নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
আমার দেশে এক পাঁচ মাসের গর্ভবতী রমণী বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে। বাড়িতে হুহু করে পানি ঢুকতে দেখে বেচারি দ্রুত বেরোতে গিয়ে পানিতে পড়ে যায়। উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে পরে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা দেয়।
শুনে মায়া লাগলো খুব। একটা বাচ্চা পেটে আসার পরে বাবা মা কত যে স্বপ্ন দেখে! সেই স্বপ্ন এইভাবে শেষ হলো।
আহারে! আহারে!!
আবারও বাংলাদেশ বন্যায় ডুবেছে।
ইন্ডিয়া নিজেদের নদীর বাঁধ খুলে দিয়েছে, সাথে যুক্ত হয়েছে প্রচন্ড বৃষ্টি। ফলে হঠাৎ বন্যায় কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী ইত্যাদি অঞ্চল এখন পানির নিচে।
সত্যি কথা বলতে, ভৌগলিক অবস্থান বিবেচনায় নিলে আমাদের দেশে বন্যা হবেই। পাহাড়ি ঢল থেকে পানি এসে নিম্নাঞ্চল ভাসিয়ে দিয়ে যাবে।
তবে এইটাও সত্যি যে আমরা যদি সৎ রাজনীতিবিদ ও শাসক পেতাম, তাহলে আমাদের প্রতিবছর বন্যায় ডুবতে হতো না।
স্কুলের মোটামুটি প্রতিটা ক্লাসে আমাদেরকে বন্যার ব্যাপারে পড়ানো হয়। বন্যার উপকারিতা, অপকারিতা, এবং বন্যা সৃষ্টির কারন আমাদের ঠোটস্থ মুখস্ত। আমাদের স্কুলের প্রতিটা বাচ্চার ভাল করে জানা আছে কি কি কারনে বন্যা ঘটে। কিন্তু এই বাচ্চারাই বড় হয়ে ক্ষমতায় গিয়ে অতি লোভের কারনে সব ভুলে যায়। ফলে প্রতি বছর সাধারণ মানুষকে ভুগতে হয়, মরতে হয়। নষ্ট করে কোটি কোটি টাকার সম্পদ।
আমরা সবাই জানি নদীর নাব্যতা কমে যাওয়া, জলাশয় ভরাট করা, পানি যাওয়ার স্থানে বসতবাড়ি গড়ে তোলা ইত্যাদি নানা কারনে বন্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে।
আমরা সেগুলোর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাই নেই না।
প্রভাব খাটিয়ে খাল দখল করে সেটার উপর ভবন নির্মাণ করি, নদী দখল করি, পুকুর ভরাট করে দালান তুলি। এলাকাভেদে ওয়াটার রিজার্ভিওর বা লেক তৈরী করে রাখলে পানি জমা হওয়ার সুযোগ পেত। একটু বুদ্ধি করে ল্যান্ডস্কেপিং করলে লোকজনের জন্য বিনোদনেরও সুযোগ থাকতো। যেমনটা হাতির ঝিল, ফয়ে'জ লেক ইত্যাদি। আর মাছের চাষ করলেতো সেগুলো থেকে আয় উপার্জনও হতো।
আপনি খাল কেটে দেশ ভরে ফেলুন, দেখবেন দেশে বন্যা হবেনা।
আপনি নদী খনন করুন, দেখবেন বন্যা বন্ধ হয়ে গেছে। আবার খেয়াল রাখবেন, যেখানে সেখানে খনন করলে ব্রিজ ধ্বসায় দিতে পারেন। মন চাইলো আর নদী খনন করলাম বিষয়টা এমনও না। সুষ্ঠু পরিকল্পনা থাকতে হবে।
এই মুহূর্তে গোটা দেশের নাগরিক নতুন দেশ গড়তে ইচ্ছুক। স্পিরিট অনেক হাই। শুরুটা হোক আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা এই বন্যাকে দিয়েই।
এইটা হচ্ছে বেসিক ব্যাপার। এইটা আমাদের সবাইকেই করতে হবে।
এখন আসা যাক একটু গভীরে।
ইন্ডিয়া আমাদের তিনদিক দিয়েই ঘেরা একটি বিশাল দেশ। ওদের সাথে আমরা সীমানার পাশাপাশি পঞ্চাশেরও বেশি নদী ভাগাভাগি করি। এই পঞ্চাশের মধ্যে ৩০টি নদীতে ওরা বাঁধ দিয়েছে। এজন্য আমাদের বেশ কিছু নদী পানির অভাবে শুকিয়ে মরে গেছে অথবা খাল হয়েছে। আবার এইসব বাঁধেরই গেট খুলে দিলে পরে সেই মরা খাল হঠাৎ পানিতে উপচে দুকূল ভাসিয়ে দেয়। প্রকৃতির নিয়মের সাথে খেলাধুলার পাশাপাশি এখানে যুক্ত হচ্ছে রাজনীতি।
আমাদের পলিটিশিয়ানরা এই ব্যাপারে এতদিন খুবই উদারনীতি এপ্লাই করেছে। নিজের দেশের স্বার্থ না দেখে নিজের পকেটের স্বার্থ দেখেছে। ভারত যদি দেখে কেউ ওদের জন্য দিল জান উজাড় করে দিচ্ছে, তাহলে ওরা ফায়দা তুলবে না কেন? এইবারের বন্যা সৃষ্টির পেছনেও অনেকেই ইন্ডিয়ার বাঁধ খুলে দেয়াটাই মূল কারন হিসেবে দেখছেন। ওদেরকে দোষ দিতে পারেন?
আপনি দাবি করতেই পারেন ইন্ডিয়া ওদের জনতাকে বাঁচাতে নদীর বাঁধ খুলে দিয়েছে। ওদের দেশেও বন্যা হচ্ছে। আমরা হলে কি করতাম?
ঠিক বলেছেন। কিন্তু বাঁধ খোলারওতো নিয়ম থাকেরে ভাই। মানুষকে কিছুটা সময় দিতে হয়, ওরা যেন নিরাপদ স্থানে সরে যেতে পারে। সেই সময়, সুযোগ কি দেয়া হয়েছে? হঠাৎ করে সব গেট খুলে দিলে যে ফ্ল্যাশ ফ্লাডের সৃষ্টি হয়, তাতে মানুষ, গবাদি পশু, ঘরবাড়ি ইত্যাদি ভেসে যাবেই। এইটাতো কমন সেন্সের ব্যাপার।
একজন আদর্শ প্রতিবেশী নিজের হিংস্র কুকুরকে রিলিজ করার সময়ে কি এলাকাবাসীকে ওয়ার্নিং দেন না যে "আমার এলসেশিয়ান এই সময়ে শিকলমুক্ত থাকে। আপনারা এই সময়ে আমার বাসায় আসবেন না।" অথবা গেটে ঝুলানো থাকে "কুকুর হইতে সাবধান।"
আমি বাড়িতে ময়ূর পুষছি না কারন ময়ূর প্রচন্ড চিৎকার করে, আমার আশেপাশের প্রতিবেশীদের বিরক্তির কারন হবে। আমাদের এলাকায় কারোর কুকুর অযথা ঘেউ ঘেউ করলে সেই কুকুরের মালিক প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়ে দুঃখিত বলে। এইটাকে বলে আদর্শ প্রতিবেশী। আর এখানে আমাদের "বন্ধুরাষ্ট্র" বাঁধ খুলে মানুষ দিব্যি ভাসিয়ে দিচ্ছে।
আগে জানালেই হতো যে আমরা গেট খুলে দিব, তোমার এলাকার লোকজনকে সরিয়ে নাও। আমরাও আমাদের এলাকার লোকজনকে সতর্ক করে দিতাম।
সেটা কি করা হয়েছে? তাহলে এই ভোগান্তিতে ফেলাটা কি ইচ্ছাকৃত? হাসু আপা নাই, তাই "অকৃতজ্ঞ" বাঙালকে একটু টিপে দেয়া?
আমাদের নিজেদের স্বার্থেই ভারতসহ সার্কভুক্ত সব দেশের সাথেই আমাদের ভাল সম্পর্ক থাকতে হবে। শুধু আমাদের জন্যই না, দুনিয়ার যেকোন দেশের জন্যই এই নিয়ম প্রযোজ্য। কিন্তু আমরা কেন অপু বিশ্বাস আর বুবলির মতন বেহায়া আচরণ করি? সাকিব খান আমাদের লাত্থি উষ্ঠা দিয়েই যাচ্ছে, বাচ্চা ধরায় দিয়ে দায়িত্ব নিচ্ছে না আর আমরাও বেহায়ার মতন ওর প্রতি অনন্ত প্রেম দেখিয়ে যাচ্ছি! কেন? আমরা কি এতই ফেলনা?
আমাদের যে মেরুদন্ড আছে, সেটা একটু ওদেরকেও দেখানো দরকার। আমাদের সাথে ভাল সম্পর্ক ওদেরকেও রাখতে হবে। ওদের স্বার্থেই।
আদর্শ প্রতিবেশীর এইটাই বৈশিষ্ট্য।
আশা করি নতুন সরকার কূটনীতিতে এই বিষয়টাই মাথায় রাখবে।
২| ২২ শে আগস্ট, ২০২৪ রাত ১২:১৬
কামাল১৮ বলেছেন: সরকার ভুলে গেলে আপনিতো আছেনই মনে করিয়ে দেয়ার জন্য।
৩| ২২ শে আগস্ট, ২০২৪ সকাল ৯:১৪
ধুলো মেঘ বলেছেন: হাসু আপা থাকতেও যে তারা নোটিশ দিয়ে বাঁধ খুলেছে - এমন কিন্তু নয়। তাদের স্বভাব চিরদিনই এমন ছিল। আবার বাংলাদেশের মেরুদন্ড সোজা হলে তাদের লেজ যদি সোজা হয় - এই ভরসায় থাকলাম।
২৩ শে আগস্ট, ২০২৪ রাত ২:৪০
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: না, ওরা শুধরাবে না। ওদের সাথে ওদের প্রতিবেশী সব দেশেরই ঝামেলা লেগে গেছে।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে আগস্ট, ২০২৪ রাত ১২:০৭
কামাল১৮ বলেছেন: ইনশাল্লাহ আর সমস্যা থাকবেনা।এবার আমরা দেশপ্রেমিক সরকার পেয়েছি।এই সরকার খালেদার মতো সমস্যার কথা বলতে ভুলে যাবে না।