প্যাকেট তেহারি সেধেছিলাম। সে বলেছে, "ভাই, আমার খিদে নেই। আপনি অন্য কাউকে দিন"
আরেকটা মেয়েকে সাধলাম, সে নিল। কিন্তু বললো যে, আঙ্কেল আমাদের আসলে পানি বেশি দরকার। যদি পারেন, দুই লিটারের কয়েকটা পানির বোতল দিয়ে যান।

আমি কাছের মুদী দোকান থেকে কয়েকটা এক লিটারের পানির বোতল কিনে ওখানে যারা যারা ডিউটিতে ছিল - একটা করে দিয়ে এলাম। ওদের হাসিটা দেখার মত ছিল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.