নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

কবির সিং, এনিমেলের মতন তৃতীয় শ্রেণীর সাইকো ডিরেক্টরের সিনেমা ব্লক বাস্টার ব্যবসা করে

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৯:৫৬

ঘটনাটা সেদিন ঘটলো, আমারই চোখের সামনে।
এক গ্রোসারী দোকানে বাজার করতে গেছি। মাংস, সবজি, ফল, মশলা ইত্যাদি টুকটাক কিনে কার্ট ঠেলে পার্ক করা গাড়ির দিকে এগুচ্ছি। এই সময়ে এক লোক নিজের গাড়ি বের করছিলেন।
উনার গাড়ি বের করার ভঙ্গিতেই বুঝে গেলাম তিনি খুব একটা ভাল ড্রাইভার না। আমি আমার ছেলের হাত ধরে সেখানেই দাঁড়িয়ে রইলাম।
আমার ধারণা সঠিক প্রমান করতেই যেন তিনি গাড়ি পেছানোর সময় উল্টো দিকে পার্ক করা একটা এসইউভিকে ঠুকে দিলেন। ড্রাইভার হিসেবে না টের পাওয়ার কোন কারন নেই।
কিন্তু তিনি "যেন কিছুই হয়নি" ভাব নিয়ে সুন্দরমতন গাড়ি ঘুরিয়ে বেরিয়ে গেলেন।
পাশে বসা ওনার স্ত্রীর চেহারাতেও কোন বিকার দেখলাম না।
তাঁরা জাতিতে বাংলাদেশী, পাকিস্তানী অথবা ইন্ডিয়ান হবেন হয়তো, ত্বকের রঙ, পোশাক ইত্যাদি সেটাই বলছে। আমাদের ওসব দেশে এইসব ঠুকাঠুকি কোন বিষয়ই না। বেশিরভাগ সময়েই পালিয়ে যাওয়া যায়। ধরা খেলে পাবলিকের চড়থাপ্পড়, গালাগালি, টাকা পয়সার লেনদেনের মাধ্যমে সমাধান হয়ে থাকে।
বিদেশে সাধারণ নিয়ম হচ্ছে নেমে দেখা যে ক্ষতি কেমন হয়েছে। তারপরে ভিকটিমকে ইন্সুরেন্স ইনফো দিয়ে "দুঃখিত" বলা। কারোর গাড়ি ঠুকে পালিয়ে যাওয়াটা এখানে আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। ক্ষতির পরিমাণভেদে জেল জরিমানাও হতে পারে। এই ইমিগ্র্যান্ট দম্পতি হয়তো সেসবের তোয়াক্কাও করেন না।
কিন্তু পেছনের সিটে বসা উনাদের ছেলেটা (বয়সে আমার বড় ছেলের সমান হবে) এদেশের আলো বাতাসে বড় হচ্ছে। সে বেচারা টিপিক্যাল আমেরিকানদের মতন পেছন ফিরে দেখছিল ঐ গাড়ির কোন ক্ষতি হলো কিনা। একবার আমার সাথে চোখাচোখি হলো। আমি যে ঘটনার একজন সাক্ষী, সেটা ওর বাবা মায়ের বোধে না এলেও ওর চেহারায় সেই অপরাধবোধ ছিল। বাপের অপকর্মে সে যেন লজ্জিত।
এইবার আসি অন্য একটা ঘটনায়।
আমেরিকার এক তরুণী ইউটিউবার হতে চেয়েছিল। হাইস্কুল বয়ফ্রেন্ডকে সাথে নিয়ে ভ্যান নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল আমেরিকার পথে পথে ঘুরতে, ভিডিও আপলোড করতে। এটাই ছিল ওর ক্যারিয়ার ড্রিম।
ভিডিওতে যদিও ওদেরকে সুখী দম্পতি দেখাতো, কিন্তু ভিতরে ভিতরে বেশ সমস্যা চলছিল। বেশিরভাগ সোশ্যাল মিডিয়া কাপলেরই এই কাহিনী। তবে এখানে "ডমেস্টিক" ভায়োলেন্স যুক্ত আছে।
মেয়ের পরিবার, মেয়ের বান্ধবীরা, সবাই জানে এই ছেলের সমস্যা আছে। মেয়ে নিজেও জানে। মার খায়। কিন্তু তারপরে ঐ ছেলে এমনভাবে স্যরি বলে যে মেয়েটার ধারণা হয় ছেলেটা একেবারে ফেরেস্তা, ওর নিজের সব দোষ। ও এই ছেলের যোগ্য না। সে ছেলেটাকে ভালবাসা দিয়ে পুষিয়ে দিতে চায়।
আমাদের দেশের বহু নারীর ক্ষেত্রে ঘটনার মিল পাওয়া যাচ্ছে?
সমস্যাটা হচ্ছে, এই মেয়েটা একদিন গায়েব হয়ে যায়।
পরিবার বহু খোঁজাখুঁজি করেও ওর সন্ধান পাচ্ছিল না। ছেলেটা ঐ মেয়েটার ভ্যান নিয়ে নিজের বাপ মায়ের বাড়িতে পালিয়ে আসে। পুলিশ সেই ভ্যান উদ্ধার করে, কিন্তু আমেরিকান আইনের মার প্যাঁচের কারনে ছেলেটার সাথে কোন কথাবার্তা বলতে পারে না।
পুলিশ/এফবিআই ওদের বুদ্ধি খাটিয়ে মেয়েটার নিথর দেহ উদ্ধার করে। পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট অনুযায়ী মেয়েটাকে ভারী কোন বস্তু দিয়ে আঘাত করে ও গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।
অবশ্যই খুনি হিসেবে এই ছেলেটাকেই সন্দেহ করা হয়।
কিন্তু ছেলেটা এরই মাঝে গায়েব হয়ে যায়।
পুলিশ আবারও নিজেদের বুদ্ধি খাটিয়ে ছেলেটাকে খুঁজে বের করে। সে আত্মহত্যা করে একটা জঙ্গলে পড়েছিল। শরীর পঁচে গলে শেষ।
মরার আগে শেষ চিঠিতে সে নিজের অপরাধ স্বীকার করে।
তো যা বলছিলাম। ইন্টারেস্টিং ঘটনা হচ্ছে, মেয়েটা হারিয়ে যাওয়ার আগে পুলিশ ওদেরকে হাইওয়েতে ধরেছিল। কেউ একজন ছেলেটাকে মেয়েটার গালে চড় মারতে দেখে পুলিশে জানায়, পুলিশ রাস্তাতেই ওদের ধরে, এবং মেয়েটা তখন কাঁদছিল। পুলিশ কিছুক্ষন কথাবার্তা বলে ওদের আলাদা আলাদা করে ছেড়ে দেয়।
এখানেই লোকজনের অভিযোগ যে পুলিশ কেন কিছু করলো না? মেয়েটা হয়তো বেঁচে থাকতো।
পুলিশ কি বলবে? এই ধরণের ডমেস্টিক ভায়োলেন্স এদেশে অজস্র ঘটে। কয়টা নিয়ে ওরা মাথা ঘাঁটাবে?
ঘটনাটা দুঃখজনক। কিন্তু গোটা বিশ্বেই সমস্যাটা বিকট। এই ক্ষেত্রে হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান-আস্তিক-নাস্তিক, খ্যাত স্মার্ট, শিক্ষিত, মূর্খ কোন ভেদাভেদ নাই। বিষয়টা এড়িয়ে যাওয়ারও কোন উপায় নাই। এই যে কিছুদিন আগে এক মহিলাকে ট্রেনে উঠতে গিয়ে স্বামীর পায়ে লাথি খেতে হলো, এক অর্থে সেই মহিলা বেঁচে গেছেন। যে হারামজাদা প্রকাশ্যে এইভাবে কাউকে লাথি মারতে পারে, সে যে গোপনে মহিলাকে বিষ খাওয়াবে না, এর গ্যারান্টি কি?
উত্তরার কোপাকুপির ঘটনায় যে লোকের পরকীয়া প্রকাশ্যে এলো, এবং যে হসপিটালের বিছানা থেকেই বৌকে থ্রেট দিয়ে যাচ্ছে, ও বৌকে প্রাইভেটে পেলে কি করতে পারে বুঝে নেন।
বা আরেকটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যেখানে এক ছেলে সজোরে এক মেয়েকে চড় থাপ্পড় দিয়ে যাচ্ছে। বহু মানুষ কমেন্টে প্রশংসাও করছে। ওসব দেশে কবির সিং, এনিমেলের মতন তৃতীয় শ্রেণীর সাইকো ডিরেক্টরের সিনেমা ব্লক বাস্টার ব্যবসা করে, কেন সেটা বুঝতে খুব বেশি বুদ্ধি না থাকলেও চলে।
প্রথমে গ্রোসারি স্টোরের বাইরে যে ঘটনাটার উল্লেখ করেছিলাম, সেটার রেফারেন্স টেনেই শেষ করি।
আমরা বাবা মায়েরা টেরই পাই না, আমাদের ছোটখাটো আচরণই আমাদের বাচ্চাদের উপর কতটা প্রবল প্রভাব ফেলে। ছোটখাটো ভুল করলেও সেটা ওদের নজরে আসে, এবং সেটা নাড়াচাড়া করার মাধ্যমেই ওদের চরিত্র গড়ে উঠে। কেউ মহাপুরুষ হয়, কেউ হয় নৃশংস খুনি। আদর্শ বাপের পোলাপান আদর্শ হবে, এর গ্যারান্টি নেই। তবে চেষ্টাটা থাকা উচিত। ছেলে যদি দেখে বাবা ওর মাকে পিটাচ্ছে, সেও ওর বৌকে পিটাবে। মেয়ে যদি দেখে মা মার খাচ্ছে, সেও মার খেয়ে চুপ থাকবে। ঐ যে ছেলেটা পিছন ফিরে দেখছিল বাপ কি ক্ষতি করেছে, খুব শীঘ্রই ওর মস্তিষ্ক এই ধ্যান ধারণা থেকে সরে আসবে এবং নতুন ধারণা আয়ত্ব করবে যে অপরাধ করে পালিয়ে যাওয়া যায়। বোকারাই সেটা শুধরানোর চেষ্টা করে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:০৭

কু-ক-রা বলেছেন: উহা (মঞ্জুর চৌধুরী) বিশাল এক সমস্যার কথা তুলিয়া ধরিয়াছে। ইহার সমাধান কি?

২| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৯

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: এই কাজ ভারতীয়রা বেশি করে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.